ইতিহাসের চমকপ্রদ কয়েকটি ‘গল্প’
৩০ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৭ এএম | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৭ এএম

ইতিহাস মানেই রাজা-রাণী, সম্রাট-সম্রাজ্ঞী, সুলতান-সুলতানা, নবাব-বেগম, উজির-সেনাপতির বীরত্ব অথবা কাপুরুষতার কাহিনী। দেশ-রাজ্য-ভূমি নিয়ে যুদ্ধ-সংঘাত। আর তাতে জয়-পরাজয়ের কাহিনী। অথবা সুশাসন-দুঃশাসনের কথকতা। হেরেম-চিত্রও বাদ যায় না। এসব চিত্র-বিচিত্র চালচিত্রের আড়ালে-অন্তরালে থাকে অজ¯্র বলা-না বলা কতো ঘটনার সমাহার। কখনো গবেষণার প্রক্রিয়া মেনে তুলে আনা হয় প্রকৃত ইতিহাসচিত্র। আবার কখনো কিংবদন্তী-জনশ্রুতি আকারে প্রচারিত থাকে মুখে মুখে। তবে সবমিলিয়ে অবশেষে সবই ইতিহাসের অংশ হয়ে যায়।
এমনই কিছু ঘটনা, কিছু ‘কাহিনী’ কিছু জনশ্রƒতি, কিছু ‘গল্প’ ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে আছে অতীব চমকপ্রদ হিসেবে। এই বাংলা ভূখণ্ডে - যাকে বলা যায় গৌড়বঙ্গ- সংঘটিত এমনই কয়েকটি ঘটনার বিবরণ সংক্ষিপ্তাকারে উপস্থাপিত হলো।
একবেলার সম্রাট
বাংলা ভুখণ্ডের অনেকাংশই জয় করে ফেলেছেন আফগান সিংহ শেরশাহ। এখন তাঁর চোখ দিল্লীর সিংহাসনের দিকে। সম্রাট হুমায়ুনকে পরাজিত করেই কেবল সে ইচ্ছা পূর্ণ হতে পারে। তিনি শক্তি প্রয়োগের চেয়ে কৌশলের দিকেই বেশি মনোযোগ দিয়েছেন। বাংলা-বিহার সীমান্তের চৌষা নামক স্থানে হুমায়ুন-শেরশাহ মুখোমুখি। শেরশাহের কৌশলের কাছে পরাজিত হলেন হুমায়ুন। প্রাণ বাঁচাতে গঙ্গায় ঝাঁপ দিলেন। সাঁতার কাটার এক পর্যায়ে পানিবাহক একজন ভিস্তিওয়ালা তার চামড়ার মশক ছুড়ে দিলো হুমায়ুনের দিকে। মশক ধরে প্রাণ বাঁচিয়ে তীরে উঠলেন স¤্রাট। ভিস্তিওয়ালা নাজিমকে স¤্রাট হুমায়ুন ওয়াদা দিলেন এর প্রতিদান তিনি একদিন শোধ করবেন। তাকে একদিনের জন্য হলেও সিংহাসনে বসাবেন।
মোগল স¤্রাট হুমায়ুন (১৫৩০-১৫৪০ ও ১৫৫৫-১৫৫৬) শাহী মহলে দরবারে সমাসীন। ভেতরে জরুরি সভা চলছে। চারদিকে সতর্ক প্রহরীরা। হঠাৎ এক প্রহরীর দৃষ্টি পড়লো এক ভিস্তিওয়ালার উপর। ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে প্রধান ফটকের দিকে। পরনে ছেড়া-ময়লা জামা। কাঁধে বহন করছে পানি বহনের চামড়ার ভিস্তি। হাঁক ছেড়ে ভিস্তিওয়ালার গতি থামিয়ে দিলো প্রহরী। শান্ত ও ধীর কণ্ঠে ভিস্তিওয়ালা বললো, ‘আমাকে বাদশাহর কাছে নিয়ে চলো’। অট্টহাসিতে প্রহরী তাকে ধমক দিয়ে বললো, এই মূহুর্তে তুমি বিদায় না হলে তোমাকে কারাগারে ঢোকানো হবে। কিন্তু ভিস্তিওয়ালা নাছোড়বান্দা। সে জোর দিয়ে বললো, ‘আমাকে বাদশাহর কাছে নিয়ে চলো। তিনি আমাকে দেখলেই চিনবেন। আমাকে একবার সাক্ষাতের সুযোগ দাও।’ এবার ক্রুদ্ধ প্রহরী ভিস্তিওয়ালাকে আটকে রেখে সম্রাটের কাছে খবর পাঠালো- জাঁহাপনা এক ভিস্তিওয়ালা আপনার সাথে দেখা করতে চায়। সম্রাট তাকে দরবারে পাঠাতে আদেশ দিলেন। হুমায়ুনের চোখে ভেসে উঠলো সেই খর স্রোতা নদীর ঘটনা। এখন সেই ভিস্তিওয়ালা তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে। তিনি আপ্লুত কণ্ঠে বললেন :
- তুমি ভিস্তি নিজাম না?
- জ্বি আলমপানাহ! আপনার স্মৃতিশক্তি প্রশংসারও ঊর্দ্ধে।
- আমি তোমাকে বলেছিলাম একদিনের জন্য হলেও তোমাকে সিংহাসনে বসাবো। আজ অর্ধেক বেলা পার হয়ে গেছে। তারপরেও তুমি চাইলে আজই সিংহাসনে বসতে পারো। তুমি কি আজই সিংহাসনে বসতে চাও?
- সম্রাটের অনুগ্রহ এবং মহানুভবতা সমুদ্রের পানির চেয়েও বেশি। আমি আজই সিংহাসনে বসতে চাই।
দরবার কিছুক্ষণের জন্য শব্দহীন হয়ে গেলো। সামান্য ভিস্তিওয়ালা দিল্লীর সম্রাট! এ কেমন কথা! সবার দৃষ্টি ভিস্তি নিজামের দিকে। দরবারের শান-শওকত দেখে সে খুব বিচলিত বলে মনে হচ্ছে না। তার দৃষ্টি সম্রাটের দিকে নিবদ্ধ।
ভিস্তি নিজাম গম্ভীর মুখে সিংহাসেন বসে আছেন। তাঁর চেহারা মলিন, পোশাক মলিন। তবে রাজমুকুট ও পাদুকা চকচক করছে। রাজমুকুট স্বয়ং হুমায়ুন নিজামের মাথায় পরিয়েছেন। প্রধান নকিব ঘোষণা করলো : আল সুলতান আল আজম ওয়াল খাকাল আল মুকাররাম জামিই সুলতানই হাকিকি ওয়া মাজিজি ভিসতি নিজাম পাদশাহ।
সন্ধ্যেবেলায় নতুন সম্রাটের সময় শেষ হলো। তিনি প্রচুর ধনরত্ন নিজে গ্রামের দিকে রওয়ানা হলেন। সঙ্গে দুটি গাধার পিঠে ধনরত্ন, ১০ জন রক্ষী। পথে ডাকাত পড়লো, সব লুটে নিলো। নিজামের লাশ পড়ে রইলো। ডাকাতের ছদ্মবেশে আসলে ওরা ছিলো সম্রাটের ভাই মির্জা কামরানের লোকেরা। হুমায়ুন এই ঘটনা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। (সূত্র : হুমায়ূন আহমেদ, বাদশাহ নামদার ও অন্যান্য)
হাঙ্গা তুই মোরগাঁ যা
গৌড়ের সুলতান সাইফুদ্দীন আবুল মুজাফ্ফর ফিরোজ শাহ (১৪৮৭-১৪৯০) একটি যুদ্ধ জয়ের স্মৃতি রক্ষার্থে ফিরোজ মিনার তৈরির কাজ শুরু করেছেন। রাজধানী গৌড়ে এই মিনার নির্মাণ শেষ হলে ফিরোজ শাহ তা পরিদর্শণে গেলেন। প্রধান রাজমিস্ত্রী নিজের গৌরব প্রকাশ করতে গিয়ে বললো, ‘আমি এর চেয়ে উঁচু মিনার তৈরি করতে পারতাম।’ সুলতান বললেন, ‘করনি কেন?’ রাজমিস্ত্রী বললো, ‘উপযুক্ত মালমসলা পাইনি।’ সুলতান বললেন, ‘চাওনি কেন?’ রাজমিস্ত্রী কোন উত্তর দিতে পারলো না। সুলতান তাকে মিনারের উপর থেকে ফেলে দেয়ার আদেশ দিয়ে ক্রোধভরে নিচে নেমে আসলেন। আদেশ প্রতিপালিত হলো, হতভাগ্য রাজমিস্ত্রী মারা গেলো।
সুলতান তখনই তার এক পাইককে দেখতে পেয়ে হুকুম করলেন, ‘হিঙ্গা তুই মোরগাঁ যা।’ হিঙ্গা সুলতানের উগ্রমুর্তি দেখে জিজ্ঞাসা করার সাহস পেলো না যে সে মোরগাঁ গিয়ে করবে। মোরগাঁ অদূরবর্তী একটি গ্রামের নাম। সে মোরগাঁয় গিয়ে ভাবতে লাগলো যে সে কী জন্য এখানে আসলো। তার চিন্তাযুক্ত চেহারা ও ইতঃস্তত ঘোরাফেরা দেখে সনাতন নামে এক ব্রাহ্মণ যুবক তাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলো। হিঙ্গা তাকে পুরো ঘটনা জানালো। সনাতন বৃত্তান্ত শুনে মনে মনে এই সিদ্ধান্তে আসলো যে, মোরগাঁয় ভালো রাজমিস্ত্রী পাওয়া যায়। সুলতান নিশ্চয় হিঙ্গাকে রাজমিস্ত্রী সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছেন। সনাতনের পরামর্শ মোতাবেক হিঙ্গা রাজমিস্ত্রী নিয়ে ফিরতি পথ ধরলো।
এদিকে সুলতান ফিরোজ শাহও একটু ধাতস্থ হয়ে ভাবলেন, হিঙ্গাকে তো মোরগাঁ পাঠানো হলো। কিন্তু কী জন্য পাঠালাম তা তো বলা হয়নি। যা হোক, ইত্যবসরে হিঙ্গা রাজমিস্ত্রী নিয়ে সুলতানের নিকট উপস্থিত হয়েছে। সুলতান হিঙ্গাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কীরূপে আমার মনোভাব জানতে পারলে? হিঙ্গা যুবক সনাতনের পরামর্শের কথা জানালো। সুলতান সনাতনের বুদ্ধির প্রশংসা করলেন এবং তাকে যথোপযুক্তভাবে সম্মানিত করলেন। অন্যদিকে ফিরোজ মিনারের অবশিষ্ট কাজ নতুন মিস্ত্রী দিয়ে সম্পন্ন করা হলো। আজও এটি প্রবাদ হয়ে আছে যে, কেউ অনির্দিষ্টভাবে কাউকে কিছু বললে বলা হয়, ‘ও, হিঙ্গা তুই মোরগাঁ যা?’ (সূত্র : রজনীকান্ত চক্রবর্তী, গৌড়ের ইতিহাস, দ্বিতীয় খণ্ড)
সুলতান গিয়াসউদ্দীনের ন্যায়বিচার
বাংলার শাসক সুলতান গিয়াসউদ্দীন আজম শাহ (১৩৮৯-১৩৯৬) একদিন শিকারে গেলেন। এসময় তাঁর নিক্ষিপ্ত একটি তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে এক বিধবার পুত্রকে আহত করে। বিধবা কাজীর নিকট বিচারপ্রার্থী হন। কাজী সিরাজউদ্দীন সম্রাটের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে প্রথমে দ্বিধা করলেও পরে আল্লাহর উপর ভরসা করে তাঁর কর্তব্য করলেন। বিচারালয়ের পেয়াদা সমননামা সুলতান গিয়াসউদ্দীনের নিকট পৌঁছাতে ভয় পেলো। ফলে সে কৌশল অবলম্বন করে রাজদরবারের কাছে আজান দেয়া শুরু করলো। অসময়ে আজান দেয়ার জন্য সুলতানের নির্দেশে পেয়াদাকে ধরে দরবারে নিয়ে যাওয়া হলে সে তার প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যক্ত করলো। সুলতান একটা ছোট্ট তরবারি জামার তলায় গোপন করে যথারীতি আদালতে উপস্থিত হলেন। কাজী সুলতানকে আলাদা কোন সম্মান না জানিয়ে আদালতে তাঁর আসনে স্থির বসে রইলেন। বিচারে সুলতান দোষী প্রমাণিত হলেন। রায়ে বিধবাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ মোটা অংকের অর্থ প্রদানের আদেশ দেয়া হলো। সুলতান তক্ষুণি তা পরিশোধ করে দিলেন।
এইবার কাজী সিরাজউদ্দীন আদালতের আসন ছেড়ে নিচে এসে সুলতানকে যথোচিত সম্মান দেখালেন। সুলতান বললেন, ‘ভাগ্য যে আপনি সুবিচার করেছেন। নচেৎ আমি এই তরবারি দিয়ে আপনার মাথা কেটে ফেলতাম।’ কাজী সিরাজও আদালতের মঞ্চের তলায় রাখা বেত বের করে বললেন, ‘আপনি যদি আদালতে আমার অবাধ্য হতেন তাহলে আমি এই বেত দিয়ে আপনার পিঠের চামড়া তুলে ফেলতাম।’ সুলতান এই দৃশ্যে খুবই পুলকিত হলেন এবং তাঁর রাজ্যে এমন ন্যায়বিচারক আছে জেনে কাজীকে যথোপযুক্ত পুরস্কারে ভূষিত করলেন। (সূত্র : দীনেশচন্দ্র সেন, বৃহৎ বঙ্গ, দ্বিতীয় খণ্ড)
প্রসূতিকে উল্টো করে ঝোলানো :
গৌড়ের শাসক রাজা লক্ষ্মণ সেন (১১৭৮-১২০৬) মাতৃগর্ভে থাকাকালেই তাঁর পিতার মৃত্যু হয়। তাঁর জন্মের সময় উপস্থিত হলে রাজ জ্যোতিষিরা গণনা করে বললো, এই শিশুর যদি এখনই জন্ম হয় তাহলে সে কখনোই রাজা হতে পারবে না। তবে দুই ঘণ্টা পরে জন্ম হলে সে ৮০ বছর রাজত্ব করবে।’ এই ভবিষ্যতবাণী শুনে রাজমাতা আদেশ দিলেন তার দুই পা উপরে করে মাথা নিচে ঝুলিয়ে রাখতে। সেই আদেশ প্রতিপালিত হলো। শুভমূহুর্ত উপস্থিত হলে তাকে নামিয়ে দেয়া হলো। শিশুর জন্ম হলো বটে কিন্তু রাজমাতা মারা গেলেন। এই শিশুই রাজা লক্ষ্মণ সেন। তিনি ২৮ বছর রাজত্ব করেছিলেন। তবে ইখতিয়ার উদ্দীন মুহম্মদ বখতিয়ার খলজি মাত্র ১৭ জন অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে এই লক্ষ্মণ সেনের প্রাসাদ দখল করে নেন। আর লক্ষ্মণ সেন নগ্নপদে পেছন দরজা দিয়ে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। (সূত্র : শ্রী রমেশ চন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশের ইতিহাস, প্রথম খণ্ড)
মীর কাসিমের ভক্ত
বাংলার নবাব মীর কাসিম (১৭৬০-১৭৬৪) যুদ্ধে পরাজিত হলেন। মীর কাসিমের উপর লুটেরা বাহিনী লুটপাট শুরু করলো। এই লুণ্ঠনের কাজে কাসিমের অনুগত ভৃতরাও বাদ পড়লো না। তবে একজন ব্যতিক্রম- তার নাম ইতিহাসে অমর হয়ে আছে- সেখ মহম্মদ অসুর। তিনি কিছু ধনরতœ নিয়ে গোপন পথে রোহিলাখণ্ডে পলায়ন করে মীর কাসিমের পরিবারের অন্ন-বস্ত্রের ব্যবস্থা করলেন। আর অপেক্ষা করতে লাগলেন মীর কাসিমের মুক্তির। কিছুদিন পর শত্রু শিবির থেকে মুক্তি পেয়ে বহুকষ্টে রোহিলাখণ্ডে উপস্থিত হতে সক্ষম হলেন। কিন্তু জীবন রক্ষা হলেও জীবন ধারণের সুব্যবস্থা হলো না। প্রভুভক্ত সেখ মহম্মদ অসুরের যত্নে অল্পদিন কয়েকদিন কাটানোর পর একেবারে সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়লেন মীর কাসিম। অতঃপর তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া গেলো না। ১৭৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জুন দিল্লীর উপকণ্ঠে একটি জীর্ণ কুটির প্রাঙ্গণে এক অজ্ঞাত পুরুষের মৃতদেহ ধূলিলুণ্ঠিত হচ্ছিলো। তা সমাধিস্থ করার সম্বল ছিলো না। নাগরিকগণ কুটিরের মধ্য থেকে একখানা জীর্ণ শাল পেয়ে তাই বিক্রি করে মৃতের দাফনের ব্যবস্থা করা হলো। কবরে লাশ নামানোর সময় কেউ একজন অকস্মাৎ কেঁদে উঠে প্রকাশ করলো যে এই সেই মীর কাসিম! (সূত্র : অক্ষয় কুমার মৈত্রেয়, মীর কাসিম)
গরুর বদলে শিশু হত্যা!
রাজা বল্লাল সেন প্রচ-রকম ধর্মান্ধ ছিলেন। তার রাজ্যে একজন মুসলিম প্রজা ছিলেন। তার কোন সন্তান হয় না। একদিন এক ফকির তার বাসায় ভিক্ষা চাইতে এসে বলে, বাবা আমাকে ভিক্ষা দাও। আল্লাহ তোমার মনের আশা পুর্ণ করবে। সেই গৃহস্থ রাগ করে বলে, ‘তোমাকে ভিক্ষা দিবো না। তুমি ভণ্ড ফকির। আমার কোন পুত্র সন্তান হয় না।’
ফকির বললে, আমি দোয়া করলাম তোমার পুত্র সন্তান হবে। কিন্তু সন্তান হলে তুমি অবশ্যই আল্লাহর নামে একটা গরু কোরবানী দিবে। তার এক পুত্র সন্তান হলো। বল্লাল সেনের রাজ্যে গরু হত্যা ও গোশত খাওয়া বড় অপরাধ। কাছেই ছিল জঙ্গল। গৃহস্থ জঙ্গলে লুকিয়ে গরু জবাই করে হাড়গোড় মাটি চাপা দিলো। কিন্তু একটি কাক মাংসের একটি টুকরা নিয়ে যাওয়ার সময় বল্লাল সেনের প্রাসাদে ফেললো। বল্লাল সেন ক্রুদ্ধ হয়ে ঘটনার অনুসন্ধান করে সেই মুসলমান প্রজাকে ধরা হলো। বল্লাল সেন আদেশ করলেন গরুর বদলে তার সদ্যজাত পুত্রকে হত্যা করার। পুত্রকে বাঁচাতে গৃহস্থ পালিয়ে গেলেন। পালাতে গিয়ে পৌঁছে গেলেন পবিত্র মক্কা শরীফে। মক্কা শরীফে বাবা আদম নামের একজন নেতৃস্থানীয় ধার্মিক ব্যক্তির সাক্ষাত পেয়ে ঘটনা খুলে বললেন। তিনি কয়েক হাজার মুরীদ নিয়ে বিক্রমপুর আসলেন এবং এখানে তাঁরা উচ্চস্বরে আজান দিয়ে নামায পড়া শুরু করলেন। এজন্যে একটা মসজিদও নির্মাণ করা হলো। এই অঞ্চলের প্রথম মসজিদ। নাম বাবা আদমের মসজিদ। বল্লাল সেন তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন। (সূত্র : মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ওয়বসাইট)
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গ্রন্থকার।
বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

ঈদ মিছিলে মূর্তি ঈদের মূল স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: হেফাজত

ফার্নান্দেসের রিয়ালে যাওয়ার ব্যাপারে যা বললেন তার কোচ

রোনালদোকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন এমবাপে: আনচেলত্তি

উইন্ডিজের নেতৃত্ব ছাড়লেন ব্র্যাথওয়েট

ঈদের আনন্দ ৫ আগস্ট শুরু হয়েছে : শিবির সভাপতি

আমাকে যুদ্ধাপরাধের মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখানো হয়েছিল: জামায়াত আমির

বাকিটা জীবন বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়াবাসীর পাশে থাকতে চাই : ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন

পশ্চিমবঙ্গ-গুজরাটে আতশবাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত ২১

আমাদের চেতনার প্রাণপুরুষ আল্লামা ফুলতলী (র.)

লক্ষ্মীপুরে অস্ত্রধারীদের গুলিতে শিশু গুলিবিদ্ধ

রামুতে গুলিতে নিহতের ঘটনায় ২ টি দেশীয় তৈরি অস্ত্র উদ্ধার আটক ২

সিলেটে ৬ তলা ভবন থেকে লাফ দিয়ে এক গৃহবধুর আত্মহত্যা
ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ে মোরেলগঞ্জের পথে প্রান্তরে বিএনপি নেতা কাজী শিপন

ঈদে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পর্যটকে মুখরিত

কুমিল্লায় বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা বাসের, নিহত ৩

দাউদকান্দিতে এক যুবকের লাশ উদ্ধার

ঈদের পাঞ্জাবি নিয়ে বিপাকে বাবর, ডিজাইনারকে ছাঁটাই করতে বললেন ভক্তরা

লন্ডনে ঈদের জামাতে প্রকাশ্যে হাছান মাহমুদ

সুপ্রিম কোর্টে মুখ পুড়ল যোগী আদিত্যনাথের

মির্জাপুরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিরোধপূর্ণ দুই ঈদগাহসহ আড়াই শতাধিক মাঠে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের জামাত