আসামি ‘পুলিশ কর্মকর্তাদের’ গ্রেফতারে উদ্যোগ নেই
১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম
জুলাই-আগস্ট আওয়ামী সরকার বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত শত শত ছাত্র-জনতা এখন রাজধানীর পঙ্গু ও চক্ষু হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। অন্তবর্তীকালিন সরকার আহতদের চিকিৎসার সব ধরনের চেষ্টা করছেন। কিন্তু আওয়ামী সরকার বিরোধী আন্দোলন ঠেকাতে হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা ও গুলি করে আহত করার সাথে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের কোন উদ্যোগ নেই। অথচ ছাত্র-জনতাকে খুনের বা গুলি করার অভিযোগ এনে এরই মধ্যে ২৫০ জন পুলিশ কর্মকর্তা-সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিহত-আহতের পরিবারের সদস্যরা। আন্তবর্তীকালিন সরকার গঠনের পর আন্দোলনকারীতের প্রথম দাবি ছিল ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালানোর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা। যা এখন শুধু সরকারী কর্মকর্তাদের বক্তব্য আর স্লোগানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। হত্যা ও গুলির সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে ছাত্র-জনতার দাবি উপেক্ষিত।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলার আসামি হয়েও অফিস করছেন বেশ কিছু পুলিশ কর্মকর্তা। হত্যা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন না করায় প্রশ্ন উঠেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও পুলিশ সদর দফতরের বিরুদ্ধে। অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে, ছাত্র-জনতার রক্তে গড়া এ সরকার তা হলে কি শহীদদের রক্তে কোন মূল্য দিচ্ছেন না? তা না হলে হত্যা মামলার আসামি হয়েও কিভাবে পুলিশের এসব কর্মকর্তা বড় বড় পদে বসে রয়েছেন। এতে করে পুলিশ বাহিনীতে পেশাদার ও ১৫ বছরের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার ও বেনজির আহমেদসহ ২৫০জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতাকে হত্যার অভিযোগ এনে সারাদেশে শত শত মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদের মধ্যে সাবেক আইজিপিসহ ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হলেও অনেকেই বাকীরা এখনও ধরা ছোয়ার বাইরে। হত্যা মামলার আসামি হয়েও অনেক পুলিশ কর্মকর্তা অফিস করছেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং পুলিশ সদর দফতরের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলেও এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নেই।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, হত্যা মামলার আসামি পুলিশ কর্মকর্তাদের সবাই পতিত আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ট কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। এ সব কর্মকর্তারা বিগত ১৫ বছর নানা ধরনের অপরাধের সাথেও সম্পৃক্ত ছিলেন এমন বহু অভিযোগ রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে পুলিশে অসন্তুষ বাড়বে। সূত্র জানায়, অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর পুলিশ বাহিনী নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এর পর অন্তর্বতী সরকার গঠিত হলে ধীরে ধীরে কাজে ফেরে পুলিশ। বলতে গেলে এক সপ্তাহের বেশি সময় পুলিশবিহীন চলে দেশ। অনেকের মতে প্রায় ২০০ বছরের ইতিহাসে এমনটা হয়নি। এদিকে, গত ৫ নভেম্বর বর্তমান সরকারের ১০০ দিন হলেও এখনো অনেক পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দেননি। আবার অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। অবশ্য এরই মধ্যে তাদের পলাতক হিসেবে ঘোষণা করে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছে সরকার।
পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মতে, জুলাই-আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের আন্দোলনে যেসব মামলা দায়ের করা হয়েছে এর মধ্যে-সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারের বিরুদ্ধে ১ টি হত্যা মামলা, সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ১০টি হত্যাসহ ১৪টি মামলা, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে ১০০ অধিক হত্যা মামলা, ডিএমপির সাবেক পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে একটি মামলা, ডিএমপির সাবেক পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৪টি হত্যা মামলা, এসবির সাবেক প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২৩টি হত্যাসহ ২৫টি মামলা, ডিএমপির সাবেক পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ৮৭টি হত্যাসহ ৮৯টি মামলা, সাবেক সিআইডি প্রধান মো: আলী মিয়ার বিরুদ্ধে ৫টি হত্যা মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিবি প্রধান ডিআইজি হারুর অর রশিদের বিরুদ্ধে ২৩টি হত্যা মামলা, পিবিআইয়ের সাবেক প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ২টি মামলা, পুলিশ সদর দফতরের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি কৃষ্ণপদ রায়ের বিরুদ্ধে ৫ টি হত্যাসহ ৭টি মামলা, অতিরিক্ত ডিআইজি জামিল আহমেদের বিরুদ্ধে ২টি হত্যা মামলা, র্যাবের সাবেক ডিজি মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে ২টি মামলা, এপিবিএনয়ের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি বর্তমানে পুলিশ সদর দফতরে কর্মরত সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১টি হত্যা মামলা, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেনের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা, ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তারের বিরুদ্ধে ৫০টি মামলা, ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৫টি হত্যা মামলা, ডিএমপির সিটিটিসির সাবেক ডিআইজি আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৯টি হত্যাসহ ১৪টি মামলা, ডিএমপির সিটিটিসির সাবেক যুগ্ম কমিশনার কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ৩টি হত্যাসহ ১৪টি মামলা, সাবেক ডিআইজি রিপন সরদারের বিরুদ্ধে ১টি হত্যা মামলা, সিআইডির সাবেক ডিআইজি ইমাম হোসেনের বিরুদ্ধে১টি হত্যা মামলা, র্যাবের অতিরিক্ত ডিজি আব্দুল্লাহ আল মোমেনের বিরুদ্ধে ১টি হত্যা মামলা, এপিবিএনয়ের সাবেক ডিআইজি মোল্লা নজরুলের বিরুদ্ধে ১টি হত্যা মামলা, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমারের বিরুদ্ধে ৯৭টি মামলা, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদারের বিরুদ্ধে ২টি হত্যা মামলা, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে ২৪টি মামলা, অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার প্রসিকিউশনের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি রশিদুল হকের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার খোন্দকার নুরুন নবীর বিরুদ্ধে ৪টি মামলা, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মারুফ হোসেন সরদারের বিরুদ্ধে ২টি মামলা, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদ্বীপ কুমারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সঞ্জিত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে ৭টি মামলা, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার লিটন কুমার সাহার বিরুদ্ধে ১টি মামলা, র্যাব-১ এর সাবেক সিও মোস্তাক আহমদের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির রমনা বিভাগের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ ইমামের বিরুদ্ধে ২টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি সদর দফতর তানভির সালেহীন ইমনের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা, ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের সাবেক ডিসি ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে ২৩টি মামলা, ডিএমপির ডিবির সাবেক ডিসি মাহফুজুল আল রাসেলের বিরুদ্ধে ২টি মামলা, ডিএমপির সিটিটিসির ডিসি জাহিদ তালুকদারের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা, ডিএমপির ডিবির সাবেক ডিসি আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি হাফিজ আল ফারুকের ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি এইচ এম আজিমুল হকের ২টি মামলা,, ডিএমপির সাবেক ডিসি জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি সিটিটিসি মো: জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি মাহাবুব-উজ-জামানের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি সুমন দের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি জাফর হোসেনের বিরুদ্ধে ২টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি শহিদুল্লাহ এর বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি আব্দুল বাতেনের বিরুদ্ধে ২টি মামলা, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন উত্তরার সাবেক ডিসি মামুনের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক ডিসি তারিক বিন রশিদের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, পুলিশ সদর দফতরের সাবেক এসপি কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিএমপির সাবেক এডিসি নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা, ডিএমপির সাবেক এডিসি গোবিন্দ্র চন্দ্রের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা, ডিএমপির কোতয়ালী জোনের সাবেক এডিসি মুহিত কবির সেরনিয়াবাতের বিরুদ্ধে ঢাকায় দু’টি মামলা, মিরপুর জোনের সাবেক এডিসি মাইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ১টি, মিরপুরে জোনের সাবেক এডিসি আসাদুজ্জামানের বিরদ্ধে ১টি. ডিবির সাবেক এডিসি জুয়েল রানার বিরুদ্ধে ২টি, ডিএমপি ডিবির সাবেক এডিসি হাসান আরাফাতের বিরুদ্ধে ৩টি, সাইবার এর সাবেক এডিসি নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১টি, ডিবি খিলগাঁও জোনাল টিমের সাবেক এডিসি সাইফুল ইসলাম সাইফের বিরুদ্ধে ১টি, সিটিটিসির সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ১টি, মতিঝিল বিভাগের সাসবেক এডিসি সাব্বির রহমানের বিরুদ্ধে ১টি মামলা, ডিবির সাবেক এডিসি আফজাল হোসেন টুটুলের বিরুদ্ধে ২টি, ডিবির সাবেক এডিসি ফজলে এলাহির বিরুদ্ধে ১টি, ঢাকা জেলার সাবেক অতি: পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১টি, সিটিটিসির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সাঈদ নাসিরুল্লাহর বিরুদ্ধে ১টি, ডিবির উত্তরা জোনাল টিমের সাবেক এডিসি বদরুজ্জামন জিল্লুর বিরুদ্ধে ১টি, ডিবি সাইবার উত্তরের সাবেক এডিসি এডমিন জুনায়েদ আলাম সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১টি, ডিএমপি ডিবির সাবেক এডিসি ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে ২টি, এডিসি উত্তরা বিভিাগের সাবেক এডিসি তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১টি, মতিঝিল জোনের সাবেক এডিসি আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে ১টি, ওয়ারি বিভাগের সাবেক এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীমের বিরুদ্ধে ৩টি, ডিবি উত্তরা বিভাগের আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১টি, ডিবির সনাবেক এডিসি মোসা. লাকির বিরুদ্ধে ১টি, ডিএমপির সাবেক এডিসি আইএডি সন্ধিপ সরকারেরর বিরুদ্ধে ১টি, সোয়াট টিমের সাব্কে এডিসি জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১টি, বরখাস্তকৃত ডিবির সাবেক এডিসি হোলাম সাবকলায়েনের বিরুদ্ধে ১টি, ডিবির সাবেক এডিসি গোলাম মোস্তফা রাসেলের বিরুদ্ধে ১টি, নিউমার্কেট জোনের সাবেক এসি রেফাতুল ইসলাম রিফাতের বিরুদ্ধে ১টি, কোতয়ালী জোনের সাবেক এসি শাহীনুর রহমানের বিরুদ্ধে ১টি, মোহাম্মদপুর জোনের সাবেক এসি শহীদুল হকের বিরুদ্দে ১টি, একই জোনের সাবেক এসি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ১টি, সিটটিসির সাবেক এসি শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধের ১টি, ডিবি দক্ষিনেরর সাবেক সহকারী টুলিশ কমিশনার জাহিদুল হক তালুকদারের বিরুদ্ধে ১টি, সিটিটিসির এসি নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১টি,এটি ট্রাফিক যাত্রাবাড়ি জোনের তানজীল আহমেদের বিরুদ্ধে ১টি এবং মতিঝিল জোনের সাবেক এসি গোলাম রুহানীর বিরুদ্ধে ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এখন পর্যন্ত নিহত ৮৭৫ জনের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৬ হাজার ১৬৭ জন। তালিকা হালনাগাদের কাজ এখনও চলমান রয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আন্দোলনে আহতরা বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ৮৫ জন চিকিৎসাধীন রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) বা পঙ্গু হাসপাতালে। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০-এর বেশি আহত রোগী সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে হাত-পা কাটা গেছে ২১ জনের, যার মধ্যে ১৭ জনের পা এবং চার জনের হাত কাটা হয়েছে। এছাড়া আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। সেখানে কয়েকজন আহতের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। আন্দোলনের ট্রমায় এখনও ভুগছেন অনেকে। জুলাইয়ের স্মৃতি ভুলে যেতে চান তারা। মনে করলেই তাদের শরীর কেঁপে ওঠে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত নাদিম হাওলাদার পরিবারসহ থাকতেন রাজধানীর চিটাগাং রোডের পাশে, কাচপুর ব্রিজের কাছে। আন্দোলনের মধ্যে গত ২০ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আহত হন নাদিম। নি¤œ আয়ের পরিবারে বেড়ে ওঠা ২০ বছর বয়সী নাদিম সংসারে হাল ধরার চেষ্টা করছিলেন। আয় রোজগারের কারণে লেখাপড়া করতে পারেননি। গত ১৭ জুলাই কাজ ছেড়ে আন্দোলনে যুক্ত হন।
নাদিম বলেন, প্রতিদিন কাজে যাওয়া-আসার সময় আন্দোলন দেখতাম। ফোনে ভিডিও, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দেখতাম। একদিন আর সহ্য হলো না, আমিও যাওয়া শুরু করলাম ১৭ জুলাই। ২০ জুলাই বিকালে প্লেনের জন্য ব্যবহার করা তেলের ট্যাংকার চিটাগাং রোড দিয়ে যাওয়ার সময় আমরা আটকে দেই। রাস্তায় আগুন ধরিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেই। হঠাৎ কোত্থেকে নিরাপত্তা বাহিনী এলো। কথা নাই, বার্তা নাই, উল্টাপাল্টা গুলি শুরু করে। মেইন রোড থেকে গুলি করতে করতে তারা গলির ভিতরে ঢুকে পড়ে। আমিও তখন গলিতে ছিলাম। হঠাৎ দেখি আমার বাম হাত ঝুলতেসে। যারা শত শত ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে বা গুলি করে আহত করেছে সেই সব পুলিশকে এখনও কেন গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হয়নি এটাই বর্তমান সরকারের কাছে আমার প্রশ্ন?
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
শ্রমিকদের বেতন দিতে ৬০ কোটি টাকা ঋণ পাচ্ছে বেক্সিমকো
জাবির সাবের প্রক্টর আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল
যশোরে বিএনপি অফিস ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ মামলায় আরো ৪ জন আটক
যশোরের প্রধান ডাকঘরের পৌনে ২ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার চার্জশিট দাখিল
রিকশার বেপরোয়া গতিতে প্রাণ গেল জাবি শিক্ষার্থীর
২৪ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার, কেয়ারটেকারসহ গ্রেপ্তার ৪
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত ডিসিদের প্রত্যাহারের দাবি
যশোরে ঝটিকা মিছিল, যুবলীগের ৩ কর্মী গ্রেপ্তার
ইসলামিক ফাউন্ডেশনে ১১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন বোর্ড অব গভর্নরস গঠিত
থানাকে জনগণের আস্থার জায়গায় পরিণত করতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
এবার প্রকাশ্যে কুবি শিবিরের সভাপতি- সেক্রেটারি
আশুলিয়ায় যুবলীগের ব্যানারে 'ছাত্রলীগের' মিছিল, গ্রেপ্তার ৫
ছাত্রলীগের তাণ্ডব ও তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে তফাৎ কোথায়?
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ১২২ কোটি টাকার প্রকল্প ভেস্তে যেতে বসেছে
ইবিতে র্যাগিংকাণ্ডে ৫ জনকে জেল হাজতে প্রেরণ
উগ্রতা সৃষ্টিতে সন্ত্রাসী ইসকনকে নিষিদ্ধ করে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে সমাবেশ
"বিশ্ব টয়লেট দিবসে যে বার্তা দিলেন মেগাস্টার শাকিব খান"
সিঙ্গাপুরের নাগরিক দাবি করে সুরক্ষা চাইলেন এস আলম
মেজর জলিলের সমাধিতে জাগপা’র শ্রদ্ধা
বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা রুখে দিবে জনগণ: নাজমুল হাসান