আমরা কোনো আগ্রাসন সহ্য করব না
০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মাইনরিটি শব্দ ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠি দেশের বাইরে থেকে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায়। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও আমরা কাউকে ছাড় দিব না। আমরা কোনো আগ্রাসন সহ্য করবো না। গতকাল কুমিল্লার ঐতিহাসিক টাউনহল মাঠে মহানগরী জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারত থেকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ নেই। দেশের প্রশ্নে জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, গত ১৬ বছর দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিয়েছে পতিত শেখ হাসিনার সরকার। মূলত পিলখানা হত্যাকা-ের মাধ্যমে দেশের অস্তিত্ব ধ্বংস করার মিশন শুরু করে আওয়ামী লীগ। এরপর ধাপে ধাপে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়।
মৌলিক সংস্কার করে যৌক্তিক সময় নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আমিরে জামায়াত বলেন, প্রশাসনের সর্বস্তরে সংস্কারের জন্য আমরা সরকারকে সময় দিয়েছি। প্রয়োজনে আরো দেবো। তবে মৌলিক সংস্কার করে যৌক্তিক সময় একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। ভারতীয় মিডিয়ার সমালোচনা করে আমিরে জামায়াত আরো বলেন, ভারতীয় মিডিয়ায় মিথ্যাচার চালিয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে করতে চেয়েছিলো। কিন্ত বাংলাদেশের মানুষ সেই পাতানো ফাঁদে পা দেয়নি। দেশের প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিলনা মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিশেষ করে জামায়াতের ওপর সবচেয়ে বেশি অবিচার করা হয়। জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের একে একে মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেয়া হয়। অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাদের কারাগারের রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়। দলীয় কার্যালয়গুলো অন্যায়ভাবে বন্ধ রাখা হয়। তবে এতো নির্যাতনের পরও আল্লাহর রহমত ও নেতাকর্মীদের ত্যাগের বিনিময়ে জামায়াতে ইসলামী টিকে আছে।
বিগত সরকার কুমিল্লা নামের ওপর অবিচার ও জুলুম করেছে মন্তব্য করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, কুমিল্লা নামে বিভাগ না দিয়ে একটি জেলার মানুষের প্রতি জুলুম করা হয়েছে। একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে একটি জেলার নামের প্রতি যে বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ তিনি দেখিয়েছেন এটা মেনে নেওয়ার মত নয়। দেশের এক ইঞ্চি মাটির প্রতি অবজ্ঞাকারী কোনো ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা নেই। আমিরে জামায়াত কুমিল্লা নামে বিভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানান। এছাড়াও বক্তব্যে তিনি কুমিল্লা বিমানবন্দর সচলের যৌক্তিকতাও তুলে ধরেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে বাস্তবভিত্তিক শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে নিজস্ব অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীরা পেশাগত দিক থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে যথাযথ মর্যাদা ও নিরাপত্তা পাবে। সর্বোপরি যোগ্যতার ভিত্তিতে সবাইকে মূল্যায়ন করা হবে।
জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা মহানগরীর আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কাজী দ্বীন মোহাম্মদের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের। বক্তব্য দেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, মাওলানা আব্দুল হালিম ও মাওলানা আবুল হাসানাত, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন ও মুহাম্মদ আব্দুর রব, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, মো. আব্দুস সাত্তার, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমীর অ্যাডভোকেট মো. শাহাজাহান, উত্তর জেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুল মতিন, ঢাকা মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা ইয়াছিন আরাফাত, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ড. মোবারক হোসাইন, কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর মুহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ড. সৈয়দ সরোয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, উত্তর জেলা সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম শহীদ, কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি কামরুজ্জামান সোহেল, অ্যাডভোকেট নাছির আহাম্মদ মোল্লা ও মোশাররফ হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবির কুমিল্লা মহানগর সভাপতি নোমান হোসেন নয়ন ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি হাফেজ ইউসুফ ইসলাহী। সঞ্চালনায় ছিলেন কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর একেএম এমদাদুল হক মামুন ও সেক্রেটারি মাওলানা মাহবুবুর রহমান।
বক্তারা বলেন, ভারত কখনই বাংলাদেশের বন্ধু ছিলনা। তারা ফ্যাসিস্ট হাসিনার অপকর্মের সহযোগিতা করে বাংলাদেশের ক্ষতি করছে। ভারত আমাদের প্রতি আগ্রাসী আচরণ করলে বাংলাদেশের মানুষ সর্বশক্তি দিয়ে মোকাবেলা করবে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদী ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেছে। আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ। একটি ইসলামিক রাষ্ট্রের স্বপ্নের হাতছানি আমাদের সামনে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভূমিকা রাখছে। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, মানবতার মুক্তির জন্য আমাদের মধ্যে ঐক্যের বন্ধন গড়ে তুলতে হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পরলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং :ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
কালীগঞ্জে রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীর সংবাদ সম্মেলন
গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
মিসরে প্রেসিডেন্ট সিসির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
কুর্দি যোদ্ধাদের ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি এরদোগানের
৩৫শ’ এজেন্টের অধিকাংশই গুজরাটের পাচারকারী
৫ সাংবাদিককে হত্যা করল ইসরাইল বিমান
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম