গুচ্ছের পক্ষে থাকায় ভিসির সামনেই জবি শিক্ষককে মারধর ; সিসিটিভি ফুটেজও গায়েব

Daily Inqilab জবি সংবাদদাতা

০৭ এপ্রিল ২০২৩, ১২:২৩ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:২৬ পিএম

দীর্ঘদিন থেকে চলা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দাবী সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণের থাকা না থাকার প্রশ্নে ইতিবাচক মত প্রদান করায় মারধরের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। এ ঘটনায় ধারণকৃত সিসি টিভি ফুটেজও গায়েব করে ফেলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কনফারেন্স রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫ তম বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল সভায় ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল কাদেরকে মারধরের ঘটনা ঘটে।

একাডেমিক কাউন্সিলের একাধিক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা যায়, একাডেমিক কাউন্সিল সভায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে বেড়িয়ে এসে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া এবং কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা করা হয়৷ আলোচনায় প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল কাদের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় থাকার পক্ষে মতামত দেয় এবং গুচ্ছে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগেই ভর্তি কমিটি গঠন করা হবে কেন প্রশ্ন তুলেন।

এসময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান, সদস্য ও সাবেক সভাপতি প্রফেসর ডক্টর মো. আবুল হোসেন বাক বিতণ্ডা শুরু করে। বাক বিতণ্ডার এক পর্যায়ে প্রফেসর আব্দুল কাদেরকে লুৎফর রহমান,আবুল হোসেনের সাথে আবদুল্লাহ আল মাসুদ, হাফিজুল ইসলাম, মুহাম্মদ আকরাম উজ্জামানসহ কয়েকজন মিলে অপর পাশ থেকে উঠে গিয়ে মারধর করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ট্রেজারার তাদের শান্ত করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়।

এ বিষয়ে মারধরের শিকার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশী হলেও, সে একজনও যদি হয়, তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেবো। একাডেমিক কাউন্সিল সভায় আমি একটু ভিন্ন মত দিয়েছি, ন্যায্য কথা বলেছি বলেই এত শিক্ষকের মাঝে আমার গায়ে হাত তুলেছে। এবিষয়ে আমি আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো। আইন বলতে তো ফৌজদারি আইনই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনও তো আছে।

সভায় উপস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ বলেন, আমি বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে রাজিনা। শুধু এটুকু বলবো ভালো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

অভিযুক্ত শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. একে এম লুৎফর রহমান বলেন, এখানে মারামারির ঘটনা ঘটেনি। সে খুব উত্তেজিত ছিলো। বসতে বলার পরও বসতে চাচ্ছিলো না। কয়েকজন তার ঘাড়ে চাপ দিয়ে বসিয়ে দিয়েছি। আর বিষয়টা মিটমাট হয়ে গেছে। আমরাও দুঃখ প্রকাশ করেছি, সেও স্যরি বলেছে।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক প্রফেসর ড. আইনুল ইসলাম বলেন, 'মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি। সে উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলো, তখন তাকে হাত ধরে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।'

সিসি টিভি ফুটেজ গায়েব হয়ে যাওয়ার বিষয়ে আইটি দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য বলেন, অনেক খোজাখুজি করেও সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়নি। টেকনিক্যাল ত্রুটির কারনে পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. ইমদাদুল হক বলেন, যাই ঘটেছে তা শিক্ষকদের কাছ থেকে কখনই কাম্য নয়। এই সভার একজন সদস্য হিসেবে পক্ষে বিপক্ষে কথা বলার অধিকার আছে। তবে শিক্ষকদের এমন ঘটনা দেখার জন্য প্রস্তত ছিলামনা। এর জন্য আমি লজ্জিত, মর্মাহত।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আজও ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
আকাশ মণ্ডল থেকে ইরফান, তদন্তে জানা গেলো আসল পরিচয়
জনগণের অংশগ্রহণেই নির্ধারিত হবে আমরা আসলে কী চাই : জোনায়েদ সাকি
নাগরিক কমিটির ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট ‘নির্বাহী কমিটি’ ঘোষণা
সচিবালয়ের কাগজ ভেবে দুটি ট্রাক আটকালো জনতা
আরও

আরও পড়ুন

ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে বিদেশি কর্মী, ভিসা নিয়ে বিতর্ক

ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে বিদেশি কর্মী, ভিসা নিয়ে বিতর্ক

আজও ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’

আজও ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’

মাদারীপুরের মুখে গামছা বাঁধা অবস্থায় শিশু শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

মাদারীপুরের মুখে গামছা বাঁধা অবস্থায় শিশু শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

বাংলাদেশের মানুষ ভারতের আধিপত্যবাদ রুখে দিবে: মিজানুর রহমান আজহারী

বাংলাদেশের মানুষ ভারতের আধিপত্যবাদ রুখে দিবে: মিজানুর রহমান আজহারী

টেনিস বল ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে অংশ নিতে নেপাল গেল সৈয়দপুরের দল

টেনিস বল ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে অংশ নিতে নেপাল গেল সৈয়দপুরের দল

আকাশ মণ্ডল থেকে ইরফান, তদন্তে জানা গেলো আসল পরিচয়

আকাশ মণ্ডল থেকে ইরফান, তদন্তে জানা গেলো আসল পরিচয়

পর্তুগালে জাসাসের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

পর্তুগালে জাসাসের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

আজারবাইজানের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ইউক্রেনকে দায়ী করলেন রুশ বিমান প্রধান

আজারবাইজানের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ইউক্রেনকে দায়ী করলেন রুশ বিমান প্রধান

প্রকাশ্যে এলো হানি-বাদশার দ্বন্দ্ব, গুরুতর অভিযোগ হানির

প্রকাশ্যে এলো হানি-বাদশার দ্বন্দ্ব, গুরুতর অভিযোগ হানির

বন্ধ হয়ে গেলো গাজার শেষ হাসপাতালটিও

বন্ধ হয়ে গেলো গাজার শেষ হাসপাতালটিও

মনমোহন সিংহ,ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া এক সাহসী ও দৃঢ় সংকল্পের নেতা

মনমোহন সিংহ,ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া এক সাহসী ও দৃঢ় সংকল্পের নেতা

জনগণের অংশগ্রহণেই নির্ধারিত হবে আমরা আসলে কী চাই : জোনায়েদ সাকি

জনগণের অংশগ্রহণেই নির্ধারিত হবে আমরা আসলে কী চাই : জোনায়েদ সাকি

নাগরিক কমিটির ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট ‘নির্বাহী কমিটি’ ঘোষণা

নাগরিক কমিটির ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট ‘নির্বাহী কমিটি’ ঘোষণা

সচিবালয়ের কাগজ ভেবে দুটি ট্রাক আটকালো জনতা

সচিবালয়ের কাগজ ভেবে দুটি ট্রাক আটকালো জনতা

মাত্র সাত মাসেই হাফেজ হলেন ১০ বছরের আব্দুল্লাহ

মাত্র সাত মাসেই হাফেজ হলেন ১০ বছরের আব্দুল্লাহ

সিরিয়ায় আসাদের পতন, ঘরে ফিরছে ৩০ হাজার শরণার্থী

সিরিয়ায় আসাদের পতন, ঘরে ফিরছে ৩০ হাজার শরণার্থী

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত

ভুল তথ্যে চায়ের দোকানে ফায়ার সার্ভিস, অথচ পানের বরজ পুড়ে ছাই

ভুল তথ্যে চায়ের দোকানে ফায়ার সার্ভিস, অথচ পানের বরজ পুড়ে ছাই

আবারো উত্তপ্ত মণিপুরের দুই গ্রাম, সংঘর্ষে নিহত ১

আবারো উত্তপ্ত মণিপুরের দুই গ্রাম, সংঘর্ষে নিহত ১

শেখ হাসিনাকে সহজে ফেরত দেবে না ভারত : দ্য ইকোনমিক টাইমস

শেখ হাসিনাকে সহজে ফেরত দেবে না ভারত : দ্য ইকোনমিক টাইমস