গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিপর্যয়
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম
তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার ফিরেছে লোডশেডিং। গ্রামে দিন-রাতে ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। কোথাও কোথাও এক ঘণ্টা পর পর বিদ্যুৎ যাচ্ছে। শহরগুলোতেও ৩-৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ উৎপাদন না হওয়ায় গত কয়েকদিনে ২ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত ঘাটতি ছিল বিদ্যুতের। তবে স্বস্তিতে রয়েছে রাজধানীবাসী, এখানে বিদ্যুৎ যাচ্ছে না। দফায় দফায় বাড়িয়েও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ না হওয়ার পেছনে আছে অপচয়-দুর্নীতি, আছে সরকারের ভুল নীতিও। বিদ্যুৎ বিভাগ ঢাকাসহ শহরাঞ্চলে বিদ্যুতের লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে রাখলে গ্রামাঞ্চলের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গেছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৮০জন মহাব্যবস্থাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে রাখতে এসব ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অনদিকে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতিগুলো ক্ষতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে। অভিজ্ঞজনদের মতে, সরকার শহরে লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় রেখেছে সম্ভবত বিক্ষোভের ভয়ে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মনে রাখা উচিত, গ্রামের মানুষও ক্ষুব্ধ হতে জানে। অতীতে তারা বিদ্যুৎ-সারের দাবিতে আন্দোলন করে জীবন দিয়েছে। সে রকম পরিস্থিতি হোক, সেটা কারও কাম্য নয়। সরকারকে প্রয়োজনীয় জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা কিছুটা হলেও কমে। সরকারের উচিত বাংলাদেশের সকল জনগণের জন্য গুণগত মানের বিদ্যুৎ সেবা প্রদান নিশ্চিত করা। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সকল জনগণের জন্য সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য, টেকসই এবং আধুনিক বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো)।
এ বিষয়ে গতকাল শনিবার বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এস এম জিয়া-উল-আজিম এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য (বিতরণ ও পরিচালন) দেবাশীষ চক্রবর্তীকে ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, সারাদেশের প্রচন্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিং। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলছে বিদ্যুৎতের এ অবস্থা। দেশের কোনো কোনো শহরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০-১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিললেও, গ্রামে দিন-রাত মিলে ৬-৮ ঘণ্টারও কম সময় বিদ্যুৎ পাচ্ছেন গ্রাহকরা। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুতের যাওয়া-আসার কারণে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে জনমনে। অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ মানুষ চায়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে বিদ্যুতের সরবরাহ বাড়াতে না পারলেও যাতে না কমে সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকা। শুধু বিদ্যুৎ নয়, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমাতে না পারলেও যাতে না বাড়ে সেদিকে সরকারকে সজাগ থাকতে হবে। সারাদেশের গ্রামে বিদ্যুতের লোডশেডিং অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। আট বিভাগের জেলা থেকে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। প্রতিষ্ঠানটি জানাচ্ছে, জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই গ্রাহককে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু সারাদেশে ভৌতিক বিল, বিদ্যুৎ সংযোগের নামে অর্থ আদায়, বার বার মিটার পরিবর্তন করে গ্রাহকদের হয়রানি, জোনাল অফিস এখন অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন মনগড়া তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকসেবা দুরের কথা, নানাভাবে গ্রাহকরা হয়রানীর শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। বিদ্যুত অফিসগুলোতে এখনও টাকা ছাড়া ফাইল নড়ছে না। এতে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, আবাসিক, বাণিজ্যিকসহ নতুন সংযোগ ও মিটার স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলছে। উপজেলার থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত গ্রাহকরা আবেদন করলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অতিরিক্ত ঘুষ দিতে হয়। গত ১৬ বছরের পতিত হাসিনা সরকারের আমলে দায়িত্ব পালন করে আসা বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের শত শত কর্মকর্তা কর্মচারীর দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি বিদ্যুৎ বিভাগ।এদিকে উল্টা বর্তমান অর্šÍর্বকালীন সরকারকে ভয় দেখানো জন্য বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যমান সংকট নিরসনে এবং সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের নামে সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপকরা চিঠি দিয়েছেন। তবে গ্রাগকরাদের দাবি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৮০ জন মহাব্যবস্থাপকের বিদ্যুৎতের অনিয়ম ও দুর্নীতির অপকর্ম বন্ধে রাখতে এসব ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে ফ্যাসিবাদের কর্মকর্তারা। অনদিকে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি গুলো ক্ষতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, বিদ্যমান বিদ্যুৎ সংকট নিরসনের কাজ না করে এক শ্রেনীর কর্মকর্তারা আন্দোলন করছে। এ জন্য দায়ি ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপকরা কম নয়। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আন্দোলনকারীরা জানান, সারাদেশে নিম্নমানের বৈদ্যুতিক মালামাল সরবরাহ করে ত্রুটিপূর্ণ বিতরণ ব্যবস্থা নির্মাণ করেছে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিআরইবি। এতে ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। নিম্নমানের মালামাল বিআরইবি সরবরাহ করলেও দায় চাপানো হয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওপর। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় বিআরইবিকে জানানো হলেও কার্যত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে সরবরাহ করা হয়। এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ মালামাল নিম্নমানের হওয়ায় গ্রাহক ভোগান্তি বাড়ে। নদীর তলদেশ দিয়ে বিভিন্ন সমিতির আওতায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু অপরিকল্পিত স্থাপন ও ক্যাবল নিম্নমানের হওয়ায় ওয়ারেন্টি মেয়াদের আগেই কয়েকটি সমিতিতে সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোকসান হয়। ‘দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের’ কারণে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। এসব অপকর্মের সাথে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৮০জন মহাব্যবস্থাপক জড়িত বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। নিম্নমানের মালামাল ও শোষণ-বৈষম্য নিয়ে এর আগে দফায় দফায় বিআরইবিকে জানানো হয়েছে। আন্দোলন-কর্মসূচিও করা হয়। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে কয়েকবার অবহিতও করা হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয় নি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় ২১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণাও দেয় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। এমন পরিস্থিতির জন্য পল্লী বিদ্যুৎতায়ন বোর্ডের ‘দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটকে› দায়ী করেন তারা। দুর্নীতি, শোষণ ও বৈষম্য দূর করতে বিআরইবি এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একীভূতকরণ, জনবল সংকট দূর করা, চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের স্থায়ীকরণসহ কয়েকটি দাবি জানানো হয়। কুড়িগ্রাম. লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর, খুলনান, যশোর, বাগেরহাট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, গাজীপুর অঞ্চলে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কথা বলা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে পল্লী বিদ্যুতের আজিমগঞ্জ অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ ছিলেন লাইন টেকনিশিয়ান জাহাঙ্গীর সিকদার। গ্রাহক হয়রানি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে কর্তৃপক্ষ তাকে দাসেরবাজার অভিযোগ কেন্দ্রে শাস্তিমূলক বদলি করে। কিছু দিনের মধ্যে দাসেরবাজারে একজন বাণিজ্যিক ভবন মালিককে অর্থের বিনিময়ে অবৈধ সুবিধা দেওয়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে প্রাণ হারান নিরীহ এক রাজমিস্ত্রি সহকারী। ঘুষ নিয়ে চান্দগ্রাম এলাকায় একজন গ্রাহককে পল্লী বিদ্যুতের অনুমোদনহীন খুঁটিতে বিধিবহির্ভূতভাবে লাইন টেনে সংযোগ দেন। তাছাড়া জাহাঙ্গীর সিকদারের অভিযোগ কেন্দ্রের আওতাধীন এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সঙ্গে অসদাচরণ, অবৈধভাবে ট্রান্সফরমার পরিবর্তন, লোড বৃদ্ধি, নষ্ট ট্রান্সফরমার মেরামতে অর্থ আদায়ের অভিযোগ ওঠে। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে কর্তৃপক্ষ চলিত বছরের শুরুর দিকে তাকে কুলাউড়ায় বদলি করেন। প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সেবায় নিয়োজিত আজিমগঞ্জ অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ রেজাউল করিম খানের বিরুদ্ধে স্টেশনে না থাকা, লাইন মেরামতে উদাসীনতাসহ বিভিন্ন অভিযোগ। বড়লেখা পল্লী বিদ্যুতের এজিএম (কম) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, আজিমগঞ্জ অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের আনীত অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক বৃহস্পতিবার তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় অনিয়ম-দুর্নীতি আর দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা। এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বরাবর গত ১৮ জানুয়ারি অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার ঘৃতকান্দি গ্রামের মিলন সরকার তার তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল গত ১৬ জানুয়ারি একটি ব্যাংকে পরিশোধ করেন। ওই দিন দুপুরে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে মিলনের বাড়িতে যায় রামদিয়া সাব-জোনাল অফিসের লোকজন। উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরে কৃষক হাফিজুর রহমান বলেন, যদি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া না যায়, তাহলে ভরসা করতে হচ্ছে ডিজেলের ওপর। সে ক্ষেত্রে খরচ বাড়বে কয়েক গুণ। গ্রীষ্ম মৌসুমে গত দুই বছরে দিনে গড়ে তিন ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং করা হয়েছে। কোথাও কোথাও ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন না হলেও বাড়তি উৎপাদন সক্ষমতার কারণে খরচ বেড়েছে বিদ্যুৎ খাতে। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও কেন্দ্র ভাড়া (ক্যাপাসিটি চার্জ) দিতে হচ্ছে। এতে প্রতিবছর বাড়ছে ভর্তুকি। গত দেড় দশকে পাইকারি পর্যায়ে ১২ বার ও খুচরা পর্যায়ে ১৪ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে মোটা অঙ্কের লোকসান গুনছে পিডিবি। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, তাদের বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট। একই সময় তারা সরবরাহ পেয়েছে ৬ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। ১ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে আরইবির এলাকায়। বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাবে দেখা যায়, সারা দেশে এক ঘণ্টা লোডশেডিং করা হলে ৯৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়। এ হিসাবে ২ হাজার মেগাওয়াট ঘাটতির জন্য দুই ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং করতে হয়। এদিকে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভূতুড়ে বিল তৈরিসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা সদর বাজারের চৌরাস্তায় ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন বাংলাদেশ ইলেক্টিশিয়ান ফেডারেশনের উপজেলা শাখা, ছাত্র-সমাজ ও এলাকার জনসাধারণ। এসময় বক্তারা পল্লী বিদ্যুতের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে সাত দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো- ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিল বন্ধ, মিটার দেখে বিল প্রনয়ণ, গ্রহকের বাড়ীতে বিদ্যুৎ বিল পৌঁছানো, ট্রান্সফার নষ্ট হয়ে গেলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কোনপ্রকার অর্থ ছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ, ডিমান্ড চার্জ যৌক্তিকভাবে কমানো, সকল গ্রাহককে সমান মর্যাদায় সেবাপ্রদান ও কোন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করতে হলে অবশ্যই আগাম মাইকিং করা। তারা অবিলম্বে এসব বাস্তবায়নের দাবি জানান। আলফাডাঙ্গা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম ফাহিম হোসেন জানান, কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে গ্রাহকরা আমাদের নিকট জানাতে পারেন। বিল তৈরীতে কোনো অনিয়ম হয়নি। গ্রাহকের বাড়িতে গিয়েই রিডিং অনুযায়ীই বিল তৈরি করা হচ্ছে। বৈষম্য নিপাত যাক, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মুক্তি পাক’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধন কর্মসুচি ও কর্মবিরতি পালন করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জেলা সদরের জগন্নাথপুরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয় চত্বরে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি কর্মসুচি করেন তারা। সিলেট বড়লেখা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আজিমগঞ্জ অভিযোগ কেন্দ্র থেকে দুর্নীতির অভিযোগে বদলি সেই ইনচার্জ জাহাঙ্গীর সিকদারকে ২৮ এপ্রিল পুনরায় আজিমগঞ্জ অভিযোগ কেন্দ্রে পদায়ন করা হয়। যোগদানের মাস না পেরুতেই ফের তার বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানি ও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধের অভিযোগ তদন্তে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক এবিএম মিজানুর রহমান তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে তিনি উৎকোচ নেননি মর্মে লিখিত নেওয়ার জন্য ভুক্তভোগীদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন।
##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত
দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান
ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই
বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪
পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা
মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি
জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী
মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান
বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির
একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১
কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু
সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক
‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান
যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ
ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১
ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী
মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে
মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন
গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