এমডির নেতৃত্বে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর হামলা
১৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৬ এএম
বাংলাদেশের গর্ব নোবেল লরিয়েট বিশ্ব নন্দিত ডক্টর ইউনুসের গ্রামীন ব্যাংক কে অকার্যকর ও অবনমন করে শেখ হাসিনার ব্যাক্তিগত আক্রোশ এজেন্ডা বাস্তবায়নের উদ্যেশ্যে গ্রামীন ব্যাংকের আদলে আওয়মিলীগের বিশেষ রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর থেকেই ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস, এমডি, ডিএমডি, জিএম পর্যায় থেকে শুরু করে একদম তৃণমূল মাঠ কর্মী পর্যন্ত সিংহভাগ ব্যাপক ঘুষ বানিজ্য ও অনিয়মের মাধ্যমে রাজনৈতিক বিবেচনায় আওয়ামিলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এর কর্মী সমর্থকদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যাংক পরিচালনার জন্য অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যাংকার এর প্রয়োজন হয় বিধায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার মেধাবী প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে উত্তীর্ণ অত্যন্ত মেধাবী ০৩ টি ব্যাচ সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার, প্রিন্সিপাল অফিসার ও সিনিয়র অফিসার গণ অত্র ব্যাংকে যোগদান করেন।
আওয়ামীলীগ ও শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় রাজনৈতিক বিশেষ বিবেচনায় পরপর ০২ (দুই) বার নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শেখ মোঃ জামিনুর রহমান ০৮-০৪-২০২৪ তারিখে পুনরায় ০২ (দুই) বছরের জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে চুক্তিভিত্তিক যোগদান করেন। চরম দুর্নীতিবাজ এমডি ও তার অনুগত লুটপাট বানিজ্যের সিন্ডিকেটের কর্মকর্তা আল্লামা মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া তানহার (সিস্টেম এনালিস্ট) ও মোঃ শাহেদ আলমগীর, সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট কর্তৃক ক্ষমতার ব্যাপক অপব্যবহার ও সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, ঘুষ বাণিজ্য, অবৈধ কেনাকাটা সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের সুপারিশকৃত সৎ ও মেধাবী ০৩ (তিন) টি ব্যাচের নজরে আসে। সম্প্রতি তারা ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে নিয়ে এই শক্তিশালী দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শেখ মোঃ জামিনুর রহমান (চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত) সহ তার গড়ে তোলা সিন্ডিকেটের পদত্যাগ, অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে বর্তমানে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকটি উত্তাল হয়ে আছে। স্বৈরাচারীতা, নির্যাতন, হুমকি, হেনস্তা, কথায় কথায় বরখাস্ত, চাকুরীচ্যুতি করা সহ আওয়ামীলীগের ব্যাপক রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতা অবৈধভাবে খাটিয়ে ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে দীর্ঘদিন এক প্রকার আয়নাঘরের মতো জিম্মি করে রেখেছেন বলে কর্মকর্তাগণ অভিযোগ করেছেন ।
১৫ই আগস্টে সারাদেশে আওয়ামিলীগের ব্যাপক নাশকতা, অরাজকতার জোড়ালো গুঞ্জন উঠার পরপরই, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শেখ মোঃ জামিনুর রহমান (চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত) ও তার অনুগত দুই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আল্লামা মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া তানহার (সিস্টেম এনালিস্ট) ও মোঃ শাহেদ আলমগীর, সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট আওয়ামিলীগের দেশজুড়ে নাশকতা ও নৈরাজ্য তৈরীর এজেন্ডাটি বাস্তবায়নের জন্য এবং একই সুযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের মেধাবী কর্মকর্তাদের আন্দোলনকে চিরতরে দমন করার জন্য উক্ত স্বেরাচারী রেজিম কর্তৃক ব্যাংকে নিয়োগ প্রদানকৃত আওয়ামিলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এর কর্মী সমর্থকদেরকে সারা বাংলাদেশ থেকে ১৫ই আগস্ট,২০২৪ এ ফেসবুক লাইভ সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে, মোবাইলে কল দিয়ে সবাইকে দলে দলে ঢাকা আসার আহ্বান জানান। ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শেখ মোঃ জামিনুর রহমান এর নির্দেশনায় সারা দেশ থেকে ব্যাংকে বিশেষ সুবিধায় নিয়োগপ্রাপ্ত আওয়ামিলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এর কর্মী সমর্থক, ভাড়াটিয়া গুন্ডা, হোন্ডা বাহিনী, বহিরাগত সহ প্রায় ৪০০ (পাচঁশত) এর অধিক লোক ঢাকায় অনুপ্রবেশ করে। শেখ মোঃ জামিনুর রহমান এর নির্দেশে সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা প্রধান কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, মানব বন্ধনকারী ব্যাংকের নিরীহ সাধারন কর্মকর্তা, কর্মচারী সহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ০৩ টি ব্যাচ অফিসারগণের উপরে লাঠিসোটা, হকিস্টিকি, ধারালো দেশীয় অস্ত্র সহ হায়েনার মতো ঝাপিয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে বহু আন্দোলনকারী উক্ত নাশকতাকারীদের দ্বারা আহত, মারাত্বক জখম, রক্তাক্ত হয়ে মুমুর্ষ অবস্থায় রয়েছে। উক্ত বর্বরোচিত হামলার ছবি ও ভিডিও ক্লিপও ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়া সহ অন্যান্য প্রচার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। হামলা পরবর্তীতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোঃ জামিনুর রহমান, সিস্টেম এনালিস্ট ইয়াহিয়া তানহার ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রধান কার্যালয়ের বহিরাগত ঢাকায় অনুপ্রবেশকারী আওয়ামিলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, হোন্ডা হেলমেট বাহিনী , কর্মী সমর্থকদেরকে নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে লাঠিসোটা হাতে ব্যাপক শোডাউন দেন এবং সবাইকে নিয়ে প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশ করে তা দখল করেন। ফেইসবুক লাইভ, ছবি, ভিডিও সহ সিসি টিভির ক্যামেরার ফুটেজ তদন্ত করলেই দেখা যাবে এরা সবাই বহিরাগত এবং কেউই প্রধান কার্যালয়ের সদস্য নয়। প্রচন্ড ধূর্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোঃ জামিনুর রহমান এবং ধুরন্দর সিস্টেম এনালিস্ট ইয়াহিয়া তানহার এই বরিাগতদের কে কেউ যাতে সন্দেহ না করে তাই মাথায় লাল কাপড় বেধে, বিএনপি জামায়াতের পক্ষে সংশ্লিষ্ট স্লোগান সমূহ এবং আওয়ামিলীগ বিরোধী স্লোগান দেওয়ানোর পরিকল্পণা করেন এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মতো করে সজ্জিত করে সবাইকে ঢাকায় অনুপ্রবেশ করান।
সপ্তাহের বেশী সময় ধরে চলতে থাকা প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের এই আন্দোলনটি ছিলো সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ যা “DBC নিউজ”, যমুনা টেলিভিশন, দৈনিক ইত্তেফাক সহ বহু মিডিয়াতে ইতিমধ্যেই সম্প্রচার হয়েছে। গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনটিকে ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন করা ও নাশকতা করার জন্য আওয়ামিলীগ সরকার কর্তৃক নিয়োগ পাওয়া এই এমডি কেন ঠিক ১৫ই আগস্ট এর দিনটিকেই বিশেষ ভাবে বেছে নিয়েছেন এবং কেন এই দিনটিতেই এই ঘৃণ্য, বর্বোরচিত হামলা চালিয়েছেন তা জানতে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সপারিশকৃত কর্মকর্তাগণ ও সাধারন নিরীহ কর্মকর্তা কর্মচারীগণগণ কর্তৃক মাননীয় অর্থ উপদেষ্টা, মাননীয় অর্থ সচিব, মানীয় গভর্ণর, মানীয় স্বরাষ্ট্র সচিব এবং সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এর সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য জোড়ালো দাবী করেছেন । এছাড়াও তারা বিশেষভাবে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও নতুন স্বাধীনতার সূর্য সন্তান সমন্বয়ক ভাই বোনদের কাছেও নাশকতার উদ্যেশ্যে সন্ত্রাসী বাহিনীকে ছাত্র জনতার মতো সাজিয়ে ঢাকায় অনুপ্রবেশ করানোর ষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার জন্য বিনীত অনুরোধ করেছেন। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর তাদের সকল নেতাকর্মী ও দোসরগণ যখন সবাই পলায়ন করছেন সেখানে আওয়ামীলীগ সরকারের প্রত্যক্ষ মদদপুষ্ট এই সিন্ডিকেটটি কিভাবে বহাল তবিয়তে থেকে প্রতাপের সাথে সকল অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন এটা এখন সবার প্রশ্ন। আওয়ামীলীগ সরকারের আমল থেকে ব্যাপক দুর্নীতি, লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত বিপুল অবৈধ টাকা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তারা বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর সমূহকে ম্যানেজ করে রেখেছেন বলে জানা যায়।
আন্দোলনকারী কর্মকর্তাগণ জানিয়েছেন যে, ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ চাহিদার বিপরীতে অবৈধভাবে উচ্চমূল্যে অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা, দুর্ণীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্বৃত্তায়ন, অভ্যন্তরীণ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় উত্তরপত্র টেম্পারিং, চাকুরীতে অভ্যন্তরীন নিয়োগকে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিকীকরণ, অর্থের বিনিময়ে বদলী-পদোন্নতি-নিয়োগ, মামলা বানিজ্য, অর্থের বিনিময়ে শাস্তি মওকুফ সহ প্রতিষ্ঠানটির সকল সেক্টরে দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ে তোলার মতো বহু গুরুতর অভিযোগ রয়েছে উক্ত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
শেখ মোঃ জামিনুর রহমান, আল্লামা ইয়াহ্ইয়া তানহার, মোঃ শাহেদ আলমগীর বিগত আওয়ামীলীগ সরকার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এছাড়াও উল্লেখ্য যে সিস্টেম এনালিস্ট আল্লামা ইয়াহিয়া তানহার আওয়ামীলীগের অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ইঞ্জি: মোশাররফ হোসেন এর একান্ত সহযোগী এবং ছাত্রলীগের ক্যাডার ছিলেন বলে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ সকলেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও আশীর্বাদপুষ্ট ব্যাক্তিদের মধ্যে তারা অন্যতম ছিলেন বিধায় তাদের বিশাল রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাদের অনিয়ম, দুর্ণীতি নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত উক্ত খবরকে তাৎক্ষণিকভাবে তারা ধামাচাপা দিয়ে দেন। আওয়ামীলীগ রাজনীতির সাথে সরাসরি সক্রিয় সংশ্লিষ্টতা এবং শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ার কারনে -প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইন মন্ত্রনালয় সহ অন্যান্য সেক্টরে তাদের অবাধ যাতায়াত, নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সিস্টেম এনালিস্ট আল্লামা ইয়াহিয়া তানহার আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে একজন সাধারণ কম্পিউটার অপারেটর থেকে রাতারাতি স্পেশাল প্রমোশন পেয়ে পেয়ে সিস্টেম এনালিস্ট হিসেবে সরকারি পঞ্চম গ্রেডে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন বলে ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছ থেকে জানা গেছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোঃ জামিনুর রহমান এর পৃষ্ঠপোষকতায় তার বিশেষ আশীর্বাদপুষ্ট কর্মকর্তা সিস্টেম এনালিস্ট মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া তানহার একজন একক ব্যাক্তি হওয়ার পরও তাকে একই সাথে বৃহৎ কেনাকাটা সংক্রান্ত ২(দুই)টি বিভাগের (আইসিটি বিভাগ ও সাধারন সেবা বিভাগ) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে উক্ত ২(দুই)টি বিভাগ এর কেনাকাটায় কোটি কোটি টাকা অনিয়ম, লুটপাট ও দুর্নীতি করা হয়েছে, যার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। বিগত ০২-০৫-২০২৪ তারিখে “Dhaka Post” কর্তৃক কেনাকাটায় পিপিআর লঙ্ঘন করেছে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক” শিরোনামে এবং গত ০৪-০৫-২০২৪ তারিখে “মানবজমিন” পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ” শিরোনামে দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যম গুলো খবর প্রকাশ করে।
দেশে সম্প্রতি সংঘটিত ছাত্র জনতার বিপ্লবের শুরু থেকেই দেশ যখন উত্তাল, কার্ফিউ জারী হয়, দেশের এমন সার্বিক সংকটজনক পরিস্থিতির মধ্যেও প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সারা বাংলাদেশের সকল কার্যালয়ের পদোন্নতি ভাইভা প্রার্থীদেরকে প্রধান কার্যালয়ে আনিয়ে রাত ১১ টা-১২ টা, এমনকি মধ্যরাত পর্যন্তও দৈনিক অফিস দিন ছাড়াও শুক্র-শনিবারও অব্যাহতভাবে ভাইভা কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতে ভাইভা না নিয়ে শুধুমাত্র স্বাক্ষর গ্রহন করে ভাইভা কার্যক্রম সম্পন্নকরনের চেষ্টা চলছে। উক্ত পদোন্নতি ভাইভাতে প্রার্থী প্রতি ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা গ্রহনের মাধ্যমে প্রায় ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্যের জোড়ালো অভিযোগ রয়েছে। তাই ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভাইভা শেষ করার সাথে সাথেই তাৎক্ষনিকভাবে তার ফলাফল প্রকাশ করে ফেলতে চাচ্ছেন বলে ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়াও গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে “পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কর্মচারী পদোন্নতি নীতিমালা-২০১৯” অনুযায়ী চলমান পাতা-০২ এর অনুচ্ছেদ নং ১ এর ১.২ কলামের সুস্পষ্ট লংঘন করেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুধুমাত্র ব্যাপক পদোন্নতি বানিজ্য করার জন্যই তড়িঘড়ি করে উক্ত ভাইভার আয়োজন করেছেন।
এছাড়াও ব্যাংকে ২০ তম গ্রেডে প্রায় ৭২ জন নিরাপত্তা রক্ষী ও ৪৯২জন অফিস সহায়ক নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে ব্যাপক নিয়োগ বানিজ্য ও দুর্ণীতি হয়েছে। উক্ত নিয়োগে উত্তরপত্র টেম্পারিংসহ অনেক অনিয়ম হয়েছে। এটা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে প্রশ্নবিদ্ধ অনেক ফাইল প্রধান কার্যালয় থেকে গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিসি টিভি ফুটেজ গায়েব করে দেওয়ার মতোও অনেক অভিযোগ রয়েছে এই সিন্ডিকেটেটির বিরুদ্ধে।
ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অভিযোগ, এই সিন্ডিকেটটি বহুল আলোচিত আয়নাঘরের মতো নির্যাতনের বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে সর্বগ্রাসী নিয়ন্ত্রণ ও কন্ঠরোধ করেছেন। প্রতিটি কর্মকর্তা কর্মচারীদের কে ভয়েস এনাবেল সিসি টিভি ক্যামেরার মাধ্যমে তাদের গতিবিধি, কথাবার্তা প্রতিনিয়ত মনিটরিং ও রেকর্ডিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মতামত নিয়ন্ত্রণ, কর্পোরেট সিম এর মাধ্যমে ফোন ট্র্যাকিং করা এই প্রতিষ্ঠানের নিত্যদিনের ঘটনা। কেউ ম্যানেজমেন্ট এর বিপরীতে ভিন্ন মতামত প্রদান করলে কিংবা চলমান অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুললেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাদেরকে কথায় কথায় ব্যাখ্যা তলব, সাময়িক বরখাস্ত, হয়রানীমূলক বদলী, চাকুরীচ্যুতি, প্রশাসনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, হুমকি ধামকি, হেনস্তা, বিধি মোতাবেক প্রাপ্য তাদের ন্যয্য সুযোগ সুবিধা সমূহ বন্ধ করে দেওয়া সহ নানাবিধ অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এসবের প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে ব্যাবস্থাপনা পরিচালক কে বারংবার অনুরোধ করা হলেও প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা ব্যাপক বৈষম্য, অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাটের বিষয়ে তিনি কোনরকম পদক্ষেপ নিতে সম্পূর্ণ অপারগতা প্রকাশ করেন। ব্যাংকের সেবা বিভাগে ও আইসিটি বিভাগের কেনাকাটা নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে বিধায় ০৭.০৮.২০২৪ তারিখে প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসারগন এমডির নিকট একটি আবেদন জানান। অভিযুক্ত ইয়াহিয়া তানহারকে তার নিজ বিভাগ থেকে বদলি করে একটি পূর্ণাঙ্গ অডিট পরিচালনা এবং নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা নিরূপণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সেই আবেদনটি সম্পূর্ণ নাকচ করে দেন।
ছাত্র আন্দোলন সফল হওয়ার পরবর্তীতে সাথে সাথে এই দুর্নীতিবাজ এমডি ও তার দোসররা তাদেরই প্রতিষ্ঠত বঙ্গবন্ধু কর্নারটি কে রাতারাতি অফিস থেকে সরিয়ে ফেলেন এবং নিজের কক্ষ গুলো থেকে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলেন এবং আওয়ামিলীগ প্রতীক নৌকার শোপিস সমুহ সাথে সাথে লুকিয়ে ফেলেন। এমনকি এমডি শেখ মোঃ জামিনুর রহমান ও সিস্টেম এনালিস্ট ইয়াহিয়া তানহার পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে ও শেখ হাসিনা ও আওয়ামিলীগ সংশ্লিষ্ট সবকিছু সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু ব্যাংকের দলিল দস্তাবেজ, নথিপত্রে "শেখ হাসিনাই রুপকার,পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক উপহার" সংবলিত লোগোটি তারা সরাতে পারেননি।
বর্তমানে তারা কেউ কোনদিন আওয়ামিলীগ এর সাথে সংষ্লিষ্টতা ছিলোনা মর্মে ভোল পাল্টানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এখন তারা বিএনপি ও জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যাক্তি, সরকারি কর্মকর্তা, আমলাদের সাথে লিয়াজো করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। অথচ এমডি, শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন, ঘনিষ্ঠ ও আশীর্বাদ পুষ্ট ছিলেন বিধায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে ২য় মেয়াদে পুনরায় ০২(দুই) বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান এবং নিয়োগ পাওয়ার সাথে সাথেই তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে ফুল দিতে চলে যান এবং ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে সেখানে আবশ্যিক ভাবে যেতে বাধ্য করেন।
দুর্নীতির সাথে যুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি করে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করনে দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএফআইউ, এনবিআর ও সংশ্লিষ্ট বিধিবদ্ধ সংস্থা কর্তৃক সকল রকমের তদন্ত পরিচালনার জন্য ব্যাংকের আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ ও টাকা যাতে বিদেশে পাঁচার করা কিংবা সরিয়ে নিতে না পারে তার জন্য তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সকল ধরণের ব্যাংক একাউন্ট ফ্রীজ, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস একাউন্ট এর লেনদেন যাচাই, সম্পদের অনুসন্ধান সহ সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অতি দ্রুত নেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, মাননীয় অর্থ উপদেষ্টা, মাননীয় অর্থ সচিব, মাননীয় গভরর্ণর মহোদয়ের কাছে তারা বিনীত অনুরোধ করেছেন। এছাড়াও অভিযুক্ত দুর্ণীতিবাজ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যাতে অভিযোগকারী ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে হয়রানীমূলক বদলী, বরখাস্ত, অব্যাহতি, হুমকি, হেনস্তা,হামলা না করা হয়, সেই সাথে তাদের নিরাপত্তারও জোর দাবী জানিয়েছেন।
উল্লিখিত বিষয় গুলোর সাপেক্ষে সীমাহীন বৈষম্য, দুর্নীতি, লুটপাট, ব্যাপক অনিয়ম, স্বৈরাচারী ফ্যাসীবাদী নির্যাতন ও সকল অপকর্মের অভিযোগে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোঃ জামিনুর রহমান সহ তার সহযোগী অনুগত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, সিস্টেম এনালিস্ট আল্লামা মোহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া তানহার, সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট মোঃ শাহেদ আলমগীরের পদত্যাগ ও তাদেরকে অপসারন করে দ্রুত আইনগত প্রক্রিয়ার আওতায় আনার জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বর্তমান সরকারের কাছে জোড়ালো দাবী জানানো হয়েছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মুসলিম জাগরণের অগ্রপথিক মুন্সী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ আজ জন্মদিন
গত সাড়ে ১৫ বছর যারা শাসন করেছে, তারা দেশকে না সাজিয়ে নিজেদেরকে সাজিয়েছে: আমীরে জামায়াত
রাজস্থানে ৩ দিনেও উদ্ধার হয়নি ৭০০ ফুট গর্তে আটকে থাকা শিশু
জকিগঞ্জে বালাউটি ছাহেবের ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে ভক্ত-মুরিদানের ঢল
‘অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা এই কপালপোড়া জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে’
বিমান হামলায় গাজায় একসঙ্গে ৫ সাংবাদিককে হত্যা
বান্দরবানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো নির্মাণের নির্দেশ
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সচিবালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে উপদেষ্টারা
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরায়েলের
ফায়ার ফাইটার নয়নের জানাজা বাদ জোহর, অংশ নেবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সচিবালয়ের আগুন লাগা ভবনেই উপদেষ্টা নাহিদ-আসিফের মন্ত্রণালয়
সচিবালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
চাঁদপুরে দুই উপজেলার মধ্যবর্তী সেতু ভেঙ্গে পড়েছে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাস মালিককে কুপিয়ে হত্যা
মোজাম্বিকে কারাগারে ভয়াবহ দাঙ্গায় নিহত ৩৩, দেড় হাজার বন্দির পলায়ন
কেনাকাটার সময় আমরা সাধারণত যে ভুলগুলো করি
মিরপুরে সাংবাদিকদের ২১ বিঘা জমি এখনও ইলিয়াস মোল্লাহর দখলে!
রংপুরে আওয়ামী লীগ নেতা মিলন গ্রেপ্তার
ইসরায়েলি বর্বরতা চলছেই, গাজায় নিহত বেড়ে প্রায় সাড়ে ৪৫ হাজার
সচিবালয়ের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ, নিরাপত্তা জোরদার