তবুও মন ভরেনি শান্ত’র
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৩ এএম
একটি সময় ছিল, ¯্রফে একটি জয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে ভুলিয়ে দিত অনেক কিছু। প্রলেপ দিত অনেক যন্ত্রণায়। আড়াল করে দিত অনেক ব্যর্থতা। কিন্তু সেই সময়ের ঘেরাটোপে বন্দি থাকতে চান না নাজমুল হোসেন শান্ত। নিউজিল্যান্ডে বহু কাক্সিক্ষত এক জয়ের পর তার গর্ব যেমন আছে, তেমনি এই জয় জাগিয়ে তুলছে তার আফসোসও, সিরিজ জেতাটা যে হলো না!
সিরিজ জয়ের কাজ প্রথম দুই ম্যাচেই সেরে রেখেছিল নিউজিল্যান্ড। সেটা খুব অস্বাভাবিকও ছিল না। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে বারবার হেরে ফেরাটাই বাংলাদেশের নিয়মিত চিত্র। তবে সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়েছে এবার। বাংলাদেশের জন্য যা আনন্দময় ব্যতিক্রম। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাঠে প্রথমবার সীমিত ওভারের ম্যাচে জয় পেয়েছে তারা। গতকাল তিন ম্যাচ সিরিজের শেষটিতে নিউজিল্যান্ডকে ৯৮ রানে বিধ্বস্ত করে ৯ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় বাংলাদেশ। কিউইদের বিপক্ষে তাদের মাঠে ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ২৮ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম জয় এটি।
সিরিজ শুরুর আগে শান্ত দৃঢ় কণ্ঠে বলেছিলেন, অতীতে বাংলাদেশের কোনো দল যা করতে পারেনি, এবার তেমন কিছু করতে চান না। তাদের সেই স্বপ্নের সীমানায় শুধু একটি ম্যাচ জয়ই নয়, ছিল সিরিজ জয়ও। সেই ইতিহাস তারা গড়তে পারেনি। তবে প্রথম ম্যাচ জয়ও তো দারুণ স্মরণীয়। তাতে মন ভরেনি শান্তর। সিরিজ শেষে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক বললেন, এই জয়ে স্বস্তি পেলেও তৃপ্তি পাননি তিনি, ‘যদি ইতিহাস চিন্তা করেন, তাহলে অবশ্যই গর্ব করার মতো ফল করেছি। একটা ম্যাচ জিততে পেরেছি। তবে আমাকে যদি ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করেন, আমি সিরিজ জিততেই এসেছিলাম এবং এটা বলার সময় আমি সত্যিকার অর্থেই বুঝিয়েছিলাম। প্রথম ম্যাচে বৃষ্টির জন্য আমরা হয়তো কিছুটা দুর্ভাগা ছিলাম। আমাদের বোলিং অপশনগুলো শেষ হয়ে গিয়েছিল। অবশ্যই আমরা খুশি যে জিততে পেরেছি। তবে সিরিজ জিততে পারলে আরও ভালো লাগত।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাঠে যেখানে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে একটি জয়ই ছিল অধরা, সেখানে সিরিজ জয়ের আশাকে বাড়াবাড়ি বা অলীক কল্পনাও মনে হতে পারে কারও। তবে শান্তর দাবি, অবাস্তব কোনো ভাবনা তার ছিল না। বরং দলের মানসিকতা, নিজেদের সামর্থ্যে প্রবল বিশ্বাস আর প্রস্তুতি থেকেই সিরিজ জয়ের আশা জেগেছিল তার, ‘আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, খেলা শুরুর আগে আমাদের কাজটা কী... আমাদের প্রস্তুতি, কাজের প্রতি আমরা কতটা সৎ, আমরা কী করতে চাই, এসব গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে বড় কথা যে, আমরা কতটুকু বিশ্বাস করছি। দল হিসেবে আমার খুবই বিশ্বাস যে এই দল আরও ভালো করতে পারে। আমার কাছে সবসময়ই গ্রুপটাকে দেখে মনে হয়েছে যে, এই গ্রুপের ওই ক্ষুধাটা আছে যে এখানে এসে ম্যাচ জিততে পারি, সিরিজ জিততে পারি।’
বাংলাদেশের পেসারদের কৃতিত্বকেও এখানে খাটো করার উপায় নেই। উইকেটের সহায়তা কাজে লাগিয়ে তারা দারুণ বোলিং করেন। টপ অর্ডারে ছোবল দেন তানজিম হাসান। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে তিন ওভারে তিন উইকেট নিয়ে কিউই ব্যাটিংকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেননি শরিফুল ইসলাম। কন্ডিশন ও উইকেটের সহায়তা কাজে লাগিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন সৌম্য সরকার, ‘আজকে (গতকাল) উইকেটের অবস্থা ভিন্ন ছিল। পেসারদের জন্য সহায়তা ছিল। সকালে একটু মনে হয় আর্দ্রতাও ছিল। ওটাই কাজ লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। টস জয়টা খুব ভালো ছিল। গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে বোলাররা কতক্ষণ লম্বা সময় ধরে ভালো জায়গায় বল করতে পারে। ওরা করতে পেরেছে বলেই এরকম রানে ওদেরকে আটকে রাখতে পেরেছি।’
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে বোলারদের পারফরম্যান্স খুব ভালো ছিল না। প্রথম ম্যাচে ৩০ ওভারে ২৩৯ রানের পুঁজি গড়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। পরের ম্যাচে বাংলাদেশ ২৯১ রান করলেও কিউরা অনায়াসেই জিতে যায় ৭ উইকেটে। এবার উইকেটে পেসারদের সহায়তা থাকলেও তাই নিউজিল্যান্ডকে একশর নিচের আটকে রাখার মতো কিছু কল্পনাও করতে পারেননি শান্ত, ‘ওরকম তো (৯৮ রানে অলআউট) চিন্তা কখনোই করিনি। তবে আমরা পুরো সিরিজেই প্রক্রিয়াটা চালিয়ে যাওয়ার যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আজকে যখন লম্বা সময় ধরে ভালো বোলিং করেছি, তখন উইকেট পড়েছে। এরকম আশা নিয়ে আসিনি যে ১০০ বা ৯৮ রানে অল আউট করে দেব। পরিকল্পনা ছিল ভালো জায়গায় লম্বা সময় বোলিং করা। খুবই গর্ববোধ করছি, আগের দুই ম্যাচ হারার পর আজকে (গতকাল) ওরা যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’
ইতিহাস গড়ার সুযোগ অবশ্য এখনই শেষ হয়ে যায়নি শান্তদের এবারের সফরে। নিউজিল্যান্ডে ১১টি টি-টোয়েন্টি খেলে এখনও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। সেখানেও প্রথম জয়, প্রথম সিরিজ জয়ের হাতছানি তো আছেই! সেটিই মনে করিয়ে দিলেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক, ‘টি-টোয়েন্টি ভিন্ন সংস্করণ। নির্দিষ্ট দিনে যে ভালো খেলবে সেই জিতবে, এখানে বড় দল, ছোট দল আমার কাছে ম্যাটার করে না। খুব বেশি মোটিভেশনের দরকার নাই। এই ম্যাচ জিতেছি দেখে অতি আত্মবিশ্বাসী হওয়ারও দরকার নাই। এই ম্যাচটা সাহায্য করবে যে এখানে এসেও আমরা জিততে পারি, এই বিশ্বাসটা থাকবে। কারণ আমরা নিজের চোখে দেখলাম। এই বিশ্বাস নিয়ে যদি টি-টোয়েন্টিতে যাই, ভালো পরিকল্পনা করি, প্রস্তুতি নেই, জেতা সম্ভব।’
বুধবার এই নেপিয়ারেই শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আগামী শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) ও রোববার (৩১ ডিসেম্বর) শেষ দুই টি-টোয়েন্টির ভেন্যু মাউন্ট মঙ্গানুই। প্রথম দুই ম্যাচ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর সোয়া বারোটায়, শেষ ম্যাচ সকাল ৬টায়।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জুলাই বিপ্লবে আহত ১৪ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষ পদে এখনো ভারতীয়রা
ভারতে নির্যাতনের ভিডিও বাংলাদেশের সা¤প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার
দাদাবাড়ি বেড়াতে এসে খুন হলো শিশু সাফওয়ান, আটক ২
নরসিংদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে লক্ষ্য করে বালুদস্যুদের গুলিবর্ষণ
নরসিংদীতে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মানববন্ধন
রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
আখাউড়ায় মর্টার সেল উদ্ধার
রাজবাড়ীতে আ.লীগ দুই নেতা কারাগারে
কমলগঞ্জে ৮২ শতক সরকারি খাস জমি উদ্ধার
প্রিমিয়ার ভার্সিটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন চসিক মেয়র
কুষ্টিয়ায় প্লাইউড বোর্ড কারখানায় আগুন
বিএনপি নেতা কায়কোবাদের দারুল উলূম হাটহাজারীসহ বিভিন্ন মাদরাসা পরিদর্শন
মাদারীপুরে পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত
গফরগাঁও সাবেক এমপি বাবেল গোলন্দাজ দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা
ময়মনসিংহে পুলিশ রেঞ্জ কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের উদ্বোধন
নওফেল পরিবারের ২৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ
নিজ বাড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত বন্ধুদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগ
ট্রাভেল ব্যান্ড হ্যালির ধুমকেতুর দুই গান