মুন্নি সাহা-সন্তোষ শর্মা গংদের খুঁটির জোর কোথায়? নেটিজেনদের উষ্মা প্রকাশ
০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৩ পিএম | আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭ পিএম
চার মামলার আসামি আওয়ামী পন্থি বিতর্কিত সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে গ্রেফতারের পর ছেড়ে দেওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা। ২০০৯ সালের নৃশংস পিলখানা হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে সবসময়ই তার নাম উচ্চারিত হয়ে আসছে। এমন একজন চিহ্নিত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর ছেড়ে দেওয়াকে মেনে নিতে পারছেন না দেশপ্রেমিক জনতা।
অন্যদিকে, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব হারুনের দায়ের করা মামলায় দৈনিক কালবেলার সম্পাদক ও প্রকাশক সন্তোষ শর্মারকে এখনও গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, মামলা মাথায় নিয়েই তিনি নিয়মিত অফিস করছেন।
সাংবাদিক সন্তোষ শর্মার বিরুদ্ধে অনেকগুলো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’-এর এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন, র’ এজেন্টদের সঙ্গে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে অনেক আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নানান অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে প্রভাব বিস্তার করেছেন পুলিশ কর্তাদের উপর ইত্যাদি আরও অনেক অনেক অভিযোগ রয়েছে তার নামে।
মুন্নি সাহাকে শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে অসুস্থ বোধ করায় এবং নারী সাংবাদিক হওয়ায় মুন্নী সাহাকে শর্ত সাপেক্ষে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলারও অভিযোগ রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ‘মুন্নী সাহাকে পুলিশ আটক করেনি। কাওরান বাজারে স্থানীয় লোকজন তার ওপর বিক্ষুব্ধ হয়ে ঘেরাও করেছিল। পরে পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিতে সেখান থেকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসে। তবে তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। বর্তমানে তিনি অসুস্থ আছেন। তাই জামিনের শর্তে তাকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
মুন্নি সাহার বিরুদ্ধে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া বিদ্রোহীদের উস্কে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সে সেনা অফিসারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী সৈন্যদের ভুল বক্তব্য প্রচার করে ক্ষোভ আরও উস্কে দেয়।
সাংবাদিক মুন্নী সাহার ভুল তথ্য বিডিআর বিদ্রোহ আরও উসকে দিয়েছিলো বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ। কয়েকমাস আগে তার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেয়া এক ভিডিওতে তিনি বলেন, গোয়েন্দার থেকে আমরা কোনো তথ্যই পাচ্ছিলাম না। শুধু ইলেকট্রনিক মিডিয়ার লোকজন (সাংবাদিক) ওখানে লাইভ প্রোগ্রাম কাভার করছিল। তার মধ্যে ছিল আমার যা স্মরণ পড়ে, মুন্নী সাহা টেলিকাস্ট করছিল লাইভ এবং বিদ্রোহীরা অফিসার সম্বন্ধে বিভিন্ন ভুল বক্তব্য, মিথ্যা বক্তব্য তুলে ধরছিল জনগণের সামনে। এর মাধ্যমে একটি ভুল ধারণা সৃষ্টি হচ্ছিল অফিসার সম্বন্ধে। এ ছাড়াও বিডিআরের অন্যান্য ক্যাম্পেও এই বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করছে।
এছাড়াও মুন্নির সাহার বিরুদ্ধে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এক বিদেশ সফরে সে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাপচারিতা গোপনে রেকর্ড করে। এর মধ্যদিয়ে তার ভারতীয় এজেন্ট হওয়ার বিষয়টি উন্মোচন হয়ে যায়। অন্যদিকে, এক সংবাদ সম্মেলনে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে বেফাঁস প্রশ্ন করে ব্যাপক সমালোচিত হয় সে।
নেটিজেনরা বলছেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কী করছেন! পিলখানা হত্যাকাণ্ডের একজন আলোচিত সন্দেহভাজন কীভাবে ছাড়া পেয়ে যায়? তাদের কাছে কি কোনো তথ্য ছিল না? এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। পিলখানার শহিদ সেনা অফিসারদের প্রতি আজ অবিচার করা হলো।
গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার সরকার গঠিত হলে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে আসার আলো দেখা দিয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাসও দেওয়া হয় দ্রুত বিচার শুরু করার জন্য। সরকার গঠন ১০০ দিন পেরিয়ে গেলিও এখনও অবদি আশ্বাসের মধ্যেই সীমিাবদ্ধ থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।
ক্ষোভ জানিয়ে মেহেদী হাসান সোহেল লিখেছেন, তাকে জনতা আটক করছে যেখানে তার নামে হত্যা মামলা সেখানে অইনসৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে ছেড়ে দিয়েছে। এই বিপ্লব ব্যার্থ অলরেডি হয়ে গেছে। এখন তাদের পক্ষে কথা বলাও ঝুকিপূর্ণ। আওয়ামী লীগের আমলে শেখ হাসিনার দমনপীরন ঠিক ছিলো। শুধু প্রয়োগ ছিলো ভুল মানুষদের উপরে। আর এখন অপরাধী রিল্যাক্স মুডে আছে। বিপ্লবের পক্ষের মানুষরা ধোয়াশায়।
সোহানরু রহমান শাওন ও রাহাদ লিখেছেন, এখন সত্যিই মনে হচ্ছে সরকারের মধ্যে ভারতীয় দালাল বিদ্যমান রয়েছে! নইলে এই র এজেন্টকে মুক্তি দেয় কেমনে। এখন উপদেষ্টা গুলো মুখে বয়ান না দিয়ে, জামিন বাতিলের ব্যবস্থা করেন। আর এমন করে জড়িত সকলকে আটক করে, বিচার দ্রুত সম্পন্ন করেন। এখনও যদি না পারেন। দায়িত্ব ছেড়ে অন্যদের দেন। যদি এইটুকু কাজ না পারেন।
মোঃ আব্দুল মান্না ফারুক লিখেছেন, এই ভারতীয় দালালকে ছাড় দেয়া কোনো ভাবেই উচিত হয়নি এবং এটা আমরা সমর্থন করি না। দেশ এখনো ইন্ডিয়া চালাচ্ছে।এবার প্রমাণ হয়ে গেছে।না হয় ২৪ ঘন্টাও মুন্নী সাহার মতো কুলাঙ্গারকে জেলে রাখা যায় নি।ইলিয়াস হোসাইন এর রিপোর্ট সত্যি এটাই প্রমাণ করে।
আসাদুজ্জামান লিখেছেন, অপ-সাংবাদিকতা ও একটা অপরাধ। অপ-সাংবাদিকতার জন্য একটা দেশের চরম অবক্ষয় হতে পারে। গত ১৫ বছর অপ-সাংবাদিকতা কয়েকজন অগ্রনায়কদের মধ্যে উনি একজন।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক মুন্নী সাহার সব ধরনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে গত ৬ অক্টোবর ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। চিঠিতে বলা হয়, আপনাদের ব্যাংকে মুন্নী সাহা এবং তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো আমানত, ঋণ, লকার, ক্রেডিট কার্ড, ফরেন ট্রেড, অফশোর ব্যাংকিং হিসাব থাকলে সেসব হিসাবের লেনদেনের তথ্য ৭ অক্টোবরের মধ্যে বিএফআইইউকে পাঠাতে হবে। এ ছাড়া হিসাব খোলার ফরম, টিপি, কেওয়াইসি প্রোফাইল ফরম, শুরু থেকে হালনাগাদ লেনদেন বিবরণী ও অন্যান্য দলিলাদির তথ্যও বিএফআইইউকে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয় ওই চিঠিতে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
জুলাই বিপ্লবে আহত ১৪ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষ পদে এখনো ভারতীয়রা
ভারতে নির্যাতনের ভিডিও বাংলাদেশের সা¤প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার
দাদাবাড়ি বেড়াতে এসে খুন হলো শিশু সাফওয়ান, আটক ২
নরসিংদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে লক্ষ্য করে বালুদস্যুদের গুলিবর্ষণ
নরসিংদীতে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মানববন্ধন
রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
আখাউড়ায় মর্টার সেল উদ্ধার
রাজবাড়ীতে আ.লীগ দুই নেতা কারাগারে
কমলগঞ্জে ৮২ শতক সরকারি খাস জমি উদ্ধার
প্রিমিয়ার ভার্সিটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন চসিক মেয়র
কুষ্টিয়ায় প্লাইউড বোর্ড কারখানায় আগুন
বিএনপি নেতা কায়কোবাদের দারুল উলূম হাটহাজারীসহ বিভিন্ন মাদরাসা পরিদর্শন
মাদারীপুরে পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত
গফরগাঁও সাবেক এমপি বাবেল গোলন্দাজ দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা
ময়মনসিংহে পুলিশ রেঞ্জ কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের উদ্বোধন
নওফেল পরিবারের ২৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ
নিজ বাড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত বন্ধুদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগ
ট্রাভেল ব্যান্ড হ্যালির ধুমকেতুর দুই গান