‘পদ নাই, পদোন্নতি নাই’ নীতি থেকে বের হয়ে আসার দাবি চিকিৎসকদের
০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম
ক্যাডার বৈষম্যের কারণে পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে কর্মকর্তা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। প্রশাসনসহ অন্য ক্যাডারগুলোতে, এমনকি স্বাস্থ্য ক্যাডারের বেশ কিছু স্পেশালিটিতে পদ সৃষ্টি করে পদোন্নতি নিশ্চিত করা হলেও অনেক বিভাগে বছরের পর বছর একই পদে আটকে থাকতে হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ‘পদ নাই, পদোন্নতি নাই’ নীতি বাতিলের দাবি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। রোববার (৫ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তাঁরা।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রশাসনসহ অন্য ক্যাডারগুলোতে এমনকি স্বাস্থ্য ক্যাডারের বেশকিছু স্পেশালিটিতে পদ সৃষ্টি করে পদোন্নতি নিশ্চিত করা হলেও গাইনিসহ অনেক বিভাগে বছরের পর বছর একই পদে আটকে আছেন তারা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে 'পদ নাই, পদোন্নতি নাই' নীতি থেকে বের হয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা দেশের চিকিৎসা সেবা ও চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং অন্তঃ ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতিতে যোগ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্রæত পদোন্নতির দাবি জানান। এতে সরকারের অতিরিক্ত আর্থিক খরচ হবে না বলেও জানান চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের আহ্বায়ক ডা. মির্জা মো. শামসুল আরেফিন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন পদোন্নতি বঞ্চিত। অন্য ক্যাডারে থাকা আমাদের জুনিয়র ব্যাচের কর্মকর্তরাও পদে আমাদের সিনিয়র। এটা আমাদের জন্য একটা মানসিক পীড়ার কারণ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দীর্ঘদিন মেডিকেল অফিসার পদে আটকে থাকা চিকিৎসকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির দাবি জানাচ্ছি। এতে সরকারের আর্থিক কোনো চাপ পরবে না। কারণ আমরা ইতিমধ্যে ওই বেতন পাচ্ছি। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত এই দাবি জানিয়ে আসছি। তবে আশ্বাস ছাড়া কোনো কিছুই পাইনি। জনগণের ভোগান্তি হয় এমন কোনো কর্মসূচিতে আমরা যাবো না। আমরা মানুষকে জিম্মি করে দাবি-দাওয়া আদায় করবো না।
মেধার অপচয়ের কথা উল্লেখ করে ডা. শামসুল আরেফিন বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতারা ইচ্ছে হয়েছে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করেছে। এসব শিক্ষার্থীদের কে পড়াবে সে চিন্তা কেউ করেনি। আমাদের কোয়ালিটি চিকিৎসক প্রয়োজন। সঠিক স্থানে সঠিক লোক নিয়োগ প্রয়োজন। একজন কার্ডিওলজি সার্জনকে উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে প্যারাসিটামল লেখার জন্য বসিয়ে রেখেছে। এটা মেধার অপচয়। মেধার মূল্যায়ন না হলে মেধাবিরা দেশত্যাগ করে। তখন আমাদের কতজনের সামর্থ্য রয়েছে দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করার। আমরা দেশের মানুষকে সেবা দিতে চাই। আমরা চাইনা বাংলাদেশের রোগীরা অন্য দেশ মেডিকেল টুরিজমের হাতিয়ার হোক।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের দাবি দাওয়া নিয়ে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের দেখা করে আমাদের সুপারিশ জানিয়েছি। আমরা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) প্রফেসর ডা. সায়েদুর রহমান স্যারের সাথে কথা বলেছি। তিনিও আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
যুগ্ম-আহ্বায়ক ডা. বশির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আর্থিক সুবিধা চাচ্ছি না। আমরা শুধু আমাদের সম্মান চাচ্ছি। যারা রাষ্ট্র কাঠামো ঠিক করে তারা এই সমস্যাটা তৈরি করেছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরতরা যদি চিকিৎসক হতেন তাহলে হয়তো তারা আমাদের ওয়োন করতেন। তারা আমাদের দুঃখ বুঝতে পারতেন। বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে প্রশাসন ক্যাডারের যারা আছেন, তারা এদেশে চিকিৎসা নেন না। তাদের সন্তানরাও এদেশে থাকেন না।
