পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসনকে সহযোগিতা

চট্টগ্রামে গুলিবিদ্ধ ৩৫০ শিক্ষার্থীর চিকিৎসার দায়িত্বে জামায়াত

Daily Inqilab চট্টগ্রাম ব্যুরো

০৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৪ এএম

চট্টগ্রামে নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনী ও সিভিল প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। গতকাল বুধবার দুপুরে নগরীর দেওয়ান বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে নগর জামায়াতের আমির সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থীসহ আহত সাড়ে তিন শতাধিক মানুষের চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর জনতার বিজয় উল্লাসের সুযোগে কিছু দুষ্কৃতিকারী যে অপকর্মে মেতে উঠে তা প্রতিরোধ করতে শুরু থেকেই মাঠে রয়েছে জামায়াতের নেতাকর্মীরা। সেনাবাহিনী ও পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় করে নৈরাজ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের জানমাল রক্ষায় বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষায় জামায়াত কর্মীরা কাজ করছে। মন্দির, গির্জাসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় হেফাজতে রাত দিন পাহারা দিয়ে যাচ্ছে জামায়াত কর্মীরা। আর এ কারণেই চট্টগ্রাম মহানগর এবং জেলায় মন্দির বা গির্জায় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রামের জিওসিসহ সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জামায়াত কর্মীরা চট্টগ্রামের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। জনগণকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে মাইকিং করা হচ্ছে। পাঁচ লক্ষাধিক লিফলেট বিতরণ চলছে। মহানগরীর সাতটি থানাসহ জেলার যেসব থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে সেখানে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে জামায়াত কর্মীদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে চেয়ার, টেবিলসহ যাবতীয় সহযোগিতাও জামায়াতের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে। জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় চট্টগ্রামের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে বলেও জানান তিনি। ছাত্রদের আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রামে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে অন্তত ১০ জন নিহত এবং কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে চমেক হাসপাতালসহ নগরীর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সাড়ে তিনশ মানুষ চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদের সবার চিকিৎসার দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামী নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও মানুষের বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার এ আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারগুলোকেও আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। দীর্ঘ ১৭ বছর জামায়াতে ইসলামীকে অন্যায়ভাবে প্রশাসনের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জালিম শাসনের অবসানের পর প্রশাসন সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের সহযোগিতা চাওয়ার সাথে সাথেই আমরা আহ্বানে সাড়া দিয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জামায়াত-শিবির কর্মীরা জনগণের পাশে থাকবে বলে জানান তিনি।
প্রায় ১৭ বছর পর নগর জামায়াতের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন দলের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় কার্যালয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করা হয়। এ সময় নগর জামায়াতের সেক্রেটারী প্রফেসর নুরুল আমিন, সাংগঠনিক সেক্রেটারী মোহাম্মদ উল্লাহ, সাবেক কাউন্সিলর শামসুজ্জামান হেলালী, মোরশেদুল আলম চৌধুরী, শ্রমিক নেতা লুৎফুর রহমানসহ জামায়াত নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি
যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’
বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত
মার্চের মধ্যে রাষ্ট্র-সংস্কার কাজ শেষ হবে : ধর্ম উপদেষ্টা
আরও
Airtel Wecome Banner

আরও পড়ুন

হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি

হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি

যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা

রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা

আবারও  ভানুয়াতুতে  দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প

আবারও ভানুয়াতুতে দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প

হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি

হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি

রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'

রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'

‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’

‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’

যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত

যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত

ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার

ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার

ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস

ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস

ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০

ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?

বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত

বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত

হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি

হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি

কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫

কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫

ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি

ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি

উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন

উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন

বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের

বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের

নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছাত্রদলকর্মী নিহত

নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছাত্রদলকর্মী নিহত

সিনেটে প্রার্থী হতে সরে দাঁড়ালেন লারা ট্রাম্প

সিনেটে প্রার্থী হতে সরে দাঁড়ালেন লারা ট্রাম্প