ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্যে বাংলাদেশের জনগণ হতভম্ভ: রিজভী
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৪৮ পিএম | আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৪৮ পিএম
'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মুক্তি সংগ্রামের নেতা'- ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবরের এই বক্তব্যে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এম জে আকবর বলেছেন, অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে দেখছি, তার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ভালোভাবেই এগিয়ে চলেছে এবং গণতন্ত্র শক্তিশালী হচ্ছে। শেখ হাসিনা জাতিকে শুধু উন্নয়নের দিকে নয়, চারটি মাত্রাবিশিষ্ট আধুনিকতার দিকে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশকে যারা নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখাচ্ছে, তারা ভুলে যাচ্ছে যে বাংলাদেশ এখন ভীতু দেশ নয়। ভয় দেখালেই ভয় পাবে, এটা কাজে দেবে না।” এছাড়া তিনি আরও বলেছেন, যেটিতে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজসহ জনগণ হতভম্ভ হয়েছেন।
সোমবার দুপুরে ভার্চ্যুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, প্রতিথযশা সাংবাদিক ও লেখক এম জে আকবর বাংলাদেশে এসে গতকাল এক সেমিনার শেষে সংবাদ সম্মেলনে নিশিরাতের ভোট ডাকাত, ১৫ বছর বন্দুকের নলের মুখে জনগণের ঘাড়ে দৈত্যের মতো চেপে বসা গণবিচ্ছিন্ন স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে স্তুতি আর প্রশংসার বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছেন। তার বক্তৃতা শুনে তার সম্পর্কে যারা অবগত তারা রীতিমতো বিস্মিত-হতবাক হয়েছেন।
তিনি বলেন, এম জে আকবরের মতো একজন প্রাজ্ঞ সাংবাদিক ও রাজনীতিক কি করে সবকিছু জেনেশুনেও একনায়কতন্ত্রের পক্ষে, ১৮ কোটি বাংলাদেশীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কথা বলেন। জনসমর্থনহীন শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকা আপনাদের কি স্বার্থ নিশ্চিত করে? আপনাদের সমর্থনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এদেশে নিষ্ঠুর বর্বরতা চালাচ্ছেন। দখলদার শেখ হাসিনা দীর্ঘ দেড় দশকে বহুমাত্রিক লুটপাটের আধুনিকীকরণ করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা ফিলিপিনের ক্যাসিনোতে ঘুরে বেড়ায় শেখ হাসিনার তথাকথিক উন্নয়নের সরকারের বদান্যতায়।
রিজভী বলেন, আপনার মন্তব্য বাংলাদেশের জনগণকে অবজ্ঞা করার শামিল। ভারত কি তাহলে বাংলাদেশের জনগণকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকেই বন্ধুত্বের বন্ধনে আঁকড়ে রাখতে চায়? এম জে আকবরের মন্তব্য কর্তৃত্বসূলভ ও বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছাকে অসম্মান করা। বাংলাদেশ কোন স্যাটেলাইট স্টেট নয়। বাংলাদেশের জনগণ কোন দেশের প্রোটেক্টটরেট নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা বঞ্চিত। চলমান আন্দোলন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং জনগণের মালিকানা জনগণকে ফেরত দেয়া। আমরাতো ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাই না। বাংলাদেশী নাগরিকরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সমমর্যাদার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়াতে বিশ্বাস করে। আপনি একটি বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক ও বিদ্বৎজন। জনগণ বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগের ভোট চুরির দোসর হবে না ভারত। প্রতিবেশী হিসাবে এদেশের ১৮ কোটি জনগণের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের পক্ষে দাঁড়াবেন-এটাই এদেশের মানুষ কামনা করে।
বিএনপিকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল তারা নির্বাচনে আসলে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়া হবে- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের এই মন্তব্য উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এতক্ষণে-অরিন্দম কহিলা বিষাদের মতো কৃষিমন্ত্রীর এই হরষের স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে, গত ২৮শে অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে হামলা করে পুলিশি তান্ডব-হত্যাকান্ড থেকে শুরু করে চলমান যত সহিংসতা, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, হুলিয়া, হত্যা, বিএনপিসহ বিরোধীদলের বাড়ি-ঘরে হামলা-তল্লাশী, ভাংচুর-গৃহছাড়া-আটক বানিজ্য সবকিছু শেখ হাসিনার পূর্ব পরিকল্পিত।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেষ পর্যন্ত এই প্রভাবশালী মন্ত্রী হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে স্বীকার করলেন যে, দেশের আইন-আদালত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন-কোর্ট কাচারি-বিচার-আচার সবকিছুই আওয়ামী মাফিয়া সরকারের হাতে বন্দি ! বিচার ব্যবস্থা আর আওয়ামী লীগ একাকার হয়ে গেছে। পৃথক কোন সত্বা নেই। দেশে কোন আইন নাই। সব শেখ হাসিনার ইশারাই চলছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেড় লক্ষ মামলা দায়ের আর অর্ধ কোটি আসামী করা হয়েছে শেখ হাসিনার নির্দেশে। কারাগারে নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে সরকারের ব্লুপ্রিন্টে। বিনা কারণে বাংলাদেশী নাগরিক গ্রেপ্তার, নির্বিচারে বিএনপিসহ আন্দোলনরত দলগুলোর নেতাকর্মীদের কারাগারে আটক ও নির্যাতন, ইচ্ছা মাফিক জেল ও জামিন বিচার বিভাগের অস্তিত্বকেই বিলিন করে দিয়েছে। বিচার বিভাগ আইনের গতিতে নয়, চলছে গণভবনের গতিতে। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগকে কার্যত আওয়ামী লীগের একটি ইউনিটে পরিণত করা হয়েছে। পরীক্ষিত আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে, খুন-সন্ত্রাসের আসামীদেরকে বেছে বেছে সেখানে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ কারণে গত ১৫ বছর ধরে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদছে। স্বাধীন বিচার বিভাগ ও আইনের শাসনের আওয়ামী নমুনা কৃষিমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট হয়েছে। ২০ হাজার নির্দোষ নেতাকর্মীকে নির্বিঘ্নে নির্বাচন করতে পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
আগামী নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরু
রিহ্যাব মেলায় গতকাল আশিয়ান সিটি’র ১৩ নং স্টলে ছিল ক্রেতাদের ভীড়।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
‘বিক্ষোভ আর কালো পতাকায়’ রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বরণ!
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ২৬ নারী-পুরুষ ও শিশু
লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফরহাদ হোসেন ইমন গ্রেফতার
আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আরও এক মাস বাড়ল
দূর্নীতিগ্রস্ত লুটেরা মাফিয়াদল যাতে বাংলাদেশে আর ফেরত না আসতে পারে: মেজর হাফিজ
শতভাগ দলীয়করণে ক্রীড়াঙ্গন আজ তলানিতে : আমিনুল হক
দৌলতদিয়ায় বড়দের আদলে ছোটদের জমজমাট নির্বাচন
বাজারে সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয় রয়েছে: নূর
খতমে নবুওয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল্লামা সাজিদুর, নির্বাহী সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ
প্রকৃত তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সংবাদ করুন: প্রেস সচিব
কুষ্টিয়ায় ভেড়ামারায় দুই প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা ও কারাদন্ড
‘চাঁদাবাজ দখলবাজরা জুলাই অভ্যূত্থানের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করছে’
মানিকগঞ্জে আগামীকাল তিনদিন ব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ
আটঘরিয়ায় দলীয় পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ
প্রত্যেক ধর্মের শান্তির বাণী নিজের মধ্যে স্থাপন করতে হবে: ড. ইউনূস
গোয়ালন্দে নবাগত ইউএনও নাহিদুর রহমানের যোগদান