বাংলাদেশের এমবিবিএস ডিগ্রির মান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের এমবিবিএস ডিগ্রির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হুমকিত মুখে। এর কারণ চিকিৎসক সংকট। আর এ সংকটের কারণ চিকিৎসকদের সময় মতো পদোন্নতি না হওয়া। নিয়ম অনুযায়ী মেডিকেল কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থী রেসিও হবে ৩০:১। কিন্তু আমাদের তা হচ্ছে না। কারণ পদ নেই বলে বিশেষজ্ঞদের পদোন্নতি হচ্ছে না। এ সময় বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফোরামের পক্ষ থেকে এ সমস্যা সমাধানে চার দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো- ১. যেহেতু পদোন্নতি প্রার্থীর সংখ্যা এত বেশি যে শুধুমাত্র পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে বর্তমান সংকট হতে উত্তরণ সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে জনগণের চাহিদাকে বিবেচনায় নিয়ে নানা বিষয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক নতুন পদ সৃষ্টি করা। ২. সম্ভাব্য নতুন পদের জন্য বর্তমানে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে অধিক সংখ্যায় ভূতাপেক্ষভাবে পদের অতিরিক্ত পদোন্নতি/সুপারনিউমারারি/ইন সিটু পদোন্নতি দিয়ে বিদ্যমান জট কমিয়ে জনগণের স্বাস্থ্য সেবার পথ সুগম করা। ৩. সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সকল বিষয়ে দ্রæত ও জরুরি ভিত্তিতে সকল বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক পদে ভূতাপেক্ষভাবে সুপারনিউমারারি পদোন্নতি ও প্রয়োজনে ইন সিটু পদোন্নতি। ৪. যেহেতু প্রতিবছর অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অবসরে যান এবং মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে মেডিকেল শিক্ষার্থী এবং পোস্ট গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পায়, সেহেতু প্রতি বছর অন্তঃত দুইবার পদোন্নতির নিয়ম চালু করা এবং আন্তঃ ও অন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য কমিয়ে আনতে একটি যুগোপযোগী পদোন্নতি নীতিমালা প্রনয়ন করা। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন আহবায়ক মির্জা মো. আসাদুজ্জামান রতন, সদস্য সচিব ডা. মোহাম্মদ আল আমিন, কোষাধ্যক্ষ ডা. মোহাম্মদ সাফায়াত কামাল, ডা. মুশতাব শীরা মৌসুমী প্রমুখ।
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
দুই মাস পর চালু হলো পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন
ভারতের কাঁটাতারের বেড়ায় বাংলাদেশ, এখনও বিচার পায়নি ফেলানী
ঝিনাইদহে বিচার বিভাগীয় কর্মচারীদের স্মারকলিপি পেশ
ইউক্রেনের কুরাখোভ শহর দখল,দাবি রাশিয়ার
নতুন সভাপতি-আবুল হোসেন,সাধারণ সম্পাদক-সাইদুর রহমান খান
জকিগঞ্জে শীতার্তদের মাঝে পৌর আল-ইসলাহ'র শীতবস্ত্র বিতরণ
‘মিথ্যা প্রোপাগান্ডা’ ছড়ানো থিংকট্যাঙ্কের সাথে জড়িত শেখ রেহানার ছেলে-মেয়ে: দ্য টাইমস
অনৈতিক আচরণে মোনালির কনসার্ট ত্যাগ, ম্যানেজারকে যৌন হয়রানির অভিযোগ, কি বললেন মোনালি?
১৫২ কর্মকর্তাকে বেতনের টাকা ফেরত দিতে বললো ইসি
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন
ধানমন্ডির কাকলি হাইস্কুল ও না.গঞ্জের ডিপিডিসি অফিসে দুদকের অভিযান
চিলমারীতে বেগুন চাষে বাজিমাত কৃষক রবিউলের
গ্রীনল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র
চট্টগ্রামে ফিরলেন ভারত থেকে মুক্তি পাওয়া ৯০ জেলে ও নাবিক
মেজর ডালিমের স্ত্রীকে কে এবং কারা অপহরণ করেছিল?
তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃত্যু বেড়ে ৫৩
আসামের কয়লা খনিতে ১১ শ্রমিক আটকে পড়েছেন, উদ্ধারকাজ চলছে
আজ রাতে লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া, বিমানবন্দরে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা
গুয়ানতানামো কারাগার থেকে ১১ ইয়েমেনি বন্দি ওমানে স্থানান্তর
কোথায় হবে তাহসান-রোজার হানিমুন?