দিয়াবাতে ঝলকে আক্ষেপ ঘুচলো মোহামেডানের
৩০ মে ২০২৩, ১১:৩৫ পিএম | আপডেট: ৩১ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
ঘরোয়া ফুটবলে দীর্ঘদিন শিরোপাহীন ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এই আক্ষেপ দিনের পর দিন ক্ষত-বিক্ষত করেছে সাদাকালো শিবিরের কর্মকর্তাসহ কোটি সমর্থকদের। অবশেষে মালির ফরোয়ার্ড অধিনায়ক সুলেয়মানে দিয়াবাতে ঝলকে আক্ষেপ ঘুচলো মোহামেডানের। শিরোপার দেখা পেল তারা। দেশের জনপ্রিয় টুর্নামেন্ট বসুন্ধরা গ্রুপ ফেডারেশন কাপে দিয়াবাতের অসাধারণ নৈপূন্যে চ্যাম্পিয়ন হলো সাদাকালোরা। গতকাল কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি ঢাকা আবাহনী লিমিটেডকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুললো মোহামেডান। নির্ধারিত ৯০ ও অতিরিক্তি ৩০ মিনিটের খেলা ৪-৪ গোলে অমিমাংসিতভাবে শেষ হলে টাইব্রেকারে ফাইনালের ভ্যাগ্য নির্ধারণ হয়। যেখানে রোমাঞ্চকর জয় হয় মোহামেডানের। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলায় মোহামেডানের হয়ে দিয়াবাতে হ্যাটট্রিকসহ চারটি গোল করেন। ফেডারেশন কাপে ফাইনালের ইতিহাসে দিয়াবাতে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব অর্জন করলেন। আবাহনীর পক্ষে একটি করে গোল করেন স্থানীয় ফরোয়ার্ড ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, কোস্টারিকার ফরোয়ার্ড ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস, নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা ও স্থানীয় ডিফেন্ডার রহমত মিয়া।
টাইব্রেকারে মোহামেডানের পাঁচ শটের মধ্যে একটি মিস হয়। অন্যদিকে আবাহনী প্রথম চারটির মধ্যে দুটি শট মিস করে। মোহামেডানের বদলি গোলরক্ষক আহসান হাবিব বিপু দুটি শট রুখে দেন। টাইব্রেকারে মোহামেডানের পক্ষে গোল করেছেন সুলেয়মানে দিয়াবাতে, আলমগীর কবির রানা, রজার ও কামরুল ইসলাম। তৃতীয় শটে শাহরিয়ার ইমনকে ঠেকান আবাহনীর গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল। বিপরীতে শুরুতে আবাহনীর রাফায়েল অগাস্তোর শট মোহামেডানের গোলরক্ষক আহসান হাবিব বিপু ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন। পরে এমেকা ও ইউসেফ মোহাম্মদ গোল করলেও কলিন্দ্রেসের শট রুখে দিয়ে বিপু হন জয়ের আরেক নায়ক।
এই জয়ে ১৪ বছর পর টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোহামেডান। ২০০৯ সালে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে এই ঢাকা আবাহনীকে টাইব্রেকারে ৪-১ গোলে হারিয়েই শিরোপা ঘরে তুলেছিল ঐতিহ্যবাহীরা। ২০০৯ এবং ২০২৩, চিত্রনাট্যে খুব একটা পরিবর্তন নেই। ১৪ বছর আগে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে টাইব্রেকারে আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল মোহামেডান। এবারও তাই। তবে ভেন্যু এবং গোল সংখ্যায় কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
মালির ফরোয়ার্ড সুলেয়মানে দিয়াবাতকে দলে টেনে ভুল করেননি মোহামেডানের কর্তারা, তা আরেকবার প্রমাণ করলেন তিনি। পুরো ম্যাচে একাই মোহামেডানকে টেনে নিয়ে গেলেন শিরোপা মঞ্চে। ১২০ মিনিটে আবাহনীর করা ৪ গোলের বিপরীতে হ্যাটট্রিকসহ চার গোল এবং টাইব্রেকারে আরেকটি পেয়ে টুর্নামেন্টে ৮ গোল করে সর্বাধিক গোলদাতা নির্বাচিত হয়েছেন দিয়াবাতেই। শুধু তাই নয়, ফাইনাল সেরা ও টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন দিয়াবাতে।
