দেশটাকে জাহান্নামে নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ: ইউট্যাবের আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল
০৯ জুন ২০২৪, ০২:০২ পিএম | আপডেট: ০৯ জুন ২০২৪, ০২:০২ পিএম
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশটাকে জাহান্নামে নিয়ে গেছে সরকার। দেশের সকল কাঠামো ধ্বংস করেছে। আমাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করেছে। আজকে আওয়ামী লীগ না করলে কারও চাকরি হয়না। দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ। তাদের মিথ্যা বলায় জুড়ি মেলা ভার। আওয়ামী লীগ কোন মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে। এরকম একটি দল দেশ ও জাতির জন্য বড় সমস্যা। তারা দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে। আসুন সবাই মিলে দেশটাকে বাঁচাই।
রোববার দুপুরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
মির্জা ফখরুল বলেন, নিজের সততা দিয়ে দেশের আমূল পরিবর্তন এনেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন। আজকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছেন জিয়াউর রহমান। শেখ মুজিবুর রহমান তো চারটি বাদে সব গণমাধ্যম বন্ধ করেছিল। জাতীয় প্রেসক্লাব তো জিয়াউর রহমানের অবদান। অথচ তার নামই উচ্চারণ করতে চায় না।
তিনি বলেন, আজকে দেশের প্রতিটি ব্যক্তির ওপর ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ঋণের বোঝা। এরপরও তারা বাজেট দেয় যেখানে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। আজকে এই সরকার দেশটাকে কোথায় নিয়ে গেছে? এরপরও যেসব বুদ্ধিজীবী তাদের প্রশংসা করেন তারা কী নিজেদের বিবেককে প্রশ্ন করেন? সুতরাং আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বলবো আপনারা জাতি গঠনে কাজ করুন। দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি করুন। আজকে ডাকসু নির্বাচন নেই। কোনো নির্বাচন নেই। জিয়াউর রহমানের কর্মকাণ্ড নিয়ে সারাদেশে ওয়ার্কশপ করার কথাও বলেন বিএনপি মহাসচিব।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম। সভায় "বাংলাদেশে বিজ্ঞান গবেষণা ও শিক্ষিত জাতি গঠনে শহীদ জিয়া" এবং "জিয়াউর রহমান : ক্রান্তিকালের ত্রাণকর্তা ও আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি" শীর্ষক দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। ইউট্যাবের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ড. মো. রইছ উদদীনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মো. আবদুর রশিদ, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, ড. কামরুল আহসান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, রুয়েটের অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আলী নূর রহমান, সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. শামীউল আক্তার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মো. আমজাদ হোসেন, শের মাহমুদসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকাল তো জিয়াউর রহমানের নাম নেওয়া যায়না। পরবর্তী প্রজন্ম তো তাকে স্মরণ করতে পারবেনা। এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ পাঠ্যপুস্তকে তার সম্পর্কে কোনো কিছু লেখা নেই। এটা করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। যে লোকটি স্বাধীনতার ঘোষণা দিল তার নামই নাই।
তিনি বলেন, আওয়ামী দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বাইরে যেতে পারেনা। তাদের কেমিস্ট্রিতে এটা নাই। আওয়ামী লীগের চরিত্র হচ্ছে কাউকে সহ্য করতে না পারা। তারা প্রথমত সহিষ্ণুতায় বিশ্বাস করেনা। পক্ষান্তরে জিয়াউর রহমান সবার কথা শুনতেন। তিনি কথা কমই বলতেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যাক্তি সবার সঙ্গে কথা বলে যে শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন তা বাংলাদেশে আর কখনো হয়নি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান সন্ত্রাস নির্মূলে কাজ করেছেন। তিনি দেশের মানুষের মনের ভেতরে ঢুকে গিয়েছিলেন। তার অলৌকিক শক্তি দিয়ে তিনি মানুষকে কাছে টানতেন। আজকে তার সম্পর্কে আমরা ঠিকভাবে বলতে পারিনা। এতো সৎ মানুষ ছিলেন। কোনো স্বজনপ্রীতি ছিলোনা। নিকটাত্মীয়রাও কম আসতেন বাসায়। তার সততার ধারে কাছেও কেউ যেতে পারবেনা। যে কারণে তার কফিন ঢাকায় আনা হলে বন্যার পানির মতো মানুষ ভিড় জমাতে থাকলো।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের সবচেয়ে বড় অবদান তিনি বাঙালি জাতিকে একটি নতুন পরিচিতি দিয়েছিলেন। সেটি হলো বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। তার কেবিনেটে দেশের সর্বশেষ্ঠ ব্যক্তিরা ছিলেন। দেশের সেরা মেধাবীদের নিয়ে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। প্রত্যেকটি শ্রেনীর মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনি সমুদ্র দেখাতে নিয়ে গেছিলেন হিজবুল বাহারে করে।
তিনি বলেন, আজকে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক করছেন। এ কে খন্দকার তো তার বইয়ে লিখতে গিয়ে তাকে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। জিয়াউর রহমান জিয়াউর রহমান। তিনি বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। তার কোনো তুলনা নেই।
সভাপতির বক্তব্যে ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, জাতির এই দু:সময়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ আজকে বাংলাদেশের ওপর শকুনের চোখ পড়েছে। দেশের জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে সবাইকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৩
বিএনপি মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী নামমাত্র মূল্যে কক্সবাজার প্রেসক্লাবের জমি বন্দোবস্তি দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া
সচিবালয়ে আগুন: গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাকে দায়ী করলো এবি পার্টি
পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক
‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’
আশিয়ান সিটির স্টলে বুকিং দিলেই মিলছে ল্যাপটপ
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
লামায় ১৭টি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতঘর পুড়ে ছাই হওয়ার ঘটনায় ৪জন গ্রেপ্তার
বিজয় দিবস টেনিস শুক্রবার শুরু
আশুলিয়ায় ভাড়াটিয়া তাড়িয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ
আজানের জবাব দেওয়া প্রসঙ্গে।
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে নাকে খত দেওয়ার ঘটনায় মামলা
শরীয়তপুরে শ্রমিক দলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
হেঁটে টেকনাফ গেলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেদুল
বিদেশি অপারেটরের সঙ্গে সম্পাদিত গোপন চুক্তি বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ!
বাগেরহাটে জেলা একীভূত চক্ষু সেবা কর্মসূচির এডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত
সাতক্ষীরায় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল