রাজধানীর সড়কে বসছে এআই ক্যামেরা : আইন ভাঙলেই মামলা
০১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৪, ১২:০৬ এএম
নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আশাজাগানিয়া আন্দোলনের পরেও গণপরিবহনে ফেরেনি শৃঙ্খলা, নিরাপদ হয়নি সড়ক। রাজধানীর সড়কগুলোতে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতোই চলাচল করছে গণপরিবহন। নির্দিষ্ট বাস স্টপেজে থামছে না গাড়ি। রাস্তা ফাঁকা পেলেই বেপরোয়া হচ্ছে বাসগুলো। ফলে হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। গণপরিবহনের সঙ্কটের সুরাহা তো হচ্ছেই না বরং দিনদিন সড়কে নৈরাজ্য বেড়েই চলেছে। চলন্ত বাসে উঠতে গিয়ে যাত্রীদের প্রাণহানি, অঙ্গহানি হচ্ছে। আবার একইভাবে নামতে গিয়ে চাকায় পিষ্ট হওয়ার ঘটনাও নতুন নয়। এমন নৈরাজ্য বন্ধে বেশ কয়েক মাস আগে পুলিশ কিছু নির্দেশনা জারি করলেও তার অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। ফলে গণপরিবহনে যত্রতত্র ওঠানামা করায় এতে যেমন যানজট হচ্ছে, তেমনি সড়কে বিশৃঙ্খলাও বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিবহন খাতে নিয়ম-নীতির অভাবেই এ অবস্থা। কেবল সদিচ্ছার মধ্য দিয়েই এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলেও মনে করছেন তারা। আর বাস মালিক সমিতি বলছেন সুপরিকল্পিত বাস স্টপেজের অপ্রতুলতার কারণেই চালকরা বাধ্য হচ্ছেন যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠা নামা করাতে।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, যারা রুট পারমিট দেয় তারা একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি করে যাত্রী ধরার একটা প্লানিং করেছে। সবাইকে যদি এক ছাতার নিচে নিয়ে এসে এক রংয়ের বাস যদি দেয়া যায়, দিনের শেষে যদি যারা যার শেয়ার নেয়া যায় এবং চালককে ব্যবসা করতে না দিয়ে তাকে যদি বেতনভুক্ত করা যায় তাহলে একটা দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখা যাবে।
রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা আনতে চালু করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সংবলিত ক্যামেরা। সড়কে আইন ভাঙলে সয়ংক্রিয়ভাবে মামলা দিতে পারবে এই সিস্টেম। লাল-সবুজ-হলুদ বাতির পর এবার দেশের ট্রাফিক সিস্টেমে যুক্ত হচ্ছে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)। রাস্তায় বসানো হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন (এআই) সিগন্যাল সিস্টেম। প্রাথমিকভাবে ঢাকার গুলশান-২ সিগন্যালে পরীক্ষামূলকভাবে এ পদ্ধতি চালু করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন সিগন্যাল মেনটেন্যান্স সরঞ্জাম, সিসি ক্যামেরা, ইমেজ ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা ও অন্য সরঞ্জামাদি দিয়ে এই সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এমন এআই সিগন্যাল সিস্টেম বসানো হয়েছে গুলশান-২ সিগন্যালে, যা রাজধানীর আরও ৬টি পয়েন্টে বসানো হবে বলে জানিয়েছে উত্তর সিটি করপোরেশন। রাজধানীর গাড়ি চালকদের আইন ভাঙার প্রবণতা, যত্রতত্র পার্কিং, লেন মেনে গাড়ি না চালানো, জেব্রা ক্রসিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে চলাচলা বাঁধা সৃষ্টির মতো কাজে সড়কে চলাচল এখন এক বিভীষিকায় পরিণত হয়েছে।
যাত্রী ও চালকরা বলেন, সিসি ক্যামেরা থাকলে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান সহজ হবে। এছাড়া চালকরাও সতর্ক হয়ে গাড়ি চালাবেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ক্যামেরা যে কোনো ধরনের অপরাধ শনাক্ত করতে পারে। এতে যাত্রী ও চালকদের জানমালের নিরাপত্তা যেমন বাড়বে, তেমন হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতাও বাড়বে।
ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা বলছেন, লালবাতি জ্বলা অবস্থায় সাদা দাগ স্পর্শ করলেই সয়ংক্রিয়ভাবে হবে মামলা। গাড়ির লাইসেন্স ও মেয়াদ না থাকলেও ধরা পড়বে ক্যামেরায়। লালবাতি জ্বলা অবস্থায় সাদা দাগ অতিক্রম করলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রাফিক মামলা হবে। এতে ট্রাফিক আইন ভাঙার প্রবণতা ৯৯ শতাংশ কমে আসবে। এ আধুনিক ব্যবস্থাপনায় ট্রাফিক পুলিশের কষ্টও অনেকাংশেই কমে আসবে। লালবাতি জ্বলা মাত্র সবাই সতর্ক হয়ে যাবেন। কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে সব ধরনের গাড়ির গতিবিধি। এআই ক্যামেরার মাধ্যমে কতগুলো গাড়ি ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করেছে তা দেখা যাচ্ছে।
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে আইন ভঙের হার বলছে, এ সিস্টেম চালু হলে রাজধানীজুড়ে একদিকে ভয়াবহ যানজট কমবে, অন্যদিকে যত্রতত্র পার্কিং কিংবা ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করার প্রবণতাও কমবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে তখন সিগন্যাল সিস্টেমে আসবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সিইও মীর খায়রুল আলম জানান, এখনই এই মামলায় জরিমানা লাগছে না। ট্রাফিক আইন ভাঙার তথ্য পেলেও এখনই শাস্তি দিতে পারছে না সিটি করপোরেশন। কারণ শাস্তি দেওয়া পুলিশের কাজ আর সে উদ্দেশ্যে পুলিশের ডেল্টা-৩ সিস্টেমের সঙ্গে এই সিস্টেমের সমন্বয়ের কাজ চলছে। সমন্বয়ের কাজ হয়ে গেলে শাস্তি চালু করা সম্ভব হবে। ধীরে ধীরে সারা রাজধানীজুড়ে এই সিস্টেম চালু করা হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে অনুমতি পাচ্ছে না ইউক্রেন
গাজা-লেবাননে নিহত আরো ২২২
আসাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত এরদোগান
জাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় রায়হানের দোষ স্বীকার
গণহত্যাকারী কোন রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার অধিকার থাকে না: আসাদুজ্জামান রিপন
ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা জন্য আমাদের লড়াই চলছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
ইনসি ইকো প্লাস সিমেন্ট নিয়ে এলো বাংলাদেশের সমূদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের উপযোগী করে দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের সমাধান
হাত-পা ও চোখ বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হয় --- আবু বাকের
দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠে" প্রকাশকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ফরিদপুর সাংবাদিক জোটের প্রতিবাদ সভা
ডাটা সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার
শ্রীলঙ্কার চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে কি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?
ফুটবলের মাঠে চমক দেখাতে চান তাবিথ আউয়াল
এবার ফাঁস হলো রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়
নদী দখলকারীদের উচ্ছেদে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে - পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম কারাগারে
স্বৈরাচারের পতন হলেও দোসররা এখনো রয়ে গেছে : তারেক রহমান
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক গ্রেফতার
‘অধ্যাপক’ হিসেবে পদোন্নতি পেলেন শিক্ষা ক্যাডারের ৯২২ জন
ঢাবিতে মতবিনিময় সভায় যৌন নিপীড়ক শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
সেনাবাহিনীর নারী সদস্যরা হিজাব পরতে পারবেন