শিক্ষাভবন-সচিবালয় ঘেরাও, চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে কাজ হস্তান্তরের আশ্বাস উপদেষ্টা নাহিদের
১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ পিএম | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ পিএম
ইউজিসির আবাসন নিয়ে হিট প্রকল্পের বৈষম্য ও সেনাবাহিনীর হাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে শিক্ষা ভবন ও সচিবালয় ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও শিক্ষা উপদেষ্টার নবনিযুক্ত এক সচিব এসে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করবেন বলে আশ্বাস দেন।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর মিছিল নিয়ে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট হয়ে দুপুরে শিক্ষা ভবন ও তারপর সচিবালয়ের সামনের অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তামজিদ হোসেন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১ টা হল রয়েছে, তা সত্বেও তাদের পাইলট প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। অথচ জগন্নাথ সব অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমাদের কেন যুক্ত করা হলো না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের দাবির সুরাহা না পাচ্ছি, ততক্ষণ এখানে আমরা অবস্থান ও ঘেরাও কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।
প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের শিক্ষার্থী নওশীন নাওয়ার জয়া বলেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল নির্মান করা হচ্ছে। আমরা জবিয়ান রা পিছিয়ে আছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের সারাদিন টিউশনি করতে হয়। আমাদের দাবি সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস কাজ দিতে হবে। ইউজিসি যে হিট প্রকল্প নিয়েছে তা বৈষম্যমূলক।
আন্দোলনের মুখপাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তৌসিব মাহমুদ সোহান বলেন, "আমরা আমাদের দাবি গুলোর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রনালয়কে তিন দিনের একটি আল্টিমেটাম দিবো। এবং হিট প্রকল্পের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে আজকের মধ্যেই লিখিত দিতে হবে।"
এদিন শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পূর্ন সমর্থন জানিয়ে আন্দোলনে উপস্থিত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির। বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ইকবাল হোসেন শিকদার বলেন, শিক্ষার্থীদের যেকোনো ন্যায্য আন্দোলনে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। আমরা প্রত্যক্ষভাবে আজ সরাসরি আন্দোলনে যুক্ত আছি। সুষ্ঠভাবে দ্রততার সাথে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সম্পন্ন করার জন্য সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করতে হবে। সেই সাথে হিট প্রকল্পে জবিয়ানদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বেলাল হোসেন বলেন, আমাদের দাবী যৌক্তিক। আমরা কোন অযৌক্তিক দাবী নিয়ে এখানে আসি নি। মনে রাখতে হবে আমাদের দ্বারা যেন কোনো জনদুর্ভোগ তৈরী না হয় এবং আমাদের দাবীও যেন আদায় হয়। এজন্য আমাদেরকে এক সাথে কাজ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা সচিবালয় ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করলে উপদেষ্টা নাহিদ হাসান উপস্থিত হন কিন্তু শিক্ষার্থীরা তার সাথে কথা বলতে রাজি হন নি। তারা শিক্ষা উপদেষ্টার সাথে কথা বলতে চান, এক পর্যায়ে শিক্ষা উপদেষ্টার নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব শিক্ষার্থীদের সাথে এসে কথা বলেন। তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাথে আলোচনা করে তারপর যতদ্রুত সম্ভব হল নির্মাণ কাজটি করা যায় তা সিদ্ধান্ত নিব। শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক দাবীর আদায়ে আশ্বস্ত করেন তিনি।
এরপর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, আমি প্রথমে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যে জুলাই বিপ্লবের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখনও রাজপথে আছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্টে থাকে। তাদের হল নেই। শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দাবি সম্পূর্ণ যৌক্তিক। শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে আমি পুরোপুরি একমত। আমরা তিন দিনের মধ্যে হল করে দিতে পারবো না কিন্তু আর্মির কাছে হস্তান্তর করতে পারি। কিন্তু এর জন্য আমাদের বসতে হবে। আমরা তিন দিন মধ্যে নতুন ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করবো সেই কাজ করবো।
এ সময় শিক্ষার্থীদের স্লোগান ছিল, জবিয়ান আসছে, রাজপথ কাঁপছে, এক দুই তিন চার, ক্যাম্পাস আমার অধিকার, ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও করো, মন্ত্রণালয় ঘেরাও করো, বৈষম্য মানব না, মানি না মানব না, দিতে হবে হবে দিয়ে দাও, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীকে দাও, সব সালারা বাটপার, সেনাবাহিনী হবে ঠিকাদার ও যদি থাকে হায়া লাজ, সেনাবাহিনীকে দাও কাজ সহ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীদের পাচ দফা দাবিগুলো হলো-
স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টর কে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে; শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা সহ ঘোষণা করতে হবে যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হয়েছে ;অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং পুরাতন ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সকল চুক্তি বাতিল করতে হবে ;সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষণাকৃত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে;বিশ্ববিদ্যালয়ের বাৎসরিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ (পাঁচশত) কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আগামীকাল বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস
ব্যারিস্টার খোকনসহ ৬৬ জন আইনজীবীকে অব্যাহতি
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা আইসিটি মামলা বাতিল
একজন বিকৃত রুচির সমাজবিধ্বংসীকে উপদেষ্টা হিসেবে জনগণ দেখতে চায় না
শ্যামনগরে ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা
ইসলামি দেশগুলোতে ইরানের রপ্তানি ১৭ শতাংশ বেড়েছে
শুধু মুসলিম যাত্রীদের ‘হালাল ফুড’ দেবে এয়ার ইন্ডিয়া
মানদণ্ড রেখে কাজ করলে সাধারণ প্রবাসীদের জন্য সুফল বয়ে আনবে
বাঘায় স্কুল ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার প্রধান শিক্ষক
ন্যায়পরায়ণ, আল্লাহভীরু শাসক ছাড়া শান্তির আশা করা যায় না -কক্সবাজারে বিশাল সমাবেশে পীর সাহেব চরমোনাই
ময়মনসিংহে শহীদ সাগরের কবর জিয়ারত করলেন নতুন বিভাগীয় কমিশনার
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিদর্শন করলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার
ময়মনসিংহে ৩ মাস পর আন্দোলনে নিহত দুজনের মরদেহ উত্তোলন
গাজীপুরে শ্রমিক ছাটায়ের প্রতিবাদে কর্মবিরতিঃ পুলিশের উপর হামলা
ময়মনসিংহে কৃষক হত্যা মামলায় মা ও ছেলের যাবজ্জীবন
মওলানা ভাসানীর ৪৮ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলে আলোচনা সভায় দুই উপদেষ্টা
যশোরে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট আর্মি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
জো নেশানহুডের ডাক দিয়ে বিতর্কে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী
দুই যুগ পর মুক্তি পেতে যাচ্ছে কালজয়ী সিনেমা "গ্লাডিয়েটরের দ্বিতীয় সিক্যুয়েল"
আলিয়া মাঠে খতমে নবুওয়াত মহাসম্মেলনে বক্তারা "যারা হজরত মুহাম্মদ সা. কে সর্বশেষ নবী মানেন না তারা কাফের"