বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থা আলেমদের হাতেই নিরাপদ
১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:২০ এএম | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:২০ এএম
বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেছেন, আমাদের ক্ষয়ে যাওয়া সমাজ ঠিক করতে হলে আলেম সমাজের বিকল্প নেই। এ জন্যে আলেম সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। মূলত সমাজটা নষ্ট করেছেন রাজনীতিবিদরা। তারা আল্লাহর ওলিদের অবমাননা করেছেন। তিনি বলেন, ড. ইউনূস সাহেবের মতো লোকের পক্ষে আমাদের সমাজব্যবস্থা সঠিক পথে নেওয়া সম্ভব হবে না। এ সমাজ ঠিক করা আলেমদের দ্বারাই সম্ভব। তাই আমি বলবো, রাষ্ট্র মেরামতের কাজ আলেম সমাজের হাতে দেওয়া হোক। গতকাল শুক্রবার চাঁদপুর ইসলামপুর দরবার শরীফের ৮১তম ইসালে সওয়াব মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক বলেন, হিন্দু, মুশরিক, কাফেরদের রাজা-বাদশারা এতদ্বাঞ্চল শাসন করেছিলেন। সেখান থেকে ডজন ডজন অল্লাহর অলির দাওয়াতে আজ হাজার কোটি মানুষের মধ্যে শত কোটি মুসলমান। কয়েক ডজন ওলি সমাজটা তৈরি করে গেছেন। তিনি বলেন, আজকে যে রাষ্ট্র নিয়ে আমরা বড়াই করি, এটা করবো সেটা করবো, তা কিন্তু বহু আগেই মুসলমানরা করে গেছেন। যখন মুসলমানদের শিক্ষা-দীক্ষা ছিল না। কিভাবে কাপড় পরিধান করতে হতো তাও তারা জানতো না। তখন কিন্তু আল্লাহর ওলিরাই আমাদেরকে এগুলো শিখিয়ে ছিলেন। আমার দাদা হযরত শাহ ইয়াসিন (রহ.) পর্যায়ক্রমে একই কাজ করে গেছেন। তারা নিঃস্বার্থে দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে গেছেন। নিজেদের প্রাপ্তির জন্য কখনই কিছু ভাবেননি। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে তারা দ্বীনের দাওয়াত দেয়নি। তারা ইসলামী সমাজ তথা সৎ ঈমানদার, দক্ষ সমাজ তৈরি করতে কাজ করে গেছেন।
এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ভালো মানুষের অভাব। ড. ইউনুস সাহেবের মত যদি ১০০ জন মানুষও সামনে থাকেন তাও সম্ভরপর হবে না। মানুষের কোয়ালিটি যে পর্যায়ে ডিগনেট হয়ে গেছে। মানুষ যে পর্যায়ে খারাপ হয়ে গেছে। ড্রাগস থেকে শুরু করে বেহায়া, বেহাল্লেপনা, মিথ্যাচার, ঠকবাজি, ধোঁকাবাজিতে ভরে গেছে। ড. ইউনুস সাহেব এদেরকে সঠিক পথে আনতে পারছেন না। এই কাজটি একমাত্র করতে পারবেন তারাই, যারাই এই সমাজ তৈরি করে গিয়েছিলেন। অর্থাৎ আলেম সমাজ। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি মক্তব তৈরি করে নামাজের জায়গায় বসে মানুষকে সঠিক পথের দিশা দিতেন।
মূলত সমাজ নষ্ট করেছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। তারা আল্লাহর ওলিদের অবমাননা করেছেন। তাই রাষ্ট্র মেরামতের কাজ একমাত্র আলেম সমাজের মাধ্যমেই করা সম্ভব। রাষ্ট্রের কাজটা আজ ফ্রিতে করে দিচ্ছে আলেম সমাজ। সরকারি টাকায় বড় বড় অবকাঠামো উন্নয়ন করা যাবে। লক্ষ কোটি দিয়ে টাকা দিয়ে অনেক ট্রাকসার করা হয়েছে, তার কোনো অস্থিত্ত্ব আছে, থাকবে না। টাকা পয়সার মদদে কারো কোনো ট্রাকসার, ইতিহাস ও কল্পকথা বানালে তা টিকবে না।
তিনি আরো বলেন, বিয়ে থেকে এখন তালাক বেশি হয়ে গেছে। ঘরে ঘরে অশান্তি। এতে মাদরাসা শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব বেড়েছে। কারণ তারাই সুখে থেকে শান্তিতে ঘর সংসার করতেছে, সমাজকে লিট দিচ্ছে। গার্মেন্টস কিংবা কর্পোরেট হাউজে যারা চাকরি-বাকরি করছেন তারা কিন্তু ঘর সংসার করতে পারছেন না। সমাজ তৈরি করতে পারছে না। টাকা পয়সা রোজগার করছেন। এতে নিজেদের জীবনে যেমন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি সমাজের জন্য ক্ষতি বয়ে আনছেন। শুধুমাত্র একজন মানুষ তৈরি মনোভাব নিয়ে মাদরাসা শিক্ষার প্রতি সবাই এখন গুরুত্ব আরোপ করছেন। এ মনোভাব পরিবর্তনে আলেম সমাজের গুরুত্ব অপরিসীম।
যারা রাজনীতি করতেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় আছেন, রাষ্ট্র পরিচালনার স্বপ্ন দেখতেছেন। তারা কিন্তু আগে দিল ঠিক করেন। ইসলামী সমাজ, ইসলামী রাষ্ট্র করার ব্যাপারে কে কতটুক কাছে আসবেন। এই বিশাল সম্মিলিত শক্তিকে কিভাবে কাজে লাগানো যায় তা ভেবে দেখবেন। তা না হলে যে অসভ্য সমাজ, অসভ্য রাজনীতি তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছেন। তার পরিণতি কিন্তু ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী ইসলামপুর দরবার শরীফের ৮১তম ইসালে সওয়াব মাহফিল প্রতিবছর ফুরফুরা শরীফের পীরে কামিল, মুজাদ্দিদে জামান, শাহছুফি আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আবু বকর ছিদ্দিকী আল কুরাইশী (রহ.) এর সুযোগ্য খলিফাদ্বয় পীরে কামিল আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহছুফি মো. ইয়াছিন (রহ). ও পীরে কামিল আলহাজ্ব ছুফি মো. খলিলুর রহমান (রহ). এর প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
গত বৃহস্পতি ও গতকাল শুক্রবার মাহফিলের বয়ান করেন ফুরফুরা দরবার শরীফ ভারত, আব্দুল্লাহিল মারুফ ছিদ্দিকী আল কোরাইশী, দেশের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মো. রুহুল আমিন আফসারী, আন্তর্জাতিক বক্তা আলহাজ্ব হযরত মাওলানা নেছার আহমাদ, পীরজাদা আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মু. কুতুবুল আজম খান, হযরত মাওলানা শরীফ হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, হযরত মাওলানা আমীর হোছাইন, মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান, হযরত মাওলানা মুহাম্মদ বেলাল হোসাইন চিশতী, মাওলানা মিজানুর রহমান, মাওলানা হোসাইন আহমেদ খলিফা, হাফেজ শাহ রহমতুল্লাহ, হাফেজ মোস্তফা ও হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমানসহ স্থানীয় ওলামায়ে কেরামগণ।
ইন্তেজামিয়া কমিটির পক্ষ থেকে মাহফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মাওলানা মো. জোবায়ের হোসাইন, মো. আবু জাফর ও ইসলামপুর দরবার শরীফ টাস্ট্রের ব্যবস্থাপক মো. আবুল খায়ের ফরায়জী।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
খুশদীলের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রংপুরের আটে আট
বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক দেশের ভিসা
মেডিকেল কলেজে শিক্ষক বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার
ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি আজ
গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকিয়ে ইইউ
ভারতের উদ্বেগের মধ্যে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান
সান্ত¡না খুঁজে পাচ্ছেন না, দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ
দুর্নীতির মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির কারাদণ্ড
বিদেশে টাকা পাচারের রাজনীতি মানুষ চায় না : পীর সাহেব চরমোনাই
শেখ পরিবারের রক্তের জন্যই দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন টিউলিপ -রিজভী
নামাজ মু’মিনের জন্য মেরাজস্বরূপ
ক্রেডিট কার্ডে বিদেশে বাংলাদেশিদের লেনদেন কমেছে
স্বনির্ভর অর্থনীতির পথে দেশ
বগুড়ার বিমানবন্দর দ্রুত চালুর দাবি
আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশকে মানবাধিকার লংঘন বন্ধ করতে হবে : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
হাজারীবাগের ট্যানারির গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্র দেওয়া জরুরি : নুরুল হক নুর
গণঅভ্যুত্থানের ইশতেহারে বিএনপির ভূমিকা লিখতে হবে : জয়নুল আবদিন
নির্বাচনে রাজনৈতিক নেতাদের পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে