বিন্নাফুলে চলে নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের সংসার
২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১০ এএম | আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১০ এএম
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকায় প্রায় ২০ হাজার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করেন। এদের মধ্যে ওঁরাও, মাহাতো, রাজবংশী, বিদাস, সিং, কনকদাস ও স্বল্প সংখ্যক সাঁওতাল সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ রয়েছেন। চলনবিল অধ্যুষিত পল্লী কালীবাড়ি গ্রামের গৃহিনী আশা বালা ওঁরাও, শান্তিবালা ওঁরাও ও মিনতি ওঁরাও সাত সকালে সংসারের কাজ সেরে নিত্য দিনের ন্যায় বের হয় অন্য কাজের সন্ধানে। ওদের সংসার এখন টানা টানিতে চলছে। জানা যায়, এক সময় এসব সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ বন-জঙ্গলে ঘুরে শিয়াল, খরগোশ, কচ্ছপসহ বিভিন্ন পশু-পাখি শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে বন-জঙ্গল উজাড় হয়ে যাওয়ায় তাদের জীবিকা নির্বাহে ভাটা পড়েছে।
তাই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষরা এখন কৃষি কাজে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছেন। তারা মাঠে ধান লাগানো, ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করে থাকেন। তারা কঠোর পরিশ্রমি এবং অপেক্ষাকৃত কম পারিশ্রমিক হওয়ায় এলাকায় কৃষি কাজে তাদের বেশ চাহিদাও রয়েছে। কিন্তু আশ্বিন-কার্তিক মাসে এলাকায় তাদের হাতে তেমন কোন কাজ থাকে না। ফলে রোজ উপার্জন করতেও পারেন না তারা। তাই এ সময় উপার্জনের জন্য বেছে নেন বিন্না ফুল তোলার কাজ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বিন্না ফুলের আঁটি বেঁধে সেগুলো শুকিয়ে তৈরি করে ঝাড়–। তাদের তৈরি ঝাড়– বিক্রি করে বিভিন্ন হাটে-বাজারে ও গ্রাম এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে। অবশ্য এ কাজটি নারীদের পাশাপাশি এখন পুরুষেরাও করে থাকেন। আর এভাবেই কেটে যায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীদের সময়। আর এ অবস্থা চলছে অধিকাংশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারে।
তাড়াশ উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা দল বেঁধে রাস্তার পাশে কিংবা পরিত্যক্ত ভিটেতে থাকা বিন্নাফুল সংগ্রহ করেন, রোদে শুকান, কেউ আঁটি বেঁধে বাড়িতে নিয়ে যান। তাছাড়াও সংগুই পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, নারীরা সংগ্রহ করা বিন্নাফুল দিয়ে তৈরি করছেন ঝাড়–। জ্যোতিষ মাহাতো জানান, এরা প্রতিটি ঝাড়– ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি করে। আর ব্যাপারীরা এদের নিকট থেকে ঝাড়– সংগ্রহ করে শহরে এনে প্রতিটি ঝাড়– বিক্রি করে ৬০-৭০ টাকায়।
ফুল তুলতে আসা যোশাই পাড়ার নারী সাবিত্রী বালা সিং বলেন, বর্ষার শেষে আশ্বিন মাসে এলাকায় তেমন কোনো কাজ থাকে না। এ সময় কষ্ট করে সংসার চালাতে হয়। তাই বসে না থেকে উর্পাজনের জন্য বিন্নাফুল দিয়ে ঝাড়– বানিয়ে বিক্রি করে থাকি।
তাড়াশ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, সমাজসেবা অধিফতরের মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ জীবনমান উন্নয়নে সরকারিভাবে বিভিন্ন ভাতা পেয়ে থাকেন। আর অস্বচ্ছল পরিবারের স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছেলে-মেয়েরা এককালীন অর্থ ও উপবৃত্তি পেয়ে থাকে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ অত্যন্ত পরিশ্রমি ঝাড়– তৈরি এবং বিক্রি করে এ সম্প্রদায় অনেকটাই লাভবান হন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মিজানুর রহমান আজহারীর ব্যাখ্যা
বিতর্কিত চিন্ময় কাণ্ড: আত্মসমর্পণের পর জামিন পেলেন ৬৩ আইনজীবী
শরীয়তপুরে ১০ বছরেও নির্মাণ হয়নি আদালত ভবন
শুভেন্দুর হুঙ্কার : ‘বাংলাদেশকে জবাব দিতে পাঁচ-সাতটি ড্রোনই যথেষ্ট’
ষড়যন্ত্র ও হয়রানির বিরুদ্ধে ন্যায়বিচারের আবেদন বঞ্চিত বিধবার
মার্কিন মুদ্রার বিপরীতে ভারতীয় রুপির সর্বনিম্ন রেকর্ড
দোয়ারাবাজারে অভিযুক্ত বাঁধে বালু অপসারণ!
তালেবান শাসনকে বৈধতা না দেওয়ার আহ্বান নোবেলজয়ী মালালার
ফের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের
ঢাকার বাইরে প্রথম নরসিংদীতে রয়েল এনফিল্ড লঞ্চ
ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমেই দেশ ও জাতির কল্যাণ সাধিত করা সম্ভব
অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না : হাইকোর্ট
বিদ্যুৎ প্লান্টের পাঁচ লাখ টাকার লোহা তামা স্টিল সামগ্রী চুরির দায়ে ৫০ জনের নামে মামলা
নেত্রকোনা গত ১ বছরে ২৩২টি অস্বাভাবিক মৃত্যু
মেহেরপুর শহরে অবৈধ গাড়ির দৌরাত্ম ফুটপথ দখল, সরু সড়ক, যানজট লেগেই থাকে
অ্যাপলের ডাইভার্সিটি নীতি , বৈচিত্র্য রক্ষার লড়াইয়ে বোর্ডের বার্তা
ঢাবি,ভিকি,এনএসইউ ওয়েটিং লিস্টে থাকে,বান্নাহ খাওয়া মাল খায় না'
দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে আন্দোলনে নামার ঘোষণা কর্নেল অলির
আশুলিয়া থানা জমিয়তের কমিটি গঠন
বাংলাদেশের সীমান্তে ১৬০ জায়গায় কাটাতারের বেড়া দিয়েছে ভারত : রিজভী