ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিরাপদ নয় : যুক্তরাষ্ট্র

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২৫ আগস্ট ২০২৩, ০৭:৪২ পিএম | আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম

বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া অনিরাপদ বলে মনে করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রোহিঙ্গা সংকটের ছয় বছর উপলক্ষ্যে এক বিবৃতিতে এমন অভিমত প্রকাশ করেছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।

বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংসতা, ধর্ষণ ও নৃশংস হত্যাভিযানের ছয় বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে বহনযোগ্য অল্প কিছু জিনিস নিয়ে পালাতে বাধ্য করেছিল শাসকদের এই গণহত্যা। বাংলাদেশের জনগণ সহানুভূতি এবং মানবতার হাত বাড়িয়ে তাদের স্বাগত জানিয়েছিল। প্রায় এক মিলিয়ন উদ্বাস্তুর প্রতি আতিথেয়তা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের জনগণ। আমরা এই উদারতার প্রশংসা করি।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে তার এই প্রচেষ্টায় সমর্থন জানাতে সমবেত হয়েছিল। আমেরিকার জনগণ ২০১৭ সাল থেকে এ অঞ্চলজুড়ে উদ্ভূত মানবিক সংকটের প্রতিক্রিয়ায় ২.১ বিলিয়নের ডলারেরও বেশি অবদান রেখেছে। এর ভেতর রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ১.৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। আমাদের এ সমর্থন অবিচল রয়েছে।

দূতাবাসের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের অন্য দেশে আশ্রয় খুঁজে ফেরা রোহিঙ্গারা দীর্ঘকাল ধরে ভুগছে। মর্যাদার সঙ্গে, নিরাপদে বাড়ি ফিরে যাওয়া, সপরিবারে শান্তিতে বাস করা এবং অর্থ ও উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবনযাপনের সুযোগ পাওয়া তাদের অধিকার। সেই লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি, আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতকে সমর্থনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার, নৃশংস অপরাধীদের জন্য জবাবদিহিতা এবং সংকটের সমাধান খুঁজে পেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মিয়ানমারের অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রান্তিক এই জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাই। আমাদেরকে অবশ্যই বাংলাদেশ সরকার এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানকারী বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্বজুড়ে অন্যান্য সংকট যেহেতু সীমিত সম্পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, সে কারণে রোহিঙ্গারা তাদের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠী এবং নিজ পরিবারের অর্থনৈতিক কল্যাণে কীভাবে অবদান রাখতে পারে তা চিহ্নিত করার গুরুত্ব বাড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে আয়-উৎপাদনমূলক কর্মকাণ্ড এবং আনুষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের সুযোগ, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে আরও বড় অবদান রাখার লক্ষ্যে রোহিঙ্গা সামাজিক সংস্থাগুলোতে তাদের অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করা। আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে সর্বোত্তম চর্চা, ধ্যানধারণা এবং সংস্থান বিনিময়ে উন্মুখ।

বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া অনিরাপদ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়, পুনর্বাসনের মাধ্যমে দায়িত্ব ভাগ করে নিয়ে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার সর্বাঙ্গীণ সমাধানে অবদান রাখছি। আন্তর্জাতিক পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অবদান রাখা অন্যান্য দেশগুলোর উদারতাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। আশা করি, ঐতিহ্যগতভাবে পুনর্বাসন দেওয়া দেশগুলোর বাইরেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টায় যোগ দেবে। ২০০৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশসহ এ অঞ্চল থেকে প্রায় ১৩ হাজার রোহিঙ্গাকে স্বাগত জানিয়েছে।

যেহেতু এই সংকট সপ্তম বছরে পদার্পণ করছে, সমগ্র অঞ্চলজুড়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্ভোগ কমাতে বা শেষ করতে সম্ভাব্য সব বিকল্প খুঁজতে আমাদের অবিচল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ
হামলা-নাশকতা প্রতিরোধে কাজ করছে সেনাবাহিনী
তাবলিগ জামাতের দু'পক্ষকেই বিশেষ নির্দেশনা দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সুশীলগিরি ছেড়ে দোসরদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আসতে হাসনাতের আহ্বান
আরও

আরও পড়ুন

পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক

পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক

‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’

‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’

আশিয়ান সিটির স্টলে বুকিং দিলেই মিলছে ল্যাপটপ

আশিয়ান সিটির স্টলে বুকিং দিলেই মিলছে ল্যাপটপ

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ

গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়

গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়

মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু

মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু

জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী

জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী

লামায় ১৭টি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতঘর পুড়ে ছাই হওয়ার ঘটনায় ৪জন গ্রেপ্তার

লামায় ১৭টি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতঘর পুড়ে ছাই হওয়ার ঘটনায় ৪জন গ্রেপ্তার

বিজয় দিবস টেনিস শুক্রবার শুরু

বিজয় দিবস টেনিস শুক্রবার শুরু

আশুলিয়ায় ভাড়াটিয়া তাড়িয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ

আশুলিয়ায় ভাড়াটিয়া তাড়িয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ

আজানের জবাব দেওয়া প্রসঙ্গে।

আজানের জবাব দেওয়া প্রসঙ্গে।

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে নাকে খত দেওয়ার ঘটনায় মামলা

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে নাকে খত দেওয়ার ঘটনায় মামলা

শরীয়তপুরে শ্রমিক দলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

শরীয়তপুরে শ্রমিক দলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

হেঁটে টেকনাফ গেলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেদুল

হেঁটে টেকনাফ গেলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেদুল

বিদেশি অপারেটরের সঙ্গে সম্পাদিত গোপন চুক্তি বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ!

বিদেশি অপারেটরের সঙ্গে সম্পাদিত গোপন চুক্তি বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ!

বাগেরহাটে  জেলা একীভূত চক্ষু সেবা কর্মসূচির এডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত

বাগেরহাটে  জেলা একীভূত চক্ষু সেবা কর্মসূচির এডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত

সাতক্ষীরায় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

সাতক্ষীরায় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

অল্পতেই শেষ পাকিস্তানের ইনিংস

অল্পতেই শেষ পাকিস্তানের ইনিংস

খেপুপাড়া সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রথম পুনর্মিলনী ২৮ ডিসেম্বর

খেপুপাড়া সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রথম পুনর্মিলনী ২৮ ডিসেম্বর

হামলা-নাশকতা প্রতিরোধে কাজ করছে সেনাবাহিনী

হামলা-নাশকতা প্রতিরোধে কাজ করছে সেনাবাহিনী