'খুনিদের হাস্যোজ্জ্বল ছবি কি বার্তা পৌঁছায়’ নেটিজেনদের আহাজারি!

রুহুল আমিন

১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩২ এএম | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৩ পিএম

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ৯ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। ১৪ জনকে হাজির করার কথা থাকলেও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১৩ আসামি ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

অন্য একটি মামলায় রিমান্ডে থাকায় আব্দুর রাজ্জাককে সোমবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়নি। এছাড়া শাহজাহান খান অসুস্থ থাকায় প্রথমে আনতে না চাইলেও পরে সবার সঙ্গে তাকেও ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

যাদের হাজির করা হলো তারা হলেন- সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাহজাহান খান, জুনাইদ আহমেদ পলক, সালমান এফ রহমান, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।

তবে এসময় তাদেরকে হাস্যেজ¦ল দেখায়। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা।

নেটিজেনদের মতে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা তাদের ইন্ধনেই হাজার মানুষকে খুন করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকে। আর লুটপাট করে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে। তিনবার জোড় করে মানুষের ভোট ছিনতাই করে ক্ষমতায় আসে। এমনকী জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার কোটা আন্দোলন শুরু হলে তারা তা না মেনে মানুষকে খুন করা শুরু করে। তারপরও তাদের মাঝে কোনো অনুশোচনা নেই। এসব খুনিদের সঙ্গে কোনো আদব দেখানো উচিত নয়। তাদের পাথর নিক্ষেপ করে অপমানের সঙ্গে মারা উচিত। তারা ফ্যাসিস্টদের দোসর।

কেউ কেউ বলছেন, তারা হেসে কি প্রমাণ করতে চাচ্ছেন- নাকি তারা জেনে গেছেন তাদের কোনো বিচার হবে না। তাদের যদি ফাঁসি না দেওয়া হয় তাহলে মানুষের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।

এই ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের নেতাদের যখন নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তখন সারাদেশের মানুষ কেঁদেছিল ফ্যাসিবাদী সরকারের সেই হঠকারী বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে, অথচ আজ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী গণহত্যাকারীদের হাস্যোজ্জ্বল চেহারা দেখে সারাদেশের মানুষ ছি ছি করছে! ফ্যাসিবাদী আ'লীগ সরকার স্বৈরাচারী মুজিব হত্যাকারীদের সাজা দিয়েছিলেন ফাঁসির কাস্টে নিয়ে, বীরের মত ওই ব্যক্তিরা হাসতে হাসতে মঞ্চে উঠেছিলেন। বিচারিক সেই প্রক্রিয়া নিয়েও সারাদেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছিল, জাতির ক্রান্তিকালে স্বৈরাচার হটিয়ে যারা দেশকে বহু দলীয় গণতান্ত্রিক দেশের রূপান্তরিত করেছিল তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে ফাঁসির কাষ্ঠে নিয়ে। এছাড়াও ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে নিজ হাতে জবাই করে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।

ঘৃণ্য অপরাধীরা যখন শেয়াল কুকুরের মত বিভিন্ন গর্তে লুকিয়ে ছিল, পাবলিকের হাতে ধরা খেয়ে কিছু কিছু লোক গ্রেফতার হয়েছে বাকিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গর্ত থেকে বের করে নিয়ে এসেছে। কেউ কেউ লুঙ্গি পড়ে দাড়ি কামিয়ে পালাবার চেষ্টা করে ধরা খেয়েছেন। নির্লজ্জভাবে আজ হেসে তারা তাদের অপকর্ম লুকানো হাস্যকর ও ঘৃণ্য চেষ্টা করছেন! ভাবখানা দেখলে মনে হয় বিশাল বড় এচিভমেন্ট করে ফিরছেন। অথচ ধূর্ত শেয়াল এর মত গর্তের ভিতর লুকিয়ে ছিলেন একেকজন। একটি বারের জন্য খুনি হাসিনার গণহত্যার কোনো সমালোচনা তারা করেননি। প্রত্যেকটি কাপুরুষ নিলজ্জ বেহায়া বেশরম। চরম কাপুরুষ না হলে এমন গণহত্যার একটি বারের জন্য প্রতিবাদ না করে কি করে আবার ঢেব ডেভিয়ে হেসে হেসে কোর্টে জান তারা? জনগণের মনে প্রশ্ন এবং নেটিজেন্দের মনে ব্যাপক দুঃখের সঞ্চার করেছে বিষয়টি। সরকারই বা কেন এই কুলাঙ্গারদের ছবি ধারণ করতে দিল? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে নেট দুনিয়ায়।

ইমরান খাঁন নামে একজন ফেসবুকে রিখেছেন, এক সময়ের আওয়ামী লীগ ভেবেছিল চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে। এছাড়া তারা মানুষকে অনেক জুলুম অত্যাচার করবে। কিন্ত আল্লাহ তার সুষ্ঠু বিচার করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। তাদেরকে ফাঁসির কাষ্ঠে দেখার অপেক্ষায় আমরা।

রাফাত বিন সাদাত নামে একজন লিখেছেন, খুনি হাসিনার শাসনামলে জনগণ যেমন অশান্তিতে ছিল তেমনি অনিরাপদে ছিল। খুনি হাসিনা ব্যাংক ডাকাত, খুন, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও অবৈধ সরকার। আওয়ামী লীগের কর্তা ব্যক্তি থেকে শুরু করে এর দোসরদের সবাইকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুঁলানো উচিত।

বিভাগ : জাতীয়