ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ভারতের স্বার্থ রক্ষায় বেশি ব্যস্ত ছিলো: পীর সাহেব চরমোনাই
০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:২৬ এএম | আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:২৬ এএম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, বিগত সময়ে রাষ্ট্র পরিচালকরা কোনোভাবেই প্রমাণ করতে পারেনি যে, তারা দেশের উপকারের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। বরং ৫ আগস্ট যারা দেশ থেকে পালায়ন করেছে তারা সরাসরি ভারতেরই সরকার ছিলো বলে জনগণ মনে করে। তাদের সকল কার্যক্রম ভারতের স্বার্থ রক্ষার জন্য করেছে বলে জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে।
তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার দেশের স্বার্থ রক্ষার চেয়ে ভারতের স্বার্থ রক্ষায় বেশি ব্যস্ত ছিলো।
৩ জানুয়ারি শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের যে নতুন পরিস্থিতি হয়েছে তার জন্য দেশের হাজারের অধিক মানুষ নিহত হয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। যেই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। আমরা দেখছি তারা অগোছালোভাবে দেশ পরিচালনা করছে। এই অগোছালোভাবে দেশ পরিচালনার সুযোগ নিয়ে অনেকে যে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন করছে তা দেশের মানুষ কখনো মেনে নিবে না।
তিনি বলেন, বিগত সময়ে যারা দেশকে ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছে, দেশ পরিচালনার নামে এই দুর্নীতিবাজদেরকে ক্ষমতার মসনদে বসিয়ে আবার তামাশা দেখবো তা হতে পারে না।
ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের বিগত সেশনের কমিটি বিলুপ্ত করে ২০২৫-২০২৬ সেশনের জন্য মাওলানা খলিলুর রহমানকে সভাপতি, মাওলানা সিদ্দিকুর রহমানকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, মুফতী মোস্তফা কামালকে সহ-সভাপতি ও কেএম বিল্লাল হোসেনকে সেক্রেটারী জেনারেল করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, আমরা চাই অন্তর্বর্তী সরকার অতীতের সরকারের ন্যায় অসম্মানিত না হয়ে স্বসম্মানে যাতে বিদায় নিতে পারেন সে দিকে খেয়াল রাখবেন। আর জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে শ্রমিক ভাইয়েরা সব সময়ে সোচ্চার হবেন এই আহ্বান জানাচ্ছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত, জালেম এবং মাজলুম। জালেমরা মজলুমের রক্ত চুষে চুষে খেয়ে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। মজলুমরা দুঃখে কষ্টে দিনাতিপাত করছে।
তিনি বলেন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো জালিমের মসনদ ভেঙ্গে ফেলার জন্য। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৫৩ বছরের ইতিহাস দুর্নীতি, দুঃশাসনের ইতিহাস। তেপ্পান্ন বছরের ইতিহাস বাংলাদেশকে বিশ্বে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করার ইতিহাস। দেশ থেকে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের ইতিহাস। এদেশে একটি বস্তাপচা রাজনীতি সৃষ্টির ইতিহাস। স্বাধীনতার পর যারাই ক্ষমতায় ছিলো তারা বস্তাপচা রাজনীতি করেছে। দেশ ও জাতীর জন্য কিছুই করার চেষ্টা তারা করেনি। কৃষক শ্রমিক মানুষের কোনো ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা তারা করেনি। এজন্য একটি বিপ্লব এখন জরুরী। যে বিপ্লবের শক্তি হবে মাজলুম কৃষক জনতা। তাই, আপনারা প্রস্তুত থাকবেন। এদেশের শ্রমিকরা কখনওই স্বার্থের পেছনে দৌঁড়ায় না। টাকার পেছনে পড়ে না। আজকে জালিম শাসকরা দেশে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, টাকা পাচার এবং শ্রমিক জনতার জন্য ক্ষতিকর রাজনীতি করেছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া ও মুক্ত করার সুযোগ এসেছে। যারা শহীদ হয়েছে আহত হয়েছে তারা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য ত্যাগ করেছে। একটি দলকে ক্ষমতায় নেয়া আর শুধু নির্বাচনের জন্য এ ত্যাগ করেনি। ৫৩ বছরে যারাই ক্ষমতায় ছিলো তারা লুটে পুটে আঙ্গুল ফুলে বটগাছ হতে কাজ করেছে। সরকারের লোকরা বলছেন চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি হাত বদল হয়েছে। চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির পথ বন্ধ হলে অতীতের ক্ষমতাসীনরা নেতা কর্মী শুন্য হয়ে যাবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জুলাই বিপ্লবে প্রকাশ্যে শুরু থেকে থেকেছে। যারা বলেছে ছাত্রদের আন্দোলনের সাথে আমরা নাই তারা এখন আবার কৃতিত্ব নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কারের কথা ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। বাংলাদেশকে একটি দলের হাতে ছেড়ে দেয়া যাবে না।
সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্ব মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম বলেন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন এতো দিন মানবিক সংগঠন হিসেবে কাজ করেছে।
ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা খলিলুর রহমান ও জয়েন্ট সেক্রেটারী মুফতী মোস্তফা কামালের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব কে এম আতিকুর রহমান, মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন, মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, আলহাজ্ব আবদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, ডাঃ মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, ছাত্র নেতা ইউসুফ আহমদ মানসুর ও শ্রমিক আন্দোলন সহ-সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান ও আলহাজ্ব ওয়ায়েজ হোসেন ভূঁইয়া।
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির মহাসচিব নেওয়াজ
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কর্নেল অলির সাক্ষাৎ
বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে বিজিবি হেফাজতে ৩৬ মিয়ানমার নাগরিক
মির্জাপুর উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর মৃধার পদ স্থগিত
ড্রাম ট্রাকের সামনের চাকা ফেটে গিয়ে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ২
‘পদ নাই, পদোন্নতি নাই’ নীতি থেকে বের হয়ে আসার দাবি চিকিৎসকদের
ভারত আওয়ামী লীগকে মাধ্যম করে বাংলাদেশকে তাদের অঙ্গরাজ্য বানাতে চেয়েছিল- এড.শাহজাহান
যেভাবে পাঠ্যবইয়ে শহীদ আবু সাঈদের মৃত্যুর তারিখ ভুল লেখা হয়
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান পদে যোগ দিলেন রেজানুর রহমান
চলমান অস্থিরতা সমাধানের একমাত্র পথ রাজনৈতিক ঐক্য: ড. কামাল
আরও ২১ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব
সমবায় অধিদপ্তর ‘থ্রি-জিরো তত্ত্ব’ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে: উপদেষ্টা আসিফ
বাংলাদেশি-ভারতীয় জেলেদের হস্তান্তর সম্পন্ন
হাসিনার আমলে পাপাচারের শেষ নেই: প্রেস সচিব
কমলাপুর স্টেশনের মনিটরে অশ্লীল ভিডিও, যে পদক্ষেপ নিলেন আদালত
আশুলিয়ায় রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত
পাথরঘাটায় যুবদল কর্মী হত্যার ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার ও শিবির সভাপতির উপর হামলার প্রতিবাদ
লোহাগড়ায় শ্বাসরোধে হত্যা করা ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার, অভিযুক্ত আটক
সিলেট পর্বে টস গুরুত্বপূর্ণ: মায়ার্স
বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহ করবে ইসি