বিএনপির ৮০ ভাগ নেতাকর্মী সরকারের নির্যাতনের শিকার- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:০৮ এএম
গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিএনপির প্রায় ৮০ শতাংশ নেতাকর্মী সরকারের দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ছাত্রদল-যুবদলের নেতাকর্মীদের নির্মমভাবে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। কারও পায়ের নখ তুলে নেওয়া হয়েছে, কারও পা মুচড়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে, কারও হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। শুধু বিএনপির সদস্য নয়, এমনকি তাদের স্ত্রী, বোন, মা-বাবাকে পর্যন্ত এরা (সরকার) রেহাই দেয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত বিগত আন্দোলনে গুম, খুন ও নিপীড়নের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, বন্দী অবস্থায় এখনো মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। তিনি এত অসুস্থ হয়েছিলেন যে চিকিৎসকেরা সবাই বলছিলেন আর বোধ হয় বেশি সময় পাওয়া যাবে না। আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া যে তাঁকে তাঁরা (চিকিৎসকেরা) আপাতত চিকিৎসা দিয়ে সেই অবস্থা থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন।
সারা দেশে সরকার একটি ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, কখন কাকে কীভাবে তুলে নিয়ে যায়, এর নিশ্চয়তা নেই। একটা কথা কবে বলেছে, সেটার জন্য ১০ বছর পরও মামলা হয়। ফেসবুকে কেউ মনের কথা লিখলে বা পোস্ট দিলে সে যেখানেই থাকুক, তাকে ধরে নিয়ে আসে। এমনি করে সারা দেশে এমন একটা পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়েছে, যেখানে মানুষ ভয়ে থাকে, ত্রাসে থাকে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এর থেকে মুক্তি পেতে আমরা সংগ্রাম করছি। একটি গণতান্ত্রিক দলের পক্ষে যতটুকু সম্ভব, তার চেয়েও বেশি সংগ্রাম করছি। এখন যেটা প্রয়োজন, জনগণের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করা। যারা গণতন্ত্র চায়, একাত্তরে, ঊনসত্তরে, নব্বইয়ে যেমন ঐক্যবদ্ধ হয়ে; সেই একইভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রথম লক্ষ্য হবে আগে নিজেদের সংগঠিত করা, এরপর গোটা জাতিকে আবারও সংগঠিত করা। তারপর বিদ্রোহ, প্রতিরোধ সৃষ্টি করে এদের পরাজিত করা। কারণ, এর থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ তো একটাই, একে পরাজিত করতে হবে। পরাজিত করতে না পারলে আমরা এর থেকে মুক্তি পাচ্ছি না।
পরে মির্জা ফখরুল ইসলাম ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে গুম, খুন ও অঙ্গহানির শিকার নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের ঈদের উপহারসামগ্রী ও অর্থ তুলে দেন। তাঁদের মধ্যে ঢাকার নিউমার্কেট থানা ছাত্রদল নেতা মাহবুবুর রহমান (নিহত), বংশাল ছাত্রদল নেতা পারভেজ রেজা (গুম), খিলগাঁও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জনি (নিহত), তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদল সভাপতি জাকির হোসেন (গুম), ছাত্রদল নেতা নুরুল ইসলাম, মো. সোহেল, বংশাল থানা ছাত্রদলের চঞ্চল ও পল্লবী থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম (গুম), কাফরুল থানা যুবদলের নুরুল হক ও শামিম মোল্লা (নিহত), সাজেদুল ইসলামসহ (গুম) ২১টি পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সভাপতি আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর হেলাল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে বিকেলে রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা একটা কঠিন সময়, একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। ফ্যাসিবাদী শক্তি সমস্ত জাতির ওপর চেপে বসে আছে। আমাদের সকল আশা-আকাক্সক্ষাগুলো ব্যর্থ করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছি।
সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, একদফার আন্দোলনে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে সমন্বিতভাবে লড়াই করতে হবে। তাহলে আমরা যে চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য কাজ করছি, সেই আন্দোলনে বিজয় অর্জিত হবে, ইনশাআল্লাহ। ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক হারুনুর রশিদ, জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রফেসর আশরাফ আলী আকন্দ,
বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের চেয়ারম্যান প্রফেসর নুরুল আমিন বেপারী, এবি পার্টির আহŸায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএনপি›র শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম।
ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, আব্দুল হাই শিকদার, সাহেদা রফিক, বিজন কান্তি সরকার, চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জহির উদ্দিন স্বপন, ডা. রফিকুল ইসলাম, রিয়াজ উদ্দিন নসু, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, মুনির হোসেন, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, তাঁতি দলের আবুল কালাম আজাদ, যুবদলের আব্দুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ওলামা দলের মাওলানা শাহ নেছারুল হক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।
এছাড়া জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ভ‚ঁইয়া, জামায়াতের মিয়া গোলাম পরোয়ার, মাওলানা আব্দুল হালিম, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ১২ দলীয় জোটের জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, নওয়াব আলী আব্বাস খান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার রাশেদ প্রধান, প্রফেসর ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির লায়ন ফারুক রহমান, জমিয়তের মহিউদ্দিন ইকরাম, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ, বাংলাদেশ এলডিপির মো. ফরিদ উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, এনডিপির কারী আবু তাহের, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার এসএম শাহাদাত, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের আবুল কালাম আজাদ, ডা. শামসুল আলম, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের ফারুক হাসান, রাশেদ খান, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে প্রফেসর ডা. আব্দুল কুদ্দুস, প্রফেসর এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রফেসর লুৎফর রহমান, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সবুজ, কাদের গনি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, খুরশিদ আলম, ডা. আব্দুস সালাম, মো. জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
তাসকিনের শিকার রোহিত
কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ফাঁসির আসামি গ্রেপ্তার হলো ধামরাইয়ে
দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যার বিচার দাবিতে চাটমোহরে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন
বায়তুল মোকাররমের অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ে যা বললেন খতিব রুহুল আমীন
গোদাগাড়ী সরকারি ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক, সাবেক এমপি লুৎফুন নেসা হোসেন মারা গেছেন।
দেড়শর আগেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস
ঝিনাইদহে ৮ মামলায় পুলিশের ৪৩ কর্মকর্তা আসামী
পাহাড়িদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ
গণপিটুনিকে নরমালাইজ করা নিয়ে অভিনেত্রী মেহজাবীনের পোস্ট
গোয়ালন্দে গলায় ফাঁস নিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
হবিগঞ্জে ৫ সাংবাদিক নাশকতার মামলায় আসামি
ঢাবিতে বর্বরোচিত গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জলের জানাজা শেষে পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন
তারাকান্দায় প্রাইভেটকার ও সিএনজির সংঘর্ষে নিহত-২
রাঙামাটিতে পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ইউটিউব চ্যানেল হ্যাকড
দৌলতপুর সীমান্তে অস্ত্র ও মাদক সহ আটক-১
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদে নিয়োগ পেলেন ড. এস এম হাসান তালুকদার
৮ উইকেট হারিয়ে চা বিরতিতে বাংলাদেশ
২০ কোটি সহায়তা দিয়ে এখনও বিএনপির ত্রাণ তহবিলে ৭ কোটি টাকা জমা রয়েছে : ডা. জাহিদ
বায়তুল মোকাররমে তুমুল হট্টোগোল-মারামারি (ভিডিওসহ)