বেশি লুটপাট ব্যাংক খাতে
০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
গত সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে লুটপাট সবচেয়ে বেশি হয়েছে ব্যাংক খাতে। এ খাত লুটপাট হয়েয়ে দুই লাখ কোটি টাকার বেশি। প্রতিবেদনে ব্যাংক খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের জন্য ঋণ কেলেঙ্কারি, প্রতারণা, ভুয়া ঋণ ও ঋণের অপব্যবহারের বিভিন্ন ঘটনা চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় মদদে ব্যাংক দখলে সহায়তা করা হয়েছে। ব্যাংক খাত থেকে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে যে অর্থ লুট করা হয়েছে, তার বড় অংশই পাচার হয়েছে। লুটপাটের সারিতে এরপর ছিল ভৌত অবকাঠামো। এ দুটিসহ মোট চারটি খাতে এই সময়ে বেশি লুটপাট হয়েছে। বাকি দুটি খাত হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং তথ্যপ্রযুক্তি। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের লুটপাটের ফিরিস্তিতে বলা হয়েছে, এ খাতে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে এ খাতে যে লুটপাট হয়েছে, তা দিয়ে তিন-চারটি পদ্মা সেতু করা যেত। সরকারের সচিব, ব্যবসায়ী, নাগরিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং সংগঠনের সঙ্গে তিন মাস আলোচনা, পর্যালোচনা, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাইয়ের পর এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছে অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। যা আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর ২৮ আগস্ট দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন হয়। এই কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি এরই মধ্যে তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। আজ রোববার এই প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হবে। এ সময় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিবেদন আগামীকাল সোমবার প্রকাশ করার কথা রয়েছে।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির বাকি ১১ সদস্য হলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, ব্যবসায়ীদের গঠিত নীতি পর্যালোচনা সংস্থা বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো কাজী ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম. তামিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি ও বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম আরিফা সিদ্দিকী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কমিটির সদস্যরা আলাদা বিষয়ে একেকটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। পরে সব খাতের প্রতিবেদন একত্র করে মূল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে শ্বেতপত্র’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক ভারসাম্য, ব্যাংকিং খাত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সরকারের ঋণ, পরিসংখ্যানের মান, বাণিজ্য, রাজস্ব, ব্যয়, বড় প্রকল্প, ব্যবসার পরিবেশ, দারিদ্র্য ও সমতা, পুঁজিবাজার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী, জলবায়ু ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাদা অধ্যায় থাকবে। শ্বেতপত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আরেক কর্মকর্তা বলেন, শ্বেতপত্রের প্রতিবেদনের শিরোনাম হতে পারে ‘উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবায়ন’। ২৪টি অধ্যায়ে সন্নিবেশিত হবে দুর্নীতির বর্ণনা। প্রতিবেদনের ভূমিকা, উপসংহার ও অন্যান্য সংযুক্তি ছাড়াই কেবল অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরা হয়েছে ৪০০-এর বেশি পৃষ্ঠায়। আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনা পদ্ধতিই দুর্নীতিসহায়ক ছিল বলে উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, গত ১৫ বছরে সরকার যেভাবে অর্থনৈতিক কর্মকা- চালিয়েছে, সেই পদ্ধতিটিই ছিল দুর্নীতি ও অনিয়মকে উৎসাহিত করার। তাই এত বেশ দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে!
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায়ের ৮৫ কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা শেষে বলেন, বিগত সরকারের আমলে উন্নয়নের যে বয়ান দেওয়া হয়েছে, তা গভীর করার ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রশাসনের ভূমিকা ছিল। এমনকি সেই প্রক্রিয়ায় তারা আইনি কাঠামো অতিক্রম করে গেছে। বাস্তবতা হলো, প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে রাজনীতির কাছে জিম্মি ছিল।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে শ্বেতপত্র কমিটির একজন সদস্য বলেন, এস আলম গ্রুপের মতো প্রভাবশালী শিল্প প্রতিষ্ঠানের বড় অঙ্কের ঋণ খেলাপি হওয়া সত্ত্বেও খেলাপিদের শ্রেণীবদ্ধকরণ বা ক্লাসিফিকেশন করতে বাধা দিয়েছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেন, এ ধরনের হস্তক্ষেপের কারণে এস আলম গ্রুপ ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো সন্দেহজনক পরিস্থিতিতেও বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে গেছে। এভাবে ব্যাংকিং খাতে লুটপাট করা হয়েছে। যা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ করতে প্রকল্পের আওতায় অবৈধ জমি ও সম্পদ অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ভৌত অবকাঠামো খাতে দুর্নীতির জন্য রাজনৈতিক মদদপুষ্ট অলাভজনক প্রকল্প গ্রহণ, সম্পদের অপব্যবহার, প্রকল্পের মেয়াদ ও খরচ বৃদ্ধিকে অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন প্রকল্পের সম্পদ, গাড়ি ও ভ্রমণ খরচের অপব্যবহার করা হয়েছে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত লাভের জন্য। প্রকল্পের কাজ পেতে ঘুষ গ্রহণ একটি নিয়মিত চর্চায় পরিণত হয়েছিল আওয়ামী লীগের শাসনামলে।
এসব কাজ করা হয়েছে মূলত প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের জন্য। প্রকল্প থেকে অর্থ লুটপাটের জন্য প্রকল্প পাসের আগে কৃত্রিমভাবে খরচ বাড়ানো হয়েছে। পরে বাড়তি অর্থ নানাভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়। প্রকল্পের কেনাকাটার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাহীন দরপত্রের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের লোককে কাজ দেওয়া হয়েছে, বাদ দেওয়া হয় যোগ্য দরদাতাদের।
শ্বেতপত্র কমিটি সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রেও ব্যাপকভাবে স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে। বিশেষ করে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার বদলে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক বিবেচনাকে প্রাধান্য দিয়ে অতিমূল্যায়িত চুক্তি করা হয়। শুধু তা–ই নয়, বিভিন্ন প্রকল্পের সম্পদ, গাড়ি ও ভ্রমণ খরচের অপব্যবহার করা হয়েছে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত লাভের জন্য। প্রকল্পের কাজ পেতে ঘুষ গ্রহণ একটি নিয়মিত চর্চায় পরিণত হয়েছিল আওয়ামী লীগের শাসনামলে।
প্রতিবেদনে বাজার ব্যবস্থাপনার অকার্যকারিতার কারণ সম্পর্কে বলা হয়, বিগত ১৫ বছরে বাজারের স্বাভাবিক সরবরাহব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এর বদলে কারসাজির সরবরাহপ্রক্রিয়া তৈরির মাধ্যমে বাজারব্যবস্থাকে অকার্যকর করা হয়। সরকারের দিক থেকে বিভিন্ন গোপন তথ্য নির্ধারিত গোষ্ঠীর কাছে সরবরাহ করা হতো আর্থিক লাভের জন্য। বাজার ব্যবস্থাপনায় অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ মাথায় রেখে। কমিটি পদ্মা সেতু, পদ্মা রেলসংযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কর্ণফুলী টানেলের মতো বড় প্রকল্পগুলোর ওপর তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে করণীয় বিষয়েও সুপারিশ করেছে কমিটি। শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দুর্নীতি ও অনিয়মের জন্য সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে গড়ে উঠেছিল একধরনের আঁতাত। এ জন্য সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের ঘটনাও ঘটেছে।
ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) দাবি করেছে, ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ খাতে খরচ প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা, যার সিংহভাগই গেছে আওয়ামী লীগ সরকারঘনিষ্ঠ বিভিন্ন কোম্পানির ভান্ডারে। প্রতিযোগিতা এড়িয়ে যেমন খুশি তেমন দামে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিক্রির মাধ্যমে লুটপাট হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদরাই আজকের বাংলাদেশ- কক্সবাজারে শিল্প উপদেষ্টা
অতিরিক্ত সময়ে এন্দ্রিকের জোড়া গোলে জিতে শেষ আটে রিয়াল
গ্রিক সাইপ্রিয়ট প্রশাসনকে অস্ত্র বিক্রয়ের মার্কিন সিদ্ধান্তে টিআরএনসি-এর ক্ষোভ ও উদ্বেগ
নরসিংদীতে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৮
পাবনায় জনজীবনে ভয়াবহ হচ্ছে ভার্চুয়াল আসক্তি
মাঝ আকাশে ভেঙে টুকরো ইলন মাস্কের ‘স্টারশিপ’
বাংলাদেশ-ভারতকে অতীত কবর দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে: সুনন্দা কে দত্ত রায়
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন
সাইফ ইস্যুতে কেজরিওয়ালের বিস্ফোরক মন্তব্য, পাল্টা প্রতিক্রিয়া বিজেপি নেতার
ট্রাম্পের শুল্ক ছাড়াও চীনের অর্থনৈতিক সংকটে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ !
খেজুরের রস খেতে গিয়ে গাড়িচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
দিয়ালোর দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ইউনাইটেডের নাটকীয় জয়
আজারবাইজান-জর্জিয়া সম্পর্ক শক্তিশালীকরণে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
আসাদগেটে সিএনজি-ট্রাক সংঘর্ষ, একজনের মৃত্যু
মরক্কোতে নৌকা ডুবে ৪৪ পাকিস্তানির মৃত্যু
'বন্ধী মুক্তির চুক্তি' চূড়ান্ত জানিয়েছে নেতানিয়াহুর দপ্তর
সুদানের সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের
উ. কোরিয়ার ইউক্রেনে সামরিক অংশগ্রহণ একটি কৌশলগত ভুল : রব বাউয়ার
সাইফ তো লিস্টে ছিল না,হঠাৎ হামলা হয়ে গেছেঃ মমতা
ঘণকুয়াশায় সাড়ে ৫ ঘন্টা আরিচা-কাজিরহাট এবং ৪ ঘন্টা পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে