জোন্স ঝড়ে রেকর্ডময় সূচনা যুক্তরাষ্ট্রের
০৩ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ০৩ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্যদিয়েই শুরু হলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। সহ-অধিনায়ক অ্যারন জোন্সের ঝড়ে কানাডার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের সূচনা ম্যাচেই রেকর্ডগড়া জয় পেল আমেরিকানরা। গতকাল বাংলাদেশ সময় সকালে ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্র ১৪ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় কানাডাকে। আগে ব্যাট করে নভোনিত ধালিওয়াল ও নিকোলাস কিরটোনের হাফসেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে রেকর্ডগড়া ১৯৪ রান তোলে কানাডা। জবাবে অ্যারন জোন্স ও আন্দ্রিয়েস গাউসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৭.৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯৭ রান করে বড় জয় তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ২০১৪ আসরে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে নেমে ১৯৩ রান করে রেকর্ড গড়েছিল নেদারল্যান্ডস। অভিষেক কোনো দলের সেই রেকর্ড ভেঙে কাল নেদারল্যান্ডসের চেয়ে এক রান বেশি করলেও কানাডাকে পেছনে ফেলে আরেক রেকর্ড গড়ে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পায় কানাডা। দলটির দুই ওপেনার অ্যারন জনসন ও নাভনিত ধালিওয়াল মিলে প্রথম পাঁচ ওভারে এনে দেন ৪৩ রান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে গিয়ে উইকেটের দেখা পায় যুক্তরাষ্ট্র। হারমিত সিংয়ের বলে শরীরের ভারসম্য হারিয়ে খেলা শটে নিতিশ কুমারের হাতে ক্যাচ দেন জনসন। ১৬ বলে ৫ চারে ২৩ রান করে আউট হন তিনি। তার বিদায়ে উইকেটে আসা প্রাগাত সিংও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ৭ বলে মাত্র ৫ করে রান আউট হয়ে যান তিনি। অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ধালিওয়ালের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন নিকোলাস কিরটোন। ৩৭ বলে দু’জনের ৬২ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখছিল কানাডা। কিন্তু এবার স্বাগতিক দলের জন্য ত্রাতা হন নিউজিল্যান্ড ছেড়ে আমেরিকান ক্রিকেটে নাম লেখানো কোরি অ্যান্ডারসন।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে নিজের প্রথম বলেই তিনি ফিরিয়ে দেন ওপেনার ধালিওয়ালকে। অ্যান্ডারসনের বলে কিছুটা আগে শট খেলে ফেলায় লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ধালিওয়াল। ফেরার আগে ৪৪ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কার মারে ৬১ রান করেন এই ব্যাটার। ধালিওয়াল আউট হওয়ার পরই রানের গতি কমে যায় কানাডার। এর মধ্যে আলি খানের বলে অ্যান্ডারসনের হাতেই ক্যাচ দিয়ে কিরটোন ফিরলে আরও চাপে পড়ে যায় তারা। ৩১ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫১ রান করেন কিরটোন। শেষদিকে কানাডাকে আশা জোগাচ্ছিলেন দিলপ্রিত বাজওয়া। অ্যান্ডারসনের করা ১৯তম ওভারে একটি চার ও ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই ওভারের শেষ বলেই রান আউট হয়ে যান ৫ বলে ১১ রান করা বাজওয়া। শ্রেয়াস মোব্বা অবশ্য দুইশ ছোঁয়া সংগ্রহ এনে দেন কানাডাকে। ২ চার ও সমান ছক্কায় ১৬ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে আলি খান ৪১, হারমিত সিং ২৭ ও কোরি অ্যান্ডারসন ২৯ রানে পান ১টি করে উইকেট।
