কোটা ইস্যুতে হওয়া আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতায় নিহতদের পরিবারের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সন্ত্রাসী কর্মকাÐ, হত্যাকাÐের তদন্ত করে বিচার করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আয়োজিত সমন্বয় সভায় তিনি একথা বলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কয়েকটি ওয়ার্ডের নেতাদের সাথে এই সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে ওবায়দুল কাদের সহিংসতার ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও আহতদের প্রতি সহানুভূতি জানান। সহিংসতার ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নেবেন বলেও জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও হত্যাকান্ডের তদন্ত করে বিচার করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে বিএনপি-জামায়াত তাদের পরিচিত আগুন সন্ত্রাস করেছে, এতে দেশের অর্জন ধংসস্তুপে পরিণত করতে চেয়েছে। বিএনপি সারি সারি লাশের উপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ হতাহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে। জনগণের মুক্তির জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই সরকারের লক্ষ্য। কোটা আন্দোলনে ভর করে বিরোধীরা যে ধংসস্তুপ করেছে- তা পরিদর্শন করে বিদেশিরা কম্পিত হয়ে গেছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কোটা আন্দোলনের কুশীলব দাবী করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্দোলন যতক্ষণ পর্যন্ত ছাত্রদের ছিল, ততক্ষণ কোনো সংঘর্ষ হয়নি। পূর্বপরিকল্পিত ভাবে বিএনপি-জামায়াত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সন্ত্রাসী এনে ২০১৪ সালের অগ্নি-সন্ত্রাস বাস্তবায়ন করেছে। ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কোটা নিয়ে একদিনের জন্যও আন্দোলন হয়নি। তবে কেন হঠাৎ করে এ মরণপণ আন্দোলন?

ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী করে বলতে পারেন বিএনপি আগুন সন্ত্রাস করে না! এই মিথ্যাচারের জন্য নোবেল পুরস্কার দেয়া উচিৎ। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের মেগা উন্নয়ন মেট্রোরেল, সেতুভবন ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এগুলো দেখলে বোঝা যায় যে- কারা এসব করেছে। যারা সরকারের উন্নয়ন দেখতে চায় না, তারাই এসব করেছে।

এ দিকে দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত নি¤œ আয়ের মানুষদের জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি জামাতের টার্গেট শেখ হাসিনার সরকারের পতন। আজকে যে পরিস্থিতি সময় আরো খারাপ হতে পারে। শত্রæরা আড়ালে-আবডালে আরো প্রস্তুতি নিয়ে আক্রমণ করতে পারে। সাহস করে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
এ দিকে আজ শুক্রবার ও রোববার সহিংসতায় নিহতদের স্মরণ ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মোনাজাত এবং বিশেষ প্রার্থনা করবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়–য়ার সই করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি ঢাকাসহ সারাদেশে বিএনপি-জামাতের সহিংসতায় নিহত শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রæত সুস্থতা কামনা করে আজ (২৬ জুলাই) শুক্রবার বাদ জুম্মা সারাদেশে সকল মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে আগামী রোববার (২৮ জুলাই) দেশের মন্দির, মঠ, গীর্জা ও গ্যাগোডাসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের উক্ত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।