যুক্ত থাকা নূহা ও নাবা আলাদা ৩২ মাস পর বাড়ির পথে
২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
নূহা ও নাবা ১৪ দিন বয়স থেকে তারা রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। শুরুতে ওয়ার্ডে, পরে ৬১৮ নম্বর ভিআইপি কেবিনে বেড়ে উঠেছে তারা। এখানেই হাঁটতে শিখেছে। কথাও বলতে শিখেছে। তারা এই কেবিনকেই নিজেদের বাড়ি মনে করত।
গতকাল সোমবার ২ বছর ৭ মাস ২২ দিন বয়সে নূহা-নাবা হাসপাতালের বাড়ি ছেড়ে কুড়িগ্রামে নিজেদের বাড়ি ফিরছে। নূহা ও নাবার জন্ম হয় মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো অবস্থায়। শরীরের পেছন ও নিচের দিকে থেকে যুক্ত ছিল তারা। দুজনের পায়খানার পথও এক ছিল। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এদের বলা হয় কনজয়েন্ট টুইন পিগোপেগাস। এ ধরনের জোড়া শিশু অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করা দেশে এই প্রথম বলেই বলছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা।
চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি অস্ত্রোপচারের পর থেকে নূহা ও নাবা আলাদা দুই শিশু। সকাল ৯টার দিকে হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ৬১৮ নম্বর ভিআইপি কেবিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি পাল্টানোর মতো জিনিসপত্র সব বস্তায় ভরা হয়েছে। নূহা ও নাবা হেঁটে বেড়াচ্ছে। এই হাত ধরে দুই বোন হাঁটে তো একটু পরই মারামারি লাগে। একজন বাবার কোলে চড়লে অন্যজনও একই বায়না করে। তবে আগে যে বাবার কোল দখল করেছে, সে কিছুতেই সেখানে বোনকে ভাগ বসাতে দেবে না। নূহা তুলনামূলকভাবে শারীরিকভাবে বেশি সুস্থ, তাই সে বেশি হাসে। নাম জানতে চাইলে দুজনেরই দাবি তাদের নাম নাবা।
নূহা আর নাবা আনন্দে মেতে থাকলেও তাদের বাবা মো. আলমগীর হোসেন এবং মা নাসরিন আক্তার তেমনভাবে হাসতে পারছেন না। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তারা যাত্রা করছেন। পরিবহনশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন আলমগীর হোসেন। হাসপাতালে মেয়েদের সঙ্গে থাকতে হয়েছে বলে চাকরিটা চলে গেছে। এখন বেকার। ২৬ শতক জমি বন্ধক রাখতে হয়েছে। জমি বন্ধকের দুই লাখ টাকা আর চার লাখ টাকা ঋণসহ মোট ৬ লাখ টাকার ধাক্কা। বাড়ি ফিরলেই এ ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে। ১১ বছর বয়সী ছেলে নাফিউ হোসাইন পড়াশোনায় এক বছর পিছিয়ে গেছে। এখন সে পড়ছে তৃতীয় শ্রেণিতে। এ পর্যন্ত মেয়েদের ছোট-বড় সব মিলিয়ে প্রায় আটটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। আরও একটি বাকি আছে।
নূহা-নাবার মা নাসরিন আক্তার বলেন, মেয়েরা আলাদা হবে, এটা তো চিন্তাতেই ছিল না। মেয়েদের হাত ধরে বাড়ি যাচ্ছি, চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। প্রায় ৩২ মাস ধরে মেয়েরা জানত, এটাই তাদের বাড়ি। হাসপাতালের বাইরে তাদের নিয়ে মাঝেমধ্যে রমনা পার্ক আর চিড়িয়াখানায় বেড়াতে গেছি। প্রথম দিকে বাইরে নিলেই ভয় পেত।
বিএসএমএমইউর নিউরোসার্জারি বিভাগের স্পাইনাল নিউরোসার্জারি ডিভিশন প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেনের অধীনে বলেন, অবশেষে এই দুই শিশু হাসিমুখে বাড়ি ফিরছে, এটাই আমাদের সফলতা। মেরুদণ্ড জোড়া লাগানো থাকায় স্পাইনাল কর্ড আলাদা করাটাই সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তিনি জানালেন, আরেকটি অস্ত্রোপচার করা হবে। তখন তারা স্বাভাবিকভাবেই পায়খানা করতে পারবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বরিশালে জাতীয় মহাসড়কের ওপর নির্মিত পাক অপসারণে নগর ভবনকে সড়ক অধিদপ্তরের চিঠি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হাতাহাতি, আহত ৩
দুইবার আবেদন করেও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় মাল্টার নাগরিকত্ব পায়নি তারিক সিদ্দিকের পরিবার
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
এবি পার্টির জাতীয় কাউন্সিল শুরু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
মায়ের জন্য রান্না করা খাবার নিয়ে হাসপাতালে তারেক রহমান
রাজশাহীতে এবেলা ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
লোহিত সাগরে হুথিদের হামলায় পিছু হটল মার্কিন যুদ্ধজাহাজ
আশুলিয়ায় মেরামতের নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে
'বিয়ের গন্ডগোল' নিয়ে জোভান–তটিনী আত্মপ্রকাশ
ভারতে বসে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন ফ্যাসিস্টের দোসর আলাউদ্দিন নাসিম
রুশ জ্বালানিখাতে আবারও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
সিরিয়ার দামেস্কের মসজিদে পদদলিত হয়ে নিহত ৪ জন
কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসছে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল
খাদ্য পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজর রাখতে পুনর্গঠন হলো এফপিএমসি
দেশে অস্তিত্বহীন দলবাজরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করছে: জয়নুল আবদিন ফারুক
ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা
ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১২ বাংলাদেশি
লন্ডন ক্লিনিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সবশেষ যা জানা গেল
বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত: ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত