গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হচ্ছে ছাত্র আন্দোলন: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
০৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:৪০ এএম | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:৪০ এএম
শুক্রবার ‘বাংলাদেশ স্টুডেন্ট প্রটেস্টস বিকাম ‘পিপল’স আপরাইজিং’ আফটার ব্রুটাল গভর্নমেন্ট ক্র্যাকডাউন’- নামে ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক শেখ আজিজুর রহমানের একটি কলাম প্রকাশ করেছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। এতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার করে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ১১ দিন পার হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ প্রশাসন। বাংলাদেশে কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা এখন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিচ্ছে।
জুলাইয়ের শুরু থেকেই কোটা সংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে পুলিশের গুলিতে রংপুরে আবু সাঈদের মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন উত্তাল থেকে আরও উত্তাল হয়ে ওঠে। যে পরিস্থিতি- মোকাবিলা করতে সরকার অধিক কঠোর নীতি গ্রহণ করে। ছাত্র-জনতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী-বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে দুই শতাধিক সাধারণ মানুষ নিহত হন। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এত এত হতাহতের পরও বাংলাদেশের উত্তপ্ত পরিবেশ দমাতে পারছে না সরকার। বরং এই দমন-পীড়ন সরকারের জন্য বুমেরাং হয়েছে বলে মনে করছেন আজিজুর রহমান।
কলামে আরও বলা হয়েছে, চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা এখন জনতার আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছে। গত একমাস এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংস পরিস্থিতি চলছে বাংলাদেশে। বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ, সেনাবাহিনী, আধাসামরিক এবং সরকার-পন্থি ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের হামলার ফলে দেশটিতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার তথ্যানুযায়ী সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ২৬৬ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যাদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। নিহতের পাশাপাশি আহত হয়েছেন ৭ হাজারের বেশি মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওকে উদ্ধৃত করে আজিজুর লিখেছেন, আহত এক যুবককে উদ্ধার করতে যখন আরেক যুবক টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন এক পুলিশ সদস্যকে পর পর তিনটি গুলি করতে দেখা গেছে। এই ঘটনা রাজধানীর শনির আখড়া এলাকার বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। এমন হতাহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত থেকে উত্তপ্ততর হয়ে উঠেছে।
আন্দোলনকারী কয়েক হাজার শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে প্রশাসন। শিক্ষার্থীরা এখন আটককৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থী এবং দেশটির সাধারণ জনতা। শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছে। এ সব দাবির মধ্যেও দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের প্রশাসন। চলছে গ্রেপ্তারও। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক, শিল্পী সমাজ, আইনজীবী এবং সমাজের সর্বস্তরের নাগরিকরা। বলা বাহুল্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এখন গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিয়েছে। ২০০৯ সালের পর থেকে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার শাসনামলে ব্যাপক দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক-দল তার অধীনে অনুষ্ঠিত সবগুলো নির্বাচন নিয়ে কারচুপির অভিযোগ করেছেন।
ভিন্নমত দমনেও শেখ হাসিনার সরকার দমন-পীড়ন নীতি অবলম্বন করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো। এছাড়া তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগও রয়েছে। উদ্ভূত এসব সংকট এবং সাম্প্রতিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ক্ষমতাসীনরা।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কুর্দি যোদ্ধাদের ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি এরদোগানের
৩৫শ’ এজেন্টের অধিকাংশই গুজরাটের পাচারকারী
৫ সাংবাদিককে হত্যা করল ইসরাইল বিমান
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে কী পরিবর্তন আসছে?
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতদ্বৈততা কাম্য নয়
সচিবালয়ে আগুন সন্দেহজনক
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