রাজধানীতে যত্রতত্র থামছে বাস
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম
রাজধানীর সব সড়কেই গণপরিবহনগুলো চলছে চালকের ইচ্ছেমতো। চালকরা তাদের বাসে যাত্রী ওঠানোর সুবিধার্থে যেখানে সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। কোনো কোনো সড়কে যাত্রীদের হাতের ইশারায় থামিয়ে দেন চলন্ত গাড়ি। রাজধানীর গণপরিবহনগুলো যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী নেয়া যেন তাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাস। শুধু মানুষের যত্রতত্র পারাপারই নয়, যেখানে-সেখানে থামছে বাসগুলো। ইচ্ছেমতো সড়কের ওপরই যাত্রী তোলা হচ্ছে। মানুষও দৌড় দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে বাসে ওঠা-নামা করছে। এসব ঘটছে ট্রাফিক পুলিশের সামনেই।
রাজধানীর গণপরিবহনকে শৃঙ্খলা ফেরাতে চালু হয়েছিল নগর পরিবহন। তারও এখন মরণ দশা। বাসের ভাড়া নৈরাজ্য কমাতে চালু হয়েছিল ই-টিকেটিং পদ্ধতি। এখন এই পদ্ধতিও মানা হচ্ছে না। সড়কে বাসের যাত্রী ওঠা-নামা করতে করা হয়েছিল বাস স্টপেজ, যাত্রী ছাউনি। কিন্তু এসব স্থানে এখন আর বাস থামে না। বাস থামে রাস্তার মাঝখানেই। যাত্রী ওঠানামা করানো হয় রাস্তার ওপর। ফ্লাইওভারগুলোতে যাত্রী ওঠা-নামা নিষিদ্ধ থাকলেও সেখানেই বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠা নামা করানো হয়। রাজধানীর রাস্তার মোড়গুলো এখনো নিরাপদ হয়নি। রাস্তার মোড়গুলোতে যাত্রীবাহী, পণ্যবাহী যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখা হয় দীর্ঘসময়। মোড়গুলোতে বাস দীর্ঘসময় দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা নামা করানোর কারণে পেছনে পরিবহনের লম্বা সারি সৃষ্টি হয়। যানজটের কবলে পড়েন নগরবাসী। স্টপেজ এ থামা দূরে থাক, গাড়িটি সড়কের বাম পাশে নিয়ে যাত্রী ওঠানামা করানোরও প্রয়োজন অনুভব করছেন না চালকরা। যেন পুরো সড়কই যেন বাস স্টপেজ। এতে পেছনের গাড়িগুলো আটকে যাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে যানজট। অনেক সময় একই পরিবহনের গাড়ি যাতে সামনে চলে না যায়, সেজন্য সড়কের মাঝে থামানো হচ্ছে বাস। এতে কখনো কখনো একটি গাড়ি দুটি লেন বন্ধ করে রাখছে। আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় ঘটছে দুর্ঘটনা।
যাত্রীরা জানান, আমরা আসলে বাধ্য হয়েই রাস্তা থেকে গাড়িতে উঠি। ঢাকার কোনো পরিবহনই নির্দিষ্ট বাসের স্টপিজে থামে না। গণপরিবহনগুলো রাস্তা থেকেই যাত্রী নেয়। আবার অনেক সময় দেখা যায় ইশারা করলেই বাস থেমে যাচ্ছে। সহজেই বাসে ওঠতে পারছি। অনেকেই জানেইনা যাত্রী ছাউনি কোথায় আছে। বেশিরভাগ যাত্রী ছাউনিতেই বাস থামে না।
গুলিস্তান এলাকায় দেখা যায়, শিকড় পরিবহনের একটি বাসে দৌড়ে এসে চলন্ত গাড়িতেই ওঠছেন কয়েকজন যাত্রী। দরজার হাতল ধরে ঝুঁকি নিয়েই চলন্ত বাসে ওঠে পড়লেন কয়েকজন। এমন দৃশ্য ঢাকার সব সড়কেরই। বিমানবন্দর সড়ক, শহীদ জাহাঙ্গীর গেট, ফার্মগেট, সোনারগাঁও, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, কদম ফোয়ারা, পুরাতন হাইকোট, জিরো পয়েন্ট মতিঝিল, যাত্রাবাড়ি, ফার্মগেট, শনির আখড়া, পল্টন রামপুরা, বাড্ডা, কুড়িলসহ সব এলাকায়ই যেন একই অবস্থা।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম কাজল দাবি করেন, পরিবহন খাতে অনেক সমস্যা থাকলেও বেশিরভাগই কাঠামোগত। এসব সমস্যার ৮০ শতাংশের জন্য সরকার ও প্রশাসন দায়ী। সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল আলম বলেন, বাস মালিকদের একার পক্ষে বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সকলের সহযেগিতায় এসব সমস্যা সমাধান করতে হবে।
ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন অথরিটির (ডিটিসিএ) ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার ধ্রুব আলম বলেন, ঢাকা শহরে এই মুহূর্তে ৪,৫০০ এর মতো বাস চলাচল করছে। এরমধ্যে ১,৬৪৬টি বাসের কোনো রুট পারমিট নেই। বাস স্টপেজ যেখানে-সেখানে বসানো যাবে না। এর জন্য এক ধরনের ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর দরকার পড়ে। ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুযায়ী কোনো মোড়ের ৩০ মিটার বা ১০০ ফিটের মধ্যে বাস স্টপেজ দেওয়া যাবে না। মোড়ে বাস স্টপেজ থাকলে যানবাহনের গতি ধীর হয়ে যায়। এতে যানজট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ফলে আমরা কোনো মোড়ের ১০০ ফিটের মধ্যে বাস স্টপেজ দেবোনা। সড়কে বিশৃঙ্খলার জন্য পরিবহন মালিকরা যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যানবাহন একই পথে চলাকে দায়ী করেন।
ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেন, সড়কের যত্রতত্র দাঁড়িয়ে বাসে যাত্রী উঠা-নামা বন্ধ করতে হবে। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর এক বিশেষে পরিস্থিতিতে ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করি। তখন সড়কে ও গণপরিবহনে এক ধরনের অব্যবস্থাপনা বিদ্যমান ছিল। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সে পরিস্থিতি থেকে আমরা উন্নয়ন ঘটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছি। আমরা এই অবস্থা ধরে রাখতে চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো, রাস্তার মাঝখানে ও যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠা-নামা এবং এলোমেলো ভাবে রাস্তায় গাড়ি রাখা বন্ধ করতে হবে। ড্রাইভার ও বাস শ্রমিকদের এ বিষয়ে আরও সচেতনতা ও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তাদেরকে আরও বেশি মনিটরিং করা ও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করলে মহানগরীর যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হব। যে কোনো প্রয়োজনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সব সময় আপনাদের পাশে থাকবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত
দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান
ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই
বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪
পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা
মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি
জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী
মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান
বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির
একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১
কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু
সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক
‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান
যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ
ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১
ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী
মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে
মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন
গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