গত ৬দিন ধরে ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সারাদেশের মানুষ। এতে গ্যাস ও বিদ্যুৎতের প্রিডেইড মিটারের গ্রাহকরা টাকা রির্চাজের ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় হাজারো সংযোগ।বিচ্ছিন্নের শস্কায় পড়েন হাজার হাজার গ্রাহক। গত শনিবার বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে স্থানীয় পর্যায়ে রির্চাজ কাযক্রম চালু করা হয। এতে ীর বিভিন্ন এলাকায় সাড়ে ৪ লাখের বেশি গ্রাহক রির্চাজ করতে পেয়েছেন। তবে টাকা না দিয়েও জরুরি ব্যালেন্স সেবা নিয়েছেন গ্রাহকরা। রাজধানী যাত্রবাড়ি এলাকার কয়েকজন গ্রাহক জানান,মিটারে ব্যালেন্স না থাকার কারণে শুক্রবার থেকে রান্না করতে পারি নাই। এর আগের দিন রাত ২ টার সময় গ্যাস এলেও গত কয়েকদিন থেকে এক ঘন্টা আগে রাত একটায় গ্যাস আসছে। মাত্র দুই তিন ঘন্টা চুলা জ্বলার পর দপ করে গ্যাস চলে গেছে। অন্যদিকে গ্যাসের প্রিডেইড মিটারের লাখ লাখ গ্রাহকরা রির্চাজের ভোগান্তিতে শিকার হচ্ছেন এখনো। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কাওরান বাজারে তিতাসের গ্রাহকরা দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে ইমার্জেন্সি ব্যালান্স নিয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থপনা পরিচালক হারুনুর রশিদ মোল্লাহ ইনকিলাবকে জানান, আমাদের গ্রাহকদের জন্য আমরা ইমার্জেন্সি ব্যালান্স দেওয়ার কাজ করছি। আজ বুধবার অফিস খুলছে,এ সমস্যা অনেক সমাধান হবে।
গত সোমবার বিদ্যুৎ ভবনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন,বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা সম্ভষ্টির জন্য কাজ করেছি আরো করবো।বিএনপি-জামাতের লক্ষ্য ছিল নৈরাজ্য ও সহিংসতার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ধ্বংস করা। ডাটা সেন্টার পুড়িয়ে দেয়ায় গ্রাহকদের ব্যালেন্স রির্চাজ করতে সমস্যা হলেও ২৪ ঘন্টা কাজ করে সমস্যা সমাধন করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাসের ইমার্জেন্সি ব্যালেন্সর জন্য বি বাটন ৫ সেকেন্ড চেপে এ বাটন চাপতে হবে। ডেসকো, ডিপিডিসি, ওয়েস্ট জোন, নেসকো, পিডিব এবং আইবি ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স প্রদানের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসময় সকলের সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

কোটা আন্দোলনের বাজারে নিত্যদিনের খরচ চালাতেই হিম সিম খাচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ। মূল্যস্ফীতিতে জীবন জেরবার। দেশের বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৫৩ লাখ। আর গ্যাসের প্রিপেইড মিটার গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৬ লাখ। আর ঢাকা ওয়াসার ৪ লাখ প্রিপেইড মিটার গ্রাহক রয়েছে। আর ২০০ প্রিপেইড বুধ রয়েছে। গ্রাহকরা বুথ থেকে পানি নিতে পারবেন। বিদ্যুৎ-গ্যাস রির্চাজ নিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশের গ্রাহকরা দিশেহারা।

জানা গেছে, সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় প্রিপেইড মিটার কার্ডের ব্যালান্স ভরাতে পারছেন না গ্রাহকরা বিদ্যুৎ,গ্যাস ও পানির সংকটে পড়েছেন রাজধানীর প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী হাজার হাজার গ্রাহক। অসহ্য গরম-অন্যদিকে মিটারে টাকা না থাকায় বৈদ্যুতিক লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়। তবে ঘরে চুলা জ্বলছে না। সরকারি নির্দেশনা দেয়া পরে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা কিছুটা সস্তি ফিরে পেয়েছেন। গ্যাসের প্রিপেইড গ্রাহরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। গ্যাসের গ্রাহকদের অভিযোগ গত শুত্রকার রাত থেকে কার্ডের ব্যালান্স শেষ হওয়ার কারণে সিগন্যাল দেখা দেয়। গত ৬দিন থেকে বিভিন্ন এলাকায় রির্চাজের জন্য ঘুরেছেন তা করতে পারেনি। গতকাল মঙ্গলবার থেকে বিদ্যুতের সমস্যা অনেকটা সমাধান হলেও গ্যাসের সমস্যা এখনো রয়েছে।

রাজধানীর কুড়িল-বাড্ডা-উত্তরা আজিমপুর থেকে মিরপুর,মোহাম্মদপুর-শ্যামলী-ধানমন্ডী- জিগাতলা, ফামগের্ট- কাওরান বাজার-মকবাজারর- মৌচাক- শাহাজানপুর,রামপুরা-মতিঝিল, যাত্রবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ-গ্যাসের গ্রাহকরা গ্যাস অফিসে গ্রাগকরা লাইন ধরিয়ে কার্ড রির্চাজ করছেন।

আগারগাও এলাকা বাসিন্দার রোকেয়া বেগম বলেন, প্রতিমাসে গ্যাসের বিল দেই, অথচ গ্যাস দিনে গ্যাস পাই না। রাতে কখন গ্যাস আসবে সে জন্য তীর্থের কাকের মতো তাকিয়ে থাকতে হয়। আধাঘন্টা পর পর চুলা দেখি গ্যাস এলো কি না। কোনো দিন রাত ১২ টায় কোনো দিন রাত ২টায় এমনকি কোনো দিন ভোট রাত ৩টায় গ্যাস আসে। মাঝে মাঝে চুলায় শুধু শোশো করে বাতাস এলেও গ্যাস আসে না। গত রাতে কিছু সমস্যা কেটে গেছে। রাজধানীর নুরজাহান রোডের এলাবার বাসিন্দার আমিনা বেগম বলেন,গতকাল সোমবার বিদ্যুতের রির্চাজ করা যাচ্ছে। তবে গ্যাসের সংকট রয়েছে।

রাতে কখন গ্যাস আসবে সে জন্য তীর্থের কাকের মতো তাকিয়ে থাকতে হয়। আধাঘন্টা পর পর চুলা দেখি গ্যাস এলো কি না। কোনো দিন রাত ১২ টায় কোনো দিন রাত ২টায় এমনকি কোনো দিন ভোট রাত ৩টায় গ্যাস আসে। মাঝে মাঝে চুলায় শুধু শোশো করে বাতাস এলেও গ্যাস আসে না। রাত জেগে রান্না করতে হয়।’ বাসাবাড়ির গ্যাস সংকট নিয়ে ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বললেন শনির আখড়ার জিয়া স্মরণী রোডের গৃহিনী রুমানা খান। তিনি বলেন, প্রতি মাসে বাসা ভাড়ার সঙ্গে গ্যাসের বিল পরিশোধ করছি। তারপরও বিদ্যুতের চুলায় রান্না করতে হয়। শুধু রুমানা খান নয়, রাজধানী ঢাকার হাজার হাজার গৃহিনীর এই অবস্থা। লাখো গৃহিনীকে যেমন গ্যাসের জন্য নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। তেমনি শিল্প কলকারখানার মালিকদেরও গ্যাসের বিল পরিশোধ করে এবং শ্রমিকদের বসিয়ে রেখে বেতন দিয়ে দিতে হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের একজন শিল্পমালিক জানান, তার গ্যাসের অভাবে কারখানায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। ৮ ঘন্টার শিপ্টে শ্রমিকদের প্রতিটি শিপ্টে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। গ্যাসের অভাবে অনেক কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে; কোনো কোনো কারখানায় উৎপাদন কর্মঘন্টা কমিয়ে দেয়ায় শ্রমিকরা কাজ হারাচ্ছেন।

তিতাসের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট জনসংখ্যার ৫ থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ মানুষ গ্যাসের সুবিধা পায়। দফায় দফায় গ্যাসের দাম বাড়ানো হলেও চাহিদার মতো সরবরাহ করতে পারছে না। উন্নয়নের নামে অনেক দৃশ্যমান স্থাপনা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলি ট্যানেল,রাজধানীতে অনেকগুলো ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হলেও ৫ শতাংশ মানুষের গ্যাসের চাহিদা পুরণ করা যাচ্ছে না। রাজধানী ঢাকাসহ তীব্র আকার ধারণ করেছে চলমান গ্যাস সংকট।
রাজধানী ঢাকার রায়ের বাগ, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ি, রামপুরা, বনশ্রী, আরামবাগ, মাতুয়াইল, বাসাবো, শাহজাহান পুর, মিরপুর, ধোলাইপাড়, জুরাইন, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় খবর নিয়ে জানা যায়, বেশির ভাগ বাসায় দিনে গ্যাসের চুলা জ্বলছে না। কোথাও রাত ১২ টার পর কোথাও রাত ২টার পর গ্যাসে দেখা পাওয়া যায়। কোথাও কোথাও সে গ্যাসের চাপ কম থাকায় রান্নাবান্না করা সম্ভব হয় না। তবে কিছু বাসায় দিনে গ্যাস পাওয়া গেলেও চুলায় চাপ কম থাকে। গতকাল শনির আখড়ার ধনিয়া এলাকার কয়েকজন গৃহিনী জানান, আগের দিন রাত ২ টার সময় গ্যাস এলেও গত কয়েকদিন থেকে এক ঘন্টা আগে রাত একটায় গ্যাস আসছে। মাত্র দুই তিন ঘন্টা চুলা জ্বলার পর দপ করে গ্যাস চলে গেছে। এতে যারা চুলায় রান্না চরিয়েছিলেন তারা পড়ে যান বিপাকে। কোনো কোনো দিন গ্যাস চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর গ্যাস আবার আসে; কোনো দিন আসে না। গ্যাসের অভাবে রান্না করতে গিয়ে আমাদের নাকানি চুবানি খেতে হচ্ছে।

বাসাবাড়ি ও শিল্প কারখানায গ্যাসের সংকট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, গ্যাসের সংকট অল্পদিনের মধ্যেই কেটে যাবে।