৭ জানুয়ারির নির্বাচন বানরের পিঠা ভাগাভাগি হবে : সাংবাদিকদের ড. মঈন খান
১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৯ এএম | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৯ এএম
আগামী ৭ জানুয়ারি দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, বানরের পিঠে ভাগাভাগি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন, আগামী ৭ তারিখ যে নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে সেটা কোনো নির্বাচন নয়। এখানে ভোট ভাগাভাগি চলছে। এই নির্বাচনের ফলাফল ঢাকায় বসে নির্ধারণ করা হচ্ছে। আজকে যেটা হচ্ছে সেটা নির্বাচন নয়, সেটা হচ্ছে বানরের পিঠে ভাগাভাগি, সেই কাজগুলো আপনারা (সরকার) প্রকাশ্যে করছেন। আপনারা জাতিকে কলঙ্কিত করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
আবদুল মঈন খান বলেন, আজকে বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমরা সরকারের কাছে এই আবেদন করছি, আপনারা সংঘাতের পথ ছেড়ে দিন। এদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় মানুষ, তারা শান্তিতে থাকতে চায়, শান্তিপূর্ণ পথে আপনারা রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসানে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আপনারা ক্ষমতা ছেড়ে দিন। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে আমরা রাপথে আছি, আমরা রাজপথে থাকবো ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ১৯৭১ সালে যারা দেশের সম্পদ তাদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। যেটা নিকৃষ্ট ও জঘন্যতম কাজ। একাত্তর সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, লাখ লাখ মানুষ রক্ত ঢেলে দিয়েছিলো একমাত্র উদ্দেশ্যে সেই উদ্দেশ্যটি ছিলো আমরা একটি স্বাধীন দেশ সৃষ্টি করব যেখানে গণতন্ত্র থাকবে। কেননা পাকিস্তানের কাঠামোর মধ্যে কোনদিন গণতন্ত্র হতে পারে না। আজকে দুঃখের সাথে বলতে হয়, আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে এসে আজকে যেখানে দাঁড়িয়েছি সেখানে আমরা একই ঘটনা দেখছি, এখানে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই, এখানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই, এখানে মানুষের গণতন্ত্র নেই, এখানে এক দলীয় শাসন কায়েম হয়েছে। এখানে নিজের ঘরে কোনো মানুষ থাকতে পারে না, এখানে ভিন্ন মতের কথা কেউ বলতে পারে না, এখানে একদলীয় বাকশালের কথা সবাইকে বলতে হবে।
তিনি বলেন, যারা বাকশালের কথা বলছে না তাকে তারা ধরে নিয়ে যাচ্ছে, মানুষ গুম করা হচ্ছে, এখানে রাজনৈতিক বিরোধীদের হত্যা করা হচ্ছে এবং মানুষের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাজেই আজকে জনগণকে নিয়ে একটি উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করছি, আন্দোলন করছি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আজকে জনতার কাতারে কোটি কোটি মানুষ নেমে এসেছে। তারা বর্তমান সরকারকে প্রত্যাখান করেছেৃ এই সরকারের নৈতিক পরাজয় হয়ে গিয়েছে।
মঈন খান বলেন, সরকার হয়ত বুলেট দিয়ে, টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে, সাউন্ড গ্রেনেট দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করে রাখার চেষ্টা করতে পারে কিন্তু আমাদের শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আমরা বিগত দেড় বছর যাবত প্রতিবাদ করে এসেছি, এই প্রতিবাদ আমরা করে যাবো যে, বাংলাদেশে কোনো একদলীয় সরকার থাকতে পারবে না। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। যার খুশি যাকে খুশি জনগণ ভোট দেবে, এখানে দিনের ভোট রাতে হতে পারবে না, এখানে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া যাবে না, এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের অন্তরের কথা। শক্তি দিয়ে, বুলেট দিয়ে তারা (সরকার) হয়ত এদেশকে পদানত করে রাখতে পারে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমরা দেখেছি তারা এভাবে বছরের পর বছর ক্ষমতায় আঁকড়ে রেখেছে কিন্তু এমন একটা পর্যায় আসে যখন জনগণের স্রোত আসে তখন ক্ষমতা তারা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে।
তিনি বলেন, আমরা চাই, শান্তিপূর্ণ উপায়ে আমরা বাংলাদেশের এই রাজনৈতিক সংঘাতময় অচলাবস্থার শেষ হোক। যারা দাবি করে তারা অনেক উন্নয়ন করেছে তাহলে কেনো সরকার ভয় পায় একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ভোটে আসতে? তাদেরকে (সরকার) আমরা আমন্ত্রণ জানাব, আপনারা সমস্ত সরকারি বিধি-নিষেধ, দমনপীড়ন, জুলুম-নির্যাতনের পথ ছেড়ে দিয়ে জনগনের মুখোমুখি হোন, আপনারা এদেশের সকল মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিন, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আসুন। আপনারা সুষ্ঠু নির্বাচনে যদি জয়লাভ করে আমি সর্বপ্রথম আপনাদেরকে অভিবাদন জানাব। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আপনারা দেশের জনগণকে ভয় পান, সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভয় পান।
পরে আবদুল মইন খান শহীদ বেদিতে গিয়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। এ সময়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল হাই শিকদার, মাহবুব উদ্দিন খোকন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, তাইফুল ইসলাম টিপু, পারভেজ রেজা কাকন, রফিক শিকদার, আবেদ রাজা, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ বুদ্দিজীবী দিবস উপলক্ষে ভোরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের দলীয় অফিসগুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। মিরপুর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে আলোচনা সভা হয়।
সংগঠনটির আহ্বায়ক প্রফেসর এজেডএম জাহিদ হোসেন ও পরিচালনা করেন সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, প্রফেসর মাহবুব উল্লাহ, পেশাজীবী পরিষদের আব্দুল কুদ্দুস, রুহুল আমিন গাজী, আবদুল হাই শিকদার, প্রফেসর এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রফেসর লুৎফর রহমান, প্রফেসর শামসুল আলম সেলিম, প্রফেসর হারুন অর রশীদ, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, রাশিদুল হাসান হারুন, রফিকুল ইসলাম, সাখাওয়াত হোসেন, জাহানারা বেগম, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, তানভীরুল আলম, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের শহিদুল ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
তাপমাত্রা কমে বাড়বে শীত
এলএন-এর বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, কলম্বিয়ায় শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত
ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি হলেন ইউসুফ হোসেন
ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়েতে পড়েছিল মোটরসাইকেল আরোহীর চূর্ণ-বিচূর্ণ লাশ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদরাই আজকের বাংলাদেশ- কক্সবাজারে শিল্প উপদেষ্টা
অতিরিক্ত সময়ে এন্দ্রিকের জোড়া গোলে জিতে শেষ আটে রিয়াল
গ্রিক সাইপ্রিয়ট প্রশাসনকে অস্ত্র বিক্রয়ের মার্কিন সিদ্ধান্তে টিআরএনসি-এর ক্ষোভ ও উদ্বেগ
নরসিংদীতে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৮
পাবনায় জনজীবনে ভয়াবহ হচ্ছে ভার্চুয়াল আসক্তি
মাঝ আকাশে ভেঙে টুকরো ইলন মাস্কের ‘স্টারশিপ’
বাংলাদেশ-ভারতকে অতীত কবর দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে: সুনন্দা কে দত্ত রায়
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন
সাইফ ইস্যুতে কেজরিওয়ালের বিস্ফোরক মন্তব্য, পাল্টা প্রতিক্রিয়া বিজেপি নেতার
ট্রাম্পের শুল্ক ছাড়াও চীনের অর্থনৈতিক সংকটে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ !
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত
দিয়ালোর দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ইউনাইটেডের নাটকীয় জয়
আজারবাইজান-জর্জিয়া সম্পর্ক শক্তিশালীকরণে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
আসাদগেটে সিএনজি-ট্রাক সংঘর্ষ, একজনের মৃত্যু
মরক্কোতে নৌকা ডুবে ৪৪ পাকিস্তানির মৃত্যু
'বন্ধী মুক্তির চুক্তি' চূড়ান্ত জানিয়েছে নেতানিয়াহুর দপ্তর