তুর্কস্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনে হামলা, কৌশলগত চুক্তি করতে মস্কোয় গেলেন ইরানি প্রেসিডেন্ট

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য দায়ী : রাশিয়া

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৪ এএম

মস্কোর বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে যে দক্ষিণ রাশিয়ার একটি কম্প্রেসার স্টেশন, যা তুর্কস্ট্রিম পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আক্রমণ করা হয়েছিল, জাতিসংঘে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন।
‘১১ জানুয়ারী ক্রাসনোদার অঞ্চলে তুর্কস্ট্রিম পাইপলাইনের কম্প্রেসার স্টেশনে আক্রমণ কিয়েভ শাসনের দ্বারা পরিচালিত ধারাবাহিক আক্রমণের মধ্যে একটি। আমি উল্লেখ করতে চাই যে এর কিছুক্ষণ আগে, মেয়াদোত্তীর্ণ ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন দিয়ে ইউরোপে গ্যাস পরিবহনের চুক্তি সম্প্রসারণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন,’ ইউক্রেন সম্পর্কিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে নেবেনজিয়া উল্লেখ করেছিলেন।
‘আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে যে তুর্কস্ট্রিম অবকাঠামোতে আক্রমণটি ওয়াশিংটন এবং লন্ডনের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়েছিল, যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা দামি তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর ইইউকে আকৃষ্ট করতে আগ্রহী। মনে রাখার বিষয় হল, এই দুটি দেশই ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে সন্ত্রাসী হামলার নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত শুরু করতে বাধা দেয়। সিদ্ধান্তগুলি স্পষ্ট, বলতে গেলে,’ রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আরও বলেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আগে জানিয়েছে যে, কিয়েভ রাশিয়ার দক্ষিণ ক্রাসনোদার অঞ্চলে একটি কম্প্রেসার স্টেশনে হামলা চালানোর জন্য নয়টি ড্রোন ব্যবহার করেছে যাতে তুর্কস্ট্রিম পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হয়। তবে, কম্প্রেসার স্টেশনটি স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে।
কৌশলগত চুক্তি করতে মস্কোয় গেলেন ইরানি প্রেসিডেন্ট : দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত চুুক্তি করতে রাশিয়া সফরে গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। চুক্তির পাশাপাশি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি। এ বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে তার দেশের যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি সই হতে যাচ্ছে তা বিশ্বকে আরও বেশি ‘ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গত’ করবে।
ক্রেমলিন গত সোমবার ঘোষণা করেছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের রাশিয়া সফরের সময় শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এই চুক্তি সই হবে। রুশ গণমাধ্যম স্পুৎনিকে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, ইরান ও রাশিয়া তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব উপলব্ধি করে একটি নতুন ব্যবস্থা তৈরি করছে যেখানে আধিপত্যের পরিবর্তে সহযোগিতা এবং চাপিয়ে দেওয়া নীতির পরিবর্তে সম্মানকে প্রাধান্য দেয়া হবে।
আরাকচি বলেন, ইরান ও রাশিয়া দু’দেশের জনগণের জন্য এমন একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত নির্মাণের চেষ্টা করছে যা থেকে বিশ্বের অন্যান্য স্বাধীনচেতা জাতিও উপকৃত হবে। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে ইরান-রাশিয়া সম্পর্ক বারবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের দু’টি শক্তিশালী ও বৃহৎ দেশ ইরান ও রাশিয়া একটি নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার দেশ ও রাশিয়া উভয়ে এক মেরুকেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থার বিরোধী এবং অপর দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপও পছন্দ করে না। নিবন্ধে তিনি আরও লিখেছেন, ইরান-রাশিয়া সহযোগিতা শুধু একটি দ্বিপক্ষীয় লেনদেন নয় বরং যেসব দেশ জাতীয় সার্বভৌমত্ব, ন্যায়বিচার ও বহু মেরুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা চায় তাদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। আরাকচি বলেন, ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে ২০ বছর মেয়াদি কৌশলগত অংশীদারত্বের চুক্তি নিছক কোনো রাজনৈতিক দলিল নয় বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি রোডম্যাপও বটে। দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা শক্তিশালী করা এই চুক্তির মূল লক্ষ্য হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। সূত্র : তাস, রয়টার্স।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকিয়ে ইইউ
ভারতের উদ্বেগের মধ্যে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান
সান্ত¡না খুঁজে পাচ্ছেন না, দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ
দুর্নীতির মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির কারাদণ্ড
আরও

আরও পড়ুন

খুশদীলের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রংপুরের আটে আট

খুশদীলের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রংপুরের আটে আট

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক দেশের ভিসা

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক দেশের ভিসা

মেডিকেল কলেজে শিক্ষক বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার

মেডিকেল কলেজে শিক্ষক বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার

ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি আজ

ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি আজ

গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন

গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকিয়ে ইইউ

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকিয়ে ইইউ

ভারতের উদ্বেগের মধ্যে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান

ভারতের উদ্বেগের মধ্যে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান

সান্ত¡না খুঁজে পাচ্ছেন না, দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ

সান্ত¡না খুঁজে পাচ্ছেন না, দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ

দুর্নীতির মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির কারাদণ্ড

দুর্নীতির মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির কারাদণ্ড

বিদেশে টাকা পাচারের রাজনীতি মানুষ চায় না : পীর সাহেব চরমোনাই

বিদেশে টাকা পাচারের রাজনীতি মানুষ চায় না : পীর সাহেব চরমোনাই

শেখ পরিবারের রক্তের জন্যই দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন টিউলিপ -রিজভী

শেখ পরিবারের রক্তের জন্যই দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন টিউলিপ -রিজভী

নামাজ মু’মিনের জন্য মেরাজস্বরূপ

নামাজ মু’মিনের জন্য মেরাজস্বরূপ

ক্রেডিট কার্ডে বিদেশে বাংলাদেশিদের লেনদেন কমেছে

ক্রেডিট কার্ডে বিদেশে বাংলাদেশিদের লেনদেন কমেছে

স্বনির্ভর অর্থনীতির পথে দেশ

স্বনির্ভর অর্থনীতির পথে দেশ

বগুড়ার বিমানবন্দর দ্রুত চালুর দাবি

বগুড়ার বিমানবন্দর দ্রুত চালুর দাবি

আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশকে মানবাধিকার লংঘন বন্ধ করতে হবে : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশকে মানবাধিকার লংঘন বন্ধ করতে হবে : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

হাজারীবাগের ট্যানারির গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

হাজারীবাগের ট্যানারির গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র দেওয়া জরুরি : নুরুল হক নুর

জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র দেওয়া জরুরি : নুরুল হক নুর

গণঅভ্যুত্থানের ইশতেহারে বিএনপির ভূমিকা লিখতে হবে : জয়নুল আবদিন

গণঅভ্যুত্থানের ইশতেহারে বিএনপির ভূমিকা লিখতে হবে : জয়নুল আবদিন

নির্বাচনে রাজনৈতিক নেতাদের পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে

নির্বাচনে রাজনৈতিক নেতাদের পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে