প্রশাসনে বঞ্চিতদের পিছু ছাড়ছে না ‘বঞ্চনা’ ত্রাণ সচিব মোস্তাফিজুর ও এমডি কামাল হোসেন নিয়োগ নিয়ে আমলাদের মাঝে ক্ষোভ

হাসিনার ‘আস্থাভাজনদের’ পদায়ন বাজার সস্তা

Daily Inqilab পঞ্চায়েত হাবিব

২৩ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৬ এএম | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৬ এএম


প্রশাসনে সচিব পদে নিয়োগ-পদায়ন ও বদলিতে গত ১৭ বছরের বঞ্চিত কর্মকর্তারা এখনো বঞ্চিত থাকছেন। অন্যদিকে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া হাসিনার ‘আস্থাভাজন’ কর্মকর্তাদের সচিব পদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদে নিয়োগ পাচ্ছেন। সব মিলে প্রশাসনে আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের পদায়নে সহজ বাজার হয়ে দাড়িয়েছে।অন্যদিকে গত ১৭ বছরের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদায়ন ও পদোন্নতিতে চলছে কঠিন(মন্দা)বাজারে পরিগন হয়েছে। হাসিনা সরকারের আস্থভাজন কর্মকর্তা হলেই প্রশাসনে সহজেই পদায়ন,পদোন্নতি এবং বদলী করা হয়। প্রশাসনে বঞ্চিতদের পিছু ছাড়ছে না ‘বঞ্চনা’। গত বৃহস্পতিবার প্রশাসনে ১৯৪ জন উপসচিবকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট ও বিতর্কিত ২৪তম ব্যাচ প্রশাসন ক্যাডারের যে সকল অফিসার যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।সেখানে অনেক যোগ্য ও মেধাবীদের বাদ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অথোরিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো.মোস্তাফিজুর রহমানকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করেছিল অন্তবর্তী সরকার। কিন্তু এর মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় তাকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হলে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। সরকারি নথিপত্রে সচিব পদমর্জাদার ওই কর্মকর্তাকে ওএসডি করার সুনিদৃষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ না থাকলেও বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আস্থাভাজন হওয়ার বিষয়টি তখন সামনে উঠে আসে। ফ্যাসিবাদি আ’লীগ সরকারের আস্থাভাজন মোস্তাফিজুর ত্রাণ সচিবের এতো ক্ষমতা। এই দুই সচিবের নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রশাসনে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এদিকে প্রশাসনে সিনিয়র সচিব কামাল হোসেন গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ধীরে ধীরে পদোন্নতির সব সোপান অতিক্রম করে ক্যাবিনেটের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব করা হয়। এরপর যান কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে। সেখানে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত হন।ঐ সময় তিনি একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন। বিশেষ করে তার ব্যাচমেট তোফাজ্জেল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর সচিব (পরবর্তীতে মূখ্য সচিব) হওয়ায় তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। করোনা পেন্ডেমিকের সময় সে খুলনা জেলায় করোনা প্রতিরোধ ও রিলিফ ওয়ার্কে সরকারের মুখ্য সমন্বয়কারী ছিলেন এবং তার নিজ জেলা খুলনাতে ত্রাণ কার্যে তদারকির দায়িত্ব পালন করেন। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলেই সে পিআরএলে গিয়ে গত ২০২৩ সাল থেকে আবার সরকারের একটি নতুন দপ্তরের প্রধান অর্থাৎ এনএইচআরডিএফ এর এমডি পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।বর্তমানে এনএইচআরডিএফ এর এমডির পদে বহলা রয়েছেন ফ্যাসিষ্ট সরকারের আস্থাভাজন কামাল হোসেন। তার বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ থাকলেও তা আমলে নেয়া হচ্ছে না দাবি জানিয়েছেন পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তারা। প্রশাসনে ফ্যাসিস্টদের দোসররা ঘাপটি মেরে বড় বড় মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।এবস কর্মকর্তারা অন্তর্বকালীন সরকারের কর্মকান্ডকে বিবর্ত করতে গোপনে বিভিন্ন ভাকে চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। আবার প্রশাসনে অনেক বঞ্চিত কর্মকর্তা সচিব পদে পদোন্নতি তালিকায় থাকলেও তাদের পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে না। ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে থাকার সচিব রয়েছে তাদের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম।

এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সমম্বয়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার ইনকিলাবকে বলেন, প্রশাসনে ফ্যাসিস্টদের দোসররা ঘাপটি মেরে বড় বড় পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এসব কর্মকর্তারা অন্তর্বকালীন সরকারের কর্মকান্ডকে বিবর্ত করতে গোপনে বিভিন্ন ভাকে চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। তা ক্ষতিয়ে দেখা উচিত। তিনি বলেন, অনেক বঞ্চিত কর্মকর্তা সচিব পদে পদোন্নতি তালিকায় থাকলেও তাদের পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে না। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী-লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া ‘আস্থাভাজন’ প্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তরা সচিব পদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদে নিয়োগ পাচ্ছেন। তা কিকারণে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে না। সে বিষয় গুলো আমাদের জানতে হবে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, গত বছরের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা চীন সফর থেকে ফিরে এসে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ বলে সম্বোধন করায় তা নিয়ে ব্যপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। ওই মাসে ৮ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত চীনের প্রধানমন্ত্রী লি শিয়াংয়ের আমন্ত্রণে শেখ হাসিনার সেখানে থাকার কথা থাকলেও সফর সংক্ষিপ্ত করে একদিন আগেই দেশে ফিরে আসেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ ওই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পিপিপি অথোরিটির সিইও মোস্তাফিজুর রহমান। গত ১৪ জুলাইয়ে দেওয়া সেই ব্ক্তব্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং এর ২২ দিনের মাথায় প্রায় ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েই প্রশাসনে নানা ধরনের সংস্কার আনতে শুরু করেন। মন্ত্রী-এমপিদের পদ বাতিল ঘোষণা, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধানদের অপসারণ শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয় পিপিপির সিইও মোস্তাফিজুরকে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন নিয়োগ-১ শাখা থেকে মোস্তাফিজুর রহমানকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে বদলি করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনা। ডিইউ নিউজ নামের একটি ফেইসবুক পেইজ থেকে গত ৪ মার্চ একটি পোস্টে পিপিপি অথোরিটি থেকে ওএসডি করা ওই সচিব কীভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে বদলি হয়ে আসলেন তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়। গত ৪ মার্চ রাত ১০.৫৪ ঘন্টায় প্রকাশিত ওই পোস্টে বলা হয়, শেখ হাসিনার ‘আস্থাভাজন’ পিপিপি দপ্তরের সচিবকে ফের সচিব পদে নিয়োগ দিলেন অন্তর্বর্তী সরকার! মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে উপসচিব, যুগ্ম সচিব এবং অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ২০২৪ সালের জুনে তাকে সচিব পদে পদন্নোতি দিয়ে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কতৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা করে শেখ হাসিনা সরকার। এই দপ্তরটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকায়, এখানে শুধু প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজনরাই দায়িত্ব পান এটি ওপেন সিক্রেট। কারণ এটি শেখ হাসিনা এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। যদিও পিপিপি অথোরিটিতে সিইও হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কাজ করেছেন এমন সহকর্মীরা বলছেন, মোস্তাফিজুর রহমান কাজে দক্ষ ছিলেন। এ কারণে হয়তো সরকার তাকে নতুন মন্ত্রণালয়ে বদলি করেছেন। এর বেশি কিছু তারা জানেন না। এমনকি তাকে ওএসডি করার কারণও তারা জানেন না।। এদিকে অন্তবর্তী সরকারের নিয়োগ দেওয়া সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর ডিসি নিয়োগ নিয়ে ঘুষ লেনদেনের খবর বের হতে থাকে। একইভাবে মোস্তাফিজুর রহমানের নিয়োগ নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। ডিইউ নিউজের পেইজে দেওয়া ওই পোস্টে আরও বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার তাকে ওএসডি করেছিল। অথচ, কোন এক অদৃশ্য শক্তির বলে মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় তাকে ফের সচিব পদে ফিরিয়ে আনা হলো, তাও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে! শেখ হাসিনার আস্থাভাজন এসব আমলাকে কারা পুনর্বাসন করছে? কিসের বিনিময়ে? কোন উদ্দেশ্যে? শেখ হাসিনার আস্থাভাজনদেরই পুনর্বাসন করবেন আর বলবেন আমলারা সহযোগিতা করছে না। এই দ্বিচারিতা কেন?’’ চাকরি জীবনে মোট ৫ বার ওএসডি হয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এর মধ্যে তিনবার পদোন্নতিজনিত কারণে এবং দুইবার প্রশাসনিক কারণে ওএসডি করা হয় তাকে। গত ১৯৯৪ সালের এপ্রিলে সহকারি সচিব হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। এর মধ্যে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে উপসচিব থাকা অবস্থায় প্রথম মোস্তাফিজুর রহমানকে ওএসডি করা হয়। ওই বার প্রশাসনিক কারণে তাকে বদলি করা হয়েছিল। ওই মাসেই তাকে আবার পদোন্নতিজনিত কারণে ওএসডি করা হয়। এরপর য্গ্মু সচিব হিসেবে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এবং অতিরিক্ত সচিব হিসেবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে পদোন্নতিজনিত কারণে ওএসডি করা হয়। সবশেষ ওএসডি হন প্রশাসনিক কারণে, পিপিপি অথোরিটির সিইও থাকা অবস্থায়। মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত সব পরীক্ষায়ই দ্বিতীয় বিভাগ/শ্রেণিতে পাশ করেছেন এই সচিব। তবে স্নাতকোত্তর শেষে নর্দান ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেছেন ২০০৯ সালে। সেবার তিনি প্রথম শ্রেণিতে পাশ করেন।

