চর্যাপদ ও বাংলা ভাষার শত্রু-মিত্র

Daily Inqilab মুসা আল হাফিজ

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:১৫ এএম | আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:১৫ এএম

সে এক অনন্য বালিকা। বাস করে সবুজ পর্বতে। যে পর্বত মাথা উঁচিয়ে আছে শূন্যতার সন্ধানে, সুবিশাল আকাশের দিকে। বালিকাটি রহস্যময়ী। প্রাণপ্রাচুর্য আর লীলাময়তায় টইটম্বুর। তার সারা গায়ে প্রাকৃতিক ছন্দময়তা। তার গলায় গুঞ্জার মালা। বাতাসের কোলাহলে আন্দোলিত পল্লবের মতো মালাটি দুলছে বুকের উপর। তার খোপায় গুঁজা ময়ূরপুচ্ছ। প্রতিটি পদক্ষেপ ঝংকার তুলছে হাওয়ায়। তার কানের কুন্তলে সুন্দরের তরঙ্গ সৃষ্টি হয়। যখন তাতে রোদের হাস্যময়ী কণাগুলো ছলকে ওঠে। নির্জন পর্বতের সবুজ সা¤্রাজ্যে পাখির সাথে, বৃক্ষের সাথে, বন্য প্রাণীর সাথে আত্মীয়তার মধ্য দিয়ে মেয়েটির সরল সহজ বিকাশ। তার সামনে, পিছনে, চারদিকে বৃক্ষের বিস্তার। ফুলের সমারোহ। ডালে ডালে ছায়ার প্রশান্তি আর নিবিড় ন¤্রতা। সেই ছায়ার স্নেহে পাহাড়ি উৎফুল্লতা নিয়ে মেয়েটি ঘুরে বেড়ায়।

এই হচ্ছে চর্যাপদে অঙ্কিত পরিবেশ ও দৃশ্যচিত্র। এই যে বালিকা আর তার আদিমতা, আরণ্যক পোশাক, এই যে তার পরিবেশ আর বন্য বাস্তবতার চিত্র, কী জীবন্তভাবে তা মূর্ত হয়ে উঠেছে। শুধু পরিবেশ নয়, মুখর হয়ে উঠেছে প্রকৃতির প্রাণ। আদিম মানুষ সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য এর চেয়ে আর কী চমৎকারিত্ব অবলম্বন করতে পারত, যা করেছে শবরী বালিকা। খোপায় ময়ূরের পালক ঝিলমিল করছে। রোদের আনন্দে কী অপূর্ব সজীবতা! আধুনিক নারীর কাছেও এ এক আকর্ষণীয় সাজ। মানুষের চিরন্তন সৌন্দর্য তৃষ্ণার আকুতি শবরীদেরকে এ পদ্ধতি উদ্ভাবনে উদ্বুদ্ধ করেছে। আর যে যে প্রাকৃতিক উপকরণ, তাও তো একদম জান্তব। সে সকল মানুষের জন্য তো এমনটাই মানায়। তুলির একটানে সেই ছবি আঁকলেন কবি। তিনি তুলে আনলেন বনঘনিষ্ঠ জীবনের পরিবেশকেও। সেও অপূর্ব, মুখর, মুগ্ধকর। কবির এই রূপদর্শন দক্ষতা আধুনিক কবির কাছেও প্রত্যাশিত।

এ কবিতা রচিত হয় প্রায় হাজার বছর আগে। এর লেখক কবি শবরী পাদ। বিকাশের প্রথম প্রহরে বাংলা ভাষা এমনই কাব্যের পসরা সাজিয়েছিল। ভাষাটির সূচনা হয় সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এর মতে, ৭০০ থেকে ৯৫০ খ্রিস্টাব্দে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন ৬৫০ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ের কথা। তার মতে, তখনই জন্ম নেয় দ্রোহী এই বাংলা ভাষা।

আলো-আঁধারি ভাষায় রচিত হয় চর্যাপদ। যাকে খানিক বুঝা যায়, খানিক বুঝা যায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ভাষায় এর নাম সান্ধ্যভাষা। কেননা এ ভাষা তখনো সুনির্দিষ্ট রূপ পায়নি। এর অর্থও একাধিক। এর ভাষা দুর্বোধ্য ছিল। কারণ এতে ছিল তন্ত্র ও যোগের প্রতাপ। চর্যা হিসেবে পাওয়া গেছে সাড়ে ছেচল্লিশটি পদ বা গান। এগুলো আবিষ্কৃত হয় ১৯০৭ সালে। নেপালের রাজকীয় গ্রন্থাগারে তিনবারের প্রচেষ্টায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী সন্ধান পান পদগুলোর। সেগুলো ছিল তিন পুঁথি। চর্যাপদের সাথে তিনি ডাকার্ণব ও দোহাকোষ নামে আর দুটি গ্রন্থ উদ্ধার করেন। তিনি এই সব বই নিয়ে ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ‘চর্যাশ্চর্য বিনিশ্চয়’ বা ‘হাজার বছরের পুরান বাঙ্গালা বৌদ্ধগান ও দোহা’ নামে প্রকাশ করেন এক সংকলন।

চর্যাপদে ব্যবহৃত হয়েছে আদিতম বাংলা ভাষা। এতে হিন্দি, অপভ্রংশ (মৈথিলী), অসমিয়া ও উড়িয়া ভাষার প্রভাব রয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদের ভাষা বঙ্গকামরূপী। অসিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় চর্যা প্রশ্নে লিখেন, ‘ইহা প্রাচীনতম বাংলা ভাষায় রচিত, যখন মাগধী অপভ্রংশের অঞ্চলতল ত্যাগ করিয়া বাংলা ভাষা সবেমাত্র পথে বাহির হইয়াছে; উপরন্তু ইহাতে সাধন-ভজন সংক্রান্ত এমন সমস্ত গুহ্য ইঙ্গিত ও প্রতীকের আভাস আছে যে, আধুনিক যুগের পাঠক ইহার মর্মার্থ সহজে বুঝিতে পারে না। তবু ইহা বাংলাই। চসারের ঈড়হঃবৎনঁৎু ঞধষবং-এর ইংরেজি ভাষার সহিত ১৯শ’ শতাব্দীর ইংরেজী ভাষার যে সম্পর্ক, তদপেক্ষা দূরতর নহে।’

কেউ কেউ যদিও চর্যাকে হিন্দিভুক্ত করতে চেয়েছেন, এ দাবির ভিত্তি হলো, বেশ কিছু পশ্চিমা অপভ্রংশের শব্দ যুক্ত আছে পদাবলিতে। আবার দুই একটি মৈথিলী ও উড়িয়া শব্দের উপস্থিতির কারণে মৈথিলা ও উড়িষ্যাবাসীরা চর্যাকে তাঁদের সাহিত্য বলে দাবি করছেন। বেশিরভাগ চর্যা বাঙালি ও বাংলাদেশের পটভূমিতে রচিত। এ বিষয়ে গবেষকদের ভিন্নমত কম। চর্যা যে বাংলা ভাষার আদিরূপ এবং বাংলাভূমিতে তা রচিত, এ বিষয়ে ভাষাবিজ্ঞানীরা একমত।

এসব গান ও দোহা যখন রচিত হয়, তখন ছিল পাল ও সেন বংশের শাসন। এ সময়ে রাজভাষা ছিল সংস্কৃত। রাষ্ট্রীয় পোষকতা পেতো বৈদিক সাহিত্য, ব্যাকরণ, তর্ক, বেদান্ত ইত্যাদি, যা রচিত হতো সংস্কৃতে। এসময়ের প্রধান প-িত ছিলেন চতুর্বেদজ্ঞ দর্ভপাণি, সন্ধ্যাকর নন্দী, জীমূতবাহন প্রমুখ। সন্ধ্যাকর নন্দীর ‘রামচরিত’ গ্রন্থ কৈবর্তদের সঙ্গে রামপালের যুদ্ধের বিবরণ দেয়। সুনিপুণ সংস্কৃতভাষায়। দর্শন শাস্ত্রে পন্ডিত শ্রীধরভট্ট লিখেন ‘ন্যায়-কদলী’। দেবপালের মন্ত্রী দর্ভপাণি বেদের সুপ-িত ছিলেন। পালযুগে অভিনন্দ নামে এক বাঙালি কবির কথা জানা যায়। তিনি লিখেন ‘কাদম্বরী-কথাসাগর’। চরক ও সুশ্রুতের প্রসিদ্ধ টীকাকার চক্রপাণি লিখেন ‘চিকিৎসা-সংগ্রহ’, ‘আয়ুর্বেদ-দীপিকা’ ইত্যাদি। অতীশ দীপঙ্কর ছিলেন বিক্রমশীলা মঠের খ্যাতনামা পন্ডিত। তিনি তিব্বতে গিয়ে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেন। তারা রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা পান। কিন্তু কারো সাহিত্যকর্মে বাংলা ভাষার কোনো নিদর্শন নেই।

সেন আমল ছিল সংস্কৃত সাহিত্যের স্বর্ণযুগ। রাজা বল্লালসেন সাহিত্যের অনুরাগী ছিলেন। তিনি রচনা করেন ‘দানসাগর’ ও ‘অদ্ভুতসাগর’। হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান ও দানকর্মের নিয়ম উল্লেখিত হয়েছে এ দুই গ্রন্থে। হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মজীবন নিয়ে অনিরুদ্ধ ভট্ট দুটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন- ‘হরিলতা’ এবং ‘পিতৃদয়িতা’। লক্ষ্মণসেনের সভাপ-িত হলায়ূধ ‘ব্রাহ্মণ-সর্বস্ব’, ‘মীমাংসা-সর্বস্ব’ প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। লক্ষ্মণসেনের অন্য সভাপ-িতরা ছিলেন ধোয়ী, উমাপতিধর ও জয়দেব। ধোয়ী রচনা করেছিলেন বিখ্যাত গ্রন্থ ‘পবনদূত’। উমাপতিধর রচনা করেন ‘চন্দ্রচূড়-চরিত’। এ যুগের এক শ্রেষ্ঠ ভাষাতাত্ত্বিক ছিলেন পন্ডিত সর্বানন্দ। তাঁর রচিত ‘টীকা-সর্বস্ব’ একটি সমাদৃত গ্রন্থ। এ সময়ে প্রধানত সংস্কৃতের চর্চা হয়।

সবচে অনাদরে ছিল বাংলা ভাষা। চর্যার কবিরা থাকতেন দূরে, পাহাড়ে, অরণ্যে। তাদের ভাষা ছিল রাজলাঞ্চিত। এই ভূমিতে সবচে’ উপেক্ষিত ছিল এই ভূমির সন্তানদের ভাষা। তারা কথা বলতেন মাগধি ও গৌড়ি প্রাকৃতে। সেটা রূপান্তরিত হতে হতে চর্যার সান্ধ্যভাষায় রূপায়িত হয়।

চর্যার কবিদের সংখ্যা নিয়েও রয়েছে ভিন্নমত। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ উল্লেখ করেছেন ২৩ জনের নাম। সুকুমার সেন ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস’ গ্রন্থে’ হাজির করেছেন ২৪ জনের নাম। এই কবিরা হলেন লুই, কুক্কুরী, বিরুআ, গু-রী, চাটিল, ভুসুকু, কাহ্ন, কাম্বলাম্বর, ডোম্বী, শান্তি, মহিত্তা, বীণা, সরহ, শবর, আজদেব, ঢেণ্ঢণ, দারিক, ভাদে, তাড়ক, কঙ্কণ, জঅনন্দি, ধাম, তান্তী পা, লাড়ীডোম্বী। এঁদের মধ্যে লাড়ীডোম্বীর পদটি পাওয়া যায়নি। এরা প্রধানত বৌদ্ধ ধর্মের বজ্রযান সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন।

চর্যার যে পুঁথিটি পাওয়া যায়, তা পাকানো তালপাতার ওপর লেখা। সাড়ে ১২ বাই দেড় ইঞ্চি আকারে ৬৯টি পাতার প্রতিটিতে দুপাশেই পাঁচটি করে লাইন রয়েছে। তবে এগুলো খুঁজে পাওয়ার আগেই এর পাঁচটি পাতা হারিয়ে গেছে। ফলে এর সংখ্যা নিয়েও রয়ে গেছে অস্পষ্টতা। মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যায় আছে ৫০টি পদ, সুকুমার সেনের মতে ৫১টি। যে পাতাগুলো উদ্ধার সম্ভব হয়েছে, তাতে আছে সাড়ে ছেচল্লিশটি। চর্যার ২৪, ২৫ ও ৪৮ নং পদ পাওয়া যায়নি। ২৩ নং পদ পাওয়া গেছে খ-িত আকারে।

এতে বিবৃত যে ভাষা, একে ধরে রেখেছিলেন তৃণমূলের মানুষ। যারা ইতোপূর্বে গ্রহণ করেছিল বৌদ্ধ ধর্ম। কেউ কেউ আবার ছিলেন সমাজের একেবারে নি¤œশ্রেণীতে পতিত। কিছু কবি অবশ্য উচ্চবংশীয় ছিলেন। কিন্তু তারা মেনে নেননি ব্রাক্ষণ্যবাদী প্রাধান্য। ফলে তাদেরকে বলা হতো বেদবিরোধী, নাস্তিক! তাদের সাধনপন্থার নানা সংগীত হলো চর্যা।

বর্ণভেদের ফলে ধর্মে তাদের অংশগ্রহণ অনুমোদিত ছিল না। ফলে ব্রাত্য মানুষগুলো নিজেরাই সৃষ্টি করে নেয় আপন ধর্মাচার। খোলাচোখে দেখা যায় এই সাধনপন্থা নর-নারীভিত্তিক দেহকেন্দ্রিক ও যুগল। কিন্তু পদকর্তাদের বক্তব্য মূলত প্রতীকী, যাতে অনেক কিছুই লুকিয়ে রাখা হয়েছে। পদকর্তারা নিজেদের নামকেও ঢেকে রেখেছেন রহস্যের আড়ালে। গ্রহণ করেছেন গোপন ও প্রতীকি নাম। তাহলে তারা কি কারো দ্বারা ভীত ছিলেন? কার থেকে তারা লুকাতে চাইতেন নিজেদের পরিচয়, নিজেদের ধর্মাচার?

প্রায় পদেই হিন্দু ব্রাহ্মণদের প্রতি রয়েছে ক্ষোভ ও আক্রোশের প্রকাশ। এই ব্রাহ্মণরা যে ক্ষত্রিয়দের বাহুবলকে কাজে লাগিয়ে এই অন্ত্যজ মানুষদের দাস বানিয়েছিল এবং তাদের রমণীদের সম্ভোগ করেছিল সবলে, সদলে, এর পরিচয় পাওয়া যায় চর্যার নানা পদে। চর্যাপদগুলোতে এক বিশেষ রকমের ধর্মজীবন বিবৃত। এতে সম্ভোগের মাধ্যমে ‘আরাধ্য’ বস্তুকেও যে পাওয়া সম্ভব এমন প্রতীকি উল্লেখও রয়েছে। চর্যাপদের নর-নারীরা যে শ্রমজীবী, অন্ত্যজ বা মজলুম জনগোষ্ঠী ছিল, পদাবলিতে রয়েছে এর নিদর্শন।

চর্যাপদ নেপালে কেন পাওয়া গেলো, তা নিয়ে রয়েছে নানা আলাপ। সত্যজিৎ চৌধুরী গায়ের জোরে দাবি করেছেন, তুর্কি আক্রমণের সময় পুঁথিপত্র নিয়ে বাংলার প-িতরা নেপালে, তিব্বতে চলে যায়। তারাপদ মুখোপাধ্যায়ের মতে, এক সময় নেপালে বাঙালিরা থাকতে পারেন। তারা বাংলা লিপিতে পুঁথি লিখতেন। ফলে নেপালে বাংলা অক্ষরে বাঙ্গালি লিপিকারের লেখা পুঁথির অস্তিত্ব পাওয়া অভাবিত ব্যাপার না।

কিন্তু চর্যার পদগুলো দাবি করে এগুলো রচিত হয়েছে বাংলা-জনপদে। চর্যা নিজেই জানায়, কাদের ভয়ে ও অত্যাচারে ভীত ছিলেন এর রচয়িতারা। সত্যজিৎ যদিও দাবি করেন তুর্কি আক্রমণ তাদেরকে বিতাড়িত করেছিল, কিন্তু মুসলিম বিজয় এদেশের বৌদ্ধদের জন্য মোটেও ভীতির কারণ ছিল না, বরং ছিল আশীর্বাদ এবং মুক্তি। এটা প্রমাণ করেছেন দীনেশচন্দ্র সেন থেকে নিয়ে রিচার্ড এম ইটন, সুরজিত দাসগুপ্ত।

আমরা দেখি, চর্যার কবি জানাচ্ছেন, জাতপাতের কথা, উঁচু-নিচু সমাজের কথা, ব্রাক্ষণ্যবাদী অত্যাচারের কথা। নগরের বাইরে, কামলুলোপ ব্রাক্ষণরা তাদের নারীদের পাশে ঘুর ঘুর করে। নারীদের ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায়। এ যেন সেন আমলেরই বিবরণী- নগর বারিহিরেঁ ডোম্বি তোহোরি কুড়িয়া/ ছোই ছোই যাই সো ব্রাহ্মণ নাড়িআ। মানে নগরের বাইরে কুড়েঘরে বাস করো ডোমনী আর নেড়ে ব্রাহ্মণকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছো!

মাহবুবুল আলম স্পষ্ট করেছেন এর প্রেক্ষাপট। তিনি লেখেন, বাংলার পাল বংশের রাজারা বৌদ্ধ ছিলেন। তাঁদের আমলে চর্যাগীতিকাগুলোর বিকাশ ঘটেছিল। পাল বংশের পরে পরেই বাংলাদেশের সেন, বর্মণ রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় পৌরাণিক হিন্দু ধর্ম ও ব্রাহ্মণ্যসংস্কার রাজধর্ম হিসেবে গৃহীত হয় এবং দেশি ভাষা বাংলার পরিবর্তে সংস্কৃত ভাষা প্রাধান্য লাভ করে। পাল রাজাদের উদারপন্থী বৌদ্ধ মতবাদের পরিবর্তে সেন রাজাদের ব্রাহ্মণ্য ধর্মমতের প্রাধান্যের ফলে বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যেরা এদেশ থেকে বিতাড়িত হয়। সেন রাজাদের প্রতাপের জন্যই বাংলাদেশের বাইরে গিয়ে তাদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হয়েছিল। তাই বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন বাংলাদেশের বাইরে নেপালে পাওয়া গেছে।’

লেখক: গবেষক ও ইসলামী চিন্তাবিদ।


বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

জাগ্রত ভয় মনের মাঝে
আর কেউ বেঁচে নেই
সময়
মার্চের পদাবলি
অপসৃয়মাণ রেলগাড়ি
আরও
X

আরও পড়ুন

ঈদ মিছিলে মূর্তি ঈদের মূল স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: হেফাজত

ঈদ মিছিলে মূর্তি ঈদের মূল স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: হেফাজত

ফার্নান্দেসের রিয়ালে যাওয়ার ব্যাপারে যা বললেন তার কোচ

ফার্নান্দেসের রিয়ালে যাওয়ার ব্যাপারে যা বললেন তার কোচ

রোনালদোকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন এমবাপে: আনচেলত্তি

রোনালদোকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন এমবাপে: আনচেলত্তি

উইন্ডিজের নেতৃত্ব ছাড়লেন ব্র্যাথওয়েট

উইন্ডিজের নেতৃত্ব ছাড়লেন ব্র্যাথওয়েট

ঈদের আনন্দ ৫ আগস্ট শুরু হয়েছে : শিবির সভাপতি

ঈদের আনন্দ ৫ আগস্ট শুরু হয়েছে : শিবির সভাপতি

আমাকে যুদ্ধাপরাধের মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখানো হয়েছিল: জামায়াত আমির

আমাকে যুদ্ধাপরাধের মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখানো হয়েছিল: জামায়াত আমির

বাকিটা জীবন বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়াবাসীর পাশে থাকতে চাই : ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন

বাকিটা জীবন বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়াবাসীর পাশে থাকতে চাই : ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন

পশ্চিমবঙ্গ-গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত ২১

পশ্চিমবঙ্গ-গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত ২১

আমাদের চেতনার প্রাণপুরুষ আল্লামা ফুলতলী (র.)

আমাদের চেতনার প্রাণপুরুষ আল্লামা ফুলতলী (র.)

লক্ষ্মীপুরে অস্ত্রধারীদের গুলিতে শিশু গুলিবিদ্ধ

লক্ষ্মীপুরে অস্ত্রধারীদের গুলিতে শিশু গুলিবিদ্ধ

রামুতে গুলিতে নিহতের ঘটনায় ২ টি দেশীয় তৈরি অস্ত্র উদ্ধার আটক ২

রামুতে গুলিতে নিহতের ঘটনায় ২ টি দেশীয় তৈরি অস্ত্র উদ্ধার আটক ২

সিলেটে ৬ তলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে এক গৃহবধুর আত্মহত্যা

সিলেটে ৬ তলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে এক গৃহবধুর আত্মহত্যা

ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে মোরেলগঞ্জের পথে প্রান্তরে বিএনপি নেতা কাজী শিপন

ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে মোরেলগঞ্জের পথে প্রান্তরে বিএনপি নেতা কাজী শিপন

ঈদে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পর্যটকে মুখরিত

ঈদে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পর্যটকে মুখরিত

কুমিল্লায় বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা বাসের, নিহত ৩

কুমিল্লায় বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা বাসের, নিহত ৩

দাউদকান্দিতে এক যুবকের লাশ উদ্ধার

দাউদকান্দিতে এক যুবকের লাশ উদ্ধার

ঈদের পাঞ্জাবি নিয়ে বিপাকে বাবর, ডিজাইনারকে ছাঁটাই করতে বললেন ভক্তরা

ঈদের পাঞ্জাবি নিয়ে বিপাকে বাবর, ডিজাইনারকে ছাঁটাই করতে বললেন ভক্তরা

লন্ডনে ঈদের জামাতে প্রকাশ্যে হাছান মাহমুদ

লন্ডনে ঈদের জামাতে প্রকাশ্যে হাছান মাহমুদ

সুপ্রিম কোর্টে মুখ পুড়ল যোগী আদিত্যনাথের

সুপ্রিম কোর্টে মুখ পুড়ল যোগী আদিত্যনাথের

মির্জাপুরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিরোধপূর্ণ দুই ঈদগাহসহ আড়াই শতাধিক মাঠে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের জামাত

মির্জাপুরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিরোধপূর্ণ দুই ঈদগাহসহ আড়াই শতাধিক মাঠে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের জামাত