জয়ের লক্ষ্য তাড়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে ইতিহাস গড়তে হতো। কারণ এর আগে তাদের সর্বোচ্চ ১৬৯ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ছিল। কিন্তু দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত তাদেরই করে নিলেন জোন্সরা। নিজেদের ব্যাটিংয়ের শুরুতেই চাপে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় বলেই স্টিভেন টেইলরকে শূন্য রানে এলবিডব্লিউ করেন কলিম সানা। এরপর আন্দ্রিয়েস গাউসকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেল। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৪১ রান করে স্বাগতিকরা। তাদের আরেকটু চাপে ফেলে দেন সপ্তম ওভার করতে আসা দিলোন হেইলিগার। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ১৬ বল খেলে দুই বাউন্ডারির মারে ১৬ রান করেন যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক মোনাঙ্ক। কিন্তু তার বিদায়ের পরই বদলে যেতে থাকে ম্যাচের দৃশ্যপট। উইকেটে এসে গাউসকে একপ্রান্তে রেখে রীতিমতো ঝড় তোলেন অ্যারন জোন্স। ¯্রফে ২২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যেটি সবচেয়ে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড।
জোন্সের চার-ছক্কার বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়েন কানাডার বোলাররা। তার অর্ধশতকে উজ্জিবীত হয়ে হাত খোলেন গাউসও। ২৬ বলে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন গাউস। এক বল পরই স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরে দেখা যায় সেটি নো বল! জেরেমি গার্ডেনের করা ঘটনাবহুল ১৪তম ওভারে ৩৩ রান পায় যুক্তরাষ্ট্র। এই ওভারের আগে ৪২ বলে ৬৯ রান দরকার ছিল তাদের, পরে সেটি হয়ে যায় ৩৬ বলে ৩৬। গাউস ফেরেন ১৬তম ওভারে। নিখিল দত্তের বলে লং অনের উপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ হন তিনি। ৪৬ বল খেলে ৭টি চার ও ৩ ছক্কায় ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন গাউস। তৃতীয় উইকেট জুটিতে জোন্স ও গাউস মিলে ৫৮ বলে করেন ১৩১। ওভারপ্রতি রান এসেছে ১৪.২৯ গড়ে, যা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেকোনো সেঞ্চুরি জুটির সর্বোচ্চ রানরেট। গাউস আউট হলেও আরেক প্রান্তে ঠিকই ঝড় চালিয়ে যান অ্যারন জোন্স। তার ব্যাটেই টানা দুই ছক্কাতে ১৪ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত ৪০ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ১০ ছক্কার মারে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন জোন্স। কানাডার করিম সানা ৩৪, দিলোন হেইলিগার ১৯ ও নিখিল দত্ত ৪১ রানে পান ১টি করে উইকেট। দলকে রেকর্ডগড়া জয় এনে দিয়ে ম্যাচ সেরা হন যুক্তরাষ্ট্রের সহ-অধিনায়ক অ্যারন জোন্স।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ঢাকা মহানগর মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনী সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে যুবক আহত
কুমিল্লা জজকোর্টের ৩ পিপি-এপিপিকে সংবর্ধনা
চুয়াডাঙ্গার রেলস্টেশন এলাকা থেকে ১৪টি অবৈধ স্বর্ণেরবার উদ্ধার, আটক ৩
জাহাজে ৭ খুনের ঘটনার দ্রুত সুরাহা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
‘ছাত্র-জনতা সংস্কারের মাধ্যমে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জীবন দিয়েছে’
পঞ্চগড়ে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা অনুষ্ঠিত
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে মজবুত করতে হবে: পীর সাহেব চরমোনাই
‘ট্রানজিটের নামে দিল্লিকে দেয়া করিডর জনগণ মেনে নেয়নি’
বদলির ৩ মাস পরই পূর্বের কর্মস্থলে ফিরলেন শরীয়তপুরে সদর হাসপাতালের ক্যাশিয়ার বজলুর রশিদ
বগুড়ায় যথাযথ মর্যাদায় বড়দিন পালন
শ্রীপুরে ভুয়া মেজর আটক
সাবেক দুদক কমিশনার জহরুল হকের পাসপোর্ট বাতিল, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রশংসা করলেন রাহাত, জানালেন নিজ অনুভূতি
রাতের আধারে অসহায় ব্যাক্তিদের বাড়ির দরজায় গিয়ে কম্বল দিলেন ইউএনও
আমাদের সংস্কৃতির অংশ হলো সব ধর্মের মাঝে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ভাঙ্গায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ আহত- ১০
কবি জসীমউদ্দিনের মেজ ছেলে ড. জামাল আনোয়ার আর নেই
নির্বাচনের তারিখ নিয়ে যা জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার
কারখানায় আগুন, পরিদর্শনে হাতেম