কোনো আন্দোলনে যাইনি তবু গুলি করেছে পুলিশ
০১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ০১ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৬ এএম
আমি কোন রাজনীতি করি না। আন্দোলনে যাই নাই। এর পরেও পুলিশ গুলি করেছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে সংঘাতে গুলিবিদ্ধ ১৭ বছরের কিশোর আরিফ গতকাল বুধবার ইনকিলাবকে এসব কথা বলেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ভবনের ৫০৩ নম্বর রুমে চিকিৎসা নিচ্ছেন । গত শনিবার ২০ জুলাই সন্ধ্যায় ঢাকার সায়েদাবাদের পাশে মানিকনগরে পায়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আরিফের মা আনোয়ারা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমার দুই ছেলে। এক ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। আরেক ছেলে পড়াশোনা করতো, পরে ছেড়ে দিয়েছে। এখন বেকার। কোনো রাজনীতির সঙ্গে নেই। আমার ছেলের কোনো দোষ ছিল না। আমি দোষীদের বিচার চাই। আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ আরিফ। পায়ে অস্ত্রোপচার করার অপেক্ষায় সে। চলছে স্যালাইন।
আরিফ বলেন, সারাদিন আমি ঘরেই ছিলাম। সন্ধ্যায় এলাকার বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলে বাড়ি ফেরার পথে ভিড়ের মধ্যে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে পায়ে আঘাত পেলাম। ভেবেছিলাম ইট বা অন্য কিছুর আঘাত লাগছে। ঘটনাস্থলেই আমি অচেতন হয়ে যাই। হুঁশ (জ্ঞান) ফেরার পর নিজেকে হাসপাতালের বিছানায় দেখতে পাই। পায়ে এখনো গুলি রয়ে গেছে। অস্ত্রোপচার করে বের করবে। হাসপাতালে কেউ কোনো সহযোগিতা পেয়েছে কি না জানতে চাইলে মা আনোয়ারা জানান, আমাদের ড্রেসিংসহ অন্য কাজে খরচ হচ্ছে। এখনো কেউ সহযোগিতা করতে আসেনি।
আহত রিকশাচালক সাগর: পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সাগর। বাবা নেই, মা ও দুই বোন বাক প্রতিবন্ধী। সাগরের আয়ে কোনোরকম সংসার চলতো। শুক্রবার ১৯ জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে সংঘাতে বাম পা ও উরুর ওপর গুলি লাগে সাগরের। এর পর থেকে আয় বন্ধ তার। বুধবার সকালে ঢামেকের প্লাস্টিক ও বার্ন ইউনিটের ৫ তলার ৫০৩ নম্বর রুমে সাগরের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এসময় দেখা যায়, বাম পা পুরোটা ব্যান্ডেজ করা ও ডান পায়ের একাংশে ব্যান্ডেজ করা।
সাগর বলেন, আমি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাই। ১৫০০ টাকার মতো জরিমানা ছিল। রিকশার মালিক এই টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। দেশের অবস্থা তারা মানবে না। এই অবস্থায়ও সেদিন বেরিয়েছিলাম টাকা উপার্জন করে জরিমানা ও ভাড়া পরিশোধের জন্য। আমি কোন আন্দোলনে যাইনি, তবুও গুলি করেছে পুলিশ।
সাগর জানায়, রামপুরায় রিকশা চালাচ্ছিলাম। হঠাৎ কোথা থেকে একটা গুলি এসে উরুতে লাগে। উরুর ওপরে একপাশ দিয়ে প্রবেশ অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। রিকশা থেকে পড়ে যাই। পরে সবাই স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়। সেখানে চিকিৎসা না হওয়ায় ঢামেকে নিয়ে আসে। এখানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি।
সাগরের সঙ্গে ছিলেন তার নানি জুবাইদা। তিনি বলেন, আমার মেয়েও বোবা, তার ঘরে দুই মেয়ে তারাও বোবা। পরিবারে সাগরই আয় করতো। তা দিয়ে কোনো রকম চলছিল সংসার। ১৩ দিন হাসপাতালেই পড়ে আছে। চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ তার মা বিভিন্ন জনের কাছে হাত পেতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তার রিকশায়ই খাবার জুটতো, তা বন্ধ হয়ে গেলো। রিকশা ছাড়াতো তাদের সংসার চলে না। কতদিনে তার পা ভালো হবে আল্লাহ জানে। তাদের খাবার কীভাবে জুটবে তাও জানি না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
"তালেবান নারীদের মানুষ মনে করে না" : মালালা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ কিলোমিটার যানজট
মোবাইল ইন্টারনেটে সুখবর ‘শর্ত শিথিল’, থাকছে ১ ঘণ্টার প্যাকেজও
গভীর রাতে গরিব অসহায় শীতার্ত মাঝে ইউএনও'র কম্বল বিতরন
বরিশালে ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে
সেবা বঞ্চিত হলে অভিযোগ করা যাবে ইসির বিরুদ্ধে
এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরও ৩ হাজার শিক্ষক
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নবনিযুক্ত সচিব ছাগলনাইয়ার সন্তান সামছু উদ্দিন
বাংলাদেশে শনাক্ত হলো 'রিওভাইরাস’, রোগটি সম্পর্কে যা জানা যায়
আন্দোলনের মুখে পাঠ্যবই থেকে বাদ পড়লো ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি
মাসের শেষে আবারো আসছে শৈত্যপ্রবাহ
বর্ষসেরা ফটোগ্রাফার হিসাবে পুরস্কার পেলেন, আলোকচিত্রী ও সাংবাদিক মুগনিউর রহমান মনি
রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
বেড়া কৈটোলা নির্মাণ বিভাগের অফিসিয়াল ও উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বাইডেন-নেতানিয়াহুর ফোনালাপ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা
না ফেরার দেশে নির্মাতা রায়হান রাফির বাবা
এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা, গ্রেপ্তার ২
ছাগলনাইয়ায় খালে ভাসছিল নারীর অর্ধগলিত লাশ
ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় ৫ দিনে গাজায় নিহত ৭০ শিশু