ইসলামকে সর্ব যুগে একক কার্যকর সিস্টেম প্রমাণ করতে উচ্চতর গবেষণামূলক দ্বীনি শিক্ষার বিকল্প নেই
১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৮ পিএম | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০২ পিএম
গত ৩ নভেম্বর (২৪ইং) রবিবার ব্রিটেনের বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ইসলামী চিন্তাবিদ এবং উচ্চতর গবেষণামূলক দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়াতুল খাইর আল-ইসলামিয়া সিলেট-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুফতি আবদুল মুনতাকিমকে মিশরের রাজধানী কায়রোতে বিশেষ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে মিশরের ঐতিহাসিক আল আযহার ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী স্টুডেন্টদের প্রিয় সংগঠন ❝আযহার ওয়েল ফেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ, মিশর❞।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি স্বল্প সময়ের নোটিশে আয়োজিত হলেও এতে আল-আযহার ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন ফ্যাকাল্টিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়। সংবর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ওয়েলফেয়ারের সম্মানিত সভাপতি, এমফিল গবেষক আব্দুল আজিজ তরফদার। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রবিন্দু ও প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বৃটেন থেকে আগত মুফতি আব্দুল মুনতাকিম। সংবর্ধনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য প্রতিনিধি আখতারুজ্জামান, পিএইচডি গবেষক ও উপদেষ্টা প্রধান মুশাররফ হোসাইন, এমফিল গবেষক ও উপদেষ্টা আবু আদনান মহিবুর রহমান, এমফিল গবেষক ও উপদেষ্টা আব্দুর রহমান, উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ সোহাগ, শরিফুল ইসলাম ও অন্যান্য সিনিয়র, জুনিয়র সদস্যগণ। সংবর্ধনা সভায় মেহমানের পরিচিতি ও স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন সদস্য প্রতিনিধি, মিশরের দাওয়াত ও তাবলীগ এর ময়দানে সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুরব্বি জনাব আখতারুজ্জামান ও উপদেষ্টা প্রধান শাইখ মোশাররফ হোসাইন।
এ সময় শায়খ আবু আদনান মহিবুর রাহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন মুফতি আবদুল মুনতাকিমকে আজ আমরা মিশরের মাটিতে পেয়ে যারপর নাই আনন্দিত। তাঁর উপর আল্লাহ পাকের অনেক গুলো নেয়ামত রয়েছে। একদিকে আল্লাহ তাঁকে অনেক বড় আলেম ও ওলীর খান্দানে জন্ম দিয়েছেন। পূর্ব সিলেটের প্রবীণ শায়খুল হাদীস আল্লামা আবদুল মুছাওয়ির (যিনি আইওরী মুহাদ্দিস সাহেব হুজুর নামে সুপরিচিত) সাহেব তাঁর পিতা। খলিফায়ে মাদানী ও অলিকুল শিরোমণি শায়খ আব্দুল গাফফার মামরখানি (রাহঃ) তাঁর আপন নানা। এসবের উর্ধ্বে আসল পরিচয় তাঁর ইলমী ও আমলী উচ্চ মাকাম। তিনি দীর্ঘ প্রায় এক দশক পর্যন্ত দারুল উলূম করাচীর মত মহান ইলমী মারকাযে শায়খুল ইসলাম হযরত তাকি উসমানী ও মুফতি মুহাম্মদ রাফি উসমানী রাহঃ এর সান্নিধ্যে অবস্থান করেছেন। সিলেটে জামেয়াতুল খাইর আল ইসলামিয়ার মতো একটি উচ্চতর গবেষণামূলক শিক্ষা নিকেতন প্রতিষ্ঠা করে সর্বত্র আশার আলো সঞ্চার করেছেন তিনি। আবার বৃটেনে তিনি এক দিকে বাংলা ও উর্দু উভয় ভাষায় ইকরা টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে দ্বীনের দাওয়াত ও ফিকহি খেদমত দুনিয়াব্যাপী আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আল আযহার ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীগণ মুফতি আবদুল মুনতাকিম সাহেবকে পেয়ে যথেষ্ট অনুপ্রাণিত ও আনন্দিত হয়েছি।
সভাপতির দীর্ঘ বক্তব্যে জনাব তরফদার, আজহারওয়েলফেয়ার মিশর এর শুরুলগ্ন থেকে অদ্যাবধি বহুমুখী কার্যক্রম ও উন্নয়নের পুরো ইতিবৃত্ত সংবর্ধিত মেহমান মুফতি আবদুল মুনতাকিম ও উপস্থিতির সামনে সুন্দর ভাবে তুলে ধরেন। তাঁর আলোচনায় আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা ছাত্রদের পড়ালেখা, ইলম, আমল, মিশর জীবনের সীমাবদ্ধতা, অপ্রতুলতা ও নানা প্রয়োজনীয়তার বিষয়গুলো অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপিত হয়।
সর্বশেষ, প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি আবদুল মুনতাকিম ওয়েলফেয়ারের দায়িত্বশীলবৃন্দ ও উপস্থিত সকলের শুকরিয়া আদায় করে বলেন যে, মাত্র কয়েক ঘন্টার অবগতির মাধ্যমে প্রায় একশত উলামায়ে কেরাম ও শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে যেভাবে আপনারা আমার মতো নগন্য একজন তালিবুল ইলমকে সম্মান প্রদর্শন করলেন তা আপনাদের মহত্ত্ব ও বড় মনের পরিচায়ক। মুফতি আবদুল মুনতাকিম তাঁর বক্তব্যে ইলমে দ্বীনের ফজীলত, গুরুত্ব ও বর্তমান যুগে ওহীর দিকনির্দেশনার কার্যকারিতা সম্পর্কে অত্যন্ত আবেগপূর্ণ ও উৎসাহব্যঞ্জক আলোচনা উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন দুনিয়া উপার্জনের জন্য অসংখ্য পথ অবলম্বনের সুযোগ রয়েছে। ইলমে দ্বীনের মধ্যে উচ্চতর যোগ্যতা অর্জনের মূল উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি, নিজের সংশোধন ও যুগোপযোগী কার্যকর দ্বিনী খেদমত হওয়া উচিত। তিনি বলেন ইসলাম তথা ওহী ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তব প্রয়োগ যতক্ষণ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত উচ্চতর গবেষণামূলক দ্বীনি শিক্ষায় ডিগ্রি অর্জন পরিপূর্ণ সফল বিবেচিত হতে পারেনা। একবিংশ শতাব্দীর বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতেও ইসলামইযে একমাত্র কার্যকর চিরআধুনিক ও মুক্তি দানকারী জীবন ব্যবস্থা, তা হাতে কলমে প্রমাণ করতে পারাই হবে উচ্চতর গবেষণামূলক দ্বীনি শিক্ষার প্রকৃত ফলপ্রসূ। শুধু পদ পদবী, নিছক নাম- সুনাম এবং পার্থিব জীবনের ভোগবিলাস দ্বিনী ইলমের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হতে পারেনা।ইখলাস, খাশিয়্যাত ও লিল্লাহিয়াত এবং না'ফিয়্যাত অর্জন করতে হলে উস্তাদ গনের সম্মান ও আল্লাহ ওয়ালাদের সান্নিধ্যে থাকা অত্যন্ত জরুরি। দাওয়াত ও তাবলীগ এর মেহনত এর সাথে যুক্ত থাকলে ছাত্রজীবনে আমলের অভ্যাস গড়ে ওঠে। এজন্য সুন্দরতম আমলের সৌরভ লাভে ধন্য হতে নিজেদেরকে দাওয়াত ও তাবলীগের আলোকিত পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে সচেষ্ট হওয়ার প্রয়োজন অত্যাধিক।
পরিশেষে জনাব মাহফুজুর রহমানের দোয়া ও উপস্থিত মেহমানদের রুচিসম্পন্ন আপ্যায়নের মাধ্যমে জনাকীর্ণ এ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আগামীকাল বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস
ব্যারিস্টার খোকনসহ ৬৬ জন আইনজীবীকে অব্যাহতি
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা আইসিটি মামলা বাতিল
একজন বিকৃত রুচির সমাজবিধ্বংসীকে উপদেষ্টা হিসেবে জনগণ দেখতে চায় না
শ্যামনগরে ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা
ইসলামি দেশগুলোতে ইরানের রপ্তানি ১৭ শতাংশ বেড়েছে
শুধু মুসলিম যাত্রীদের ‘হালাল ফুড’ দেবে এয়ার ইন্ডিয়া
মানদণ্ড রেখে কাজ করলে সাধারণ প্রবাসীদের জন্য সুফল বয়ে আনবে
বাঘায় স্কুল ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার প্রধান শিক্ষক
ন্যায়পরায়ণ, আল্লাহভীরু শাসক ছাড়া শান্তির আশা করা যায় না -কক্সবাজারে বিশাল সমাবেশে পীর সাহেব চরমোনাই
ময়মনসিংহে শহীদ সাগরের কবর জিয়ারত করলেন নতুন বিভাগীয় কমিশনার
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিদর্শন করলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার
ময়মনসিংহে ৩ মাস পর আন্দোলনে নিহত দুজনের মরদেহ উত্তোলন
গাজীপুরে শ্রমিক ছাটায়ের প্রতিবাদে কর্মবিরতিঃ পুলিশের উপর হামলা
ময়মনসিংহে কৃষক হত্যা মামলায় মা ও ছেলের যাবজ্জীবন
মওলানা ভাসানীর ৪৮ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলে আলোচনা সভায় দুই উপদেষ্টা
যশোরে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট আর্মি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
জো নেশানহুডের ডাক দিয়ে বিতর্কে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী
দুই যুগ পর মুক্তি পেতে যাচ্ছে কালজয়ী সিনেমা "গ্লাডিয়েটরের দ্বিতীয় সিক্যুয়েল"
আলিয়া মাঠে খতমে নবুওয়াত মহাসম্মেলনে বক্তারা "যারা হজরত মুহাম্মদ সা. কে সর্বশেষ নবী মানেন না তারা কাফের"