ঢাকা   সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৮ আশ্বিন ১৪৩১

দুর্নীতির প্রমাণ দিতে পারলে পদত্যাগের ঘোষণা সাবেক ভূমিমন্ত্রীর

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৩ মার্চ ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৪, ১২:০৭ এএম

 

 

মন্ত্রী থাকাকালে কোনো দুর্নীতি করেছেন কি না সে বিষয়ে তদন্ত করার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও বর্তমান ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

তিনি বলেন, ওই কমিটি যদি এক টাকারও দুর্নীতির প্রমাণ পায়, তাহলে আমি আমার পদ থেকে পদত্যাগ করব।

শনিবার (২ মার্চ) প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন সাবেক তিনি।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ব্রিটেনে ‌‌‘হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ’ আছে বলে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে সংবাদ সম্মেলন করেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমি মন্ত্রণালয়ে থাকার সময় কোনো চুরি করেনি। আমি দলকেও বিব্রত করতে চাই না, সরকারকেও বিব্রত করতে চাই না। আমি খুশি হব, আমি মন্ত্রী থাকার সময় কোনো দুর্নীতি করেছি কি না এই বিষয়ে যদি একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি করা হয়। কারণ মন্ত্রী হিসেবে আমার দেশ ও জাতির কাছে জবাবদিহিতা আছে। আমাকে অবশ্যই আমার এই বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে। এই কমিটি একজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, একজন সাংবাদিক ও সরকারের ঊর্ধ্বতন একজন প্রতিনিধি দিয়ে যদি কমিটি করা হয় তাহলে আমি খুশি হব। আমি মন্ত্রী থাকার সময় কী করেছি, এটা পরিষ্কার করা হোক। এটা আমার জন্য খুব কমফোর্টের ব্যাপার হবে। এ কমিটি যদি আমার বিরুদ্ধে এক টাকার দুর্নীতি পায়, তাহলে আমি কথা দিচ্ছি, আমি আমার পদ থেকে রিজাইন দেব। আমি খুবই পরিষ্কার মানুষ। খুবই সিনসিয়ারলি সততার সঙ্গে কাজ করি।

তিনি আরও বলেন, গত কিছুদিন ধরে আমাকে নিয়ে বেশ কিছু নিউজ হয়েছে দেশি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। অনেকের প্রশ্ন যখন এই নিউজগুলো এলো, তখন আমি কেন নীরব ছিলাম? আসলে আমি তখন দেশের বাইরে ছিলাম। দেশের বাইরে থাকার সময় আমাকে নিয়ে নিউজগুলো এসেছে। আমি তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, দেশে এসে আমি একটি সংবাদ সম্মেলন করব। যেহেতু আমি রাজনীতি করি, একটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলাম, দায়িত্বে ছিলাম। মন্ত্রী হিসেবে জনগণের কাছে আমার দায়বদ্ধতা আছে, জবাবদিহিতা আছে।

সাইফুজ্জামান বলেন, আমি আপনাদের (সংবাদকর্মী) অনুরোধ করব, আমার ব্যবসা এবং রাজনীতি দুটোকে এক করবেন না। আমি ব্যবসায়ী কাম রাজনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ কাম ব্যবসায়ী নই। পারিবারিক সূত্রেও আমি ব্যবসায়ী। একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর সন্তান এবং দীর্ঘদিন ধরে আমি ব্যবসা করে আসছি। আমি আমার ব্যবসায়ীক ক্যারিয়ার শুরু করেছি আমেরিকায় লেখাপড়া করার শেষ পর্যায়ে এসে।

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, নিউজগুলোতে আমার হলফনামা নিয়ে কথা এসেছে। আমি হলফনামায় কেন তথ্য গোপন করেছি? আমি জানি না বার বার কেন এই কথা আসছে। আমি আগেও বারবার পরিষ্কার করেছি, আমি কোনো তথ্য গোপন করিনি। নির্বাচনকালীন সময়ে যে হলফনামা করতে হয়, সেটি ট্যাক্স রিটার্নের সঙ্গে মিল রেখে হলফনামা করতে হয়। নির্বাচন হিসেবে আমি সর্বশেষ চতুর্থবার নির্বাচন করেছি। বিগত দিনে আমি যেভাবে আমার হলফনামাগুলো দিয়েছিলাম, এবারও সেভাবে দিয়েছি। ওই হলফনামায় কোথাও উল্লেখ নেই বিদেশের সম্পত্তি উল্লেখ করার জন্য। যেহেতু বিদেশের সম্পত্তি উল্লেখ করার জন্য কোনো কলাম নেই এবং বিগত নির্বাচনেও আমি এই বিষয়ে কোনো তথ্য দিইনি। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, আমি আমার বিদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সেভাবে পুরোটা মিক্স করিনি। কারণ বাংলাদেশে আমার আলাদা ট্যাক্স রিটার্ন আছে, ইউকেতে আলাদা ট্যাক্স রিটার্ন আছে। ওই ট্যাক্স রিটার্নগুলো আমি মিক্স করিনি। আমি মনে করেছি, যেহেতু এটি হলফনামার কলামে নেই, আমি শুধু শুধু বাড়তি কথা কেন বলতে যাব? সে কারণে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছাড়াই আমি এটা করেছি। এখানে আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না।

তিনি আরও বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ে থাকার সময় আমি যে কাজগুলো করেছি, সেগুলো স্বচ্ছতার সঙ্গে করেছি, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছি। আমার যদি খারাপ উদ্দেশ্য থাকত আমি কখনোই এগুলো করতাম না। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ আমাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন জাতি এবং দেশকে সেবা দেওয়ার জন্য, নেওয়ার জন্য নয়। আমরা যদি কিছু না করে যেতে পারি, তাহলে আমরা মনে করি বাংলাদেশের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। আমাদের কাছে সাধারণভাবেই মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। সেই হিসেবেই আমি আমার কাজগুলো করেছি।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ অন্তর্বর্তী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ : স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ অন্তর্বর্তী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ : স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

কলাপাড়ায় যাত্রীবাহী বাস-অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষ, শিশু সহ আহত-৫

কলাপাড়ায় যাত্রীবাহী বাস-অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষ, শিশু সহ আহত-৫

গাজীপুরে কলোনিতে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৪ ইউনিট

গাজীপুরে কলোনিতে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৪ ইউনিট

মেরিনারের দায়িত্ব নিলেন সা‌মির কা‌দের চৌধুরী

মেরিনারের দায়িত্ব নিলেন সা‌মির কা‌দের চৌধুরী

বাফুফের সভাপতি পদে এবার দৃশ্যপটে তাবিথ

বাফুফের সভাপতি পদে এবার দৃশ্যপটে তাবিথ

সেনাবাহিনীর নারী সদস্যরা হিজাব পরতে পারবেন

সেনাবাহিনীর নারী সদস্যরা হিজাব পরতে পারবেন

ঢাবিতে মতবিনিময় সভায় যৌন নিপীড়ক শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ঢাবিতে মতবিনিময় সভায় যৌন নিপীড়ক শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

‘অধ্যাপক’ হিসেবে পদোন্নতি পেলেন শিক্ষা ক্যাডারের ৯২২ জন

‘অধ্যাপক’ হিসেবে পদোন্নতি পেলেন শিক্ষা ক্যাডারের ৯২২ জন

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক গ্রেফতার

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিক গ্রেফতার

স্বৈরাচারের পতন হলেও দোসররা এখনো রয়ে গেছে : তারেক রহমান

স্বৈরাচারের পতন হলেও দোসররা এখনো রয়ে গেছে : তারেক রহমান

সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম কারাগারে

সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম কারাগারে

নদী দখলকারীদের উচ্ছেদে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে - পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

নদী দখলকারীদের উচ্ছেদে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে - পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

এবার ফাঁস হলো রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়

এবার ফাঁস হলো রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়

ফুটবলের মাঠে চমক দেখাতে চান তাবিথ আউয়াল

ফুটবলের মাঠে চমক দেখাতে চান তাবিথ আউয়াল

শ্রীলঙ্কার চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে কি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?

শ্রীলঙ্কার চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকে কি ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ?

ডাটা সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার

ডাটা সেন্টারের সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টার

দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠে" প্রকাশকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ফরিদপুর সাংবাদিক জোটের প্রতিবাদ সভা

দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠে" প্রকাশকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ফরিদপুর সাংবাদিক জোটের প্রতিবাদ সভা

হাত-পা ও চোখ বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হয় --- আবু বাকের

হাত-পা ও চোখ বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হয় --- আবু বাকের

ইনসি ইকো প্লাস সিমেন্ট নিয়ে এলো বাংলাদেশের সমূদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের উপযোগী করে দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের সমাধান

ইনসি ইকো প্লাস সিমেন্ট নিয়ে এলো বাংলাদেশের সমূদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের উপযোগী করে দীর্ঘস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের সমাধান

ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা জন্য আমাদের লড়াই চলছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা জন্য আমাদের লড়াই চলছে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়