আরো বড় স্বপ্ন দেখালেন মারুফুল
৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪০ এএম | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪০ এএম
দক্ষিণ এশিয়ার বয়সভিত্তিক সাফে সেরা হয়ে এবার এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বে চোখ রাখছেন চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ যুবাদের। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে দেশে ফিরেছেন মিরাজুল ইসলাম-মোহাম্মদ আসিফরা। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দলের কোচ ও খেলোয়াড়রা গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন সাড়ে ৫টার দিকে। সাংবাদিকদের সামনে নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন দলের প্রধান কোচ মারুফুল হক, নিয়মিত অধিনায়ক ও গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ, সদ্য সামাপ্ত সাফ অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফ, সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতা মিরাজুল ইসলাম এবং ফরোয়ার্ড পিয়াস আহমেদ নোভা। দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হক এই ফুটবলারদের নিয়েই দক্ষিণ এশিয়ার গন্ডি পেরিয়ে এশিয়ান পর্যায়ে উত্তীর্ণ হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আগামী ২১ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভিয়েতনামে অনুষ্ঠিত হবে এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্টের বাছাই পর্বের খেলা। স্বাগতিক ভিয়েতনাম ছাড়া এ আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সিরিয়া, ভূটান ও গুয়াম। বাছাইয়ে দশ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও সেরা পাঁচ রানার্স আপ দল খেলবে বয়সভিত্তিক এই টুর্নামেন্টের মূল পর্বে। মারুফের দৃষ্টি চূড়ান্ত পর্বেই। তিনি বলেন, ‘আসলে এই দলটির যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন দু’টো লক্ষ্য ঠিক করেছিলাম। একটি পূরণ হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে। এবার কাজ করব এশিয়ান পর্যায়ে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য। এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করব। আমার চ্যাম্পিয়ন দলের এই ছেলেদের মেধা ও যোগ্যতা রয়েছে। আশা করি আমার দ্বিতীয় লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে।’
অনূর্ধ্ব-২০ সাফ খেলতে নেপালে যাওয়ার আগে যে স্বপ্ন ছিল, তা পুরণ হওয়ায় দারুণ খুশী মারুফুল হক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও চ্যাম্পিয়ন হওয়র লক্ষ্য নিয়েই এবার নেপালে গিয়েছিলাম। তবে তার আগে শক্তিশালী ভারতকে হারাতে হবে। নেপালের সঙ্গে গ্রুপ পর্বে আমরা হেরে যাওয়ায় সেমিফাইনালেই ভারতের মুখোমুখি হতে হয়েছে। ওরা অনেক আক্রমণ করছিল। কিন্তু কখনই মনে হয়নি আমরা হেরে যাবো। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। কারণ এটা নিয়ে ছেলেদের বিশেষ প্রস্তুতি ও লক্ষ্য ছিল। আমার বাড়তি কাজ করতে হয়েছে যাতে ওরা মাথা ঠান্ডা রেখে ভারতের বিপক্ষে খেলে।’
ফাইনালে নেপালের খেলা সম্পর্কে বাংলাদেশ কোচ বলেন,‘নেপালের দূর্বলতা দুই ধরণের ছিল। আমি দেখেছি ওরা ওদের প্লেয়িং স্টাইল খুব একটা পরিবর্তন করেনি। আগের তিনটা ম্যাচ যেভাবে খেলেছে, ফাইনালে সেই ধারাতেই খেলেছে। আমার চ্যালেঞ্জ ছিল আমরা মাত্র ১৫ দিন ট্রেনিং করে কাঠমান্ডুতে গিয়েছি। অনেকগুলো ম্যাচ খেলতে হয়েছে। ফাইনালের আগে মাত্র একদিন রিকভারি টাইম ছিল। চেষ্টা করেছি যাতে ম্যাচের আগে শতভাগ রিকভারি করে ছেলেদের মাঠে নামাতে পারি। ফাইনালের দিন অনেক গরম ছিল এবং টার্ফ থেকেও অনেক তাপ বের হচ্ছিল। ছেলেদের বলা ছিল, আমরা ধীরে ধীরে অ্যাটাকে যাবো। আগে ওদের অ্যালাউ করবো। তারপর আমরা কাউন্টার অ্যাটাকে যাবো।’ মারুফুল যোগ করেন,‘ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটে দেখেছি ওরা অনেক মিস করছে এবং ওরা মানসিকভাবে অনেক চাপে ছিল মনে হয়েছে। স্বদেশি সমর্থকদের চিৎকার চেচামেচি নেপালি খেলোয়াড়রা নিতে পারছিল না। তখন কৌশল পরিবর্তন করে পজেশনালি ওবং অ্যাটাকিং খেলতে বলি ছেলেদের এবং এটারই রেজাল্ট আমরা শেষ পর্যন্ত পেয়েছি।’
অধিনায়ক মেহেদী হাসান শ্রাবণ বলেন, ‘আসলে এই ট্রফিটা অধরা ছিল। সেই প্রত্যাশা এখন পূর্ণ হল। বিদেশে অনেক খেলোয়াড়কে ট্রফি নিয়ে ঘুমাতে দেখেছি। তাই কাল (বুধবার) রাতে ট্রফি নিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। আসলে সবাই নিজেদের সেরাটা দিতে পেরেছি বলেই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।’ সর্বোচ্চ গোলদাতা ও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতা মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। এখন খুব খুশি।’ জাতীয় দলে সুযোগ পেলে খুশী হবেন বলে জানান মিরাজ। তার কথায়, ‘কোচ যদি বলেন আমি রেডি কিনা, তাহলে আমি প্রস্তুত। জাতীয় দলের সঙ্গে ভুটান যেতে পারলে আমি অনেক খুশী হব। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল জাতীয় দলে খেলা। বিদেশি ফুটবলাররা ১৯ বছর বয়স থেকে দেশের বাইরে খেলে। আমার ইচ্ছা পূরণ হলে খুশী হবো।’ সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে মিরাজুল বলেন, ‘ওই দিনটা বলে বুঝানো যাবে না। বাঁধ খুলে পানি ছেড়ে দিয়ে যেভাবে আমাদেরকে কষ্ট দিচ্ছে ভারত, আমরাও প্রস্তুতি নিয়েছিলাম তাদেরকে টুর্নামেন্ট থেকে বের করে দিয়ে সেভাবেই কষ্ট দেবো।’ টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক আসিফ বলেন,‘দেশের মাটিতে আনিসুর রহমান জিকো ভাইকে দেখেছি টাইব্রেকারে ট্রফি জিততে। বিদেশের মাটিতে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক মার্টিনেজকেও দেখেছি। তাই নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করেছিলাম।’
ফরোয়ার্ড পিয়াস আহমেদ নোভা বলেন,‘টুর্নামেন্টের প্রত্যেকটি ম্যাচই আমরা গুরুত্ব সহকারে নিয়েছিলাম। গ্রুপ ম্যাচে নেপালের কাছে কিছু ভুলের কারণে হেরেছিলাম। পরে গ্রুপ স্টাডি করে দ্বিগুণ প্রচেষ্টা করে ফাইনালে জিতেছি। এখন আমাদের বেশি বেশি খেলতে হবে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখার করার আকুতি জানিয়ে পিয়াস বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে প্রথম ট্রফি এনেছি আমরা। নতুন সরকারের কাছে চাওয়া যারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি তাদেরকে যেন কাছ থেকে দেখেন। তাছাড়া আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চাই। যদি উনি কথা বলেন তাহলে আমরা উজ্জীবিত হব।’
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
যতবার বাংলাদেশে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে, ততবার বিএনপি সরকার গঠন করেছে: এবিএম মোশাররফ
সচিবালয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ষড়যন্ত্র আছে: সারজিস আলম
শীর্ষ ফুটবলে নিজেকে আরও কয়েক বছর দেখেন ফন ডাইক
কালীগঞ্জে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু আরেক শিশু নিখোঁজ
কুমিল্লায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
মির্জাপুরে বনের ভেতর গড়ে উঠা ৯টি ঘর উচ্ছেদ
সচিবালয়ে আগুন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থা দায় এড়াতে পারেনা - এবি পার্টি
পথশিশুদের মাঝে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিয়েছে সামাজিক সংগঠন আলোকিত নরসিংদী
কুলাউড়ায় বিসিএস ডাক্তারদের মানববন্ধন
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির সাথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাত
ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে সিলেট সীমান্তে নিহত এক তরুন : বিজিবির প্রতিবাদ
যারা নির্বাচনী অপরাধ করেছেন তাদের বিচার হওয়া উচিত: বদিউল আলম মজুমদার
ট্রাকচাপায় ফায়ার ফাইটার নিহতের ঘটনায় মামলা
সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের সময় বাড়ল
মেহেরপুর জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির লক্ষ্যে কেএমপিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে; কেএমপি কমিশনার
মির্জাপুরে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত
বাগেরহাটে ষড়যন্দ্রমূলক মিথ্যা মামলা ও হুমকির প্রতিবাদে প্রবাসীর সংবাদ সম্মেলন
পদবঞ্চিতদের আড়ালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, জবি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতায় বিবৃতি
টিকেটে ছাড়াই তারকা খেলোয়াড়দের খেলা দেখার সুযোগ পাবে সিলেটবাসী