ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

আওয়ামী লীগ মিথ্যার ওপর টিকে আছে: মির্জা ফখরুল

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৮ জুন ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০৮ জুন ২০২৪, ১২:০৫ এএম

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার মিথ্যার ওপর টিকে আছে এমন মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের (সরকার) যত পরিসংখ্যান সবই মিথ্যা ও বানানো। শুধু পুলিশের আইজিপি বেনজীর- বে-নজির নয়। এই সরকারের এবং আমাদের সবকিছুই হলো বে-নজির। এখান থেকে রক্ষা পেতে শহীদ জিয়াকে স্মরণ করে যার যার অবস্থান থেকেই সবাইকে জেগে উঠতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলতে হবে। এটি যত কঠিন কাজই হোক না কেনো।
শুক্রবার (০৭ জুন) বিকেলে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া'র গৃহীত কর্মসূচি ও নীতি : বাংলাদেশের কৃষি বিপ্লব ও পল্লী উন্নয়নের মূলভিত্তি” শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন সোনালী দল। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. গোলাম হাফিজ কেনেডির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ড. আবুল কালাম আজাদের পরিচালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে বলেন, এখানে শুধু লুটপাটের সুযোগ। অন্যদিকে মানুষের ঘাড়ে ট্যাক্সের বোঝা চাপানো হয়েছে। যন্ত্রপাতি আমদানি বাধাগ্রস্ত হলে তো কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান হবে না। সেজন্যই কিন্তু ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। এ যেন ভয়াবহ অবস্থা। সুতরাং এই দানব সরকারকে সরাতে না পারলে আমাদের মুক্তি নেই।
জিয়াউর রহমানের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিকূল সময়ে রাজনীতিতে এসেছিলেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭১ সালে যখন গোটা দেশের মানুষ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়েছিলেন যে, তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে কী করবেন? কোনো নির্দেশনা নেই। তখন ২৬ মার্চে (রেডিও’র ঘোষণা) অপরিচিত একজন মেজর জাতিকে তার কয়েকটি শব্দের মাধ্যমে গোটা জাতিকে উজ্জীবিত করেছিলেন। পরবর্তীতে জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আজকে আওয়ামী লীগ এই বিষয়টি মানতে পারে না। তবে কেউ স্বীকার করুক না করুক এটা ধ্রুব সত্য যে, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান আরেকটি সময় (১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর) জাতির দু:সময়ে রাষ্ট্রের পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তাকে আমরা দেশের একজন যোগ্য, দক্ষ নেতা হিসেবে পেয়েছিলাম। স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারের দুর্নীতি অন্যায় ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। পক্ষান্তরে জিয়াউর রহমান কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। তিনি কৃষিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে গেছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের সমৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিদেশে কর্মী পাঠানো, গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠা, পিছিয়ে পড়া এলাকার জন্য ডেভেলমেন্ট বোর্ড গঠন করেছিলেন। তিনি মাঠে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কৃষির সেচের জন্য খাল খনন করেছিলেন। গ্রামে, উপজেলায় তিনি রাত্রিযাপন করেছিলেন। জেলাতে তিনি কেবিনেট মিটিং করেছিলেন। সংশ্লিষ্ট জেলার উন্নয়নের জন্য তিনি নতুন পরিকল্পনা নিতেন। এককথায় গোটা জাতিকে তিনি এক নতুন স্বপ্ন দেখিয়ে মাঠ পর্যায়ে উন্নয়ন করেছিলেন। তিনি ইরান-ইরাক যুদ্ধ নিরসনে গঠিত কুদস কমিটির সদস্য ছিলেন। সেজন্যই কিন্তু এই মানুষটিকে কেউ ভুলতে পারেনা।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানকে কেউ খাটো করতে পারবে না। তাকে খাটো করতে গেলে বাংলাদেশকে খাটো করা হবে। তার অবদানকে যারা অস্বীকার করে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের ন্যূনতম অবস্থান থাকলে যেটি হয় সেটি ভারতের জনগণ দেখিয়ে দিয়েছে। মোদীর একক বিজয় ঠেকিয়ে দিয়েছে। এটিই হলো প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্রের কারণে। আজকে আমাদের সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। এজন্য আমাদের লড়াইয়ের বিকল্প নেই। আজকে লড়াই করতে গিয়েই কিন্তু আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে।
আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বাংলাদেশের গ্রামিণ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে দুর্নীতি এবং চাঁদাবাজির কারণে। এসবই করছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। কৃষির উন্নয়ন, মানুষের জীবন-মানের উন্নয়ন করতে হলে এই সরকারকে যেকোনোভাবে হোক ক্ষমতাচ্যুত করে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এখন বাংলাদেশের প্রথম সমস্যা হলো দেশের সকল প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনীতিকরণ করেছে। সরকার সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের কব্জায় নিয়েছে। সুতরাং এই রাজনীতির পরিবর্তন না হলে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারও হবে না, দুর্নীতিও বন্ধ হবে না। যারা মানুষের হক নষ্ট করে তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত করা ঈমানি দায়িত্ব।
###


বিভাগ : রাজনীতি


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা