শুধু ৬ জন হত্যার তদন্ত পুরো হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দেয়ার নামান্তর : মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার

২৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০৭ এএম

শত শত নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সরকারি দলের সন্ত্রাসী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হতাহত করলো অথচ সরকারের ইশারায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি শুধুমাত্র ছয় জনের হত্যাকান্ড তদন্ত করবে এটিকে সুকৌশলে পুরো হত্যাকান্ডকে ধামাচাপা দেয়ারই নামান্তর বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, জনগণ পুরো ঘটনা ও হত্যাকান্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করে। নইলে ব্যর্থতার সকল দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ করা উচিৎ বলে জনগণ মনে করে। গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিন এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে আড়াল করতে এবং উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপকৌশল হিসেবে বিএনপির নির্দোষ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার কিংবা নেতা-কর্মীদেরকে বাসায় না পেয়ে তাদের সন্তান অথবা বাসার সদস্যদের গ্রেফতার ও অশালীন আচরণ সহ বাড়ির আসবাবপত্র ভাংচুর করা হচ্ছে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার মিথ্যা অভিযোগে ঢালাওভাবে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর সরকার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য দোষারোপ করছে। যদি তাই হয়, তাহলে তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়নি কেন? এটাই জনগণের প্রশ্ন। এতে প্রমাণিত হয় যে, বিএনপি কিংবা বিরোধী দলের কেউই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত নয়।

তিনি বলেন, সরকার তার নিজস্ব বাহিনী দিয়ে রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলো ক্ষতি সাধন করে দুর্নীতির পথ প্রশস্থ করেছে এবং জনগণ ও বিশ^বাসীর নিকট বিএনপিসহ বিরোধী দল সমূহকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিএনপি ও বিরোধী মতের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে তাদের নির্যাতনের পথ তৈরী হয়েছে যা প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য থেকে বোঝা যায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, নিহত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকা নগদ ও ৮ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র করে প্রদান করা হয়েছে, অথচ শত শত নিরীহ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হলো যা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে, যারা এই হত্যার সাথে জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোর আহবান জানাচ্ছি। পাশাপাশি নিহতদের পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ারও দাবি করছি।

তিনি আরো বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশের আপামর শিক্ষার্থীদের যুক্তিসঙ্গত আন্দোলনকে ঘিরে দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের মানুষদেরকে এখনও নির্বিচারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, যুব বিষয়ক সহ-সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, নির্বাহী কমিটির সদস্য সৈয়দ জাহাঙ্গীর হোসেন, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, সাবেক যুবনেতা এস এম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সাদ মোর্শেদ হোসেন পাপ্পা শিকদার এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর ছেলে সানিয়াত ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবের ভাই বিপুল হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

বিএনপি মহাসচিব বিনা অপরাধে গ্রেফতারকৃত বিএনপি নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম, তারিকুল ইসলাম তেনজিং এবং বরকত উল্লাহ বুলু’র ছেলে সানিয়াতসহ আটক সিনিয়র নেতাসহ সর্বস্তরের নেতা ও কর্মীবৃন্দকে অবিলম্বে মুক্তি প্রদানের জোর আহŸান জানান।

বিভাগ : জাতীয়