এদিকে সিনিয়ন সচিব কামাল হোসেন গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ধীরে ধীরে পদোন্নতির সব সোপান অতিক্রম করে ক্যাবিনেটের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব হন। এরপর যান কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে। সেখানে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত হন।ঐ সময় তিনি একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন। বিশেষ করে তার ব্যাচমেট তোফাজ্জেল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর সচিব (পরবর্তীতে মূখ্য সচিব) হওয়ায় তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন। করোনা পেন্ডেমিকের সময় সে খুলনা জেলায় করোনা প্রতিরোধ ও রিলিফ ওয়ার্কে সরকারের মুখ্য সমন্বয়কারী ছিলেন এবং তার নিজ জেলা খুলনাতে ত্রাণ কার্যে তদারকির দায়িত্ব পালন করেন। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলেই সে পিআরএলে গিয়ে ২০২৩ সাল থেকে আবার সরকারের একটি নতুন দপ্তরের প্রধান অর্থাৎ এনএইচআরডিএফ এর এমডি পদে যোগদান করেন। এই এমডি পদটি অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার।অথচ তিনি সিনিয়র সচিব থেকে বিদায় নিয়ে এই পদে ২০২৩ সালে ক্ষমতার জোরে ঢুকেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন অর্গানাইজেশকে ফান্ডিং করতে পারেন নি। এখানে প্রত্যেকটা ফাংশনিং করার কথা ছিল। পলিসিতে ১২টি সেক্টর যেমন লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, কনসটাকশন, সিরামিক, আরএমজি, ফুড এ্যান্ড বেভারেজ, লেদার গুডস এ্যান্ড ফুটওয়্যার, কৃষি, আইটি, ট্যুরিজম এ্যান্ড হসপিটালিটি, ফার্মসিটিক্যালস ইত্যাদি সেক্টরগুলোতে আএসসি -এর মাধ্যমে কয়েক হাজার বেকার যুবককে স্কিল ট্রেনিং করে উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলে বেকার সমস্যার সমাধান করার কথা ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত এটার কিছুই হয়নি।, শুধু বেতন দিয়েই খালাস। তাছাড়া কামাল হোসেন অত্যন্ত মেজাজী স্বভাবের এবং তার কাছে কেউ ভিড়তে পারে না বলে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়। স্বৈরাচারের ল্যাসপেন্সার হয়েও এখনো চাকরিতে বহাল থাকা একটা বিষ্ময়কর ব্যাপার। জুলাই আগস্ট এর গণআন্দোলন, অভ্যুত্থান ও রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের পরেও কামাল তার দপ্তরে ফ্যাসিবাদি সরকার কর্তৃক উপহৃত পদে অটুট রয়েছেন, কি সৌভাগ্য কামালের। করোনার প্রকোপের সময় ২০২০ সালে ৬৪ জেলার প্রান্তিক জনগণের সহায়তায় দায়িত্ব পালন করা ৬৪ জন সাবেক সচিবের আমলনামা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে তাদের সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে যাচাই চলছে। এই সময়ে ‘লকডাউন’ চলাকালে প্রান্তিক মানুষকে সরাসরি সহায়তার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, কিন্তু এতে ত্রাণ ও টাকা বিতরণে প্রভাব বিস্তার, ডিসিদের ওপর ক্ষমতার অপব্যবহার এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, ৬৪ জেলায় দায়িত্ব পালন করা সাবেক সচিবদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তারা এই সহায়তা কার্যক্রম নিজেদের ইচ্ছামতো পরিচালনা করেছেন এবং অনেকেই জনগণের কাছে ঠিকমতো সহায়তা পৌঁছাতে দেননি। গরীব ও অসহায় মানুষের তালিকা করার সময়ও তারা শত শত কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। করোনা সময়ের এই ৬৪ সচিবের অধিকাংশই এখন অবসরপ্রাপ্ত। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানাচ্ছে যে, এসব সাবেক সচিবের ভূমিকা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তাদের অধিকাংশই ‘কট্টর আওয়ামী সমর্থক’ ছিলেন এবং বিভিন্ন এলাকার মানুষের তালিকা ঠিকমতো না করিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো সহায়তা বিতরণ করেছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের দায়িত্বে থাকা প্রভাবশালী সচিব মো. কামাল হোসেন তখন খুলনা জেলার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান জানিয়েছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোভিড-১৯-এর সময় ত্রাণ ও টাকা বিতরণের অনিয়মগুলো খতিয়ে দেখা হবে। সেই সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবরা কী কী দায়িত্ব পালন করেছেন, সেসব তথ্য জানতে চাওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া প্রশ্ন উঠেছে যে, কিভাবে স্বৈরাচারের দোসর হয়ে এখনও কামাল হোসেন বহাল তবিয়তে একটা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে চাকরি করছেন! এবিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.মোস্তাফিজুর রহমান ও এনএইচআরডিএফ এর এমডি কামাল হোসে ফোন ধরেনি। ##

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ভূমি সচিবকে হুমকি দিলেন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সুজন মোল্যা
যারা লুটপাট করে তাদেরকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে
আমরা দেশপ্রেমিক সেনাদের ভালোবাসি -হাসনাত
জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি গসিপ -স্বরাষ্ট্রসচিব
হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে ট্রাইব্যুনালের সামনে শহীদ পরিবারের বিক্ষোভ
আরও
X

আরও পড়ুন

চেক ডিজঅনার : সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ

চেক ডিজঅনার : সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের আদেশ

বিগত স্বৈরতন্ত্রের সংবিধানের বদল হতেই হবে

বিগত স্বৈরতন্ত্রের সংবিধানের বদল হতেই হবে

বাংলাদেশ-চায়না চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ

বাংলাদেশ-চায়না চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ

ডিমের লোকসান ঘোচাতে স্বল্প সুদে ঋণসহ ৬ প্রস্তাব

ডিমের লোকসান ঘোচাতে স্বল্প সুদে ঋণসহ ৬ প্রস্তাব

লিপি খান ভরসার হাইকোর্টে জামিন

লিপি খান ভরসার হাইকোর্টে জামিন

ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : সাইফুল আলম

ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : সাইফুল আলম

পাঁচ দফা দাবি : নাটোরে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের কর্মকর্তাদের মানববন্ধন

পাঁচ দফা দাবি : নাটোরে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের কর্মকর্তাদের মানববন্ধন

বাউবিতে বেগম জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও ইফতার বিতরণ

বাউবিতে বেগম জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও ইফতার বিতরণ

স্ত্রীসহ মির্জা আজমের সম্পদ জব্দ, ৩১ ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি টাকা অবরুদ্ধ

স্ত্রীসহ মির্জা আজমের সম্পদ জব্দ, ৩১ ব্যাংক হিসাবে ৩ কোটি টাকা অবরুদ্ধ

নেত্রকোনায় পাহারাদারকে হত্যা করে গরু লুট : আরো ৫ ডাকাত গ্রেফতার

নেত্রকোনায় পাহারাদারকে হত্যা করে গরু লুট : আরো ৫ ডাকাত গ্রেফতার

দেবিদ্বারে সাংবাদিক সমিতির কমিটি গঠন

দেবিদ্বারে সাংবাদিক সমিতির কমিটি গঠন

ভূমি সচিবকে হুমকি দিলেন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সুজন মোল্যা

ভূমি সচিবকে হুমকি দিলেন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সুজন মোল্যা

যারা লুটপাট করে তাদেরকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে

যারা লুটপাট করে তাদেরকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে

ঢাবি সাংবাদিক সমিতির নতুন সাধারণ সম্পাদক মাহাদী হাসান

ঢাবি সাংবাদিক সমিতির নতুন সাধারণ সম্পাদক মাহাদী হাসান

আমরা দেশপ্রেমিক সেনাদের ভালোবাসি -হাসনাত

আমরা দেশপ্রেমিক সেনাদের ভালোবাসি -হাসনাত

জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি গসিপ -স্বরাষ্ট্রসচিব

জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি গসিপ -স্বরাষ্ট্রসচিব

মাদারীপুরে শ্রমিকদল সভাপতিকে হত্যা

মাদারীপুরে শ্রমিকদল সভাপতিকে হত্যা

খুলনায় গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৩

খুলনায় গৃহবধূকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৩

হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে ট্রাইব্যুনালের সামনে শহীদ পরিবারের বিক্ষোভ

হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে ট্রাইব্যুনালের সামনে শহীদ পরিবারের বিক্ষোভ

অগ্নিকা-ের ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও পুনরাবৃত্তিরোধে তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে : গোলাম পরওয়ার

অগ্নিকা-ের ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও পুনরাবৃত্তিরোধে তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে : গোলাম পরওয়ার