ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ৯ মাঘ ১৪৩১

৪ ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের লুট প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা

Daily Inqilab অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৬ এএম

বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন আটটি ব্যাংকের মধ্যে চারটি ব্যাংক থেকেই ঋণের নামে এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ সূত্রে পাওয়া এই তথ্য পাওয়া গেছে। আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ওই গণমাধ্যমটি জানায়, নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চারটি ব্যাংক থেকে ঋণ জালিয়াতি করেছে ৯৩ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। এরমধ্যে ইসলামী ব্যাংক থেকে এক লাখ ৫৪৮৩ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ৪৭ হাজার ৬১০ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২৩ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ১৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। যদিও অভিযোগ রয়েছে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের রাষ্ট্রীয় মদদে এই অর্থ লুটপাট করা হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাকে। সুযোগ নিয়ে বিতর্কিত এস আলম গ্রুপ ব্যাংকিংখাতে অনিয়ম-লুটপাট ও অর্থপাচারের রাজত্ব কায়েম করেছেন। দেশ থেকে অর্থ পাচার করে সিঙ্গাপুর, কানাডা, অমেরিকা, দুবাই ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।

জানা যায়, এস আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নামে-বেনামে এবং প্রভাব বিস্তার করে শিল্পগোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রণাধীন চারটি ব্যাংক থেকে এই পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এস আলমের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা ছিল। ইসলামী ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ঋণের মাধ্যমে এক লাখ ৫৪৮৩ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। এরমধ্যে প্রত্যক্ষ অর্থের পরিমাণ ৮৫ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা, আর পরোক্ষ অনিয়মিত সুবিধা নিয়েছে ২০ হাজার ৩৮ কোটি টাকা।

পরোক্ষ সুবিধার মধ্যে বিভিন্ন শাখা হতে এস আলম ও তার পরিবারের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান নিয়েছে ৩৪ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। ব্যাংকের অফসোর ব্যাংকিং ইউনিট হতে ফরেন কারেন্সিতে ঋণ নিয়েছে ১৯ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। অসমন্বিত ইন্টার-ব্যাংক ডেবিট এ্যাডভাইস (আইবিডিএ) থেকে নিয়েছে ৮৬৭৫ কোটি টাকা। এছাড়া শাখা হতে বিভিন্ন বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে এস আলম ঋণ নিয়েছে ২২ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা।

এছাড়া ইসলামী ব্যাংকে থেকে পরোক্ষ সুবিধায় এস আলমের অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বানাতে বিনিয়োগ ও অগ্রীম নিয়েছে ৯৭৩৩ কোটি টাকা, অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্লেসমেন্ট হিসেবে বিনিয়োগ ৭০৪ কোটি টাকা, দুটি বন্ডে (মুদারাবা সাবঅরডিনেটেড বন্ড এবং মুদারাবা পারপিচুয়াল বন্ড) বিনিয়োগ ৭০৪ কোটি টাকা, ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড কর্তৃক এমটিডিআর হিসেবে বিনিয়োগ ৩৯৬ কোটি টাকা। এছাড়া কর্মীদের প্রভিডেন্ড ফান্ড এবং কর্মীদের গ্র্যাচুয়িটি ফান্ড থেকে মুদারাবা সেভিংস বন্ড হিসেবে বিনিয়োগ ৩৫০ কোটি টাকা, সিএসআর এর অর্থ জালিয়াতি ৪১২ কোটি টাকা , অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটে বিনিয়োগে ব্যাংকের ক্ষতি ৫০০ কোটি, কম মুনাফা ধার্য করার জন্য ব্যাংকের ক্ষতি ৫৬৫ কোটি এবং আর্থিক সুবিধা গ্রহণের উদ্দেশ্যে মুনাফা মওকুফ ১৭১ কোটি টাকা।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম নিয়েছে ৪৭ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এস আলম গ্রপ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বেনামি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি কর্তৃক লোপাট করা হয়েছে ৩৯ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা।
বিএফআইইউয়ের প্রতিবেদনে এসেছে, এস আলম তার নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকগুলো থেকে নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে তা ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। জানা গেছে, কর স্বর্গ ও ভুয়া কোম্পানিগুলোর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে (বিভিআই) বিতর্কিত বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে।

এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্তকারীদের মতে, গ্রুপটির চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ২০১১ থেকে ২০২৪ সালের আগস্টের মধ্যে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছাড়াই বিভিআইতে ১৮টি ভুয়া কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন। সাধারণত অর্থ পাচার করতে এসব কোম্পানি ব্যবহৃত হয়।
এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ঋণের মাধ্যমে এস আলম নিয়েছে ২৩ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে এস আলমের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে ২০ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা ঋণে। এছাড়া পরোক্ষভাবে এস আলম নিয়েছে ২৭৪১ কোটি টাকা।

জানা যায়, ব্যাংকটির বিভিন্ন শাখা থেকে এস আলম তার পরিবারের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়েছে ১৩০০ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ বের করে নিয়েছে ১৯ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। এছাড়া পরোক্ষ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এস আলম কর্তৃক পরিচালক নিয়োগ ও তার মালিকানাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আভিভা ফিন্যান্স লিমিটেডে বিনিয়োগসহ মোট আরও দুটি বিনিয়োগের মাধ্যমে মোট ২৭৪১ কোটি টাকা নিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক রিপোর্টে জানা যায়, এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ২৪৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার মাধ্যমে এই ঋণগুলো নেওয়া হয়। এসব ঋণের বেশিরভাগেরই কোনো ধরনের জামানত ছিল না। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক থেকে শিল্পগোষ্ঠীটি নামে বেনামে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিয়েছে ১৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। প্রতিবেদনে দেখা যায়, স্বনামে এস আলম গ্রুপের অনুকূলে ঋণ নিয়েছে ৮২৯ কোটি টাকা। এছাড়া এস আলম গ্রুপের বেনামি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ নেওয়া হয়েছে ১১ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা।

এদিকে, এস আলমের অর্থ পাচার নিয়ে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে দুদকেও। ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে এস আলমের অর্থপাচার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপর একই বছরের ১৩ আগস্ট এস আলমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশে অনুসন্ধানটি থমকে যায়। সম্প্রতি হাইকোর্টের আদেশ পেয়ে পুনরায় দুদকের অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়। দুদকের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ২০ নভেম্বর অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপপরিচালক মো. আবু সাঈদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল পুনরায় গঠন করা হয়।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন আটটি ব্যাংকের বোর্ডই ভেঙে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া আরও তিনটি বেসরকারি ব্যাংকসহ মোট ১১টি ব্যাংকের বোর্ড ভাঙে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশ শাসন করেছে আওয়ামী লীগ। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন হয়। এরপর পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা এস আলমসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা সংঘটিত দুর্নীতি ও আর্থিক অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই ব্যবস্থা নেওয়া আরও জোরদারের তাগিদের মধ্যেই এই তথ্য উঠে এলো।

এর আগে, গত অক্টোবরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ধনকুবের ও ব্যবসায়ীরা ব্যাংকখাত থেকে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। এর মধ্যে কেবল এস আলম-ই অন্তত ১০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে সিলেটজুড়ে স্বস্তি
রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে সমন্বয়ককে মারধর
এক বছরে উখিয়া-টেকনাফে ১৯২ জন অপহরণ
বাণিজ্যমেলায় শেষ মুহূর্তে নিত্যপণ্য কেনাকাটার ধুম
পঞ্চগড়ে চার বিচারক অপসারণে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
আরও

আরও পড়ুন

ভারতকে ছেড়ে কেন চীনের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে শ্রীলঙ্কা?

ভারতকে ছেড়ে কেন চীনের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে শ্রীলঙ্কা?

রাজনৈতিক উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে জাপান

রাজনৈতিক উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করবে জাপান

প্রবাসী উপদেষ্টার আশ্বাসে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছুদের আন্দোলন স্থগিত

প্রবাসী উপদেষ্টার আশ্বাসে মালয়েশিয়া গমনেচ্ছুদের আন্দোলন স্থগিত

মহার্ঘভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই: অর্থ উপদেষ্টা

মহার্ঘভাতার সঙ্গে ভ্যাট বাড়ানোর কোনো সম্পর্ক নেই: অর্থ উপদেষ্টা

পুরো বইমেলা মনিটরিং হবে ড্রোনে-ডিএমপি কমিশনার

পুরো বইমেলা মনিটরিং হবে ড্রোনে-ডিএমপি কমিশনার

যানবাহন চালক-পথচারীদের জন্য ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা

যানবাহন চালক-পথচারীদের জন্য ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা

মাস্ক বা অন্য কেউ টিকটক কিনলে বিনিয়োগ করবে প্রিন্স তালালের কোম্পানি

মাস্ক বা অন্য কেউ টিকটক কিনলে বিনিয়োগ করবে প্রিন্স তালালের কোম্পানি

মৃত বাবার রেখে যাওয়া ঋণ পাওনাদার নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে?

মৃত বাবার রেখে যাওয়া ঋণ পাওনাদার নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে?

খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকশিত হয় -ডিসি তৌফিকুর রহমান

খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের শারীরিক ও মানসিক বিকশিত হয় -ডিসি তৌফিকুর রহমান

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবি বিএসএফ বৈঠক

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবি বিএসএফ বৈঠক

জিয়াউল হক মাইজভা-ারী ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান

জিয়াউল হক মাইজভা-ারী ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে সিলেটজুড়ে স্বস্তি

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে সিলেটজুড়ে স্বস্তি

৪ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি আবু রেজা নদভী

৪ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি আবু রেজা নদভী

মাদারীপুরে জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবপাচারের আন্তঃসম্পর্কবিষয়ক কর্মশালা

মাদারীপুরে জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবপাচারের আন্তঃসম্পর্কবিষয়ক কর্মশালা

রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে সমন্বয়ককে মারধর

রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে সমন্বয়ককে মারধর

মাদারীপুরে হত্যার দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন

মাদারীপুরে হত্যার দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন

এক বছরে উখিয়া-টেকনাফে ১৯২ জন অপহরণ

এক বছরে উখিয়া-টেকনাফে ১৯২ জন অপহরণ

‘সমন্বয়ক মরার জন্য প্রস্তুত হ’ দেয়ালে লিখে হত্যার হুমকি

‘সমন্বয়ক মরার জন্য প্রস্তুত হ’ দেয়ালে লিখে হত্যার হুমকি

বিমানের এই কর্মকা- সহ্য করার মতো নয় -সিলেট সুধীজন

বিমানের এই কর্মকা- সহ্য করার মতো নয় -সিলেট সুধীজন

বাণিজ্যমেলায় শেষ মুহূর্তে নিত্যপণ্য কেনাকাটার ধুম

বাণিজ্যমেলায় শেষ মুহূর্তে নিত্যপণ্য কেনাকাটার ধুম