অনেক দিন পর কুমিল্লায় কাল এমন রোমাঞ্চকর এক ফাইনাল দেখলেন দর্শকরা। ফাইনালের সব রসদ, উত্তেজনা ও শিহরণ সবই ছিল ম্যাচে। তাই তো শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম ছিল দর্শকে পরিপূর্ণ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি দুই দলের লড়াই শুরু হওয়ার পর পুরো ম্যাচে ছিল টানটান উত্তেজনা। উপভোগ্য ফুটবলই খেলেছে দু’দল। ম্যাচের ১৬ মিনিটে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও ৪৪ মিনিটে ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেসের গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বিরতিতে গিয়েছিল আবাহনী। বিরতি থেকে ফিরে যেন জেগে উঠে সাদাকালোরা। দ্বিতীয়ার্ধের ১১ মিনিটে (ম্যাচের ৫৬ মিনিট) মোহামেডানের সুলেয়মানে দিয়াবাতে গোল করে জাগিয়ে তোলেন সাদাকালো গ্যালারি (১-২)। এরপর ৬০ মিনিটে গোল করে স্কোরলাইন ২-২ করেন তিনি। ৬৬ মিনিটে এমেকা গোল করলে ম্যাচ আবার ঝুঁকে পড়ে আবাহনীর দিকে (৩-২)। কে জানতেন মোহামেডানের দিয়াবাতেই ম্যাচটাকে নিয়ে যাবেন অতিরিক্ত সময়ে! ম্যাচের ৮৩ মিনিটে গোল করে তিনি বুঝিয়ে দিলেন কেন এই ম্যাচের আবেদন দর্শকদের কাছে এত বেশি (৩-৩)। এই ব্যবধানে ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ম্যাচটি। কখনো আবাহনী কখনো মোহামেডান এগিয়ে যায়। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে লীড নেয় মোহামেডান। এবারও গোলদাতা অধিনায়ক সুলেয়মানে দিয়াবাতে। ১০৬ মিনিটে বক্সের মধ্যে আবাহনীর ডিফেন্ডার তাকে ফাউল করেন। রেফারি আলমগীর সরকার পেনাল্টির বাঁশি বাজালে স্পট কিক থেকে গোল করেন দিয়াবাতে (৪-৩)। ম্যাচে প্রথমবারের মতো এগিয়ে যায় সাদাকালোরা। মোহামেডানের নিয়মিত গোলরক্ষক সুজন আহত হলে বিপুকে মাঠে নামান কোচ আলফাজ আহমেদ। বিপু নামার কিছুক্ষণের মধ্যে মোহামেডান গোল হজম করে। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে ১১৭ মিনিটে রহমত মিয়ার গোলে সমতা আনে আবাহনী। এসময় বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত শটে গোল করেন রহমত (৪-৪)। এর কিছুক্ষণ পড়ে খেলা শেষ হলে ১২০ মিনিটেও ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয়নি। ফলে টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা। সেখানে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে মোহামেডান। ঢাকা আবাহনী লিমিটেডকে হারিয়ে জিতে নেয় রোমাঞ্চকর শিরোপা।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
দৌলতপুরে সেনা অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গুলি ও ককটেল সহ আটক-৩
মাদারীপুরের শিবচরে ডাকাতি
বাংলাদেশে ইউরোপীয় দেশগুলোর দূতাবাস স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন
দৌলতখানে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিন সন্ত্রাসী গ্রেফতার
চালু করা হবে আবু সাঈদ ও মুগ্ধ ট্রাস্ট স্কলারশিপ
কেন ট্রাম্পের মনোনীত গোয়েন্দা প্রধান এত বিতর্কিত?
নির্মাণের এক বছরেই নদীতে ধসে পড়লো বাঁধ
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পিক-আপ ও সিএনজি সংঘর্ষে একজন নিহত
মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা থেকে মিয়া লে রু'র সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হচ্ছে বইমেলা
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের টেকসই রূপরেখা
কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিহত
নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলেন লি জে-মিয়ং
বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের পণ্যবাহী জাহাজ, উদ্বেগ ভারতের
মাদারীপুরে দুর্বৃত্তের হামলায় যাত্রীবাহী বাস ভাংচুর, যাত্রী ও কর্মচারী আহত
বরগুনায় যৌথ অভিযানে নারীসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী আটক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিন: ক্রীড়াঙ্গনে নতুন দিনের স্বপ্ন
মির্জাপুরে দুই কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা উদ্ধার
বঙ্গবন্ধু বাদ দিয়ে তিন মাস পর খুললো গাজীপুরের সাফারি পার্ক
জুমার নামাজ শেষে কাকরাইল মসজিদ ছাড়লেন সাদপন্থীরা