দাপুটে শুরু পাকিস্তানের
০৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০১ এএম
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের চলমান আসরে দাপুটে শুরুই হলো পাকিস্তানের। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিন গতকাল ভারতের হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধি স্টেডিয়ামে নেদারল্যান্ডসকে ৮১ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে শুভসূচনা করে পাকিস্তান। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৪১ ওভারে ২০৫ রানে অলআউট হয় নেদারল্যান্ডস। যদিও ম্যাচের কোনো কোনো সময় পাকিস্তানকে দুশ্চিন্তায় রেখেছিল ডাচরা। তবে তা পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের সময় কিছুটা এবং বোলিংয়ের সময়ও। তবে সেই দুশ্চিন্তা বিপদ ডেকে আনেনি।
ম্যাচ জয়ের জন্য নেদারল্যান্ডসের লক্ষ্য ছিল ২৮৭ রান। এই রান তুলতে ডাচ ব্যাটাররা নিজেদের ইনিংসের শুরুতে দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করেন। ৫০ রানে দলের দুই সেরা ব্যাটারকে হারালেও বিক্রমজিৎ সিংয়ের হাফসেঞ্চুরিতে ২৪ ওভারে ২ উইকেটে ১২০ রান তুলতে সক্ষম হয় ডাচরা। এতে পাকিস্তান শিবিরে জেঁকে বসে ভয়! তবে সেই ভয়কে জয় করেছেন পাকিস্তানি বোলাররা। ডাচ ইনিংসে হঠাৎ ধস নামিয়ে তারা দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরিয়েছেন দলকে। নেদারল্যান্ডসের শেষ ভরসা হয়ে ছিলেন বেস ডি লেডে। তিনিও ৬৮ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ের মারে ৬৭ রান করে মোহাম্মদ নওয়াজের বলে বোল্ড হন। তার আউটের সঙ্গে সঙ্গেই ডাচদের সব আশা শেষ হয়ে যায়।
নেদারল্যান্ডসের ব্যাটিংয়ের শুরুতে ম্যাক্স ও'দাউদকে ফিরিয়ে ২৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন হাসান আলি। এরপরও ডাচরা মোটামুটি বুঝেশুনে এগোচ্ছিল। কিন্তু ১২তম ওভারে বল হাতে নিয়েই পাকিস্তানকে উইকেট এনে দেন ইফতিখার আহমেদ। কলিন আকারম্যান (২১ বলে ১৭) সুইপের লোভ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন। তৃতীয় উইকেটে বেস ডি লেডে ও বিক্রমজিৎ গড়েন ৭৬ বলে ৭০ রানের লড়াকু জুটি। কিন্তু ২৪তম ওভারে দলীয় ১২০ রানে বিক্রমজিৎ ৬৭ বল খেলে ৪ বাউন্ডারি ও এক ছয়ের মারে ৫২ করে শাদাব খানের শিকার হওয়ার পর ব্যাকফুটে চলে যায় নেদারল্যান্ডস। ২৬তম ওভারে এসে তিন বলের মধ্যে দুই ডাচ ব্যাটারকে সাজঘরের পথ দেখান হারিস রউফ। তেজানিদামানুরুকে ৫ আর অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসকে ০ রানে ফেরত পাঠান পাকিস্তানের গতিতারকা। ১৩৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন দিশেহারা নেদারল্যান্ডস। সেখান থেকে বেস ডি লেডের লড়াই। কিন্তু সেই লড়াই দলকে বড় হার থেকে বাঁচাতে পারেনি। পাকিস্তানের হারিস রউফ ৪৩ রানে নেন ৩টি উইকেট। ৩৩ রানে ২ উইকেট পান হাসান আলি। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন পাকিস্তানের সৌদ শাকিল।
এর আগে টস জিতে পাকিস্তানকে আগে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। তবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে পাকিস্তান। ডাচ বোলারদের দাপটে পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারেননি পাকিস্তানি ব্যাটাররা। তারপরও চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেয়েই অলআউট হয় তারা। শেষ পর্যন্ত ৪৯ ওভারে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান তোলে বাবর আজম বাহিনী। ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বোলারদের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ের কারণে স্বাচ্ছন্দে খেলতে পারেননি পাকিস্তানের টপ অর্ডারের ব্যাটাররা। ১০ ওভারের খেলা শেষ হওয়ার আগেই পাকিস্তানের ৩টি উইকেট তুলে নেন ডাচ বোলাররা। চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে একে একে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন ওপেনার ফাখর জামান, ইমাম-উল হক এবং অধিনায়ক বাবর আজম। ৩৮ রানের মধ্যে তিন টপ অর্ডার ব্যাটারকে হারিয়ে রীতিমত ধুঁকতে থাকে পাকিস্তান।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই পাক শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন ডাচ বোলার লোগান ফন বিক। তাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন পাকিস্তানি ওপেনার ফাখর জামান। ১৫ বলে তিন বাউন্ডারিতে ১২ রান করে আউট হন তিনি। তখন পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহ ছিল রান ছিল মাত্র ১৫ রান। এরপর বাবর আজম এবং ইমাম-উল হক জুটি বাঁধেন। কিন্তু এই জুটি ছিল মাত্র ১৯ রানের। দলীয় ৩৪ রানে আউট হন বাবর আজম। ১৮ বলে ৫ রান করে পল অ্যাকারম্যানের বলে সাকিব জুলফিকারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ৯.১ ওভারে দলীয় ৩৮ রানে আউট হয়ে যান ইমাম-উল হকও। পল ফন মিকেরেনের বলে আরিয়ান দত্তের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পাকিস্তানের বাঁহাতি এই ওপেনার। আউট হওয়ার আগে ১৯ বলে দুই বাউন্ডারির মারে ১৫ করেন ইমাম। মাত্র
৩৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন দিশেহারা পাকিস্তান দল ঠিক তখনই হাল ধরেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সৌদ শাকিল। ডাচ বোলারদের তোপে যখন কোণঠাসা পাকিস্তান, তখন সেখান থেকে এ দুইজন দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দলকে টেনে তুলেন। তারা শুধু জুটিই গড়েননি, দলের রানকেও বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়িয়েছেন। ১১৪ বলে রিজওয়ান-শাকিলের ১২০ রানের জুটিটি অবশেষে ভাঙেন আরিয়ান। ৫২ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৮ করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন শাকিল। ২৮.১ ওভারে তখন পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ১৫৮ রান। শাকিলের জুটি সঙ্গী রিজওয়ানও ঠিক ৬৮ রান করেই আউট হন। বেস ডি লেড এক ওভারে ড্রেসিংরুমে ফেরান দুই পাকিস্তানি ব্যাটারকে। লেডের বলে বোল্ড হন রিজওয়ান। তার ৭৫ বলের ইনিংসে ছিল ৮টি চারের মার। দুই বল পর উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ইফতিখার আহমেদও (১১ বলে ৯)। দুই সেট ব্যাটারসহ ৩০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফের চাপে পড়ে পাকিস্তান। ১৮৮ রানে ৬ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ নওয়াজ ও শাদাব খান। ৭০ বলে ৬৪ রানের জুটি গড়েন তারা। ৪৩.৪ ওভারে দলীয় ২৫২ রানের মাথায় বেস ডি লেডের বলে শাদাব (৩৪ বলে ৩২) বোল্ড হলে ভাঙে এই জুটি। ওই ওভারেই হাসান আলিকে (০) এলবিডব্লিউ করেন এই ডাচ পেসার। মোহাম্মদ নওয়াজ রানআউট হন ৪৩ বলে ৩৯ করে। তার ইনিংসে ছিল ৪টি বাউন্ডারির মার। শেষদিকে হারিস রউফ ১৪ বলে দুই বাউন্ডারি ও এক ছক্কার মারে ১৬ রান করে আউট হলে শাহিন শাহ আফ্রিদি ১২ বলে ২ চারের মারে ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
নেদারল্যান্ডসের বেস ডে লিডে ৯ ওভার বল করে ৬২ রান খরচায় পান ৪টি উইকেট। কলিন অ্যাকারম্যান ৮ ওভারে ২৯ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার
৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান
তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা
শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত
গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়
ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা
মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী
প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন
বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা