মুজাদ্দিদে আলফেসানী রহ. : দ্বীন ও মিল্লাতের নবায়ন-১
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৩ এএম
মুজাদ্দিদে আলফে সানী একটি উপাধি। শাইখ আহমদ নকশেবন্দী সিরহিন্দি (রহ.) এই উপাধিতে বিভূষিত। আবুল বারাকাত তার উপনাম। ৯৭১ হিজরি মোতাবেক ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পাঞ্জাবের তৎকালীন পাতিয়ালি রাজ্যের বিখ্যাত শহর সিরহিন্দ তার জন্মস্থান। পিতার নাম আব্দুল আহাদ। পিতা আব্দুল আহাদ ছিলেন শাইখ আব্দুল কুদ্দুস গাঙ্গোহির শাগরেদ। তার বংশধারা মিলিত হয়েছে হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) পর্যন্ত।
তাঁকে নিয়ে আলোচনা করতে গেলে ‘মুজাদ্দিদে আলফে সানী’ পরিভাষাটিকে বুঝতে হবে। ‘আলফ’ মানে হাজার। ‘আলফে সানী’ মানে দ্বিতীয় সহস্রাব্দ। অর্থাৎ হিজরী এক হাজার বছর অতিবাহিত হওয়ার পর যে দ্বিতীয় সহস্রাব্দ শুরু হয়েছিল, তার শুরুতে মুজাদ্দিদ সাহেব এসেছিলেন। তিনি হিজরি দশম শতকের শেষের দিক থেকে এগারো শতকের প্রথম তিন দশক জীবিত ছিলেন। ২৮ সফর ১০৩৪ হিজরীতে ইন্তেকাল হয় তাঁর। এই সময়কালে তিনি ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক সেবা সম্পন্ন করেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি ১১তম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ। কিন্তু কালিক অবস্থানবিন্দুর ফলে তিনি ‘মুজাদ্দিদে আলফে সানী’ হিসেবে প্রসিদ্ধ।
‘মুজাদ্দিদ’ একটি ইসলামী পরিভাষা। হাদীসের স্পষ্ট ঘোষণা- ‘আল্লাহ তা‘আলা এ উম্মতের (কল্যাণে) প্রত্যেক শতাব্দীতে এমন এক ব্যক্তিকে পাঠাবেন, যিনি তাদের দ্বীনকে সংস্কার করবেন।’ (আবু দাউদ-৪২৯১) তারই ধারাবাহিকতায় আগমন ঘটে শাইখ আহমদ সিরহিন্দি (রহ.) এর।
মুজাদ্দিদ এক ব্যক্তি হতে পারেন, আবার একাধিক ব্যক্তিও হতে পারেন। কিংবা একটি গোষ্ঠীও হতে পারে। মোদ্দাকথা, পরিস্থিতি অনুযায়ী আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ব্যক্তি বা দলের কাছ থেকে দ্বীনকে বিকৃতি থেকে রক্ষার খেদমত নেন। এই সংস্কারের অর্থ হলো, ইসলামে ও মুসলিম জীবনে যে সকল বিকৃতি, কুসংস্কার ও অধোগামিতা এসেছে, ইসলামের নীতি ও শিক্ষার আলোকে তার প্রতিকার করা। ইসলামকে তার আসল অবয়বে প্রতিস্থাপন করা। ইসলামে অতিরিক্ত যা যোগ করা হয়েছে, তা ছেটে ফেলা। ইসলাম থেকে যা কমানো হয়েছে, তাকে জুড়ে দেওয়া। তার সাধনার একটা বিশেষ পটভ‚মি রয়েছে।
দশম শতাব্দীর শেষভাগে ভারতে ছিলো সম্রাট আকবরের শাসন। তখনকার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী শাসক ছিলেন তিনি। আকবর ধর্মের মধ্যে কিছু সংযোজন ও পরিবর্তন করেন। তাকে বলা হয়েছিলো যে, ইসলামের এক হাজার বছর পূর্ণ হয়েছে, এখন নতুন সহস্রাব্দের জন্য ধর্মের নতুন ব্যাখ্যা প্রয়োজন। আকবরকে পরবর্তী হাজার বছরের জন্য মুজতাহিদ-ই-আজম উপাধি দিয়ে ধর্মের প্রচারক ও ভাষ্যকার বলে আখ্যায়িত করা হলো। ঘোষণা হলো, আগামী হাজার বছর তার নিয়মে দ্বীন চলবে। দাবি করা হলো, আকবরের দ্বীন হাজার বছর বিদ্যমান থাকবে। মুজাদ্দিদে আলফে সানী দ্বীনের নামে সেই বিকৃতিকে পরাভ‚ত করেন। ফলে তাকে হাজার বছরের সংস্কারকারী বা মুজাদ্দিদে আলফে সানী উপাধি দেওয়া হয়।
তিনি বেড়ে উঠেন সিরহিন্দে। মহান আল্লাহ তাকে জ্ঞান ও মনীষা দান করেছিলেন। আধ্যাত্মিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে তিনি ছিলেন আপন সময়ের শীর্ষজন।। নকশবন্দী ধারার শীর্ষস্থানীয় সুফি ছিলেন। সেই ধারায় রয়েছে তাঁর মুজাদ্দিদের মর্যাদা।
বিভাগ : বিশেষ প্রতিবেদন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মেসিকে নিয়ে বড় পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে তৈরি আছি: হাছান মাহমুদ
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে দলের কোনো নেতা-কর্মীকে ছাড় দেওয়া হবে না : যুবদল সভাপতি
ঢাকা মেডিকেলের সিসিইউতে ভর্তি শাজাহান খান
আলোকচিত্রশিল্পী ড. শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওলামা মাশায়েখ মহাসম্মেলন কাল
ব্র্যাক ব্যাংকের ৩০,০০০ কোটি টাকার রিটেইল ডিপোজিট মাইলফলক
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গবেষণায় জোর দিতে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার পরামর্শ
ব্রাহ্মণপাড়ায় জেলেকে পিটিয়ে হত্যা
কুয়াকাটায় দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
কলারোয়ায় হাজার হাজার ছাগলের মৃত্যু
হত্যা মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের ফাঁসানোর প্রতিবাদ
শিয়ালের কামড়ে নারী ও শিশুসহ আহত ৯
লোহাগাড়ায় ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
বন্দরগুলোর অবৈধ সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা
পঞ্চগড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান
ধামরাইয়ে পুলিশ ক্যাম্পে ঝুলছে তালা
ভোগান্তির আরেক নাম আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
যশোরে বিএনপি নেতার আদালতে আত্মসমর্পণ
যশোর শহরজুড়ে রাস্তার পাশে ময়লার ভাগাড়