ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

আমেরিকা কখন কাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে তার ঠিক নেই : প্রধানমন্ত্রী

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম

আমেরিকার লজ্জা নেই, তারা কখন কাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে তার ঠিক নেই বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমেরিকার গোয়েন্দার সাক্ষীতেই কিন্তু তারেক জিয়ার সাজা হয়েছে। তবে এদের (আমেরিকার) লজ্জা নেই। এরা একজনকে এমন করবে, আবার কখন কাকে পছন্দ করে ক্ষমতায় নিয়ে আসে তার ঠিক নেই।

শনিবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। অপরদিকে টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী নতুন মন্ত্রীসভার সদস্যদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশনা দেন।

দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে নতুন মন্ত্রিসভার শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে সকালে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে দুপুরে পৌনে ১২টার দিকে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা। টুঙ্গিপাড়ায় নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে এবং বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। পরে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি কামনায় সুরা ফাতেহা পাঠ এবং বিশেষ মোনাজাতে যোগ দেন। এরপর শেখ হাসিনা তার নিজ আসন গোপালগঞ্জ-৩ কোটালীপাড়া এবং টুঙ্গিপাড়ার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে আরেকবার বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠনের পর ঢাকাই বাইরে এটাই ছিল প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর। দুই দিনের সফরের দ্বিতীয় দিন রোববার কোটালীপাড়ায় কর্মী সভায় অংশ নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মাঝে রাত্রিযাপন করবেন নিজ বাড়িতে। আজ রোববার তিনি ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

টুঙ্গিপাড়ায় কর্মীসভায় বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চক্রান্ত এখনো শেষ হয়নি, ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। একজন নারী হয়ে আমি পাঁচ পাঁচবার ক্ষমতায় এসেছি এটা অনেক দেশের পছন্দ না। এছাড়া, আমাদের ভৌগোলিক অবস্থার কারণে অনেকের নজর আছে আমাদের ওপর। কাজেই এখানে বসে অন্য দেশের ওপর সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাবে, এয়ার অ্যাটাক চালাবে সেটা আমি মেনে নেব না। আমরা ছোট হতে পারি। আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। আমরা স্বাধীনভাবে চলব।

জনগণ আমাদের শক্তি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, চক্রান্ত ছিল আমাকে আসতে (ক্ষমতায়) দেবে না। তাদের হুকুমের দাস এমন কাউকে বসাবে। তার পর এ দেশটাকে নিয়ে খেলতে পারবে। বাংলাদেশের জনগণ তার (ষড়যন্ত্রের) ভালো জবাব দিয়েছে। আমি নির্বাচনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল- ভোটার যেন আসে এবং প্রতিযোগিতা যেন হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচন করবে না এটা আমরা জানি। কারণ, এরা (বিএনপি) যে করবে তাদের নেতা কোথায়? একজন দুর্নীতি আর এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত আরেকজন অর্থপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের মামলায়। এই যে দুর্নীতি আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই খুঁজে বের করেছে। তাদের (এফবিআই) গোয়েন্দার সাক্ষীতেই কিন্তু তারেক জিয়ার সাজা হয়েছে।

অপরদিকে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর নিজ বাসভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন মন্ত্রীসভার সদস্যদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশনা েিদয় এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র রমজান ঘনিয়ে আসছে, তাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন, কারণ, এই মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ানো উচিত নয়।

বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী রমজানের সময়, বিশেষ করে বড় মজুদদাররা যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য জরুরি পণ্য মজুদ করতে না পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, মন্ত্রীদের নিয়মিত মজুতবিরোধী অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখুন, যাতে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে থাকতে পারে। সালাউদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনা দেশ ও জনগণের জন্য কল্যাণকর যে কোনো প্রকল্প গ্রহণের সময় মন্ত্রীদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেন।

গোপালগঞ্জ থেকে চৌধূরী হাসান মাহমুদ জানান, তড়ি ঘড়ি করে নয়, সময় মতো সরকার গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একটি মুসলিম দেশের পাঁচবার নারী প্রধানমন্ত্রী, যা অনেক দেশের পছন্দ নয়। বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতি কারণে জিনিসপত্রের দাম আবারো বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা হবে।

বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতি কারণে জিনিসপত্রের দাম আবারো বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা হবে। টুঙ্গিপাড়ার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী, শেষ জীবনে টুঙ্গিপাড়ায় অবস্থানের আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করেন। ৫ম বারের সরকার গঠনের পর এটি সরকার প্রধানের প্রথম সফর। বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে নব উদ্যোমে যাত্রা শুরু করল নতুন মন্ত্রীসভার সদস্যরা। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে, লক্ষ্য আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ।

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো

তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান

তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান