ভবিষ্যতে কেউ টাকা পাচার করলে ধরা পড়বে -অর্থ উপদেষ্টা
১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৭ এএম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের ক্ষেত্রে একটা পদচিহৃ রেখে যেতে চায় যাতে পরবর্তী সরকার এবং নীতি নির্ধারকের সেই পথটাকে অনুসরণ করতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অত্যন্ত সংকটপূর্ণ সময়ে আমাদের দায়িত্ব নিতে হয়েছে। বিগত সরকারের সময়ে আর্থিক খাতে বিশাল ক্ষতি হয়েছে। দ্রুত সংস্কার করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আর্থিক খাতকে ফলপ্রসুভাবে সংস্কার করতে হলে পদ্ধতিগতভাবে এগুতে হবে যাতে দেশের প্রান্তিক মানুষ এর সুফল ভোগ করতে পারে। বর্তমান সরকার অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর।
গতকাল শনিবার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের আয়োজনে ‘ফাইনান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক রিফর্মস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিনব্যাপী সংলাপে বিভিন্ন সেক্টরের নীতি নির্ধারক, ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনালস, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করে একটি টেকসই, স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কার্যকর কৌশল প্রস্তাব করেন। সংলাপ আয়োজনে একটি প্লেনারি সেশন, চারটি প্যানেল আলোচনা এবং প্রায় ১৫টি পোস্টার প্রেজেন্টেশনে দেশের আর্থিক খাতের গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ ও জরুরি সংস্কারের বিষয়গুলো উঠে আসে। সংলাপ অনুষ্ঠানে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল-ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজার, আর্থিক অপরাধ ও কমপ্লায়েন্স এবং ইকোনমিক পলিসি ও আর্থিক ব্যবস্থা।
সংলাপ অনষ্ঠানের ব্যাংকিং এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান এর বর্তমান প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা এবং উন্নতির সুযোগগুলো চিহ্নিত করা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়েছে। সেই সাথে আলোচকরা পুঁজিবাজারের দক্ষতা এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য উদ্ভাবনী কৌশল খুঁজে বের করার বিষয়টিও আলোচনা করেছেন। তারা আর্থিক অপরাধ ও নিয়ন্ত্রণসহ অর্থপাচার প্রতিরোধ, সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন প্রতিরোধ এবং মূলধন পাচার সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার উপায় বের করার চেষ্টা করেছেন। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা, মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতিমালা এবং কর সংস্কার নিয়ে নীতিমালা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান করা হয়।
এই সংলাপ অনুষ্ঠানে ‘অ্যাকশেনেবল ফাইনান্সিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক পলিসিস ফর অ্যান ইনক্লুসিভ, ইকুইটেবল অ্যান্ড প্রোসপেরাস বাংলাদেশ’ শীর্ষক উদ্বোধনী প্লেনারি সেশনে প্রধান বক্তা এবং প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার, ব্র্যাক ব্যাংকের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর সেলিম আর এফ হোসেন এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ফারজানা লালারুখ।
প্লেনারি সেশনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ডিন প্রফেসর মুজিবুল হক। একটি উন্নত বাংলাদেশ গঠনে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অঙ্গীকারের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। প্রফেসর মুজিবুল হক জানান, একটি শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সংস্কার প্রস্তাবের মাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জুলাই আন্দোলনে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বলেন, শিক্ষার্থীদের এই সাহসিকতাই এই আন্দোলন সফল করেছে এবং একটি অদম্য বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। তিনি তার বক্তব্যে ক্ষমতাসীনদের সততার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘মিথ্যা পরিসংখ্যান প্রকৃত উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করে।’ তিনি সতর্ক করে বলেন যে, ‘অর্থনীতি স্থিতিশীল না হলে সংস্কার সফল হবে না যা মানুষের জন্য হবে অত্যন্ত কষ্টের।’
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ফারজানা লালারুখ তার বক্তব্যে পুঁজিবাজারে সাধারণ মানুষের আস্থাহীনতাকে একটা বড় বাধা বলে উল্লেখ করেন। তিনি ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসির গুরুত্বের ওপর জোর দেন যা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে সচেতন করতে সহায়তা করবে।
সংলাপ অনুষ্ঠানের প্যানেল আলোচনাগুলোতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয়, লংকাবাংলা ফিন্যান্সের এমডি হুমাইরা আজম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জা মো. আজিজুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, সানেম-এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রাইহান এবং ইউএসএআইডি’র ইকোনমিক গ্রোথ অ্যান্ড গভর্নেন্স ডিরেক্টর মিখাইল ট্রুব্লাডসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক খাতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মাওলানা ভাসানীর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না: কাদের সিদ্দিকী
বন্যায় ভেসে আসা লক্ষাধিক গাড়ি নিয়ে চরম বিপাকে স্পেন
এক সপ্তাহে বৈরুতে ৫০ বার হামলা ইসরাইলের,বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলা, নিহত ৭
ময়মনসিংহে ইউপি চেয়ারম্যানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
শেরপুরে জেল পলাতক আসামি লিটন গ্রেপ্তার
গলফ ক্লাবে সম্মিলিত পরিষদের মেজবানি অনুষ্ঠিত
ট্রাম্প প্রশাসনে জ্বালানি মন্ত্রী হিসেবে ক্রিস রাইট নিযুক্ত
"মায়ের মৃত্যু বার্ষিকীতে আবেগঘন পোস্ট দিলেন ডিডি'র জমজ কন্যারা"
বাবাকে বানালেন মুক্তিযোদ্ধা, ভাতিজা হলো ছেলে! ফ্যাসিস্ট হাসিনার কোটা কেরামতি
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা নেমেছে ১৫.৮ ডিগ্রিতে
পাঁচবিবিতে কোয়েল পাখি পালনে হাসানের মাসে আয় লক্ষাধিক টাকা
গুম থেকে ফেরা শিবিরের ৩ নেতার অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল হচ্ছে আজ
শেরপুরে সাংবাদিক বকুলের ইন্তেকাল
ভেনেজুয়েলায় বিতর্কিত নির্বাচনের পর ১০৭ বন্দীর মুক্তি
অব্যাহত ইসরাইলি হামলায় প্রাণ গেলো আরও ৫২ ফিলিস্তিনির
শি জিনপিং-বাইডেন শেষ বৈঠকে চীন ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মাহিদুর রহমান ১৭ বছর পর দেশে ফিরেন
"পাম স্প্রিংস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ সন্মাননা পেতে যাচ্ছেন নিকোল কিডম্যান"
নাফ নদ থেকে অপহৃত ৫ জেলের একজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার