ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১

নির্বাচনের দিন স্বেচ্ছায় লক ডাউন কর্মসূচি পালন করুন গোলটেবিল বৈঠকে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:১৭ পিএম | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:১৭ পিএম

৭ জানুয়ারি দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার নির্বাচন। অর্থনীতি ধ্বংস করার নির্বাচন। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণকারী ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রহসনের নির্বাচনে কেউ যাবেন না। আগামীকাল ভাগবাটোয়ারার নির্বাচনের দিন স্বেচ্ছায় লক ডাউন কর্মসূচি পালন করুন। আজ শুক্রবার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আয়োজিত একতরফা প্রহসনের নির্বাচন : জনগণের করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা আতাউল্লাহ আমিনের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, গণঅধিকার পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের(এনডিএম) চেয়ারম্যান ববী হাজ্জাজ,বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, গণ-ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু,বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা তাফাজ্জল হোসেন, মুফতি শরাফত হোসেন। ৎ
মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, ৭ জানুয়ারি ভোটের নামে জাতির সাথে প্রহসন করা হচ্ছে। এই প্রহসনের জবাব দিতে হবে। দেশে আগেছিল একদলীয় বাকশাল। এখন আওয়ামী লীগের অধীনে একদলীয় বাকশাল কায়েম করা হচ্ছে। এই নির্বাচন এবং পার্লামেন্ট দেশ জাতির কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। তিনি ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আগামীকাল দেশের জনগণ প্রহসনের নির্বাচনের ভোট দিতে যাবে না। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এতো বড় অন্যায় হয়েছে। জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ২০১৮ সালের নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, মার্চে দুভিক্ষ আসতে পারে। তথাকথিত নির্বাচনে শক্তি বাড়বে না;বরং শত্রু বাড়বে। এক মাঘে শীত যায় না। নির্বাচনী ফলাফল যাই ঘোষণা করা হোক সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, দেশে জনগণের সরকার নেই। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চান। বঙ্গবন্ধু একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি বাকশালের আদলে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে বাকশালী কায়দায় দেশ চলছে। বিএনপির প্রায় ২২ হাজার নেতা-কর্মীকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে এককাতারে দাঁড়করিয়েছে। পুরো দেশটাকে দখলদারিত্বে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ। ভোটের ভাতের ও মানুষের ইজ্জতের অধিকার হরণ করেছে এই সরকার। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর দূর্বলতা ও কৌশলের অভাবে জেগে উঠা মানুষকে কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। ২০১৪-২০১৮ বিতর্কিত নির্বাচন পার করলেও ৭ জানুয়ারির নির্বাচন রাজনৈতিক বৈধতা পাবে না। ভোটারদের জবরদস্তি করে ভোট কেন্দ্রে নেয়ার প্রচেষ্টা সফল হবে না। একদলীয় শাসন পাকাপোক্ত করার নির্বাচনকে জনগণ গণঅনাস্থা দিবে। তিনি বলেন, ৩০ হাজার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে জেলে রেখে দমন নিপীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাইছে সরকার। তারা দেশটাকে গৃহযুদ্ধের পথে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষ এই সরকারকে বিদায় দিতে রাজনৈতিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশ ও জনগণকে রক্ষা করতে কঠিন লড়াই করতে হবে। জয় হবেই। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী ইসলামী বইয়ে দূর্গার ছবি ছাপানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রী ডা:দিপু মনি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে মানুষকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকা-ের ঘটনায় ৬০ জন মেধাবি সেনা নিহতের দায়ে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, ভারত সরকারে পরিকল্পনায় দেশে ডামি নির্বাচন হচ্ছে। খুব সহসায় এই সরকারের পতন হবে। দেশে ডলার সঙ্কটের দরুণ আমদানী বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, মোদি সরকার বাংলাদেশকে সিকিম ভুটান বানাতে সফলতার দিকে যাচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ৭ জানুয়ারি সরকারের পতন দিবস পালন করতে হবে। এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, সরকার বিরোধী যুগপথ আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে হবে। গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির প্রায় ২০ হাজার নেতা-কর্মীকে কারাবন্দি রেখেছে। গত ৬ মাস যুগপথ আন্দোলন করেও ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনকে ঠেকাতে পারিনি। তাদের মাষ্টার প্লান হচ্ছে তারা ক্ষমতা ছাড়বে না। ঐক্যবদ্ধভাবে সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে হবে। এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ভাইরাস। তিনি ওই দিনটিতে স্বেচ্ছায় লকডাউন কর্মসূচি পালন করার জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ফেলানি হত্যা দিবস। ওই দিবসটি ভুলাতে চায় ওরা। তিনি বলেন, ৯২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগের লোকেরা। মাওলানা মামুনুল হক, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীসহ কারাবন্দিরা মুক্তি পায় না। ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নির্যাতিতরা আজ এক কাতারে। প্রহসনের নির্বাচনে গেলে ৫০ কোটি টাকা পেতাম। আবার টাকা না পেয়ে অনেকেই প্রার্থীতা প্রত্যাহার করছে। ফ্যাসিবাদ সরকারের দালালদের চিহ্নিত করতে হবে। নুরুল হক নুর বলেন, মাওলানা মামুনুল হককে চরিত্র হননের নাটক সাজিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, মদিনার সনদে রাষ্ট্র পরিচালনার কথা বলে সরকার পশ্চিমাদের খুশি করতে সমকামিতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। নুর বলেন, ফেরাউনী শাসন চালিয়ে নূহ নবীর নৌকার সাথে তুলনা করে ভোট চাইছে। তিনি আগামীকালের নির্বাচনের ভোট বর্জনের আহবান জানান। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, দেশ, জাতি ও মানুষের ভোটের ভাতের অধিকার রক্ষায় আগামীকালের প্রহসনের নির্বাচনে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।


বিভাগ : রাজনীতি


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়

ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়

কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার

কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার

মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি

মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের

দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল

শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল

‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের

‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের

সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই

গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই

নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি

নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি

স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে

স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন

গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন

গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন

চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ

সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে

সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে

নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন

নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন

ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার

আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার খর্ব হবে না: সেলিম উদ্দিন

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার খর্ব হবে না: সেলিম উদ্দিন