ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১

ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদের বিচার দাবিতে মশাল মিছিল

Daily Inqilab ইনকিলাব

১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৬ পিএম | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৬ পিএম

 

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বিচার এবং যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করার দাবিতে নিপীড়নবিরোধী মশাল মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি দল।  

রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসি চত্বর, ভিসির কার্যালয়সহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর শেষে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী মেশকাত তানিশার সঞ্চালনায় সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কাশফিয়া হাসান মৌরি বলেন, ‘আপনারা দৃশ্যপটটা একটু চিন্তা করে দেখেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়, যেটাকে আমরা সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ বলে জানি যেখানে আমরা জ্ঞানার্জনের জন্য এসেছি, সেখানে শিক্ষক দ্বারা ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার সেটার বিচার চেয়ে দাঁড়াতে হচ্ছে আমাদের। এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা ছাড়া আর কী? নারীরা এমনি দৈনিক যানবাহন, পথঘাট, এমনকি নিজের বাড়িতেও যৌন হয়রানির শিকার হন, এখন তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মুক্তচিন্তা চর্চার স্থানেও যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে।’

ভাষাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী নূজিয়া হাসিন রাশা বলেন, ‘শিক্ষকেরা তাদের কর্তৃত্ববাদী আচরণের মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষ গুলোকে এক একটি কারাগারে রূপান্তর করেছে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, প্রায় প্রত্যেক ডিপার্টমেন্টেই যৌন নিপীড়নের শিকার অনেক শিক্ষার্থী পাওয়া যাবে। কিন্তু যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর না থাকায় তারা অভিযোগ নিয়ে এগোতে পারে না। অনেকে এগিয়ে আসলেও তাদেরকে ক্লাসরুমে, পরীক্ষায় নানাভাবে হেনস্তা করা হয়। ক্যাম্পাসকে এবং এর আশেপাশের পরিবেশকে নারীবান্ধব করতে প্রয়োজন ক্ষমতা কাঠামোর পরিবর্তন, প্রতিটি অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার কার্যকর করা।’

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘অতিসত্বর এ অভিযোগ তদন্ত করে বিচার, অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান এবং যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলকে কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেই নয়, সমাজের সকল স্তরেই দিন দিন যৌন নিপীড়নের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এগুলোর বিচার হচ্ছে না—রাষ্ট্র, সরকার, প্রশাসন নিপীড়কদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। এ জন্যে দায়ী সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষার্থী উমামা ফাতেমা এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম উদ্দিন।উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন বিভাগেরই একজন নারী শিক্ষার্থী। এই নারী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর থেকেই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এ নিয়েই আজ নাদির জুনাইদের বিচারের আগ পর্যন্ত সকল ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন ও মানববন্ধন করল বিভাগের সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

নিউইয়র্কে বৈঠকে বসছেন তৌহিদ-জয়শঙ্কর

নিউইয়র্কে বৈঠকে বসছেন তৌহিদ-জয়শঙ্কর

ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই আউট মুশফিক

ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই আউট মুশফিক

ঝাড়খন্ডে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অমিত শাহের

ঝাড়খন্ডে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অমিত শাহের

মুমিনুলকেও হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ

মুমিনুলকেও হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ

রাবির মাদার বখ্শ হলের পানির ট্যাংক থেকে উদ্ধার হলো দেশীয় অস্ত্র

রাবির মাদার বখ্শ হলের পানির ট্যাংক থেকে উদ্ধার হলো দেশীয় অস্ত্র

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ড. ইউনূসের ভাষণ ২৭ সেপ্টেম্বর

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ড. ইউনূসের ভাষণ ২৭ সেপ্টেম্বর

ঢাবির হত্যার ঘটনায় প্রভোস্টকে অব্যাহতি

ঢাবির হত্যার ঘটনায় প্রভোস্টকে অব্যাহতি

আইন-শৃঙ্খলা অবনতির চেষ্টা করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: রাঙামাটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আইন-শৃঙ্খলা অবনতির চেষ্টা করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: রাঙামাটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেক্সিকোতে মাদক কারবারিদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই সপ্তাহে নিহত ৫৩

মেক্সিকোতে মাদক কারবারিদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই সপ্তাহে নিহত ৫৩

বিদ্যুৎ সাত-আট ঘণ্টা পর্যন্ত গ্রামে থাকে না

বিদ্যুৎ সাত-আট ঘণ্টা পর্যন্ত গ্রামে থাকে না

দুর্গাপূজায় ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত

দুর্গাপূজায় ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত

জাকিরের পর ফিরলেন সাদমানও

জাকিরের পর ফিরলেন সাদমানও

খুবিতে ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার শীর্ষক সেমিনার

খুবিতে ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার শীর্ষক সেমিনার

জাতিসংঘে যাওয়ার আগে হুঙ্কার দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

জাতিসংঘে যাওয়ার আগে হুঙ্কার দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের

গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের

পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন

পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন

দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি - মুশফিকুর রহমান

আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি - মুশফিকুর রহমান

ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা

ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা