গাজীপুরে আ.লীগ নেতাদের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বিএনপির সুবিধাবাদীদের
০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
গাজীপুরে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির এক শ্রেণির নেতাদের সাথে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপির ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাদের কোণঠাসা করে রেখে সম্মিলিতভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন সুবিধা নিতে ব্যস্ত। এদের নানা গুজব, অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন বিএনপির ত্যাগী নেতারা। অপপ্রচারে অনেকে রীতিমত আতঙ্কেও রয়েছেন। কেউ কেউ বাসা-বাড়ি ছেড়ে পালিয়েও বেড়াচ্ছেন বিগত ফ্যাসিবাদ আমলের মতো।
স্থানীয় বিএনপির তৃণমুল নেতাকর্মীরা জানান, জনপ্রিয়তাই কাল হয়ে দাঁড়ায় গাজীপুর জেলা বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক সাইজুদ্দিন আহমেদের। তিনি কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদকও। বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের সময় সবচেয়ে বেশি হামলা-মামলা নির্যাতনের শিকার সাইজুদ্দিন নিজের ব্যবসা বাণিজ্য ও সহায় সম্পত্তিও হারিয়েছেন। সাবেক মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও গাজীপুরের সাবেক এসপি হারুন অর রশিদের সহযোগিতায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা সাইজুদ্দিনের কয়েক কোটি টাকার বৈধ জমি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান জবরদখল করে নেয়।
এর আগে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে এলাকা ছাড়া করা হয়। ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাইজুদ্দিন নিজের বেদখল হওয়া জমি ও একটি দোকান সম্প্রতি পুনরুদ্ধার করেন। এ ঘটনায় বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় তাকে ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ, ঝুট ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে অপপ্রচার চালানো হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট ও দফতরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করা হয়।
কালিয়াকৈর পৌর বিএনপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন আকুল বলেন, এলাকায় সাইজুদ্দিনের উপস্থিতি আওয়ামী লীগ নেতারা কখনই মেনে নিতে পারেননি। কারণ তিনি এলাকায় অবস্থান করলে দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি ও পেশার সাধারণ মানুষ তার কাছে ভিড় জমান। তিনি সব সময় মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়ান। ফলে জনপ্রিয়তাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের যে সকল নেতাকর্মী এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত ছিলেন তারা এখন সাউজুদ্দিনকে হুমকি মনে করছেন। তাই বিগত দিনে তাদের অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ এখন সাইজুদ্দিনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক কাজে ব্যয় করছেন।
এদিকে বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের একাধিক মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করেন নগরীর গাছা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন খান। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বিএনপি দলীয় অন্যান্য প্রার্থীদের সাথে তিনিও দল থেকে বহিষ্কৃত হন। বহিষ্কৃত হওয়ার পরও আওয়ামী লীগের একাধিক হামলা-মামলার শিকার হন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গাজীপুর মহানগর যুবলীগ নেতা ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ওসমান গণি কাজলের নেতৃত্বে গত ২৪ জুলাই ফারুক হোসেন খানের বাড়ি ঘেরাও দিয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায় স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মীরা। ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের পরও থেমে নেই ফারুক খানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপির স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের।
গাছা থানা বিএনপি বর্তমানে আওয়ামী লীগে একাকার হয়ে গেছে অভিযোগ করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, ফারুক হোসেন খানের বাড়িতে হামলায় জড়িত যুবলীগ নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম মিলন ওরফে ভাঙ্গারী মিলন গাছা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতির হাত ধরে অঘোষিতভাবে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। সম্প্রতি যুবলীগ নেতা মিলন ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির অফিস উদ্বোধন করে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি করেন। একাধিক মামলার আসামি মিলনকে অবশেষে গ্রেফতার করে পুলিশ। আওয়ামী নেতা জসিম উদ্দিন খান, হামিম খান, কৃষকলীগ নেতা কামরুজ্জামান মুজা, সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ নেতা আরিফুল ইসলাম মন্ডল, মৎস্যজীবী লীগ নেতা রাজেদুজ্জামান সোহাগসহ অনেককেই গাছা থানা বিএনপির বর্তমান সভাপতি, সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদকের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক বজায় রেখে প্রকাশ্যেই ঘুরাফেরা করতে দেখা গেছে। পলাতক আওয়ামী লীগের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারাও বিএনপির এসব সুবিধাবাদী নেতার সাথে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রেখে ব্যবসা বাণিজ্যসহ এখনো সুবিধাজনক অবস্থান ধরে রাখছেন। এমনকি দলে যোগদানের আশ্বাস দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে সম্প্রতি কক্সবাজারে প্রমোদ ভ্রমণে যান গাছা থানা বিএনপির সভাপতি মনিরুল ইসলাম বাবুল।
এদিকে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা, সজিব ওয়াজেদ জয় ও গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ছবির সাথে গাছা থানা ওলামা দলের সভাপতি কাজী আব্দুল মোমেনের ছবিযুক্ত ব্যানার বানিয়ে ফেসবুকে অপপ্রচার চালানোরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কাজী আব্দুল মোমেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের গাজীপুর জেলা শাখার আইন বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম মন্ডলের বিরুদ্ধে গাছা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তিনি বলেন, দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কোণঠাসা করে রেখে পতিত স্বৈরশাসকের দোসররা গাছা থানা বিএনপির নিয়ন্ত্রণ নিতে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ছাইয়্যেদুল আলম বাবুল বলেন, আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আমরা অবশ্যই সজাগ রয়েছি। আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আমাদের দলের কারোর গোপন সম্পর্কের প্রমাণ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এছাড়াও জেলা বিএনপি নেতা সাইজুদ্দিনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাইজুদ্দিন বিগত দিনে আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে আমাদের সকল কর্মসূচিতেই সোচ্চার ছিলেন। তার মতো একজন ত্যাগী নেতার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র হলে তা হবে খুবই দুঃখজনক।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নিবন্ধন চূড়ান্ত: হজযাত্রী ৮৩ হাজার ২৪২ জন
হল্যান্ডের পেনাল্টি মিস,বিবর্ণ সিটি ফের হারাল পয়েন্ট
শরীফ থেকে শরীফার গল্প বাতিল করতে হবে: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
বিসিএ নির্বাচন সম্পন্ন: মিজান সভাপতি, মতিন সম্পাদক
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৩
বিএনপি মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী: শাহজাহান চৌধুরী
সচিবালয়ে আগুন: গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাকে দায়ী করলো এবি পার্টি
পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক
‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’
আশিয়ান সিটির স্টলে বুকিং দিলেই মিলছে ল্যাপটপ
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
লামায় ১৭টি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতঘর পুড়ে ছাই হওয়ার ঘটনায় ৪জন গ্রেপ্তার
বিজয় দিবস টেনিস শুক্রবার শুরু
আশুলিয়ায় ভাড়াটিয়া তাড়িয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ
আজানের জবাব দেওয়া প্রসঙ্গে।
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে নাকে খত দেওয়ার ঘটনায় মামলা
শরীয়তপুরে শ্রমিক দলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