দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে আশুলিয়ার কাঁসা-পিতলের পণ্য
০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
এক সময়ে সোনালী ধাতুর রমরমা ব্যবসা ছিল কাঁসা পিতলের পণ্যের। চাহিদা থাকলেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এর জৌলুস হারাতে বসেছে। তবে এই শিল্পের সাথে জড়িতদের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক বা সংগঠন সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করলে এ শিল্প টিকে থাকবে বহুদিন এমনটাই প্রত্যাশা এ শিল্পের কারখানা মালিকদের।
সরেজমিনে আশুলিয়ার কাছর, মধ্যপাড়া, বাঘবাড়ি, কালিকাপুর, চাঙ্গিরদিয়া, বাড়ারিয়া, কান্ঠাপাড়া এবং লালারটেক এলাকা ঘুরে এ শিল্পের সাথে জড়িত বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই অঞ্চলে ২৬০টির বেশি বাড়ির কারখানায় কাঁসা ও পিতলের জিনিসপত্র তৈরি হতো। এর মধ্য চামচ তৈরির কারখানা ছিল প্রায় ২০০টি, বাটি তৈরীর কারখানা ছিল ৪০টি এবং শুধুমাত্র কাঁসার তৈরি বিভিন ধরনের পণ্য তৈরির কারখানার ছিল সংখ্যা ছিল ২৬টি।
২০ বছর আগেও ২০টিরও বেশি কাঁসা ও পিতলের কারখানা ছিল। এখন মাত্র ৬টি বাড়িতে এ শিল্প কারখানা টিকে আছে। এসব কারখানায় তৈরি হচ্ছে কাঁসা ও পিতলের খাবারের থালা, পানি খাওয়ার গ্লাস, চামচ, ফুলদানি, বেলের ঘণ্টাসহ নানা তৈজসপত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে , দুই দশক আগে কাঁসা পিতল কারখানায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত পিতলের কেজি ছিল ৭০ টাকা। অথচ বর্তমানে তা ৪০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এছাড়া কাঁসার কেজি ছিল ৪০০-৫০০ টাকা কি এখন তা দাঁড়িয়েছে ১৫০০ টাকায়। একই বছর ১ হাজার টাকা কেজি বিক্রি হওয়া রংয়ের বর্তমান বাজারমূল্য ২৩০০ টাকা। দস্তার কেজি ৫০ টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ২০০ টাকা। গত দুই দশকে কাঁসা ও পিতলের পণ্য তৈরীর কাঁচামালের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে কাঁসা পিতলের পণ্যের মূল্য। বিগত ২০০০ সালে কাঁসার এক কজি ওজনর একটি থালা ৭৫০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমান বাজারমূল্য ১৪০০-১৬০০ টাকা। দুই দশক আগে ১৫০ টাকায় পিতলের থালা পাওয়া গেলেও বর্তমান বাজারমূল্য ৬৫০-৭০০ টাকা।
কথা হয় আশুলিয়ার লালারটেক এলাকায় পিতলের ব্যবসায়ী নিতিশ সরকারের সাথে। তিনি ইনকিলাবকে জানান, তাদের পূর্ব পুরুষদের একমাত্র ব্যবসা এটি। বাপ-দাদার এ ব্যবসা তিনি প্রায় ৩০ বছর সময় ধরে টিকিয়ে রেখেছেন। কাঁসা পিতলের চাহিদা কমে যাওয়ায় তার সন্তানরা এ ব্যবসায় মনোনিবশ করবে বলে মনে হয় না।
তিনি আরো জানান, আশুলিয়ায় বর্তমানে টিকে থাকা ছয়টি কারখানার মধ্য তিনটি তার পরিবারর সদস্যদের।
নিতিশ সরকারর মতো আরো কয়কজন ব্যবসায়ী জানান, এ এলাকায় স্বাধীনতার পরও এ ব্যবসা জমজমাট ছিল। কিন্তু কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি , চাহিদা থাকলেও উৎপাদন কম ইত্যাদি কারণে এখন তাদের বেশিরভাগ পেশা বদল করত বাধ্য হয়েছেন। স্থানীয় জনসাধারণ ও এ ব্যবসায় জড়িতদের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, একসময় ছেলে ও মেয়েদের বিয়ের অনুষ্ঠান, খৎনাসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে কাঁসা ও পিতলের জিনিসপত্র উপহার দেয়া হতো। বর্তমানে এই রীতি প্রায় বন্ধ হয় পড়লেও সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষরা উপহার হিসেবে কাঁসা-পিতলর তৈরি কিছু জিনিসপত্র কিনে থাকেন ।
এছাড়া এসব পণ্য কেনার জন্য অন্য কাউকে তেমন পাওয়া যায় না। এখন কাঁসার ঘণ্টার পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে ইলক্ট্রনিক্স বল। থালা, কলসি, বাটি, ঘটিসহ ব্যবহারযোগ্য জিনিসপত্রর চাহিদাও এখন অনেক কমে গেছে। কাঁসা-পিতলের ব্যবহার কমিয়ে মানুষ এখন মেলামাইন ও প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার শুরু করেছেন। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পরলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং :ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
কালীগঞ্জে রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীর সংবাদ সম্মেলন
গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
মিসরে প্রেসিডেন্ট সিসির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
কুর্দি যোদ্ধাদের ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি এরদোগানের
৩৫শ’ এজেন্টের অধিকাংশই গুজরাটের পাচারকারী
৫ সাংবাদিককে হত্যা করল ইসরাইল বিমান
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম