পাঁচশোর্ধো রানের ‘অসম্ভব’ লক্ষ্যে বাংলাদেশের লড়াইটা মূলত হারের ব্যবধান কমানোর। সেই লড়াইয়ে ব্যাট হাতে ভালো শুরু পেলেন প্রত্যেকেই, কিন্তু প্রত্যাশিত লম্বা ইনিংস খেলতে পারলেন না কেউই। তাতে সিরিজে প্রথমবার দুইশ’র গোণ্ডি পার করতে পারল বাংলাদেশ। জয়ের অপেক্ষাও বেড়েছে শ্রীলঙ্কার। তবে হার এড়ানো? সে তো অসম্ভব এক কল্পনা মাত্র।

৫১১ রানের লক্ষ্যে চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৬৮ রান। জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার এখনও ২৪৩, শ্রীলঙ্কার দরকার ৩ উইকেট।

৪৯ বলে ৭ চারে ৪৪ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার সঙ্গী তাইজুল ইসলাম আছেন ১৪ বলে ১০ রান নিয়ে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি ২৫ রানের।

৬ উইকেটে ১০২ রান নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিন শুরু করা শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে ১৫৭ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে। এদিন কেবল অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের উইকেটটি হারায় তারা। ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৬ রান ম্যাথিউসের।

৬৫ রানে ৪ উইকেট নেন হাসান মাহমুদ। ম্যাচে অষিভিক্ত এই পেসারের উইকেট ৬টি।

রান তাড়ায় দলীয় ৩৭ রানে মাহমুদুল হাসান জয় (৩২ বলে ২৪) ও ৫১ রানে জাকির হাসান (৩৯ বলে ১৯) বিদায় নেন। স্পিনার প্রবাত জয়াসুরিয়াকে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন জয়। আর বিশ্ব ফার্নান্ডোর বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আসেন জাকির।

ব্যর্থতার তালিকা থেকে বের হতে পারেননি দলপতি নাজমুল হোসেন শান্তও। লাহিরু কুমারার ভেতরে ঢোকা বলের লাইন বুঝতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫৫ বলে ২০ রান করেছেন শান্ত। সিরিজের চার ইনিংসে এটিই তার সর্বোচ্চ।

মুমিনুল এসেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন। জয়াসুরিয়ার বলে সুইপ খেলতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ক্যাচ তোলেন তিনি। ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫০ রান মুমিনুলের। তার ৫৬ বলের ইনিংসে চার ৮টি, একটি ছক্কা।

প্রথম সেশনে ৮ ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে হারায় ৪ উইকেট। শেষ সেশনে ৩টি।

১৩২ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে মুমিনুল আউট হওয়ার পর পঞ্চম উইকেটে ৬১ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। কামিন্দু মেন্ডিসকে খোঁচা মেরে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন ৫৩ বলে ৩৬ রান করা সাকিব।

খানিক পর লাহিরু কুমারাকে পুল করতে গিয়ে বল ঠিকমত ব্যাটে পাননি ফর্মের সাথে লড়তে থাকা লিটন। বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটকিপারের গ্লাভসে। ৭২ বলে ৩৮ রান করে আউট হলেন লিটন।

দাঁড়াতে পারেননি শাহাদাত হোসেনও। কামিন্দুর অফ স্পিনে এলবিডব্লিউ হন তিনি। ৩৪ বলে ১৫ রান করে আউট হন তরুণ এই মিডলঅর্ডার।

দলীয় ২৪৩ রানে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে শাহাদাত ফেরার পর তাইজুলকে নিয়ে শুরু হয় মিরাজের লড়াই। ৩৩ বলে ২৫ রান তুলে অবিচ্ছিন্ন আছে এই জুটি। শেষ দিন তারা লড়াইটা টেনে কতদূর নিতে পারে সেটাই এখন আগ্রহের বিষয়।

চলতি সিরিজে এখন পর্যন্ত ৩০ উইকেট নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার পেসাররা। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে লঙ্কান পেসারদের এটিই সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড।

২০১৪ সালে ইংল্যান্ড সফরের দুই ম্যাচে ২৯ উইকেট নিয়েছিলেন শামিন্দা ইরাঙ্গা, নুয়ান প্রদিপ, ধামিকা প্রাসাদরা।