সহিংসতার পথ গণতন্ত্রের পথ নয় : বাংলাদেশ ন্যাপ

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৩ পিএম | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৩ পিএম

দেশের রাজনীতিবিদদের বুঝতে হবে যেভাবে দেশ চলছে এভাবে বেশি দিন চলতে পারবে না। আফ্রিকায়ও এমন অনেক দেশ আছে, যেখানে রাজনৈতিক সহিংসতা বেড়েই চলেছে। সহিংসতা জন্ম দেয় আরো সহিংসতা এটা এমন নয় যে, সহিংসতার মাধ্যমেই সহিংসতা থামানো যাবে। একদল সহিংসতা করলে অন্য দলও প্রতিহিংসা নিতে চায়। অতএব সহিংসতা দিয়ে কোনো সমাধান হবে না। সহিংসতার পথ গণতন্ত্রের পথ নয় বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।

শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা কথা বলেন। তারা বলেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতার ৫২ বছরেও গণতন্ত্র, মানবাধিকার, এবং বাকস্বাধীনতার অবস্থা নিয়ে গুরুতর সব প্রশ্ন উঠছে যা খুবই হতাশাজনক। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার অন্যতম ভিত্তি বলে বিবেচিত এই বিষয়গুলো এত বছর পরও কেন বাংলাদেশে নিশ্চিত করা যায়নি এ প্রশ্নের কোন উত্তর নাই। দু:খজনক হলেও সত্য স্বাধীনতার এত সময়েও বাংলাদেশে গণতন্ত্র দৃঢ় ভিত্তি পায়নি।

নেতৃদ্বয় বলেন, গণতন্ত্র ও সুশাসন থাকলেই উন্নয়ন স্থায়ী হয়। গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন হলে সেটা টেকসই হতে পারেনা। দেশে এখন গণতন্ত্র চাপে পড়েছে, গণতন্ত্র বিহীন উন্নয়ন জনগনকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। গণতন্ত্র ও উন্নয়নণ একসাথে না গেলে জনগণ পিষ্ট হয়ে যাবে। কার্যকর গণতন্ত্র কেবল জনপ্রতিনিধিত্ব ও ভোটাধিকারের প্রয়োগ দিয়ে পরিমাপ করা যায় না। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, জননিরাপত্তা, জেন্ডার সমতা, সর্বোপরি গণতন্ত্র চর্চার জন্য প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্য গড়ে তোলাকে বুঝতে হবে। এই কাজগুলোর অনুপস্থিতি যে সমাজে পরিলক্ষিত হয় সে সমাজকে গণতান্ত্রিক বলা যায় না। এ বিচারে বাংলাদেশে এখনো জননিরাপত্তা, বিচার পাবার অধিকার, মত ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সম্পদের ক্ষেত্রে বৈষম্য, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রেই ঘাটতি রয়েছে।

ন্যাপ চেয়ারম্যান ও মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, কিন্তু এর কোন বিকল্প নেই। তাই রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে গণতন্ত্রের চর্চা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সে অনুযায়ী যথাযথ আইনি সুরক্ষা এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। কেবল ভোটাধিকারের প্রয়োগ ও জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের মধ্যেই গণতন্ত্রকে সীমিত না করে সর্বস্তরে সাম্য, স্বাধীনতা ও ন্যায় বিচারের মতাদর্শ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্য গড়ে তুলতে হবে।

তারা বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উদার মনোভাব দেখাতে বার বার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি তাদের প্রত্যেকের রয়েছে প্রচন্ড ঘৃণা। তারা সংকীর্ণ মনের, স্পর্শকাতর, ক্ষমতালোভী, অন্যের কল্যাণ পছন্দ করে না। রাষ্ট্রচিন্তকদের ভাষায় যাকে বলে, ‘আত্মঘাতী’। বিরোধী দলও তাদের ভূমিকায় রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ধরে নেয়। সমঝোতার দরজা বন্ধ করে দেয়।

তারা বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়া ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। রাজনৈতিকভাবে দ্বিধাবিভক্ত এবং সে কারণে ঐক্যহীন হয়ে রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেশে ঐক্যবদ্ধ কোনো রাজনৈতিক সমাজ গড়ে তুলতে পারেনি। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কখনো কোনো চেষ্টা করেছেন বা উদ্যোগ নিয়েছেন এমনটাও পরিলক্ষিত হয় নাই। বরং শাসকদল সব সময় বিরোধী দল, পক্ষকে বিনাশ ও নির্মূল করতে চেয়েছে এবং এমন চেষ্টা এখন অনেক বেশি প্রবল ও জোরালো হয়েছে।

নেতৃদ্বয় বলেন, যারা সরাসরি দল করে, তাদের বিপদ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যারাই ক্ষমতায় থাকছে, তারা বিরোধীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে। এতে ক্ষমতা হারানোর ভয় সৃষ্টি হচ্ছে। কারণ ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতা হারানোর পর কতটা নিপীড়নের শিকার হবে, তা ভেবেই এ ভয়। যত দিন না প্রতিদ্বন্দ্বীরা নিজেদের ভালোর জন্য সমঝোতায় না আসে, তত দিন এ ভয় থেকেই যাবে। তাদের ঠিক করতে হবে, ভবিষ্যতে কীভাবে তারা একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সবাই মিলে পালাবদলের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারে বা ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে পারবে।

নেতৃদ্বয় বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন নিয়ে অমর্ত্য সেন বলেছেন, "গণতন্ত্র ও উন্নয়ন মোটেই বিপরীতধর্মী নয়, বরং একে অন্যের পরিপূরক। আমরা অনেকেই ভাবব, উন্নয়ন বলতে আসলে কী বোঝা যাচ্ছে? উন্নয়ন তো কেবল রাস্তাঘাট উন্নয়নের মতো বিষয় নয়। ব্যক্তিস্বাধীনতাও গুরুত্বপূর্ণ। এটি উন্নয়নের একটি অংশ।"


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি
যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’
বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত
মার্চের মধ্যে রাষ্ট্র-সংস্কার কাজ শেষ হবে : ধর্ম উপদেষ্টা
আরও
Airtel Wecome Banner

আরও পড়ুন

মাগুরায় গ্রামবাসির সংঘর্ষে নিহত যুবদল নেতা শরিফুলের বাড়িতে বিএনপি নেতারা

মাগুরায় গ্রামবাসির সংঘর্ষে নিহত যুবদল নেতা শরিফুলের বাড়িতে বিএনপি নেতারা

সিমকার্ডের আড়ালে সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান

সিমকার্ডের আড়ালে সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান

কিশোরগঞ্জের আব্দুল কাহার আকন্দ কোথায়? কেউ জানে না!

কিশোরগঞ্জের আব্দুল কাহার আকন্দ কোথায়? কেউ জানে না!

হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি

হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি

যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে ৩শ’ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু

রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা

রাজশাহী মহানগরীতে ঘন কুয়াশা

আবারও  ভানুয়াতুতে  দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প

আবারও ভানুয়াতুতে দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প

হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি

হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি

রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'

রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'

‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’

‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’

যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত

যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত

ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার

ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার

ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস

ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস

ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০

ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?

বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত

বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত

হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি

হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি

কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫

কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫

ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি

ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি

উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন

উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন