আওয়ামী লীগ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে : জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মঈন খান
০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১২ এএম | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১২ এএম
সরকারকে বিদায় নিতেই হবে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। দেশের জনগণ এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে কোনো আস্থা পায়না। গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই নির্বাচনকে সমর্থন করছেনা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে কিছুদিন হয়তো ক্ষমতায় থাকা যাবে। তবে আজ হোক কাল হোক আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় নিতেই হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এই সরকারের বিদায় করেই ঘরে ফিরবো ইনশাআল্লাহ। ‘প্রহসনের নির্বাচন বর্জন ও সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ‘ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)। সমাবেশের পর মঈন খান পেশাজীবী নেতৃবৃন্দকে নিয়ে পথচারী, বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের হাতে লিফলেট তুলে দেন।
ড. মঈন খান বলেন, লক্ষ্য করুন বিশ্বের সবচেয়ে নামি-দামি মিডিয়া আজকে ঢাকা শহরে এসেছে। কেন এসেছে? তারা এসেছে বাংলাদেশে তথাকথিত নির্বাচনের যে ফানুস সেই ফানুসকে তারা ফাটিয়ে দিচ্ছে রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, ‘ডামি’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সরকারের ‘চরম পরাজয় ঘটবে’। আজকে আওয়ামী লীগ, যারা নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে, তারা যদি ভুল পথে হাঁটতে থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগ ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। আপনারা এই কঠিন সত্যটি উপলব্ধি করুন। আমি স্পষ্টভাষায় বলে দিচ্ছি, সরকার ভাবছে ৭ জানুয়ারি বিজয় হবে। বাস্তবতা হচ্ছে, আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের চরম পরাজয় সংঘটিত হবে। নির্বাচনের দুদিন আগে সরকারকে সবকিছু নিয়ে ফের চিন্তাভাবনার আহŸান জানিয়ে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনি তফসিল বাতিলের আহŸান জানান মঈন খান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বুলেট দিয়ে, গ্রেনেড দিয়ে, টিয়ারগ্যাস দিয়ে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে পদানত করা যাবে না। কাজেই আপনারা আলোচনার পথে আসুন, শান্তির পথে আসুন। মানুষের মতামতকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন, মানুষের যদি ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ না ঘটে আপনারা বন্দুকের নলের ক্ষমতার জোরে আপনারা রাষ্ট্রযন্ত্র আঁকড়ে ধরে থাকেন, সেটা হয়ত আপনারা করতে পারবেন, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিন আপনাদেরকে অন্তর থেকে স্বীকার করে নেবে না। এই সরকারকে বিদায় দেবার জন্য আন্দোলন করে যাব যে আন্দোলন হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক এবং গণতান্ত্রিক।
সরকারের উদ্দেশে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, অন্যায় করে কিন্তু কিছুদিন ক্ষমতায় থাকা যেতে পারে। কিন্তু ইতিহাস আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছে আজকে হোক, কালকে হোক এই সরকারকে বিদায় নিয়ে জনগণের ইচ্ছার কাছে মাথানত করে তাদেরকে পরাজয় স্বীকার করতেই হবে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর দিলারা চৌধুরী বলেন, এই বয়সে আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। আমি বিবেকের তাড়নায় রাজপথে দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশ আজ খাদের কিনারায়। মহান মুক্তিযুদ্ধের যে সনদ সাম্য, আইনের শাসন ও গণতন্ত্র এখানে নেই। পরপর কতগুলো প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ডান্ডাবেরি পড়ে একজন রাজবন্দীর মৃত্যু হয়! তিনি বলেন, আজকে সবাই চিন্তা করুন ও ভাবুন আমরা কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি? মনে রাখতে হবে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে দিলারা চৌধুরী বলেন, এ ধরনের প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করুন। আজকে ড. ইউনূসের মতো ব্যক্তিকে সাজা দেওয়া হয়েছে। তাহলে আপনার আমার অবস্থা কোথায়? আপনারা বাংলাদেশকে কোথায় নিতে চান? চলমান আন্দোলন শুধু বিএনপির একার নয়। এটা দেশের সকল জনগণের আন্দোলন।
ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আমাদের দফা এখন দাবি এক। এই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। কেননা দেশের মানুষ বিগত কোনো নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। তারা ভোটের স্বাদ পায়নি। অথচ জনগণ ভোট দিতে চায়। সুতরাং আমরা এই সরকারের আসন্ন প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করছি।
সভাপতির বক্তব্যে প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া মানে রীতিমতো ডাকাতি। সুতরাং সচেতন দেশবাসী ও সম্মানিত ভোটারদের প্রতি আহŸান আপানারা ৭ জানুয়ারি ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। এই প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করুন। সেইসঙ্গে সরকারের বিদায়ের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহŸান জানান তিনি।
এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ- এ্যাব‘র সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও বিএসপিপির সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জিয়া পরিষদের ডা. আবদুল কুদ্দুস, সাবেক যুগ্ম সচিব তপন মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহŸায়ক প্রফেসর লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. শামসুল আলম সেলিম, কৃষিবিদ ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, ড. এমতাজ হোসেন, ড্যাবের ডা. মো. মেহেদী হাসান, এডভোকেট আবেদ রাজা, রফিকুল ইসলাম, ডিইউজের সাঈদ খান, এ্যামট্যাবের দবির উদ্দিন তুষার প্রমুখ।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নোয়াখালীতে জামায়াতের কর্মী সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ‘জুলুম-নির্যাতন করে আস্তাকুঁড়ে চলে গেছেন কাদের মির্জা’
পুলিশের সামনে হামলা বিএনপি ও যুবদল নেতা আহত
গাজীপুরে ছুটির দিনেও ২৫ শতাংশ কারখানা খোলা ছিল
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বীরত্বগাথা জাতিসংঘে তুলে ধরবেন প্রধান উপদেষ্টা
তিন জেলাসহ সাত বিভাগের ওপর দিয়ে বইছে তাপপ্রবাহ
তিন পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি নিয়ে আইএসপিআর এর বিবৃতি
দুই দিনেই পরাজয়ের ধ্বনি শুনছে বাংলাদেশ
ছাত্রআন্দোলনে শহীদ ছাত্রদলনেতা ওয়াসিমের কবর জিয়ারতে কেন্দ্রীয় নেতারা
অনেক সচিবসহ কর্মকর্তারা নাশকতা করার চেষ্টা করছে:রিজভী
রাজধানীতে ঢাকা দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ মিছিল
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ফিরে আসছে: উপদেষ্টা নাহিদ
কমলা হ্যারিস জিতলে বিনিয়োগ তুলে নেয়ার হুমকি প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওয়ারেন বাফেটও: ইলন মাস্ক
বান্দরবানের রুমায় অস্ত্র গোলাবারুদ জ্যামার উদ্ধার
প্রথমবারের মতো ছুটির দিনেও চলছে মেট্রো
বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ ও বিচারের দাবীতে খুলনায় মানববন্ধন
শেখ হাসিনার দলবলকে আগলে রেখেছে বর্তমান প্রশাসন: সেলিমা রহমান
রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০ জনে
অনতিবিলম্বে ভিসি নিয়োগ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী ইবি শিক্ষার্থীদের
৩শ' আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান